Ajker Patrika

রাবি ছাত্রীর মৃত্যু: বাবার মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২২, ১৭: ৪০
রাবি ছাত্রীর মৃত্যু: বাবার মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রিক্তা আক্তার (২১) নামে এক শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা লিয়াকত আলী জোয়ার্দার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় রিক্তার স্বামী আব্দুল্লাহ ইশতিয়াক রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রিক্তা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ইশতিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইশতিয়াকের সঙ্গে রিক্তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বছরখানেক ধরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে সেই বাসা থেকে রিক্তাকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্বামী। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসতে একটু সময় লাগবে। যার কারণে বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ইশতিয়াককে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ইশতিয়াককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের সহপাঠীরা। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় তাঁরা ইশতিয়াককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানান। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন আইন বিভাগের সভাপতি হাসিবুল আলম প্রধান। 

সমাবেশে মনোবিজ্ঞানের সভাপতি ও মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবা কেয়া বলেন, ‘আমরা এমন মৃত্যু কোনো মেয়ের চাই না। দেশের প্রতিটি ঘর নারীদের নিরাপদ আশ্রয় হোক। আমাদের এই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটায় সুষ্ঠু তদন্ত হোক।’ একই সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন এই অধ্যাপক। 

রিক্তার বাবা লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি একজন কৃষক মানুষ। আমাদের পরিবার থেকে কেউ আগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসেনি। আমার একমাত্র মেয়ে এখানে এসেছে। তার এমন মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমার মৃত্যু পর্যন্ত হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপস করব না। আমি মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।’ 

বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে রিক্তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমরা নিহতের পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান করব যেন দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত হয়। আর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমরা অভিযুক্তকে বহিষ্কার করব।’ এসময় তিনি নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত