Ajker Patrika

শ্রমিক নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা: লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২২, ১৯: ১১
শ্রমিক নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা: লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ

রাজশাহীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর আজ সোমবার বেলা ৩টার দিকে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। 

নিহত যুবকের নাম মো. সনি (১৮)। সনির বাড়ি নগরীর রেলগেট এলাকায়। তাঁর বাবার নাম রফিকুল ইসলাম পাখি। রফিকুল জেলা মোটর-শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি। নিহত সনি এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকার সমবয়সী কিছু ছেলে পূর্ব শত্রুতার জেরে তুলে নিয়ে গিয়ে সনিকে কুপিয়ে হত্যা করে। 

রাতে সনিসহ তাঁর আরও তিন বন্ধুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। একপর্যায়ে সনি ও তৈয়বুর নামে আরেকজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায় নিয়ে দুজনকেই কোপানো হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সনিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অন্যজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

সোমবার দুপুরের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে সনির মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর স্বজনেরা খাটিয়ায় করে মরদেহ নিয়ে যান নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে। তাঁরা প্রায় ৪৫ মিনিট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ থেকে তাঁরা সনির খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এ সময় সেখানে গিয়ে বক্তব্য দেন জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মমিন, ১৪ নম্বরের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার ও ১৫ নম্বরের কাউন্সিলর আবদুস সোবহান লিটন। তাঁরা খুনিদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দেন। 

নিহত যুবক মো. সনি। ছবি: সংগৃহীত 

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা ঘটনার পরই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিরা ধরা পড়বে। 

এ ঘটনায় সনির বাবা রফিকুল ইসলাম রাতেই আটজনের নাম উল্লেখ করে বোয়ালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন—মঈন ওরফে আন্নাফ (২০), তাঁর মা বিথী (৩০), মো. রাহিম (১৯), সিফাত (১৯), শাহী (১৯), সোরাব খান লাল (৪০), শিউলী (৪২) ও আনিম (১৮)। আসামিদের সবার বাড়ি হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকায়। এদের মধ্যে বিথী রাজশাহী মহানগর মহিলা দলের ক্রীড়া সম্পাদক। শিউলী কমিটির সদস্য। 

এই হত্যাকাণ্ডের পর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৩,১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামসুন নাহার রামেক হাসপাতালে যান। তখন তাঁর ওপর চড়াও হন নিহত সনির স্বজনেরা। আসামি শিউলী ও বিথীর সঙ্গে একই দল করেন বলে তাঁদের সঙ্গে যোগসূত্রের অভিযোগ তুলে তাঁকে অপমানিত করা হয়। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে সামসুন নাহার সেখান থেকে চলে যান। পরে আজ সোমবার বিকেলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান জানান। 

সামসুন নাহার জানান, নিহত সনি তাঁর এলাকার বাসিন্দা ছিল। তিনি তাঁর ছেলের মতো। তাই তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু আসামি শিউলী ও বিথী মহিলা দল করেন বলে তাঁকে ভুল বোঝা হচ্ছে। কেউ কেউ চক্রান্ত করে তাঁকে জড়ানোরও চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনিও এই খুনের বিচার চান। 

সামসুন নাহার বলেন, শিউলী ও বিথী ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে। তাঁর বাড়িতে লুকিয়ে থাকতে পারে ভেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে আজ সোমবার সকালে তাঁর বাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। যারা এসেছিলেন, তিনি তাদেরও বলেছেন যে, তিনিও এই খুনের বিচার চান। কিন্তু লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কায় তিনি বিকেলে বিক্ষোভে যেতে পারেননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত