রিমন রহমান, রাজশাহী
নাটোরের এক যুবক ভুল করে একটি সাইবার অপরাধ করে ফেলেছিলেন। পরে অনুতপ্তও হন। কিন্তু মামলা চলে যায় রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে। সাক্ষ্য-প্রমাণে অপরাধ প্রমাণিতও হয়। তবে আদালত তাঁকে শাস্তি না দিয়ে এক বছরের প্রবেশনে বাড়িতেই থাকার সুযোগ দেন। প্রবেশনের বেশ কিছু শর্তের মধ্যে একটি ছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে অনলাইনে সাইবার অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। নাটোরের এই যুবক ‘সাইবার সচেতনতা’ নামে ফেসবুকে পেজ খুলে সেই কাজটিই করেছেন।
আদালত তাঁর কার্যক্রমে খুশি হয়েছেন। প্রবেশনের এক বছর শেষে এই যুবক এখন মুক্ত। তারপরও সাইবার সচেতনতায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ। জেল হলে আমার জীবনটা অন্যরকম হয়ে যেত। আমি নিজেকে সংশোধনের সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। আর ভালো লাগছে যে অন্যরা যেন সাইবার অপরাধে না জড়ায়, সে জন্য কিঞ্চিৎ হলেও অবদান রাখতে পারছি। আমার মতো ভুল যেন আর কেউ না করেন।’
নাটোরের এই ব্যক্তির মতো সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়া আরও এক ডজন তরুণ প্রবেসনে গিয়ে সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন। এখন তাঁরা বলছেন, আর কোনো সাইবার অপরাধে জড়াবেন না তাঁরা। বরং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবেন। একসময়ের এই সাইবার অপরাধীরা এখন সাইবার ডিফেন্ডার হয়ে অবদান রাখছেন।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার এক তরুণ মনের ক্ষোভে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আচ্ছামতো গালাগাল করেছিলেন। কিন্তু এটি ছিল অন্যের জন্য অপবাদজনক, মানহানিকর। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। অভিযুক্ত তরুণ খুব ভয়ে ছিলেন, তাঁর ক্যারিয়ার হয়তো এখনই শেষ। কিন্তু মামলার রায়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহীর বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই তরুণকে শাস্তি না দিয়ে প্রবেসন দেন। এই তরুণও প্রবেসনের শর্ত অনুযায়ী অনলাইনে সাইবার সচেতনতা বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আদালত আদেশে বলেছেন প্রবেসন শেষ হলে এ মামলা আমার কোন চাকরি পেতে বাধা হবে না। এটিই আমার জন্য বড় পাওয়া। আমি সাইবার সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছি।’
২০২১ সালের ৪ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহী গঠিত হয়। এই তিন বছরে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক ট্রাইব্যুনালটির রাজশাহী বিভাগের আট জেলার সাইবার অপরাধের মামলা নিষ্পত্তি করে আসছেন। তাঁর দেওয়া প্রবেসন নিয়ে এমন অনেক উদ্দীপক ঘটনা আছে। প্রবেসনে থেকে শাস্তি এড়ানো চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন ইমাম বলছিলেন, প্রবেসনে গিয়ে তিনি আদালতের শর্ত অনুযায়ী বই পড়েছেন, গাছ লাগিয়েছেন, অনলাইনে সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন। এখন তিনি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানেন।
সাইবার অপরাধের জন্য নাটোরের আরেক তরুণ ঠিকাদারকেও আদালত শাস্তি না দিয়ে প্রবেশন দিয়েছিলেন। সাইবার সচেতনতায় প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি আদালত তাকে পাঁচটি বনজ ও পাঁচটি ফলদ গাছ লাগাতে আদেশ দিয়েছিলেন। তিনি নাটোরে সড়কের দুপাশে কয়েক হাজার বৃক্ষরোপণ করেছেন। তিনি বলছিলেন, গাছগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। গাছগুলোর দিকে তাকালে তাঁর অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে। মানসিক শান্তি পান।
সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহীর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, ‘আমাদের ট্রাইব্যুনালে আমরা যেকোনো সাইবার অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করি। আমাদের কোর্টে প্রচুর সাক্ষী আসে। আমরা ডাক মারফত প্রসেস পাঠানোর পাশাপাশি অনলাইনে বা ই-মেইলেও সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’ তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল এই আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপর প্রায় তিন হাজার সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৭০০ মামলা।
আইনজীবী ইসমত আরা দাবি করেন, এখানে গড়ে একটি মামলা মাত্র তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে মাত্র ২৫ থেকে ৩০টি মামলা বিচার ফাইলে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই সংখ্যা দেশের সবগুলো সাইবার ট্রাইব্যুনালের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে নিয়মিত মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রূমন। তিনি বলেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি ও প্রতিকার পাওয়ায় বিচারপ্রার্থীদের খরচ কমছে। আদালত ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। প্রবেশনের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীকেই সংশোধনের সুযোগ দিয়ে তাঁকেই সাইবার ডিফেন্ডার হিসেবে গড়ে তোলা ভালো উদ্যোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বার সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপরাধীকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে তাদের দিয়েই সাইবার অপরাধ ঠেকানোর যে প্রচেষ্টা, তা নিশ্চয়ই অভিনব। এটি বিচারব্যবস্থার একটা সুন্দর প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অপরাধীরা অপরাধ না করে সবাইকে সচেতন করে।’
নাটোরের এক যুবক ভুল করে একটি সাইবার অপরাধ করে ফেলেছিলেন। পরে অনুতপ্তও হন। কিন্তু মামলা চলে যায় রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে। সাক্ষ্য-প্রমাণে অপরাধ প্রমাণিতও হয়। তবে আদালত তাঁকে শাস্তি না দিয়ে এক বছরের প্রবেশনে বাড়িতেই থাকার সুযোগ দেন। প্রবেশনের বেশ কিছু শর্তের মধ্যে একটি ছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে অনলাইনে সাইবার অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। নাটোরের এই যুবক ‘সাইবার সচেতনতা’ নামে ফেসবুকে পেজ খুলে সেই কাজটিই করেছেন।
আদালত তাঁর কার্যক্রমে খুশি হয়েছেন। প্রবেশনের এক বছর শেষে এই যুবক এখন মুক্ত। তারপরও সাইবার সচেতনতায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ। জেল হলে আমার জীবনটা অন্যরকম হয়ে যেত। আমি নিজেকে সংশোধনের সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। আর ভালো লাগছে যে অন্যরা যেন সাইবার অপরাধে না জড়ায়, সে জন্য কিঞ্চিৎ হলেও অবদান রাখতে পারছি। আমার মতো ভুল যেন আর কেউ না করেন।’
নাটোরের এই ব্যক্তির মতো সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়া আরও এক ডজন তরুণ প্রবেসনে গিয়ে সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন। এখন তাঁরা বলছেন, আর কোনো সাইবার অপরাধে জড়াবেন না তাঁরা। বরং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবেন। একসময়ের এই সাইবার অপরাধীরা এখন সাইবার ডিফেন্ডার হয়ে অবদান রাখছেন।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার এক তরুণ মনের ক্ষোভে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আচ্ছামতো গালাগাল করেছিলেন। কিন্তু এটি ছিল অন্যের জন্য অপবাদজনক, মানহানিকর। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। অভিযুক্ত তরুণ খুব ভয়ে ছিলেন, তাঁর ক্যারিয়ার হয়তো এখনই শেষ। কিন্তু মামলার রায়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহীর বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই তরুণকে শাস্তি না দিয়ে প্রবেসন দেন। এই তরুণও প্রবেসনের শর্ত অনুযায়ী অনলাইনে সাইবার সচেতনতা বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আদালত আদেশে বলেছেন প্রবেসন শেষ হলে এ মামলা আমার কোন চাকরি পেতে বাধা হবে না। এটিই আমার জন্য বড় পাওয়া। আমি সাইবার সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছি।’
২০২১ সালের ৪ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহী গঠিত হয়। এই তিন বছরে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক ট্রাইব্যুনালটির রাজশাহী বিভাগের আট জেলার সাইবার অপরাধের মামলা নিষ্পত্তি করে আসছেন। তাঁর দেওয়া প্রবেসন নিয়ে এমন অনেক উদ্দীপক ঘটনা আছে। প্রবেসনে থেকে শাস্তি এড়ানো চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন ইমাম বলছিলেন, প্রবেসনে গিয়ে তিনি আদালতের শর্ত অনুযায়ী বই পড়েছেন, গাছ লাগিয়েছেন, অনলাইনে সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন। এখন তিনি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানেন।
সাইবার অপরাধের জন্য নাটোরের আরেক তরুণ ঠিকাদারকেও আদালত শাস্তি না দিয়ে প্রবেশন দিয়েছিলেন। সাইবার সচেতনতায় প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি আদালত তাকে পাঁচটি বনজ ও পাঁচটি ফলদ গাছ লাগাতে আদেশ দিয়েছিলেন। তিনি নাটোরে সড়কের দুপাশে কয়েক হাজার বৃক্ষরোপণ করেছেন। তিনি বলছিলেন, গাছগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। গাছগুলোর দিকে তাকালে তাঁর অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে। মানসিক শান্তি পান।
সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহীর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, ‘আমাদের ট্রাইব্যুনালে আমরা যেকোনো সাইবার অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করি। আমাদের কোর্টে প্রচুর সাক্ষী আসে। আমরা ডাক মারফত প্রসেস পাঠানোর পাশাপাশি অনলাইনে বা ই-মেইলেও সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’ তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল এই আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপর প্রায় তিন হাজার সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৭০০ মামলা।
আইনজীবী ইসমত আরা দাবি করেন, এখানে গড়ে একটি মামলা মাত্র তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে মাত্র ২৫ থেকে ৩০টি মামলা বিচার ফাইলে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই সংখ্যা দেশের সবগুলো সাইবার ট্রাইব্যুনালের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে নিয়মিত মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রূমন। তিনি বলেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি ও প্রতিকার পাওয়ায় বিচারপ্রার্থীদের খরচ কমছে। আদালত ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। প্রবেশনের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীকেই সংশোধনের সুযোগ দিয়ে তাঁকেই সাইবার ডিফেন্ডার হিসেবে গড়ে তোলা ভালো উদ্যোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বার সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপরাধীকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে তাদের দিয়েই সাইবার অপরাধ ঠেকানোর যে প্রচেষ্টা, তা নিশ্চয়ই অভিনব। এটি বিচারব্যবস্থার একটা সুন্দর প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অপরাধীরা অপরাধ না করে সবাইকে সচেতন করে।’
সবার সামনে পিটিয়ে হত্যা, পাথরে শরীর থেঁতলে দেওয়া, নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে পায়ের রগ কেটে হত্যা, অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই, চাঁদা না পেয়ে গুলি—এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচিত। কিন্তু পুলিশ অনেকটাই নির্বিকার। প্রতিটি ঘটনার সিটিটিভি ফুটেজ থাকলেও সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
৬ দিন আগেএবার রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা এক যুবকের পোশাক ও জুতা খুলে নিয়ে গেছে।
৭ দিন আগেমোবাইল চুরির ঘটনায় বোরহান নামের এক তরুণকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে বোরহানের বাবা রুবির পরিবারের সাহায্য চান। বসে এক গ্রাম্য সালিস। তবে সেই সালিসে কোনো মীমাংসা হয় না। এরই মধ্য নিখোঁজ হয়ে যান বোরহান। এতে এলাকায় রব পড়ে বোরহানকে হত্যা ও লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তখন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দা
১৪ দিন আগেমালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পর তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিজবাহ উর রহমান তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
১৪ দিন আগে