Ajker Patrika

কিডনি বেচাকেনায় ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল, টার্গেট মিয়ানমার

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৩৯
কিডনি বেচাকেনায় ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল, টার্গেট মিয়ানমার

ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল। এশিয়াজুড়ে তাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের চিকিৎসা ব্যবসা। গর্ব করে বলে, তারা বছরে ১ হাজার ২০০টিরও বেশি কিডনি প্রতিস্থাপনে সহায়তা করে। যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্ব থেকে ধনী রোগীরা তাদের কাছে আসে অস্ত্রোপচারের জন্য।

ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্য। চিকিৎসার মতো ‘মহান’ সেবা বাণিজ্যের আড়ালে কিডনি ব্যবসার বৈশ্বিক চক্রে জড়িয়ে গেছে এই হাসপাতাল। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ধনী রোগীদের কাছে অঙ্গ বিক্রি করছেন মিয়ানমারের দরিদ্র তরুণ-যুবকেরা।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি হাসপাতাল গ্রুপটি ‘কিডনির বিনিময়ে টাকা’ লেনদেনের একটি অপরাধী চক্রে জড়িয়ে পড়েছে। তারা মিয়ানমারের দরিদ্র মানুষদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করতে প্রলুব্ধ করছে।

ভারতে অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ বেচাকেনা বেআইনি। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই এমন আইন আছে। টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, মিয়ানমার থেকে দরিদ্র গ্রামীণ যুবকদের অ্যাপোলোর মর্যাদাপূর্ণ দিল্লি হাসপাতালে আনা হচ্ছে। মিয়ানমারেরই ধনী রোগীদের তাঁরা কিডনি দান করছেন। বিনিময়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে।

অ্যাপোলোর ফ্ল্যাগশিপ ইন্দ্রপস্থ হাসপাতাল।এই চক্রের একজন এজেন্ট টেলিগ্রাফের প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘এটি বড় ব্যবসা। এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দুই দেশের সরকারের মধ্যে এ-সংক্রান্ত বাধাগুলো অপসারণে যোগসাজশে কাজ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব সময় সরকারকে মিথ্যা তথ্য দেয়।’

কিডনি বেচাকেনার পুরো প্রক্রিয়াটিতে অনেকগুলো ধাপে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়। পরিচয় সম্পর্কিত নথি জাল করা হয়। দাতাকে রোগীর আত্মীয় হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য পারিবারিক ছবি মঞ্চায়িত করা হয়। যেখানে ভারত এবং মিয়ানমারের আইন অনুসারে, একজন রোগী স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে অঙ্গ নিতে পারেন না।

অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা তথ্য দেখে তারা হতবাক হয়েছে। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করবেন বলেও জানিয়েছে তারা। কর্তৃপক্ষ বলেছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো বেআইনি কার্যকলাপের জন্য আমাদের ইচ্ছাকৃত জটিলতা বা গোপন অনুমোদনের কোনো সুযোগ নেই।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় সার্জনদের একজন ডা. সন্দীপ গুলেরিয়া। তিনি যুক্তরাজ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা পদ্মশ্রী পেয়েছেন। রোগী এবং এজেন্টরা কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার পরিচালনাকারী সার্জন হিসেবে তাঁর নাম বলেছেন।

তবে ডা. সন্দীপ বলেছেন, টেলিগ্রাফ যেসব তথ্য অনুসন্ধানে পেয়েছে তা তিনি ঘুণাক্ষরেও জানতেন না। তা ছাড়া এসব দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গ প্রতিস্থাপন চক্রের সঙ্গে তাঁর নাম যুক্ত করাটা ‘আপত্তিকর এবং হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেন ডা. সন্দীপ।

অ্যাপোলো হাসপাতালের সার্জন ডা. সন্দীপ ভারতের পদ্মশ্রী পদক পেয়েছেন।অথচ ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য ডেকান হেরাল্ডে ২০১৬ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপোলোর দিল্লি হাসপাতালের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি কিডনি কেলেঙ্কারির ঘটনায় ডা. সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে। ওই প্রতিবেদনকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এই সম্মানিত চিকিৎসক।

‘কিডনির বিনিময়ে নগদ টাকা’ এই চক্র সম্পর্কে টেলিগ্রাফ প্রথম জানতে পারে দাও সো সোয়ে নামে ৫৮ বছর বয়সী এক রোগী যখন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে একটি কিডনির জন্য ৮০ লাখ মিয়ানমার কিয়াত বা প্রায় ৩৯ হাজার ডলার খরচ করেন।

তাঁর চিকিৎসার নথিপত্রে দেখা যায়, দিল্লিতে অ্যাপোলোর ফ্ল্যাগশিপ হাসপাতাল ইন্দ্রপ্রস্থ হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, তাঁর কিডনি দাতা ছিলেন সম্পূর্ণ অপরিচিত।

এই রোগী টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘আমি জানি যে, মিয়ানমার এবং ভারতের আইনে অপরিচিত ব্যক্তির অঙ্গ দান করার অনুমতি নেই। কিন্তু যেহেতু আমরা মিয়ানমারে আছি, তাই এজেন্ট আমাদের আত্মীয় বলে ভুয়া গল্প বলতে শিখিয়েছিল।’

টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানী প্রতিবেদককে এমন গল্পই বলেছেন ডা. হটেট হটেট মিন্ট ওয়াই। তাঁর বিজনেস কার্ডে লেখা রয়েছে, তিনি মিয়ানমারে অ্যাপোলো অফিসের জন্য কাজ করেন। আত্মীয়দের মধ্যে অঙ্গ দাতা পাওয়া না গেলে রোগীর লোকজন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে প্রতিবেদককে জানান তিনি। ওই প্রতিবেদক পরিচয় গোপন রেখে তাঁর সঙ্গে আলাপ করেছিলেন।

অ্যাপোলোর সঙ্গে যুক্ত ফিয়ো খান্ট হেইন নামে আরেক ব্যক্তি টেলিগ্রাফকে বলেছেন, মিয়ানমারে ৮০ শতাংশ কিডনি প্রতিস্থাপন হয় অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে। বাকি মাত্র ২০ শতাংশ দাতা থাকেন আত্মীয়।

ফিয়ো খান্ট বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করতে আগ্রহী মানুষ খুঁজে বের করেন। এরা সবাই দরিদ্র। এই এজেন্টদের অনেকে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে এভাবে দরিদ্র কিডনি দাতা খুঁজে দেওয়ার কাজ করছে। তারা একটি কিডনির জন্য প্রায় ৪ হাজার ডলার চার্জ করে।

ধারণা করা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রতিস্থাপিত অঙ্গের ১০টির মধ্যে একটি পাচারকৃত। যুক্তরাজ্যের সেন্ট মেরি ইউনিভার্সিটির চিকিৎসা নীতিশাস্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং অঙ্গ পাচার বিশেষজ্ঞ ডা. ট্রেভর স্ট্যামারস টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘আমরা হাজার হাজার অঙ্গ পাচারের কথা বলছি। এটি বিশাল বৈশ্বিক বাণিজ্য।’

এমনকি যুক্তরাজ্য থেকেও এমন অনেকে টাকার বিনিময়ে অঙ্গ সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করিয়ে নেন। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কিডনি বিশেষজ্ঞরা টেলিগ্রাফকে বলেন, অপরিচিতদের দান করা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে ভ্রমণকারী রোগী এখানেও রয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ। তাঁরা ব্রিটেন থেকে বিদেশে যাচ্ছেন। ফিরে আসছেন নতুন কিডনি নিয়ে। বলা হয় আত্মীয় বা এমন কারও কাছ থেকে নিয়েছেন। কিন্তু এটি যাচাই করা কঠিন।

এনএইচএসের উপাত্তে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকে এনএইচএসের অন্তত ১৫৮ জন রোগী অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। পরিসংখ্যান অনুসারে, এই অপারেশনগুলোর বেশির ভাগই (২৫ শতাংশ) ভারতে সম্পন্ন হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অবৈধ বাণিজ্য সেসব দেশেই হচ্ছে, যেসব দেশে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা শিল্প বিকাশমান। এর মধ্যে ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতাল অন্যতম প্রধান।

প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এর আগেও কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ওঠার পর দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ হাসপাতালের দুই কর্মকর্তাকে ২০১৬ সালে এজেন্ট এবং দাতাদের একটি চক্রের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত এখনো চলছে।

অ্যাপোলো সেই সময় বলেছিল, রোগী এবং হাসপাতালের সঙ্গে প্রতারণা করতে সুপরিকল্পিতভাবে একটি চক্র এই কাজ করেছিল। তারা বলেছে, এই ঘটনার পর পদ্ধতিগত ত্রুটিগুলো সংশোধন করা হয়েছে। তবে টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে স্পষ্ট, এই হাসপাতালের কার্যক্রমে গুরুতর ত্রুটিগুলো রয়েই গেছে।

টেলিগ্রাফের আন্ডারকভার রিপোর্টারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি কথোপকথনে মিয়ানমারের এজেন্ট এবং অ্যাপোলো কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে অপরিচিত ব্যক্তির কিডনি পাওয়ার কৌশল বাতলে দিয়েছেন।

পুরো প্রক্রিয়ার বর্ণনায় মিয়ানমারে অ্যাপোলোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও এজেন্টরা বলেন, রোগী এবং কিডনি দাতাকে আত্মীয় প্রমাণ করার জন্য বংশলতিকা, পরিবারের নথি, বিয়ের শংসাপত্র এবং ছবি জাল করা হয়। ভারতে যাওয়ার আগে উভয় পক্ষকে এক জায়গায় করে গ্রুপ ছবি তোলা হয়। ছবিগুলো পুরোনো দেখাতে সেগুলো প্রিন্ট করার পর দুমড়ে-মুচড়ে রেখে দেওয়া হয়। এরপর তাদের একসঙ্গে কিছুদিন বসবাস করতে বলা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পন্ন করার পর নথিপত্রগুলো হাসপাতালের অনুমোদন কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিটি ধাপে আলাদা খরচ রয়েছে। টেলিগ্রাফ প্রতিবেদকের কাছে সেসবের বিস্তারিত জানিয়েছেন এজেন্টরা। একটি বংশলতিকা তৈরির জন্য ৪০০ ডলার, বিমান ভাড়া প্রতি ধাপে ২৫০ ডলার এবং মেডিকেল বোর্ডের জন্য নিবন্ধন খরচ ২০০ ডলার।

অ্যাপোলো হাসপাতালের নথি অনুযায়ীই একজন রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনে মোট খরচ হয় ২১ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি। তবে কিডনি দাতাকে দেওয়া খরচের হিসাব এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।

অ্যাপোলোর মিয়ানমার অপারেশনের প্রধান ডা. থেট উ টেলিগ্রাফ প্রতিবেদককে জানান, রোগী তাঁর অঙ্গ দাতাকে নিজের পছন্দমতো বাছাই করতে পারেন। সবকিছু চূড়ান্ত হলে তারপরই অর্থ লেনদেন হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৭০ বা ৮০ লাখ মিয়ানমার কিয়াতে চুক্তি হয়। যা মার্কিন মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ ডলার। আর বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ টাকার বেশি পান একজন কিডনি দাতা।

অগ্রিম নগদ টাকা দেওয়া হয়। এরপর দাতাকে কিডনি প্রতিস্থাপন অনুমোদন কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের জন্য ভারতে পাঠানো হয়। এই কমিটিতে অ্যাপোলো হাসপাতালের কর্মকর্তা এবং সরকার নিযুক্ত সদস্যরা থাকেন।

এই চক্রে জড়িত এজেন্টদের একজনের মতে, বোর্ডটি শুধু নামেই! বোর্ডের সদস্যরা কিছু ভাসা ভাসা প্রশ্ন করেন। অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ যদিও এটি অস্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের বহু মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করছেন। কিডনি ব্যবসার এই চক্র মিয়ানমারের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মানুষের দারিদ্র্যকে পুঁজি করে অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর অনেক চিকিৎসক আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। শাসক জান্তার বিরোধিতা করার কারণে তাঁদের পরবর্তীতে আত্মগোপনে চলে যেতে হয়েছে। এতে দেশটির হাসপাতালগুলোর এখন বেহাল দশা। জনগণ মৌলিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা এবং কাজ পাওয়া কঠিন হওয়ায় অর্থনীতিও ভেঙে পড়ছে। দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ (আনুমানিক ২ কোটি ২০ লাখ) দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। বিশ্বব্যাংকের মতে, অন্তত ১৫ বছরের মধ্যে এত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েনি মিয়ানমার।

এই পটভূমিতে অ্যাপোলোর সঙ্গে যুক্ত একটি কিডনি পাচার চক্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী। কিডনি বিক্রি করা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে এর প্রমাণও পেয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।

দ্য টেলিগ্রাফ মন্তব্যের জন্য মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দিল্লির মিয়ানমার দূতাবাস এবং ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

দ্য টেলিগ্রাফ থেকে অনুবাদ (সংক্ষেপিত) করেছেন জাহাঙ্গীর আলম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

আজকের রাশিফল: তরকারিতে লবণ বেশি হলেই তুলকালাম বাধাবেন না

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

আজকের রাশিফল: তরকারিতে লবণ বেশি হলেই তুলকালাম বাধাবেন না

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

আজকের রাশিফল: তরকারিতে লবণ বেশি হলেই তুলকালাম বাধাবেন না

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১০
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।

গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।

এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।

অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

আজকের রাশিফল: তরকারিতে লবণ বেশি হলেই তুলকালাম বাধাবেন না

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর হত্যা মামলা করার নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৫৮
চিত্রনায়ক সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত
চিত্রনায়ক সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।

সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।

রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।

ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।

কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।

২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।

রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

ভক্তদের মানববন্ধন

এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

আজকের রাশিফল: তরকারিতে লবণ বেশি হলেই তুলকালাম বাধাবেন না

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত