Ajker Patrika

সমস্যা আছে, মামলা নিতে পারছি না— বললেন ওসি

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
সমস্যা আছে, মামলা নিতে পারছি না— বললেন ওসি

বিবদমান জমিতে পাকা ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে তিন নারীসহ চারজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে জালাল মণ্ডল মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও প্রতিপক্ষের রশিদা বিবি নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। অপর দুই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা। গত সোমবার (১৩ জুন) উপজেলার কসব ইউনিয়নের তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় রশিদা বিবি বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের জালাল মণ্ডলসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় গত বুধবার রাতে মামলা করেন। একই ঘটনায় আহত জালাল মণ্ডলের মামলা নেয়নি পুলিশ। জালাল মণ্ডলের অভিযোগ, ‘ওসি তাঁকে বলেছেন, সমস্যা আছে, তাই মামলা নিতে পারছি না!’ 

স্থানীয়রা জানান, বসতভিটার জমি নিয়ে তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের জালাল মণ্ডলের সঙ্গে প্রতিবেশী রশিদা বিবির দীর্ঘদিনের বিবাদ। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। মান্দা থানা পুলিশও নিষ্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় জালাল মণ্ডল নওগাঁ আদালতে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় প্রতিপক্ষের রশিদা বিবিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আদালত বিবদমান সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখাসহ সহকারী কমিশনারকে (ল্যান্ড) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ২৫ মে আদালতের সেই আদেশ বিবাদী পক্ষকে পৌঁছে দেন মান্দা থানা পুলিশ। কিন্তু সেই আদেশকে অমান্য করে বসতবাড়ি নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখলে বাধা দেয় বাদীপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

জালাল মণ্ডল বলেন, ‘গ্রামের কতিপয় লোকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আদালতের ১৪৪ ধারা অমান্য করে প্রতিপক্ষের রশিদা বিবি আমার সম্পত্তিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। বাধা দেওয়ায় রশিদা বিবি ও তাঁর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। এতে আমিসহ আমার স্ত্রী রেজিয়া বিবি ও পুত্রবধূ কামরুন্নাহার আহত হন।’ 

জালাল মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় মান্দা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের করা মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। আমার মামলার বিষয়ে ওসি বলেছেন, সমস্যা আছে তাই মামলা নিতে পারছি না।’ 

গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে চারজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছেন। কিন্তু বাড়িতে রশিদা বিবি কিংবা তাঁর পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। 

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিস বৈঠক হলেও নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। থানা পুলিশও চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।’ সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষেরই মামলা নেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান। 

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, ‘সমস্যা থাকায় জালাল মণ্ডলের মামলা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাঁকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ তবে কী সমস্যা সে ব্যাপারে কথা বলতে চাননি ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত