Ajker Patrika

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বাড়িতে এলাকাবাসীর হামলা

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বাড়িতে এলাকাবাসীর হামলা

রিনা খাঁন (৩৫)। বাড়িতে এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। তাঁর স্বামী মঈন উদ্দীন দীর্ঘদিন এলাকায় থাকেন না। রিনা তাঁর বাড়িতে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের আখড়া বানিয়েছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এই অভিযোগে আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ হামলা চালিয়ে সদর দরজার গ্রিল ও জানালা ভাঙচুর করে। 

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভার পশ্চিম আমুট্ট মহল্লায় আজ দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিনা খাঁনের বাড়িতে বাড়িতে অপরিচিত নারী-পুরুষ ও কম বয়সী ছেলেমেয়েদের যাতায়াত আছে। স্থানীয়রা একাধিকবার নিষেধ করলেও এসব বন্ধ হয়নি। কেউ প্রতিবাদ করলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ভয় দেখান রিনা খাঁন। আজ দুপুরে দুটি মেয়ে ও দুটি ছেলেকে রিনা খাঁনের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখেন স্থানীয়রা। তখন কয়েকজন তাদের পিছু নিয়ে রিনার বাড়িতে যান এবং ওই ছেলে-মেয়েদের আটক করেন। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর পশ্চিম আমুট্ট মহল্লার দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে রিনার বাড়ির হামলা চালিয়ে সদর দরজা ও জানালা ভেঙে ফেলে। তখন রিনা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। আর কখনো এ ধরনের কাজ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিলে লোকজন সেখান থেকে চলে যায়।

প্রতিবেশী গৃহবধূ খাদিজা বেগম বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে রিনা তাঁর বাড়িতে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। আমাদেরও তো ছেলে-মেয়ে আছে! সেই চিন্তা করেই মহল্লার লোকজন রিনাকে ওই কাজ করতে নিষেধ করে। কিন্তু সে কারও কোনো কথা শোনে না।’

প্রতিবেশী শাম্মি আকতার বলেন, ‘রিনার কর্মকাণ্ডে আমাদের মহল্লার অনেক দুর্নাম হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে রিনা হুমকি দিয়ে বলেন, “জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ আমার কেউ কিছু করতে পারবে না। বেশি লাফালাফি করলে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান মাজেদ বলেন, ‘রিনার ওই কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করেছি। কিন্তু সে তা শোনে না। আজ দুপুরে খবর পেয়ে এসে দেখি রিনার বাড়ির সামনে বহু নারী-পুরুষ। তাঁরা রিনার বাড়ির প্রধান গেট ও ঘরের জানালাগুলো ভেঙে ফেলেছে। আমি গ্রামের লোকজনকে শান্ত করে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রিনা খাঁন বলেন, ‘আমার স্বামী আমার কাছে থাকে না। সে কোথায় থাকে তাও সঠিক জানি না। আমি এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে একা থাকি। মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছি। ছেলে-মেয়ের পেট চলার তাগিদে আগে মাঝে মধ্যে ছেলে মেয়েদের বাড়িতে একটু জায়গা দিতাম। আজ ওই ছেলে-মেয়েরা বাড়িতে এসেছিল ঠিকই কিন্তু আমি তাদের ঢুকতে দেইনি। ওই সময় গ্রামের কিছু লোক এসে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এরপর আরও লোকজন এসে অন্যায়ভাবে আমার বাড়ির দরজা জানালা ভেঙে ফেলেছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।’

তবে আক্কেলপুর থানার ওসি সাইদুর রহমান বলছেন, তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনা শোনেননি। কেউ তাঁর কাছে অভিযোগও দেয়নি। তারপরেও ঘটনাস্থলে নিজে যাবেন বলে আশ্বাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত