ডেমরায় পুলিশের গুলিতে আহত যুবক ডাকাত কি না জানেন না ওসি

রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার দেল্লা বামৈল এলাকায় পুলিশের শটগানের গুলিতে এক যুবক আহত হয়েছেন। তাঁর নাম মিনহাজুল আবেদন ফাহিম (২৭)। আজ শনিবার ভোর ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই পুলিশ সদস্যরাই ফাহিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 

ফাহিম ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করছেন অভিযানকারী পুলিশ সদস্যরা। তবে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলছেন, ফাহিম ডাকাত কি না তিনি নিশ্চিত নন। তবে ডাকাতেরা ফাহিমের বাসায় ভাড়া থাকত বলে দাবি করেন তিনি।

ঘটনার বর্ণনায় ফাহিমের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার সীমা বলেন, তাঁরা দেল্লা বামৈল মাতবর বাড়ি রোডে নিজেদের বাড়িতে থাকেন। ফাহিম তেমন কিছু করেন না। বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আজ ভোরে তাঁদের বাসায় বেশ কয়েকজন মানুষ আসেন। তাঁরা নিজেদের পরিচয় না দিয়ে বাড়ির গেট ধাক্কাতে থাকেন এবং ডাকাডাকি করেন। তখন ফাহিম ও তাঁর ছোট ভাই নাইম (২৩) ভয়ে ঘর থেকে বের হয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন। এ সময় সাদাপোশাকে থাকা পুলিশ গুলি করে। ফাহিমের ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ফাহিমের ছোট ভাইকেও আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতরাতে মহাসড়কে ডাকাতি করছিল একটি ডাকাত দল। ভুক্তভোগীরা পুলিশকে অভিযোগ করলে ডাকাতদের ধরতে অভিযান চালানো হয়। তাদের অবস্থান ডেমরা এলাকায় শনাক্ত করা হলে ভোর ৪টার দিকে সেখানে অভিযান চালানো হয়। আমরা আসামিকে ধরতে ঘেরাও দিতেই আসামিরা দা বটি নিয়ে পুলিশ টিমের ওপর হামলা চালায় ও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছুড়লে মিনহাজ আবেদিন নামে এক ব্যক্তির পায়ে গুলি লাগে।’ 

• রাজধানীর ডেমরায় ডাকাত ধরতে গিয়ে পুলিশের গুলি, যুবক গুলিবিদ্ধ

ঠিক কতজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আমরা মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের মধ্যে আছে—হাসিবুল, নাইম, সজীব ও আরেকজনের নাম এই মুহূর্তে স্মরণ নেই। যার পায়ে গুলি লেগেছে সে ডাকাত দলের সদস্য কি না নিশ্চিত নই। তবে তার বাসাতেই ডাকাতদল ভাড়া থাকত। ঘটনার সময় সে সামনে এসে আমাদের বাধা দিলে তার পায়ে গুলি লাগে। ডেমরা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী সে নিজেও মাদকদ্রব্য সেবন করে বলে জানতে পেরেছি। ডাকাত দলের হামলার ঘটনায় আমাদেরও চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, ‘মহাসড়ক থেকে দুজন ব্যক্তির মোটরসাইকেল ও মোবাইল ছিনিয়ে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। ঘটনা দুটির অনুসন্ধান করতে গিয়ে সজীব নামের এক ডাকাত দলনেতার সন্ধান পায় পুলিশ। তাকে ধরতে ডেমরা থানার বামৈল এলাকায় ডেমরা পুলিশের সহায়তা অভিযান চালালে আসামিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশ একটি গুলি ছুড়লে একজন গুলিবিদ্ধ হয়।’