Ajker Patrika

স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টা ইমামের

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

গাজীপুরের শ্রীপুরে যৌতুক না পেয়ে গভীর রাতে সাউন্ডবক্সে উচ্চ স্বরে ওয়াজ বাজিয়ে স্ত্রী খুশি আকতারের (২১) ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী। নির্যাতনের পর গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাওলানা শরিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় বাদী হয়ে এমন একটি লিখিত অভিযোগ করেন গৃহবধূর বাবা হাসেন আলী।

এর আগে শনিবার রাত ৩টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নতুনবাজারের আনছার রোড এলাকার বয়রাসালায় এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার খুশি আকতারের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বদলাগাড়ি গ্রামে। তিনি স্বামী মাওলানা শরিফ মাহমুদের সঙ্গে শ্রীপুরের বয়রাসালায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

খুশির পরিবার জানায়, পারিবারিকভাবে ২০১৯ সালের ১২ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় এলাকায় মাওলানা শরিফ মাহমুদের সঙ্গে বিয়ে হয় খুশির। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুরে যান শরিফ। সেখানে স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন তিনি। কিন্তু আর্থিক দৈন্যদশা ও পরকীয়ায় লিপ্ত হন শরিফ। কিছুদিন ধরে স্ত্রী খুশিকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে আসছিলেন তিনি। গত শনিবার রাতে স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শরিফ। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে, পরকীয়ার ঘটনা বলায় মারপিট শুরু করেন শরিফ। এরপর রাত ৩টার দিকে উচ্চ স্বরে সাউন্ডবক্সে ওয়াজ বাজিয়ে খুশির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে খুশির চিৎকারে পাশের রুমের এক নারী এসে প্রতিবেশীদের সহায়তায় খুশিকে উদ্ধার করেন। 

ঘটনার রাতে মোবাইলে খবর পেয়ে গাইবান্ধা থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায় তাঁর পরিবার। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। 

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগুনে খুশির শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রায় ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। 

মেয়েটির বাবা হাসেন আলী বলেন, ‘টেকার জন্যে ছোলটাক (খুশি) আগুনত ফেলে মারবের চাছিলো (চেয়েছিল)। বহুত টেকা দিছি এই দুই বছরে। তাও ছোলটেক মারডাং (মারধর) করত সে (শরিফ)।’ 

খুশি আকতার বলেন, ‘অন্য মেয়েদের সাথে ইয়ে করত, কথা বলত। সেগুলো আমি সহ্য করতে পাই নাই। অনেক মারধর করছে ওই রাতে। সেদিন খাটে শুইতেও দেয়নি। পরে মেঝেতে ঘুমাই। হুট করে ঘুম থেকে উঠে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে, আর ওয়াজ বাজছে।’ 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ জানান, তার নাভির নিচ থেকে পা পর্যন্ত দশ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়াও ব্রেস্টের কিছু অংশ পুড়েছে। আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। সুস্থ হতে সময় লাগবে। 

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম হোসেন বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত