পরাগ মাঝি

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ঙ্কর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সেই সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিল এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী।
রানি ভিক্টোরিয়ার নাতি ছিলেন প্রিন্স আলবার্ট ভেক্টর। রাজপুত বলে কথা—দেখতে যেমন সুদর্শন, চলাফেরায় তেমনি স্মার্ট। সেই অভিজাত যুবকের সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হোয়াইট চ্যাপেল এলাকার এক যৌনকর্মীর। সেই সম্পর্ক গভীর হতেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। রাজপরিবারের ভেতরেও চাউর হয় সেই খবর। রাজপরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, যে করেই হোক—দুনিয়া থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলতে হবে। এরপর ভাড়া করা হয় এক ভয়ঙ্কর খুনিকে, যিনি একের পর এক খুন করতে থাকেন। যারা এ ঘটনার ছিটেফোঁটাও জানত, তাদেরও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে প্রায় সব প্রমাণ মুছে যায়।
কিন্তু সেই যে কথায় আছে—ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। ৮৮ বছর পরে সেই কলে বাতাস লাগে। ব্রিটিশ লেখক স্টিফেন নাইট ১৯৭৬ সালে ‘জ্যাক দ্য রিপার: দ্য ফাইনাল সলিউশন’ নামে একটি বই লেখেন। তাতে তিনি বলেন, নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাত ছিল। তাদের গোপন নির্দেশে যৌনকর্মী ও তাঁর শিশুটিকে হত্যা করা হয়। আরও যারা বিষয়টি সম্পর্কে জানত, তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও স্টিফেনের এই দাবি অনেকে উড়িয়ে দেন।
স্টিফেন নাইট বলেছিলেন, যাঁকে দিয়ে এই খুনগুলো করানো হয়েছিল, তাঁর নাম জ্যাক দ্য রিপার। পৃথিবীর কেউই তাঁকে কখনো খুঁজে পায়নি। কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেই রহস্যেরও কোনো কিনারা হয়নি।
জ্যাক দ্য রিপারের প্রথম খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় তখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। পথের দুপাশে গড়ে ওঠা পাব, নাইট ক্লাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। খদ্দের সামলে সুনসান রাস্তা ধরে একা হেঁটে যাচ্ছিলেন সেই যৌনকর্মী। তাঁর ক্লান্ত পায়ের ছোট ছোট ছাপ আর পাদুকা থেকে ভেসে আসা আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন না, আলো-আঁধারি আর কুয়াশার আড়াল থেকে তাঁকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে হেঁটে আসছে আরেকটি ছায়ামূর্তি; শিকার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় সাবধানী ক্ষুধার্ত এক বাঘ। সারা শরীর ঢেকে রাখা ছায়ামূর্তিটি ঠিক যখন পেছনে চলে এল, তখনই তার অস্তিত্ব টের পেলেন মেয়েটি। ভাবলেন, তবে কি শেষ রাতেও আরেকটি খদ্দের জুটে গেল!
সন্দেহ আর ভয়ে হাঁটা থামিয়ে একবার পেছনে ঘুরে তাকাতেই ছায়ামূর্তির দুই হাত তাঁর গলায় চেপে বসল; নিস্তেজ হয়ে এল শরীর। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। এরপর সেই অচেতন শরীরের ওপর চেপে বসল ছায়ামূর্তিটি। শরীরের ভাঁজ থেকে বের করে আনল ১২ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরি! রক্তে ভেসে গেল গলিপথ। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে এল। তারা মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করল। পরিচয়ও মিলে গেল—মেয়েটি পেশায় যৌনকর্মী।
এরপর এল দ্বিতীয় শিকারের পালা, তারপর তৃতীয়—এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কালো ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন জ্যাক দ্য রিপার। বিশ্বজুড়ে পরিচিত হলেন ‘সিরিয়াল কিলার’ নামে। প্রচলিত ছিল, অন্তত পাঁচজন নারী তাঁর শিকারে পরিণত হয়। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া নারীর সংখ্যা আসলে ১১ জনের বেশি।
জ্যাক দ্য রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া প্রথম নারী ছিলেন ম্যারি অ্যান নিকোলস। ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে যখন পুলিশ তাঁর লাশ খুঁজে পায়, তখন ছুরির আঘাতে শরীর এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। গলার মাংসপেশিও ছিল বিচ্ছিন্ন। নির্মমভাবে চিড়ে ফেলা হয়েছিল তাঁর তলপেট থেকে শরীরের নিচের অংশ। নাড়িভুঁড়িও বেরিয়ে এসেছিল। এতগুলো খুনে জ্যাক দ্য রিপার সময় নিয়েছিলেন মাত্র তিন মাস। এর পরই তিনি হাওয়ায় মিশে যান। কেউ তাঁকে আর খুঁজে পায়নি।
জ্যাকের হাতে খুন হওয়া ম্যারি অ্যান নিকোলস ছাড়াও অন্য যাঁদের নাম জানা যায় তাঁরা হলেন: অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজাবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথারিন অ্যাডোজ এবং ম্যারি জ্যান ক্যালি। এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী। তাঁর সবাই ছিলেন হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায়। প্রায় একই রকম পদ্ধতিতে সবাইকে খুন করেছিলেন জ্যাক। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পুলিশ যখন লাশ খুঁজে পায়, তখন তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গ ছিল অনুপস্থিত; বিশেষ করে কিডনি ও জরায়ু। কেন সবাইকে এভাবে খুন করা হলো, তা কেউই জানতে পারেনি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিক্টোরিয়ান যুগের এই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে লন্ডনের মতো বড় শহরে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের গণ্ডি পেরিয়ে বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছিল সারা দুনিয়ায়। এরপর লোকদেখানো হলেও হত্যাকারীকে ধরার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল পুলিশ। ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ নামে পরিচিত বিশ্বের প্রাচীনতম মেট্রোপলিটন পুলিশের বয়স তখন ৫৯ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তারাও কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না। সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার ছিল, পুলিশ সেই অপরাধীকে কোনো দিন শনাক্তই করতে পারেনি। হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে না পারা নিয়ে লন্ডনের ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পাঠক, এটুকু পড়ে আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, জ্যাক দ্য রিপারকে চিহ্নিত করাই না গেল, তাঁর নাম প্রকাশ্যে এল কী করে? এবার সেটা বলি, আসলে সংবাদপত্রের মাধ্যমেই সন্দেহভাজন খুনির নামটি প্রথম চাউর হয়েছিল। শুরুর দিকে সবাই যখন খুনির পরিচয় জানতে উন্মুখ, তখন অনেকে পুলিশ ও সংবাদপত্রের কাছে উড়োচিঠি লিখে নিজেকে খুনি দাবি করতেন। এমনই একজন নিজেকে খুনি দাবি করে একটি পত্রিকার কাছে চিঠি লিখেছিলেন। আর চিঠির নিচে ‘জ্যাক দ্য রিপার’ বলে সই করেন। ওই চিঠিতে হত্যাকাণ্ডের যে বিবরণ ছিল, তার সঙ্গে নামের যথার্থতা পাওয়ায় ‘জ্যাক দ্য রিপার’ নামেই পরিচিতি পান সন্দেহভাজন খুনি। যদিও সেই চিঠি পরে জাল প্রমাণিত হয়েছিল।
১৩৬ বছর আগের সেই ঘটনার কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় রহস্য এখনো জীবন্ত। আজকের দিনেও মানুষ জ্যাক দ্য রিপারের পরিচয় খুঁজে বেড়ায়। এ কারণেই হয়তো খুনের প্রায় ১০০ বছর পর মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জ্যাক দ্য রিপারের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল তৈরি করে। যেন তারা সেই সময়ের রেকর্ডগুলো দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারে। ওই সময় খুনের পর জ্যাক দ্য রিপারের প্রকৃত পরিচয় জানতে দুই হাজারের বেশি মানুষকে জেরা করেছিল পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় ছিল তিন শতাধিক, আর গ্রেপ্তার হয়েছিল অন্তত ৮০ জন।
জ্যাক দ্য রিপার হিসেবে যাঁকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি হলেন ফ্রান্সিস টাম্বলিটি নামের এক আমেরিকান তরুণ। ১৮৮৮ সালের প্রথম হত্যাকাণ্ডটির দুই মাস আগে তিনি ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। তাঁর জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই তাঁকে জ্যাক দ্য রিপার বলে সাব্যস্ত করেন। কারণ, হোয়াইট চ্যাপেলের কাছেই টাম্বলিটি বসবাস করতেন। ওই এলাকা সম্পর্কে তাঁর ভালো জানাশোনাও ছিল। পাশাপাশি একজন চিকিৎসা সহকারী হিসেবেও তিনি প্রশিক্ষিত ছিলেন। মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুঁজে বের করা এবং সেগুলো দ্রুত অপসারণে বিশেষ দক্ষ ছিলেন তিনি। টাম্বলিটি তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। কারণ, তিনি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর স্ত্রীও যৌনকর্মী। ফলে নারীদের প্রতি তাঁর প্রবল ঘৃণা ছিল। অনুমান করা হয়, সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন।
জ্যাক দ্য রিপারকে নিয়ে গল্প, কবিতা আর উপন্যাস কম লেখা হয়নি। তাঁকে নিয়ে সিনেমাও হয়েছে। ২০১৫ সালে জ্যাক দ্য রিপারের নামে একটি জাদুঘর করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস। পরে বিক্ষোভের মুখে সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়। ২০০৬ সালে বিবিসির এক ম্যাগাজিনে জ্যাক দ্য রিপারকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, জ্যাক দ্য রিপার আসলে কে ছিলেন, তা খুঁজে বের করার সব প্রমাণই পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। সন্দেহভাজন খুনি এবং সাক্ষীদের কেউই আর বেঁচে নেই, যে কারণে জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় কোনো দিনই জানবে না পৃথিবী। নিস্তব্ধ রাতের খুনের মতোই নিভৃতে হারিয়ে গেল ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের পরিচয়।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ঙ্কর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সেই সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিল এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী।
রানি ভিক্টোরিয়ার নাতি ছিলেন প্রিন্স আলবার্ট ভেক্টর। রাজপুত বলে কথা—দেখতে যেমন সুদর্শন, চলাফেরায় তেমনি স্মার্ট। সেই অভিজাত যুবকের সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হোয়াইট চ্যাপেল এলাকার এক যৌনকর্মীর। সেই সম্পর্ক গভীর হতেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। রাজপরিবারের ভেতরেও চাউর হয় সেই খবর। রাজপরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, যে করেই হোক—দুনিয়া থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলতে হবে। এরপর ভাড়া করা হয় এক ভয়ঙ্কর খুনিকে, যিনি একের পর এক খুন করতে থাকেন। যারা এ ঘটনার ছিটেফোঁটাও জানত, তাদেরও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে প্রায় সব প্রমাণ মুছে যায়।
কিন্তু সেই যে কথায় আছে—ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। ৮৮ বছর পরে সেই কলে বাতাস লাগে। ব্রিটিশ লেখক স্টিফেন নাইট ১৯৭৬ সালে ‘জ্যাক দ্য রিপার: দ্য ফাইনাল সলিউশন’ নামে একটি বই লেখেন। তাতে তিনি বলেন, নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাত ছিল। তাদের গোপন নির্দেশে যৌনকর্মী ও তাঁর শিশুটিকে হত্যা করা হয়। আরও যারা বিষয়টি সম্পর্কে জানত, তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও স্টিফেনের এই দাবি অনেকে উড়িয়ে দেন।
স্টিফেন নাইট বলেছিলেন, যাঁকে দিয়ে এই খুনগুলো করানো হয়েছিল, তাঁর নাম জ্যাক দ্য রিপার। পৃথিবীর কেউই তাঁকে কখনো খুঁজে পায়নি। কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেই রহস্যেরও কোনো কিনারা হয়নি।
জ্যাক দ্য রিপারের প্রথম খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় তখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। পথের দুপাশে গড়ে ওঠা পাব, নাইট ক্লাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। খদ্দের সামলে সুনসান রাস্তা ধরে একা হেঁটে যাচ্ছিলেন সেই যৌনকর্মী। তাঁর ক্লান্ত পায়ের ছোট ছোট ছাপ আর পাদুকা থেকে ভেসে আসা আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন না, আলো-আঁধারি আর কুয়াশার আড়াল থেকে তাঁকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে হেঁটে আসছে আরেকটি ছায়ামূর্তি; শিকার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় সাবধানী ক্ষুধার্ত এক বাঘ। সারা শরীর ঢেকে রাখা ছায়ামূর্তিটি ঠিক যখন পেছনে চলে এল, তখনই তার অস্তিত্ব টের পেলেন মেয়েটি। ভাবলেন, তবে কি শেষ রাতেও আরেকটি খদ্দের জুটে গেল!
সন্দেহ আর ভয়ে হাঁটা থামিয়ে একবার পেছনে ঘুরে তাকাতেই ছায়ামূর্তির দুই হাত তাঁর গলায় চেপে বসল; নিস্তেজ হয়ে এল শরীর। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। এরপর সেই অচেতন শরীরের ওপর চেপে বসল ছায়ামূর্তিটি। শরীরের ভাঁজ থেকে বের করে আনল ১২ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরি! রক্তে ভেসে গেল গলিপথ। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে এল। তারা মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করল। পরিচয়ও মিলে গেল—মেয়েটি পেশায় যৌনকর্মী।
এরপর এল দ্বিতীয় শিকারের পালা, তারপর তৃতীয়—এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কালো ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন জ্যাক দ্য রিপার। বিশ্বজুড়ে পরিচিত হলেন ‘সিরিয়াল কিলার’ নামে। প্রচলিত ছিল, অন্তত পাঁচজন নারী তাঁর শিকারে পরিণত হয়। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া নারীর সংখ্যা আসলে ১১ জনের বেশি।
জ্যাক দ্য রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া প্রথম নারী ছিলেন ম্যারি অ্যান নিকোলস। ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে যখন পুলিশ তাঁর লাশ খুঁজে পায়, তখন ছুরির আঘাতে শরীর এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। গলার মাংসপেশিও ছিল বিচ্ছিন্ন। নির্মমভাবে চিড়ে ফেলা হয়েছিল তাঁর তলপেট থেকে শরীরের নিচের অংশ। নাড়িভুঁড়িও বেরিয়ে এসেছিল। এতগুলো খুনে জ্যাক দ্য রিপার সময় নিয়েছিলেন মাত্র তিন মাস। এর পরই তিনি হাওয়ায় মিশে যান। কেউ তাঁকে আর খুঁজে পায়নি।
জ্যাকের হাতে খুন হওয়া ম্যারি অ্যান নিকোলস ছাড়াও অন্য যাঁদের নাম জানা যায় তাঁরা হলেন: অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজাবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথারিন অ্যাডোজ এবং ম্যারি জ্যান ক্যালি। এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী। তাঁর সবাই ছিলেন হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায়। প্রায় একই রকম পদ্ধতিতে সবাইকে খুন করেছিলেন জ্যাক। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পুলিশ যখন লাশ খুঁজে পায়, তখন তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গ ছিল অনুপস্থিত; বিশেষ করে কিডনি ও জরায়ু। কেন সবাইকে এভাবে খুন করা হলো, তা কেউই জানতে পারেনি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিক্টোরিয়ান যুগের এই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে লন্ডনের মতো বড় শহরে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের গণ্ডি পেরিয়ে বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছিল সারা দুনিয়ায়। এরপর লোকদেখানো হলেও হত্যাকারীকে ধরার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল পুলিশ। ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ নামে পরিচিত বিশ্বের প্রাচীনতম মেট্রোপলিটন পুলিশের বয়স তখন ৫৯ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তারাও কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না। সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার ছিল, পুলিশ সেই অপরাধীকে কোনো দিন শনাক্তই করতে পারেনি। হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে না পারা নিয়ে লন্ডনের ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পাঠক, এটুকু পড়ে আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, জ্যাক দ্য রিপারকে চিহ্নিত করাই না গেল, তাঁর নাম প্রকাশ্যে এল কী করে? এবার সেটা বলি, আসলে সংবাদপত্রের মাধ্যমেই সন্দেহভাজন খুনির নামটি প্রথম চাউর হয়েছিল। শুরুর দিকে সবাই যখন খুনির পরিচয় জানতে উন্মুখ, তখন অনেকে পুলিশ ও সংবাদপত্রের কাছে উড়োচিঠি লিখে নিজেকে খুনি দাবি করতেন। এমনই একজন নিজেকে খুনি দাবি করে একটি পত্রিকার কাছে চিঠি লিখেছিলেন। আর চিঠির নিচে ‘জ্যাক দ্য রিপার’ বলে সই করেন। ওই চিঠিতে হত্যাকাণ্ডের যে বিবরণ ছিল, তার সঙ্গে নামের যথার্থতা পাওয়ায় ‘জ্যাক দ্য রিপার’ নামেই পরিচিতি পান সন্দেহভাজন খুনি। যদিও সেই চিঠি পরে জাল প্রমাণিত হয়েছিল।
১৩৬ বছর আগের সেই ঘটনার কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় রহস্য এখনো জীবন্ত। আজকের দিনেও মানুষ জ্যাক দ্য রিপারের পরিচয় খুঁজে বেড়ায়। এ কারণেই হয়তো খুনের প্রায় ১০০ বছর পর মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জ্যাক দ্য রিপারের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল তৈরি করে। যেন তারা সেই সময়ের রেকর্ডগুলো দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারে। ওই সময় খুনের পর জ্যাক দ্য রিপারের প্রকৃত পরিচয় জানতে দুই হাজারের বেশি মানুষকে জেরা করেছিল পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় ছিল তিন শতাধিক, আর গ্রেপ্তার হয়েছিল অন্তত ৮০ জন।
জ্যাক দ্য রিপার হিসেবে যাঁকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি হলেন ফ্রান্সিস টাম্বলিটি নামের এক আমেরিকান তরুণ। ১৮৮৮ সালের প্রথম হত্যাকাণ্ডটির দুই মাস আগে তিনি ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। তাঁর জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই তাঁকে জ্যাক দ্য রিপার বলে সাব্যস্ত করেন। কারণ, হোয়াইট চ্যাপেলের কাছেই টাম্বলিটি বসবাস করতেন। ওই এলাকা সম্পর্কে তাঁর ভালো জানাশোনাও ছিল। পাশাপাশি একজন চিকিৎসা সহকারী হিসেবেও তিনি প্রশিক্ষিত ছিলেন। মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুঁজে বের করা এবং সেগুলো দ্রুত অপসারণে বিশেষ দক্ষ ছিলেন তিনি। টাম্বলিটি তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। কারণ, তিনি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর স্ত্রীও যৌনকর্মী। ফলে নারীদের প্রতি তাঁর প্রবল ঘৃণা ছিল। অনুমান করা হয়, সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন।
জ্যাক দ্য রিপারকে নিয়ে গল্প, কবিতা আর উপন্যাস কম লেখা হয়নি। তাঁকে নিয়ে সিনেমাও হয়েছে। ২০১৫ সালে জ্যাক দ্য রিপারের নামে একটি জাদুঘর করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস। পরে বিক্ষোভের মুখে সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়। ২০০৬ সালে বিবিসির এক ম্যাগাজিনে জ্যাক দ্য রিপারকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, জ্যাক দ্য রিপার আসলে কে ছিলেন, তা খুঁজে বের করার সব প্রমাণই পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। সন্দেহভাজন খুনি এবং সাক্ষীদের কেউই আর বেঁচে নেই, যে কারণে জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় কোনো দিনই জানবে না পৃথিবী। নিস্তব্ধ রাতের খুনের মতোই নিভৃতে হারিয়ে গেল ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের পরিচয়।
পরাগ মাঝি

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ঙ্কর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সেই সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিল এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী।
রানি ভিক্টোরিয়ার নাতি ছিলেন প্রিন্স আলবার্ট ভেক্টর। রাজপুত বলে কথা—দেখতে যেমন সুদর্শন, চলাফেরায় তেমনি স্মার্ট। সেই অভিজাত যুবকের সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হোয়াইট চ্যাপেল এলাকার এক যৌনকর্মীর। সেই সম্পর্ক গভীর হতেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। রাজপরিবারের ভেতরেও চাউর হয় সেই খবর। রাজপরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, যে করেই হোক—দুনিয়া থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলতে হবে। এরপর ভাড়া করা হয় এক ভয়ঙ্কর খুনিকে, যিনি একের পর এক খুন করতে থাকেন। যারা এ ঘটনার ছিটেফোঁটাও জানত, তাদেরও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে প্রায় সব প্রমাণ মুছে যায়।
কিন্তু সেই যে কথায় আছে—ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। ৮৮ বছর পরে সেই কলে বাতাস লাগে। ব্রিটিশ লেখক স্টিফেন নাইট ১৯৭৬ সালে ‘জ্যাক দ্য রিপার: দ্য ফাইনাল সলিউশন’ নামে একটি বই লেখেন। তাতে তিনি বলেন, নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাত ছিল। তাদের গোপন নির্দেশে যৌনকর্মী ও তাঁর শিশুটিকে হত্যা করা হয়। আরও যারা বিষয়টি সম্পর্কে জানত, তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও স্টিফেনের এই দাবি অনেকে উড়িয়ে দেন।
স্টিফেন নাইট বলেছিলেন, যাঁকে দিয়ে এই খুনগুলো করানো হয়েছিল, তাঁর নাম জ্যাক দ্য রিপার। পৃথিবীর কেউই তাঁকে কখনো খুঁজে পায়নি। কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেই রহস্যেরও কোনো কিনারা হয়নি।
জ্যাক দ্য রিপারের প্রথম খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় তখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। পথের দুপাশে গড়ে ওঠা পাব, নাইট ক্লাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। খদ্দের সামলে সুনসান রাস্তা ধরে একা হেঁটে যাচ্ছিলেন সেই যৌনকর্মী। তাঁর ক্লান্ত পায়ের ছোট ছোট ছাপ আর পাদুকা থেকে ভেসে আসা আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন না, আলো-আঁধারি আর কুয়াশার আড়াল থেকে তাঁকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে হেঁটে আসছে আরেকটি ছায়ামূর্তি; শিকার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় সাবধানী ক্ষুধার্ত এক বাঘ। সারা শরীর ঢেকে রাখা ছায়ামূর্তিটি ঠিক যখন পেছনে চলে এল, তখনই তার অস্তিত্ব টের পেলেন মেয়েটি। ভাবলেন, তবে কি শেষ রাতেও আরেকটি খদ্দের জুটে গেল!
সন্দেহ আর ভয়ে হাঁটা থামিয়ে একবার পেছনে ঘুরে তাকাতেই ছায়ামূর্তির দুই হাত তাঁর গলায় চেপে বসল; নিস্তেজ হয়ে এল শরীর। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। এরপর সেই অচেতন শরীরের ওপর চেপে বসল ছায়ামূর্তিটি। শরীরের ভাঁজ থেকে বের করে আনল ১২ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরি! রক্তে ভেসে গেল গলিপথ। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে এল। তারা মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করল। পরিচয়ও মিলে গেল—মেয়েটি পেশায় যৌনকর্মী।
এরপর এল দ্বিতীয় শিকারের পালা, তারপর তৃতীয়—এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কালো ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন জ্যাক দ্য রিপার। বিশ্বজুড়ে পরিচিত হলেন ‘সিরিয়াল কিলার’ নামে। প্রচলিত ছিল, অন্তত পাঁচজন নারী তাঁর শিকারে পরিণত হয়। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া নারীর সংখ্যা আসলে ১১ জনের বেশি।
জ্যাক দ্য রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া প্রথম নারী ছিলেন ম্যারি অ্যান নিকোলস। ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে যখন পুলিশ তাঁর লাশ খুঁজে পায়, তখন ছুরির আঘাতে শরীর এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। গলার মাংসপেশিও ছিল বিচ্ছিন্ন। নির্মমভাবে চিড়ে ফেলা হয়েছিল তাঁর তলপেট থেকে শরীরের নিচের অংশ। নাড়িভুঁড়িও বেরিয়ে এসেছিল। এতগুলো খুনে জ্যাক দ্য রিপার সময় নিয়েছিলেন মাত্র তিন মাস। এর পরই তিনি হাওয়ায় মিশে যান। কেউ তাঁকে আর খুঁজে পায়নি।
জ্যাকের হাতে খুন হওয়া ম্যারি অ্যান নিকোলস ছাড়াও অন্য যাঁদের নাম জানা যায় তাঁরা হলেন: অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজাবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথারিন অ্যাডোজ এবং ম্যারি জ্যান ক্যালি। এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী। তাঁর সবাই ছিলেন হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায়। প্রায় একই রকম পদ্ধতিতে সবাইকে খুন করেছিলেন জ্যাক। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পুলিশ যখন লাশ খুঁজে পায়, তখন তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গ ছিল অনুপস্থিত; বিশেষ করে কিডনি ও জরায়ু। কেন সবাইকে এভাবে খুন করা হলো, তা কেউই জানতে পারেনি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিক্টোরিয়ান যুগের এই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে লন্ডনের মতো বড় শহরে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের গণ্ডি পেরিয়ে বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছিল সারা দুনিয়ায়। এরপর লোকদেখানো হলেও হত্যাকারীকে ধরার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল পুলিশ। ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ নামে পরিচিত বিশ্বের প্রাচীনতম মেট্রোপলিটন পুলিশের বয়স তখন ৫৯ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তারাও কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না। সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার ছিল, পুলিশ সেই অপরাধীকে কোনো দিন শনাক্তই করতে পারেনি। হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে না পারা নিয়ে লন্ডনের ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পাঠক, এটুকু পড়ে আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, জ্যাক দ্য রিপারকে চিহ্নিত করাই না গেল, তাঁর নাম প্রকাশ্যে এল কী করে? এবার সেটা বলি, আসলে সংবাদপত্রের মাধ্যমেই সন্দেহভাজন খুনির নামটি প্রথম চাউর হয়েছিল। শুরুর দিকে সবাই যখন খুনির পরিচয় জানতে উন্মুখ, তখন অনেকে পুলিশ ও সংবাদপত্রের কাছে উড়োচিঠি লিখে নিজেকে খুনি দাবি করতেন। এমনই একজন নিজেকে খুনি দাবি করে একটি পত্রিকার কাছে চিঠি লিখেছিলেন। আর চিঠির নিচে ‘জ্যাক দ্য রিপার’ বলে সই করেন। ওই চিঠিতে হত্যাকাণ্ডের যে বিবরণ ছিল, তার সঙ্গে নামের যথার্থতা পাওয়ায় ‘জ্যাক দ্য রিপার’ নামেই পরিচিতি পান সন্দেহভাজন খুনি। যদিও সেই চিঠি পরে জাল প্রমাণিত হয়েছিল।
১৩৬ বছর আগের সেই ঘটনার কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় রহস্য এখনো জীবন্ত। আজকের দিনেও মানুষ জ্যাক দ্য রিপারের পরিচয় খুঁজে বেড়ায়। এ কারণেই হয়তো খুনের প্রায় ১০০ বছর পর মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জ্যাক দ্য রিপারের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল তৈরি করে। যেন তারা সেই সময়ের রেকর্ডগুলো দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারে। ওই সময় খুনের পর জ্যাক দ্য রিপারের প্রকৃত পরিচয় জানতে দুই হাজারের বেশি মানুষকে জেরা করেছিল পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় ছিল তিন শতাধিক, আর গ্রেপ্তার হয়েছিল অন্তত ৮০ জন।
জ্যাক দ্য রিপার হিসেবে যাঁকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি হলেন ফ্রান্সিস টাম্বলিটি নামের এক আমেরিকান তরুণ। ১৮৮৮ সালের প্রথম হত্যাকাণ্ডটির দুই মাস আগে তিনি ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। তাঁর জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই তাঁকে জ্যাক দ্য রিপার বলে সাব্যস্ত করেন। কারণ, হোয়াইট চ্যাপেলের কাছেই টাম্বলিটি বসবাস করতেন। ওই এলাকা সম্পর্কে তাঁর ভালো জানাশোনাও ছিল। পাশাপাশি একজন চিকিৎসা সহকারী হিসেবেও তিনি প্রশিক্ষিত ছিলেন। মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুঁজে বের করা এবং সেগুলো দ্রুত অপসারণে বিশেষ দক্ষ ছিলেন তিনি। টাম্বলিটি তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। কারণ, তিনি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর স্ত্রীও যৌনকর্মী। ফলে নারীদের প্রতি তাঁর প্রবল ঘৃণা ছিল। অনুমান করা হয়, সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন।
জ্যাক দ্য রিপারকে নিয়ে গল্প, কবিতা আর উপন্যাস কম লেখা হয়নি। তাঁকে নিয়ে সিনেমাও হয়েছে। ২০১৫ সালে জ্যাক দ্য রিপারের নামে একটি জাদুঘর করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস। পরে বিক্ষোভের মুখে সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়। ২০০৬ সালে বিবিসির এক ম্যাগাজিনে জ্যাক দ্য রিপারকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, জ্যাক দ্য রিপার আসলে কে ছিলেন, তা খুঁজে বের করার সব প্রমাণই পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। সন্দেহভাজন খুনি এবং সাক্ষীদের কেউই আর বেঁচে নেই, যে কারণে জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় কোনো দিনই জানবে না পৃথিবী। নিস্তব্ধ রাতের খুনের মতোই নিভৃতে হারিয়ে গেল ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের পরিচয়।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ঙ্কর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সেই সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিল এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী।
রানি ভিক্টোরিয়ার নাতি ছিলেন প্রিন্স আলবার্ট ভেক্টর। রাজপুত বলে কথা—দেখতে যেমন সুদর্শন, চলাফেরায় তেমনি স্মার্ট। সেই অভিজাত যুবকের সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হোয়াইট চ্যাপেল এলাকার এক যৌনকর্মীর। সেই সম্পর্ক গভীর হতেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। রাজপরিবারের ভেতরেও চাউর হয় সেই খবর। রাজপরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, যে করেই হোক—দুনিয়া থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলতে হবে। এরপর ভাড়া করা হয় এক ভয়ঙ্কর খুনিকে, যিনি একের পর এক খুন করতে থাকেন। যারা এ ঘটনার ছিটেফোঁটাও জানত, তাদেরও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে প্রায় সব প্রমাণ মুছে যায়।
কিন্তু সেই যে কথায় আছে—ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। ৮৮ বছর পরে সেই কলে বাতাস লাগে। ব্রিটিশ লেখক স্টিফেন নাইট ১৯৭৬ সালে ‘জ্যাক দ্য রিপার: দ্য ফাইনাল সলিউশন’ নামে একটি বই লেখেন। তাতে তিনি বলেন, নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের হাত ছিল। তাদের গোপন নির্দেশে যৌনকর্মী ও তাঁর শিশুটিকে হত্যা করা হয়। আরও যারা বিষয়টি সম্পর্কে জানত, তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও স্টিফেনের এই দাবি অনেকে উড়িয়ে দেন।
স্টিফেন নাইট বলেছিলেন, যাঁকে দিয়ে এই খুনগুলো করানো হয়েছিল, তাঁর নাম জ্যাক দ্য রিপার। পৃথিবীর কেউই তাঁকে কখনো খুঁজে পায়নি। কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেই রহস্যেরও কোনো কিনারা হয়নি।
জ্যাক দ্য রিপারের প্রথম খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় তখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। পথের দুপাশে গড়ে ওঠা পাব, নাইট ক্লাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। খদ্দের সামলে সুনসান রাস্তা ধরে একা হেঁটে যাচ্ছিলেন সেই যৌনকর্মী। তাঁর ক্লান্ত পায়ের ছোট ছোট ছাপ আর পাদুকা থেকে ভেসে আসা আওয়াজ রাতের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন না, আলো-আঁধারি আর কুয়াশার আড়াল থেকে তাঁকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে হেঁটে আসছে আরেকটি ছায়ামূর্তি; শিকার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় সাবধানী ক্ষুধার্ত এক বাঘ। সারা শরীর ঢেকে রাখা ছায়ামূর্তিটি ঠিক যখন পেছনে চলে এল, তখনই তার অস্তিত্ব টের পেলেন মেয়েটি। ভাবলেন, তবে কি শেষ রাতেও আরেকটি খদ্দের জুটে গেল!
সন্দেহ আর ভয়ে হাঁটা থামিয়ে একবার পেছনে ঘুরে তাকাতেই ছায়ামূর্তির দুই হাত তাঁর গলায় চেপে বসল; নিস্তেজ হয়ে এল শরীর। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। এরপর সেই অচেতন শরীরের ওপর চেপে বসল ছায়ামূর্তিটি। শরীরের ভাঁজ থেকে বের করে আনল ১২ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরি! রক্তে ভেসে গেল গলিপথ। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে এল। তারা মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করল। পরিচয়ও মিলে গেল—মেয়েটি পেশায় যৌনকর্মী।
এরপর এল দ্বিতীয় শিকারের পালা, তারপর তৃতীয়—এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কালো ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন জ্যাক দ্য রিপার। বিশ্বজুড়ে পরিচিত হলেন ‘সিরিয়াল কিলার’ নামে। প্রচলিত ছিল, অন্তত পাঁচজন নারী তাঁর শিকারে পরিণত হয়। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া নারীর সংখ্যা আসলে ১১ জনের বেশি।
জ্যাক দ্য রিপারের শিকারে পরিণত হওয়া প্রথম নারী ছিলেন ম্যারি অ্যান নিকোলস। ১৮৮৮ সালের ৩১ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে যখন পুলিশ তাঁর লাশ খুঁজে পায়, তখন ছুরির আঘাতে শরীর এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। গলার মাংসপেশিও ছিল বিচ্ছিন্ন। নির্মমভাবে চিড়ে ফেলা হয়েছিল তাঁর তলপেট থেকে শরীরের নিচের অংশ। নাড়িভুঁড়িও বেরিয়ে এসেছিল। এতগুলো খুনে জ্যাক দ্য রিপার সময় নিয়েছিলেন মাত্র তিন মাস। এর পরই তিনি হাওয়ায় মিশে যান। কেউ তাঁকে আর খুঁজে পায়নি।
জ্যাকের হাতে খুন হওয়া ম্যারি অ্যান নিকোলস ছাড়াও অন্য যাঁদের নাম জানা যায় তাঁরা হলেন: অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজাবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথারিন অ্যাডোজ এবং ম্যারি জ্যান ক্যালি। এই নারীদের সবাই ছিলেন যৌনকর্মী। তাঁর সবাই ছিলেন হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায়। প্রায় একই রকম পদ্ধতিতে সবাইকে খুন করেছিলেন জ্যাক। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পুলিশ যখন লাশ খুঁজে পায়, তখন তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গ ছিল অনুপস্থিত; বিশেষ করে কিডনি ও জরায়ু। কেন সবাইকে এভাবে খুন করা হলো, তা কেউই জানতে পারেনি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিক্টোরিয়ান যুগের এই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে লন্ডনের মতো বড় শহরে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের গণ্ডি পেরিয়ে বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছিল সারা দুনিয়ায়। এরপর লোকদেখানো হলেও হত্যাকারীকে ধরার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল পুলিশ। ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ নামে পরিচিত বিশ্বের প্রাচীনতম মেট্রোপলিটন পুলিশের বয়স তখন ৫৯ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তারাও কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না। সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার ছিল, পুলিশ সেই অপরাধীকে কোনো দিন শনাক্তই করতে পারেনি। হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে না পারা নিয়ে লন্ডনের ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পাঠক, এটুকু পড়ে আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, জ্যাক দ্য রিপারকে চিহ্নিত করাই না গেল, তাঁর নাম প্রকাশ্যে এল কী করে? এবার সেটা বলি, আসলে সংবাদপত্রের মাধ্যমেই সন্দেহভাজন খুনির নামটি প্রথম চাউর হয়েছিল। শুরুর দিকে সবাই যখন খুনির পরিচয় জানতে উন্মুখ, তখন অনেকে পুলিশ ও সংবাদপত্রের কাছে উড়োচিঠি লিখে নিজেকে খুনি দাবি করতেন। এমনই একজন নিজেকে খুনি দাবি করে একটি পত্রিকার কাছে চিঠি লিখেছিলেন। আর চিঠির নিচে ‘জ্যাক দ্য রিপার’ বলে সই করেন। ওই চিঠিতে হত্যাকাণ্ডের যে বিবরণ ছিল, তার সঙ্গে নামের যথার্থতা পাওয়ায় ‘জ্যাক দ্য রিপার’ নামেই পরিচিতি পান সন্দেহভাজন খুনি। যদিও সেই চিঠি পরে জাল প্রমাণিত হয়েছিল।
১৩৬ বছর আগের সেই ঘটনার কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় রহস্য এখনো জীবন্ত। আজকের দিনেও মানুষ জ্যাক দ্য রিপারের পরিচয় খুঁজে বেড়ায়। এ কারণেই হয়তো খুনের প্রায় ১০০ বছর পর মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জ্যাক দ্য রিপারের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল তৈরি করে। যেন তারা সেই সময়ের রেকর্ডগুলো দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারে। ওই সময় খুনের পর জ্যাক দ্য রিপারের প্রকৃত পরিচয় জানতে দুই হাজারের বেশি মানুষকে জেরা করেছিল পুলিশ। সন্দেহের তালিকায় ছিল তিন শতাধিক, আর গ্রেপ্তার হয়েছিল অন্তত ৮০ জন।
জ্যাক দ্য রিপার হিসেবে যাঁকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি হলেন ফ্রান্সিস টাম্বলিটি নামের এক আমেরিকান তরুণ। ১৮৮৮ সালের প্রথম হত্যাকাণ্ডটির দুই মাস আগে তিনি ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। তাঁর জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই তাঁকে জ্যাক দ্য রিপার বলে সাব্যস্ত করেন। কারণ, হোয়াইট চ্যাপেলের কাছেই টাম্বলিটি বসবাস করতেন। ওই এলাকা সম্পর্কে তাঁর ভালো জানাশোনাও ছিল। পাশাপাশি একজন চিকিৎসা সহকারী হিসেবেও তিনি প্রশিক্ষিত ছিলেন। মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুঁজে বের করা এবং সেগুলো দ্রুত অপসারণে বিশেষ দক্ষ ছিলেন তিনি। টাম্বলিটি তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেছিলেন। কারণ, তিনি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর স্ত্রীও যৌনকর্মী। ফলে নারীদের প্রতি তাঁর প্রবল ঘৃণা ছিল। অনুমান করা হয়, সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন।
জ্যাক দ্য রিপারকে নিয়ে গল্প, কবিতা আর উপন্যাস কম লেখা হয়নি। তাঁকে নিয়ে সিনেমাও হয়েছে। ২০১৫ সালে জ্যাক দ্য রিপারের নামে একটি জাদুঘর করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস। পরে বিক্ষোভের মুখে সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়। ২০০৬ সালে বিবিসির এক ম্যাগাজিনে জ্যাক দ্য রিপারকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, জ্যাক দ্য রিপার আসলে কে ছিলেন, তা খুঁজে বের করার সব প্রমাণই পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। সন্দেহভাজন খুনি এবং সাক্ষীদের কেউই আর বেঁচে নেই, যে কারণে জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় কোনো দিনই জানবে না পৃথিবী। নিস্তব্ধ রাতের খুনের মতোই নিভৃতে হারিয়ে গেল ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের পরিচয়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ংকর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সে সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিলেন এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই
১৪ জুন ২০২৪
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ংকর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সে সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিলেন এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই
১৪ জুন ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ংকর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সে সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিলেন এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই
১৪ জুন ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কখনো কখনো ভয়ংকর খুনেও গোপন মদদ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রনায়কেরা। ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। আজ থেকে ১৩৬ বছর আগে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল লন্ডনে। সে সময়ের মহাপ্রতাপশালী ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছিলেন এক শিশুসহ অনেক নারী। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই
১৪ জুন ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে