Ajker Patrika

সিনেমাকেও হার মানায় খুন হওয়া ভারতীয় মডেল দিব্যার জীবন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩: ৪২
Thumbnail image

মাত্র ২৭ বছর বয়সে খুন হলেন ভারতীয় মডেল দিব্যা পাহুজা। সাত বছর জেলে থেকে সম্প্রতি তিনি জামিনে বেরিয়েছিলেন। গত ২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) রাতে হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রাম জেলায় অবস্থিত সিটি পয়েন্ট হোটেলে খুন করা হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ উঠেছে, হোটেলের মালিক অভিজিৎ সিং নিজেই দিব্যাকে হত্যা করেছেন। একটি সিসিটিভি ফুটেজে দিব্যার মরদেহটি চাদরে মুড়িয়ে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে একটি বিএমডব্লিউ গাড়িতে নিয়ে তুলতে দেখা গেছে। 

কিন্তু কে এই দিব্যা, আর কেনই বা তিনি সাত বছর জেলে ছিলেন এবং জেল থেকে বেরিয়ে খুনের শিকার হলেন? 

এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর বরাতে যা জানা গেছে, তা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। এক গ্যাংস্টারের সঙ্গে প্রেম ছিল তাঁর। পরে ওই গ্যাংস্টারকেই হত্যার দায়ে জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। 

গুরুগ্রামের খুব সাধারণ এক পরিবার থেকে নিজেকে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন দিব্যা। তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা গুরুগ্রামের বলদেব নগরে এখনো সবজি বিক্রি করেন। 

স্কুলে পড়ার সময়ই আকর্ষণীয় চেহারার দিব্যার পরিচয় হয়েছিল গুরুগ্রামের গ্যাংস্টার সন্দীপ গোডালের। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্কুল-কলেজ পেরিয়ে বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে স্নাতক পড়াশোনা শুরু করেছিলেন দিব্যা। পাশাপাশি মডেলিংয়েও কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝপথে কলেজ ছেড়ে দেন এবং মডেলিংকেই পুরোপুরিভাবে পেশা হিসাবে বেছে নেন।

মডেল হওয়ার পর দিব্যার সঙ্গে গ্যাংস্টার সন্দীপের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। সন্দীপের বিরুদ্ধে সে সময় খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ বেশ কিছু মামলা ছিল। গুরুগ্রাম পুলিশের খাতায় তিনি ছিলেন মোস্ট ওয়ান্টেড।

২০১৬ সালে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, মুম্বাই বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে অবস্থান করছেন সন্দীপ এবং দিব্যা। খবর পেয়েই গুরুগ্রাম পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছায়। পর ওই হোটেলেই পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় সন্দীপের। যদিও পরে সেই এনকাউন্টার নিয়েই তদন্ত প্রশ্ন ওঠে এবং তদন্ত শুরু হয়।

অভিযোগ ওঠে সন্দীপকে ফাঁদে ফেলে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দিব্যা নিজেই। পরে ভুয়া এনকাউন্টারে প্রেমিককে হত্যায় সহযোগিতা করার দায়ে দিব্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে কারাদণ্ডও দেয় আদালত।

গত সাত বছর ধরে মুম্বাইয়ের বায়কুলা জেলই ছিল দিব্যার ঠিকানা। গত বছরের জুনে জেল থেকে জামিনে বের হন তিনি। সে সময় সাংবাদিকদের কাছে আইন নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর আগেই শত্রুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।

পুলিশ জানিয়েছে, দিব্যাকে হত্যায় অভিযুক্ত হোটেল মালিক অভিজিৎ দাবি করেছেন—দিব্যার মোবাইলে তাঁর অনেক অশ্লীল ছবি ছিল। সেই ছবি দেখিয়ে বারবার তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতেন দিব্যা। পরে কৌশলে দিব্যাকে নিজের হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাঁর মোবাইলের পাসওয়ার্ড চেয়েছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু সেই পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় দিব্যাকে গুলি করে খুন করেছেন তিনি।

অভিজিতের দাবির সত্যতা কতটুকু—তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি দিব্যার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক ছিল, সেই বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে। 

এদিকে দিব্যার পরিবারের অভিযোগ, গ্যাংস্টার সন্দীপ গোডালের বোন সুদেশ কাতারিয়া ও ভাই ব্রহ্ম প্রকাশই দিব্যাকে খুনের ছক কষেছিলেন। অভিজিৎকে খুনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

অভিজিৎ পুলিশকে জানিয়েছেন, দিব্যার দেহ গায়েব করে দেওয়ার জন্য দুই সঙ্গীকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। তবে দেহটি কোথায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে তা এখনো বার করতে পারেনি পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত