Ajker Patrika

পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে বিরোধ, বিদ্যালয়ে আগুন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
Thumbnail image

পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের আগ মুর্হূতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার উত্তর চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিদ্যালয়ের আধাপাকা টিনসেট ঘরের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের কক্ষে আগুন লাগে। এতে শিক্ষার্থীদের সনদ, বই, গুরুত্বপূর্ণ নথি, কাগজ ও আসবাব পুড়ে গেছে।

আগামী রোববার বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। ভোটকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ আগুন লাগানো হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। আওয়ামী লীগের ওই দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরাও বিদ্যালয়ে আগুন দেওয়া নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে আগুন দেখতে পান আশপাশের লোকজন। খবর পেয়ে গ্রামবাসী আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। রাত আড়াইটার দিকে শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যদুবয়রা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ আলী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আকাশ রেজার সমর্থকদের বিরোধ চলছিল। আকাশ ও সবুজ পক্ষ ভোট বন্ধের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোববার বিদ্যালয়ে ভোট হওয়ার কথা। এ নিয়ে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। একপক্ষ ভোট বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ভোট বন্ধ করতেই কোনো পক্ষ হয়তো বিদ্যালয়ে আগুন লাগিয়েছে। 

বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সনদ, গুরুত্বপূর্ণ কাগজসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেবেন।

কুমারখালীর উত্তর চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেখছেন স্থানীয়রাএ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাত ২টার দিকে তিনি আগুনের খবর পেয়ে ছুটে এসেছিলেন। কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানি না। তবে ধারণা করছি প্রতিপক্ষরা নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে ভোট বন্ধ করতে এমন ন্যাক্কারজনক ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিছে। আগুন নেভাতে সবাই আসলেও প্রতিপক্ষের কেউ আসেনি। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকাশ রেজা ও যুবলীগ নেতা সবুজ আলী বলেন, মসজিদের মাইকে প্রচার শুনে তাঁরা আগুন লাগার বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তাঁদের ভাষ্য, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। অথবা তাঁদের ফাঁসাতে প্রতিপক্ষরা এমন জঘন্য কাজ করতে পারে।

শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও এলাকাবাসী মিলে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে পরে জানাতে পারবেন।’ 

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, স্কুলে ভোট নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। তাঁর ধারণা, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ফাঁসাতে এমন কাজ করতে পারে। তবে তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে তিনি জানান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত