Ajker Patrika

কান্নাকাটিতে ‘বিরক্ত’ হয়ে যমজ শিশুদের হত্যা করেছেন মা, দাবি পুলিশের

তেরখাদা (খুলনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ১৯
Thumbnail image

যমজ শিশুদের প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি ও স্বামীর অবহেলায় ‘বিরক্ত’ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর পুকুরে ফেলে দেন তাদের মা। পুলিশের কাছে এমনই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন নিহত দুই শিশুর মা কানিজ ফাতেমা কণা। এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় নিহত শিশুদের বাবা বাদী হয়ে কণাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

আজ শনিবার হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য নিহত শিশুদের মা কানিজ ফাতেমা কণাকে আদালতে আনা হবে বলে জানিয়েছেন তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল হক। যমজ শিশুর প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি ও স্বামীর অবহেলায় বিরক্ত হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে খোরশেদের বাড়ির পুকুর থেকে ওই দুই কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

অভিযুক্ত মা কানিজ ফাতেমা কণা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের খোরশেদের মেয়ে এবং মাসুম বিল্লাহর স্ত্রী। মাসুম বিল্লাহ একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। 

ওসি মো. জহুরুল হক জানান, বছর চারেক আগে মাসুম বিল্লাহর সঙ্গে বিয়ে হয় কণার। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা অন্তঃসত্ত্বা হন। এরপর কণাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী মাসুম বিল্লাহ। বাচ্চা হওয়ার পর থেকে গত দুই মাস ১১ দিন বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন কণা। এতে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এদিকে বাচ্চা দুটি প্রচুর কান্নাকাটি করত। এ বিষয়ে কণা তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁকে আগামী মাসে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন। 

ওসি আরও জানান, কিন্তু শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ২ মাস ১১ দিন বয়সী মনি ও মুক্তা কান্নাকাটি করছিল। প্রথমে কণা তাদের দুধ খাওয়ান। এর পরও তারা থামছিল না। রাত ৩টার দিকে বাচ্চা দুটির মুখে চড় মারেন কণা। পরে মুখে বালিশচাপা দিয়ে তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। পরে হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শিশুদের মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন তিনি। 

পুলিশ জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মরদেহ দুটির সুরাতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরপর ওই পরিবারের প্রতিটি সদস্যের ওপর নজর রাখেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তেরখাদা থানার এসআই মো. এনামুল হক। পরে বিকেলে কণা, তাঁর বাবা ও মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কণা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। এরপর পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেন এবং ঘটনার বিস্তারিত বলেন ওই মা। পরে অপর দুজনকে ছেড়ে দিয়ে কণাকে আটকে রাখে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে যমজ শিশু হত্যার দায়ে নিহতদের পিতা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত