Ajker Patrika

‘স্ত্রীর পরকীয়ার’ জেরে প্রবাসী স্বামী খুন, ৩৮ দিন পর তোলা হলো মরদেহ

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

মাগুরার মহম্মদপুরে ‘পরকীয়ার জেরে’ প্রবাসী স্বামীকে হত্যার অভিযোগে উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মা-মামাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন নিহতের ছেলে। এ ঘটনায় মৃত্যুর ৩৮ দিন পর আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ধোয়াইল গোরস্থানে থেকে নিহত ব্যক্তি আবু বক্কার শেখের (৫৫) মরদেহ কবর থেকে তুলে মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এর আগে ১১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বড় ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর (৩০) বাদী হয়ে তাঁর মা ও মামাসহ পাঁচজনকে আসামি করে মাগুরা আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আজ মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাসুদেব কুমার মালো। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কাজে কর্তব্যরত পুলিশ, চিকিৎসক এবং ডোম সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ধোয়াইল গোরস্থানে উৎসুক জনতার ভিড় জমান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২ অক্টোবর ভোরে আবু বক্কার শেখ মারা যান। তিনি প্রায় দীর্ঘ ৩০ বছর সৌদিতে ব্যবসা করতেন। এ কারণে এলাকায় তিনি ‘ধনী বক্কার’ নামে পরিচিত। সৌদিতে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী স্থানীয় রকিবুল ইসলাম হিরক নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এসব বিষয়ে নিয়ে তাঁকে অনেকবার সতর্ক করা হলেও তিনি শোনেননি। ঘটনার এক মাস আগে তাঁর স্ত্রী কথিত ওই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। এক সপ্তাহ পর বাড়িতে ফিরে আসলে তাঁর স্বামীসহ কয়েকজন তাঁর কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে স্বামীকে খুন করার হুমকি দেন।

ঘটনার একদিন আগে নিহতের শ্যালক মাছুদুর রহমানের বাড়িতে আসামিরা বসে আবু বক্কার শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে মোতাবেক ঘটনার দিন গত ২ অক্টোবর ভোর রাতে আবু বক্কারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর আসামিরা তড়িঘড়ি করে বক্কার শেখের মরদেহ দাফন করেন।

মামলার বাদী সিজান মাহমুদ সাগর জানান, তাঁর বাবার মরদেহ দাফনের পর বিশ্বস্ত কয়েকজনের কাছে মারা যাওয়ার রহস্য জানতে পারেন। তাঁর বাবা বক্কার শেখ মারা যাওয়ার ১০ দিন পর গত ১১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) তিনি মাগুরা আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাঁর মায়ের কথিত প্রেমিক রকিবুল ইসলাম হিরককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে তাঁর মা সিমা পারভীনকে। ৫ নম্বর আসামি করেছেন আপন মামা মাছুদুর রহমানকে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁর বাবার মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

গত ১২ অক্টোবর (বুধবার) মহম্মদপুর আমলি আদালত মাগুরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মু. হাবীবুর রহমান দরখাস্তটিকে অভিযোগ হিসেবে গণ্য করেন। পরে পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার খবর পেয়ে আসামিরা আত্মগোপন করেন বলে জানান তিনি।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত