Ajker Patrika

দুই ভাগনিকে ঘরে ডেকে গলা কেটে হত্যা করলেন তরুণ

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৯: ২১
Thumbnail image

বাড়ির সবাই সকালের খাবার খেতে অন্য ঘরে ছিলেন। এ সুযোগে ঘরে ডেকে এনে আপন দুই ভাগনিকে গলা কেটে হত্যা করেছেন মামা। 

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের পশ্চিম কাজির বলসা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটে। এ ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের মিয়াসহ থানা পুলিশ।

নিহত দুই শিশুর নাম জাকিয়া হাসান সায়মা (৫) ও তৃপ্তিমনি (৪)। ঘটনার পর শিশু দুটির মামা মাহাবুবকে (২০) স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মাহাবুব ওই এলাকার আব্দুস সালামের (মৃত) ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুই শিশুর মধ্যে একজন নান্দাইল উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের একমাত্র মেয়ে তৃপ্তি, অপরজন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার জাকিরুল হাসান রাজিবের একমাত্র মেয়ে সায়মা। তারা সম্পর্কে খালাতো বোন। কিছুদিন আগে তাদের মা সালমা এবং হালিমার সঙ্গে নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে। 

নিহত দুই শিশুর নানার বাড়িতে শোকের মাতম

আজ সকালে শিশু সায়মা এবং তৃপ্তি বাড়ির পাশেই খেলছিল। এমন সময় তাদের মামা মাহাবুব দু’জনকে ঘরে ডেকে নিয়ে যান। ঘরে থাকা দা দিয়ে দুই ভাগনির গলা কেটে হত্যা করেন তিনি। এ সময় ঘরের ভেতর থেকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে অপর ঘরে থাকা বাড়ির লোকজন এবং স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মাহাবুবকে আটক করে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই ভাগনিকে হত্যার কিছুক্ষণ আগে বাড়ির পাশের মাদ্রাসার এক ছাত্রের ঘাড়ে কোদাল দিয়ে আঘাত করে বাড়িতে আসেন মাহাবুব। আহত সেই ছাত্রের নাম তাওহীদ (১৫)। সে ধনিয়াকান্দি গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে। আহত তাওহীদ বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশু হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসেছে। বাড়িতে উপচেপড়া ভিড়। সন্তান হারিয়ে শোকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছেন সায়মার মা মোছা. সালমা আক্তার ও তৃপ্তির মা মোছা. হালিমা আক্তার। 

স্থানীয় মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘এমনিতে মাহাবুবের আচার-আচরণ ভালোই ছিল। এমনকি গতকালও মসজিদে আজান দিয়ে আসছে। এমন ছেলে হত্যা করতে পারে বিশ্বাসই করতে পারছি না।’ 

নিহত দুই শিশুর নানার বাড়িতে শোকের মাতম

এ বিষয়ে উচাখিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম বলেন, ‘স্থানীয় এবং পারিবারিকভাবে জানতে পারলাম, ছেলেটার আগে থেকেই মাথায় সমস্যা ছিল। তাই বলে নিজের দুই ভাগনিকে হত্যা করবে! এই বিষয়টা সত্যিই দুঃখজনক।’ 

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘মাহাবুবকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ওই শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’ 

খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে জানান ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন। তিনি বলেন, ‘আপন মামার হাতে অবুঝ দুটি শিশু খুন হয়েছে, এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা। জানতে পারলাম যে ছেলেটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে, সে আগে থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত