Ajker Patrika

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ: তদন্তের মুখে ব্যবসায়ীর কাছে ‘ক্ষমা’ চাইলেন এসআই

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১: ২০
Thumbnail image

মামলা তদন্তকাজে ঘুষ গ্রহণ, সেবা না দেওয়াসহ আদালতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন জামালপুরের ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল কাদির খন্দকার। এর মধ্যে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আকুল হোসেনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সেই এসআই। বিবাদীর কাছ থেকে পাওনা টাকাও তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ওই এসআই। 

এই ঘটনার পর অভিযোগকারী ব্যবসায়ী আকুল হোসেন তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহার করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে এসআই আবদুল কাদির খন্দকারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী আকুল হোসেন তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

গত বুধবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় এসআই আবদুল কাদির খন্দকারের বিরুদ্ধে ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বরাবর দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহার করতে আবেদন করেন ওই ব্যবসায়ী।

গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় ইসলামপুর সার্কেলের এএসপি বরাবর ঘুষ নেওয়াসহ সেবা না দেওয়ার অভিযোগে এসআই আবদুল কাদির খন্দকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ইসলামপুর পৌর শহরের মার্কাস মসজিদ রোডস্থ বিজয় ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আকুল হোসেন। 

গত ১৭ জুলাই দুপুরে ইসলামপুর সার্কেলের এএসপি অভিজিৎ দাস তদন্তকাজ শুরু করেন। এ সময় এসআই আবদুল কাদির খন্দকারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আকুল হোসেনসহ তিনজন সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ঘুষ নিয়েও মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল কাদির খন্দকার। তবে অভিযুক্ত ওই এসআই তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। 

ইসলামপুর থানার এসআই আবদুল কাদিরের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন। ছবি: সংগৃহীতএদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তকাজ শুরু হলে আকুল হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কৃতকর্মের জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন এসআই আবদুল কাদির খন্দকার। একপর্যায়ে শর্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করেন আকুল হোসেন। 

অভিযোগকারী ব্যবসায়ী আকুল হোসেন বলেন, ‘এএসপি অভিজিৎ দাস স্যারের কাছে আমিসহ তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছি। এই খবর পেয়ে চাকরি রক্ষা করতে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে এসআই আবদুল কাদির খন্দকার হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন। বিবাদীর কাছে পাওনা টাকাও আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একপর্যায়ে আমি তাঁর সঙ্গে আপসে গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করেছি।’ 

ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাস বলেন, ‘এসআই আবদুল কাদির খন্দকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের তদন্তকাজ শুরু করা হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযোগকারী অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে বিষয়টি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ১৮ জুলাই বিকেলে আকুল হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের গিয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তাঁর কাছে ক্ষমা চান এসআই আবদুল কাদির খন্দকার। এসময় তিনি বিবাদীর কাছে পাওনা টাকাও আকুল হোসেনকে উত্তোলন করে দেওয়ার কথা দেন।

উল্লেখ্য, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা পাওনা দাবি করে উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের মলমগঞ্জ পোলট্রিফার্মের মালিক জাহাঙ্গীর আলম সম্রাটকে বিবাদী করে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর জামালপুরের ইসলামপুর সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট সিআর আমলি আদালতে মামলা করেন আকুল হোসেন। মামলাটি তদন্ত করেন এসআই আবদুল কাদির খন্দকার। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আকুল হোসেনের কাছে ৮ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও আদালতে মনগড়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে এসআই আবদুল কাদির খন্দকারে বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আকুল হোসেন। 

এ নিয়ে গত ১৭ জুলাই আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘ঘুষ নেওয়া ও সেবা না দেওয়ার অভিযোগ ইসলামপুর থানার এসআইয়ের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়।

অভিযুক্ত এসআই আবদুল কাদির খন্দকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া বড় কথা নয়। তবে আকুল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমার বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। তাঁর জন্যও চেষ্টা করব কিছু করার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত