Ajker Patrika

কুমারখালীতে জোড়া খুনের বদলে খুন

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪৮
কুমারখালীতে জোড়া খুনের বদলে খুন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আমিরুল ইসলাম (৫৫) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে নিহতের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ কটা মেম্বারের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। 

নিহত আমিরুল ইসলাম কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের মৃত সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। লস্কর গ্রুপের সমর্থক ছিলেন আমিরুল ইসলাম। আর মণ্ডল গ্রুপের সমর্থক সন্ত্রাসী কটা মেম্বার। 

নিহত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী জহুরা খাতুন বলেন, বিকেল ৫টার দিকে কটা মেম্বারের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন সন্ত্রাসী বাড়িতে এসে আমিরুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

জহুরা খাতুন বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জেরে কটা মেম্বার ও মণ্ডল গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের সবার ফাঁসি চাই।’ 

এ বিষয়ে নিহতের মেয়ে সুমনা খাতুন বলেন, ‘আমার বাবা সিঙ্গাপুরে ছিলেন। দেড় বছর আগে দেশে এসেছেন। আমার বাবা ভালো মানুষ ছিলেন। নিরপরাধ মানুষটাকে নির্মমভাবে হত্যা করল কটা মেম্বারের লোকজন। আমরা কটা মেম্বার ও তাঁর সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই।’

নিহতের চাচাতো ভাই আলম বলেন, ‘বিকেলে জোড়া খুন মামলার বাদীপক্ষের আরিফ, আনিস, রানা, জহির, মুসা, মিলন ও কটা মেম্বারের ভাইসহ বেশ কিছু লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে আক্রমণ করে এবং ভাইকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এরপর তাঁর পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। ভাই জোড়া খুন মামলার আসামি ছিলেন। খুনের বদলা নিতেই ভাইকে খুন করা হয়েছে।’ 

নিহত আমিরুল ইসলামের বাড়িতে প্রতিবেশির ভিড়এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বর ফিরোজ আহমেদ কটা বলেন, ‘আগের হত্যা মামলার বাদীপক্ষ এ কাজ করেছে। আমি হাসপাতালে ভর্তি আছি। আর আমার ভাইয়েরাও কেউ জড়িত নয়।’ 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার, সমাজপতিদের দলাদলি ও উসকানিতে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে নেহেদ আলী (৬৫) ও বকুল আলী (৫৫) নামের আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন নিহত নেহেদ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১ এপ্রিল ২৮ জনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে আসামিরাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পালিয়ে যায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আজকের এই হত্যাকাণ্ড। প্রতিপক্ষের লোকজনই আমিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে। 

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, সন্ধ্যার দিকে মৃত অবস্থায় আমিরুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখমের চিহ্ন রয়েছে। আমিরুল ইসলামের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে আমিরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। পূর্বের হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় আসায় বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে আমিরুল নিহত হন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, মাদ্রাসা সুপারসহ তিনজন আটক

মধুচন্দ্রিমায় স্বামী নিহত, কফিন জড়িয়ে হিমাশি

বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক সাফিনুলের পরিবারের ৫৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

১৬ বছর আগে নিহত শিশু ও সাত বছর ধরে প্রবাসী অষ্টগ্রামে মামলার আসামি!

এটা ছোটখাটো অপহরণ: চবির ৫ শিক্ষার্থীকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত