Ajker Patrika

মৃত নারীকে জীবিত দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা, মাকে দিয়ে দানপত্র

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
Thumbnail image

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় ৩৫ বছর আগে মৃত এক নারীকে জীবিত দেখিয়ে জমির ভুয়া দানপত্র তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় রাজীবপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম (৫৭) এবং জহুরা খাতুনকে (৬০) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। 

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) প্রদীপ রায় জানান, আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ রাজীবপুর থানায় আব্দুল করিম নামে এক ভুক্তভোগী মামলা করেন। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। 

রাজীবপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। আর জহুরা খাতুন রাজীবপুর উপজেলার বদরপুর গ্রামের মজিবর রহমান খাজার স্ত্রী। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের নহর শেখের স্ত্রী ও মামলার বাদী আব্দুল করিমের দাদি দৌলতন নেছা ৩৫ বছর আগে মারা গেছেন। এরপর থেকে দৌলতন নেছার নামে থাকা ৫৪ শতাংশ জমি তাঁর ওয়ারিশরা ভোগদখল করে আসছিলেন। এর মধ্যে উপজেলার গোল্ডেন লাইফ একাডেমি নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইসমাঈল হোসেন তাঁর মা জহুরা খাতুনকে দৌলতন নেছা সাজিয়ে দানপত্রের দলিল তৈরি করেন। দলিল লেখক নুরুন্নবী সরকারসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ৫০ শতাংশ জমি গোল্ডেন লাইফ একাডেমির নামে রেজিস্ট্রি করেন ইসমাঈল। সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম যাচাই-বাছাই না করেই জহুরা খাতুনকে মৃত দৌলতন নেছা হিসেবে দেখিয়ে দলিল সম্পাদন করেন। 

এরপর একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি গোল্ডেন লাইফ একাডেমির পরিচালক ইসমাঈল হোসেন জমি দখল নিতে গেলে বাদী আব্দুল করিম বাধা দেন। তখন ইসমাঈল হোসেন জাল দলিলটি দেখান। আব্দুল করিম বিষয়টি বুঝতে পেরে আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে রাজীবপুর থানা-পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সিআইডিকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। সিআইডি তদন্ত করে সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম, দলিল লেখক নুরুন্নবী সরকার, মৃত দৌলতন নেছা হিসেবে পরিচয় দানকারী জহুরা খাতুন ও গোল্ডেন লাইফ একাডেমির পরিচালক ইসমাঈল হোসেনসহ সাত জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। 

এ বিষয়ে জিআরও প্রদীপ রায় বলেন, আসামিরা এত দিন অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। আজ তাঁরা আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর আসামিরা এখনো জামিনে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত