Ajker Patrika

চুরির অভিযোগে শিশুর মাথার চুল কেটে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৭: ১৩
চুরির অভিযোগে শিশুর মাথার চুল কেটে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

টাকা চুরির অপবাদে এক শিশুর (১১) মাথার চুল কেটে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বসতঘরে রাতভর নির্যাতন শেষে চুল কেটে রাস্তার পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তাকে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে মুক্তি পায় শিশুটি। 

আজ রোববার নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার মাহারা শিশুটি ওই গ্রামের হতদরিদ্র জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। পুলিশের কথা শুনেই পালিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা। 

স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, রুদ্রশ্রী গ্রামের কাজল মীরের ছেলে সুমন মীর (১৮) শনিবার সকালে তার নিজ বসতঘরেই ১১ হাজার ৫০০ টাকা বাক্সে রাখেন। টাকা বাক্সে রাখার সময় প্রতিবেশী ভুক্তভোগী শিশুসহ তার পরিবারের লোকজন ঘরে উপস্থিত ছিল। বিকেলে হাওর থেকে ফিরে এসে বাক্সের টাকা না পেয়ে শিশুটিকে সন্দেহ করেন সুমন। পরে সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে রানাকে পেয়ে সুমন তাঁর ঘরে নিয়ে আটকে রাখেন। রাতভর আটকে রেখে নির্যাতন শেষে রোববার সকালে চুল কেটে বাড়ির সামনের বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান উদ্দিন খুঁটি থেকে শিকলে বাঁধা রানাকে মুক্ত করেন। 

নির্যাতনের শিকার শিশুটি জানায়, সে কোনো টাকা চুরি করেনি। তাকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে সুমন তাঁর ঘরে আটকে রেখে কয়েকজন লোক নিয়ে মারপিট করেন। সকালে তাঁর মাথার চুল কেটে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। সুলতান মেম্বার আসার পর তাকে ছেড়ে দেয়। সে এ ঘটনার বিচার চায়। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুমন মীর বলেন, ‘শনিবার সকালে ওর (নির্যাতিত শিশু) সামনে ১১ হাজার ৫০০ টাকা গুনে আমার বাক্সে রাখি। আমার টাকা ও-ই চুরি করেছে। এর জন্য তাকে শাস্তি দিয়েছি। কিন্তু এখনো আমার টাকা উদ্ধার করতে পারিনি।’ 

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সুলতান উদ্দিন বলেন, ‘টাকা চুরির অভিযোগে ওই শিশুর চুল কেটে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে সুমন মীর। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তার শিকল খুলে দিই। কাজটা খুব খারাপ করেছে।’ 

এ নিয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত