Ajker Patrika

যৌতুকের বলি: ভারতে দুই সন্তানসহ ৩ সহোদর বোনের আত্মহত্যা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ মে ২০২২, ২৩: ১৭
Thumbnail image

ভারতের রাজস্থান রাজ্যে একসঙ্গে যৌতুকের বলি হলেন তিন বোন এবং তাঁদের দুই সন্তান। তাঁরা একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনা রাজ্যজুড়ে তোলপাড় তুলেছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশু দুটির মধ্যে একটির বয়স ৪ বছর, অপরটির মাত্র ২৭ দিন। আর নিহত তিন বোনের মধ্যে দুজন ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। তিন বোন কালু মীনা (২৫), মমতা (২৩) এবং কমলেশ (২০) দুদু জয়পুর জেলার চাপিয়া গ্রামের একই পরিবারের তিন ভাইকে বিয়ে করেছিলেন। 

তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নিয়মিত নির্যাতন করতেন। কথায় কথায় মারধরও করতেন। 

তাঁদের চাচাতো বোন হেমরাজ মীনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যৌতুকের জন্য আমার বোনদের নিয়মিত মারধর করা হতো এবং নানাভাবে নির্যাতন করত। গত ২৫ মে তারা নিখোঁজ হয়। আমরা হন্যে হয়ে তাদের খুঁজতে থাকি। স্থানীয় পুলিশ স্টেশন, হেল্পলাইন এবং জাতীয় মহিলা কমিশনে এফআইআর করি। কিন্তু কারও কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পাইনি।’ 

তিন বোনের কেউই কোনো সুইসাইড নোট রেখে যাননি। তবে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কনিষ্ঠ বোন কমলেশের একটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি হিন্দিতে লিখেছেন, ‘আমরা এখন চলে যাচ্ছি, তোমরা খুশি থাকো, আমাদের মৃত্যুর কারণ আমাদের শ্বশুরবাড়ি, প্রতিদিন মরার চেয়ে একবার মরে যাওয়াই ভালো! তাই, আমরা একসঙ্গে মরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আশা করি, পরবর্তী জীবনে আমরা তিনজন একসঙ্গে থাকব। আমরা মরতে চাই না। কিন্তু আমাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের নির্যাতন করে। আমাদের মৃত্যুর জন্য আমাদের বাবা-মাকে দায়ী করবেন না।’ 

সন্তানসহ তিন বোন নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর আজ শনিবার সকালে দুদু গ্রামের একটি কুয়া থেকে পুলিশ তিন বোন এবং দুই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। 

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নির্যাতিতাদের স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। যৌতুকের কারণে মৃত্যুর একটি মামলা এখন মূল এফআইআরে যুক্ত করা হবে। তাঁদের মৃত্যুর ঘটনায় তিন স্বামী, শাশুড়ি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। 

রাজস্থানের নারী অধিকার কর্মীরা এই মামলার উচ্চ-পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। তাঁরা বলছেন, রাজস্থানের এমন ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার। এমন আচরণে এটা স্পষ্ট যে এখানে নারীদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। মরদেহ উদ্ধারে চার দিন সময় নেওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত