Ajker Patrika

ওসমানীনগরে জোড়া খুন: দুদিনেও কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ

প্রতিনিধি
ওসমানীনগরে জোড়া খুন: দুদিনেও কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ

ওসমানীনগর (সিলেট): ওসমানীনগরে স্কুল শিক্ষিকা ও গৃহকর্মী যুবকের মরদেহ গত শনিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের সোয়ারগাঁও (খয়েরপুর) গ্রামে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু কেন এই ঘটনাটি সংঘটিত হলো সেটা এখনো রহস্য।

নিহত তপতি রাণী দে লাভলী (৫৫) চিকিৎসক বিজয় ভূষণ দের স্ত্রী ও সোয়ারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে তপতী রানী দের স্বামী ও চিকিৎসক ছেলে বাড়িতে ছিলেন না। বাসায় তপতি ও কাজের ছেলে গৌরাঙ্গ বৈদ্য ছিলেন। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে তপতীর ছেলে তন্ময় দে বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান বাসার গেট ভেতর থেকে আটকানো রয়েছে। এ সময় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে মা ও কাজের ছেলের মোবাইলে কল দিলে দুটি নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তন্ময় দেয়াল টপকে বাসায় প্রবেশ করে বাথরুমের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে গৃহকর্মী গৌরাঙ্গের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

এ ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে গ্রান্ডার মেশিন দিয়ে বাথরুমের জানালার রড কেটে একজনকে ভেতরে ঢোকানো হয়। দরজা খোলার পর ঘরে ঢুকে তপতী রাণীর গলাকাটা মরদেহ ও পাশের খাটের ওপর গলায় গামছা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় কাজের ছেলে গৌর চাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গত শনিবার সন্ধ্যার পর কোনো এক সময়ে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এতে আর্থিক বা অনৈতিক কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা তদন্ত করছে পুলিশ। গৌরাঙ্গ বৈদ্যের (২০) বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের লহরী গ্রামে।

নিহত তপতীর স্বামী বিজয় ভুষন দে ও তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, তপতীর পিতার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার চতুল এলাকায়। তপতী ও বিজয় দম্পতির এক ছেলে ও তাপসী দে তন্নী নামের এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে এবং মেয়ে ও মেয়ের স্বামী পেশায় চিকিৎসক। তন্নী স্বামীর সঙ্গে সিলেট শহরে থাকেন। আর তন্নীর বাসাতে কাজ করেন গৌর চাঁদের ছোট ভাই গোবিন্দ বৈদ্য।

স্বজনরা আরও জানিয়েছেন, তপতী রানী এবং তার ছেলে তন্ময় খুবই শান্ত স্বভাবের। তপতী শনিবার সকালে স্কুলে যান এবং দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে আসেন। দিনের বেলা তিনি এবং কাজের ছেলে বাড়িতে ছিলেন। বিকেলে কাজের ছেলে বাজার থেকে সদাই করে নিয়ে আসে। তপতীর স্বামী ছিলেন চেম্বারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না মিয়া বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে আমি ওই বাড়িতে যাই এবং পুলিশকে ঘটনাটি জানাই। পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। ঘরের মেঝেতে প্রচুর রক্ত ছিল। গৌরের শার্টের মধ্যেও রক্ত লাগানো ছিল।

এদিকে গত শনিবার দিবাগত রাত ২টায় সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে গৌর চাঁদ শিক্ষিকাকে খুন করার পর সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা দিয়েছে। পুলিশ এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে।

ওসমানীনগর থানার ওসি শ্যামল বণিক বলেন, গতকাল রোববার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দুটি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গৌর চাঁদের ভাই গবিন্দ বৈদ্য বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত