Ajker Patrika

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় ৩ শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় ৩ শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় কর্তৃপক্ষ তিন শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আরএইচ মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে দুজন শিক্ষক একাধিক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষককে অপসারণ করেছে পরিচালনা পর্ষদ। 

ভুক্তভোগী তিন সহকারী শিক্ষক হচ্ছেন—কাউসার হাবীব, রাজিউর রহমান ও হারুন অর রশিদ। 

ইউএনওকে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ সিংহ ও ফরিদউজ্জামান অনেক ছাত্রীর গায়ে হাত দেন এবং কুপ্রস্তাব দেন। এমনকি এক ছাত্রীর সঙ্গে কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত করেছেন। এসব বিষয় কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া কাউসার হাবীবকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন ফরিদউজ্জামান। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না করে হঠাৎ তিন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে কথা হলে তিন শিক্ষক দাবি করেন, ছাত্রীরা নোংরামির কথা তাঁদের জানাত। তাঁরা সেগুলো প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে জানাতেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিত না। তাঁরা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। 

দুজন ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, ফরিদউজ্জামান তাদের ২৬ মার্চে বলেন, ‘তোমরা সাতজন আছ, কে আমার রুম পার্টনার হবা?’ 

এক ছাত্রী বলে, ফরিদউজ্জামান মাঝেমধ্যেই অঙ্ক ক্লাস নেওয়ার সময় বেঞ্চের কাছে এসে পা দিয়ে তার পা চেপে ধরতেন। যখন-তখন সুযোগ পেলেই অশ্লীল কথা বলতেন, কুপ্রস্তাব দিতেন। 

ওই ছাত্রী জানায়, স্যারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করলে অনেকে বিশ্বাস নাও করতে পারে। উল্টো সে বিপদে পড়তে পারে। এ কারণে এত দিন কাউকে কিছু জানায়নি। 

এ বিষয়ে আজ শনিবার যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক ফরিদউজ্জামান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। 

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হামিদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক কর্তৃক কোনো ছাত্রীর শ্লীলতাহানির প্রমাণ আমরা পাইনি। শিক্ষকেরা অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন। এ জন্য তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তাঁদের অব্যাহতি দিয়েছেন।’ 

পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ‘কোনো ছাত্রীর শ্লীলতাহানি হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।’ 

পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তনুজা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। 

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়ে ইউএনও সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত