Ajker Patrika

জামাতাকে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন করেন বাবা, ৭ বছর পর রহস্য উন্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬: ৪৬
জামাতাকে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন করেন বাবা, ৭ বছর পর রহস্য উন্মোচন

ঘটনা ২০১২ সালের। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গড়িয়ার বাসিন্দা পারুল আক্তার (১৫) ও নাছির উদ্দীন সরকার (১৯) একে-অপরকে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেন। তবে পারুলের পরিবার এমন প্রেমের বিয়ে মানতে পারেনি। বিয়ের পরে অল্প বয়সী এই দুজন আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে ভাড়া বাড়িতে সংসার পাতেন। সাংসারিক জীবনে শুরু হয় টানাপোড়েন। একপর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা পারুল বাবা আব্দুল কুদ্দুস খাঁকে মোবাইলে ফোনে বিস্তারিত জানিয়ে সাহায্য চান। কুদ্দুস মেয়েকে সুন্দর ভবিষ্যৎ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসে স্বামী নাছিরকে ছেড়ে যেতে বলেন। সুযোগ বুঝে পারুল গত ২০১৫ সালে ১৮ জুলাই স্বামীকে না জানিয়ে চলে যান বাবার কাছে।

পরদিন বাবা কুদ্দুস মেয়ে নিয়ে যান ভূঞাপুরে তার বন্ধু মোকাদ্দেস ওরফে মোকা মণ্ডলের বাড়িতে। সেখান থেকে মোকা মণ্ডল ভবিষ্যতে পারুলকে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং কিছুদিন তার স্বামী নাছিরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে হবে—এই আশ্বাস দিয়ে জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি এলাকায় তুলসীগঙ্গা নদীর পাশে একটি নির্জন জায়গায় রাতের অন্ধকারে পারুলকে বাবা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর বন্ধু মোকা মণ্ডলের সহযোগিতায় পারুলের পরনের ওড়না দুই টুকরা করে হাত-পা বেঁধে ফেলেন। তারপর গলা টিপে হত্যা করেন।

এরপর জামাতা নাছির ও তাঁর পরিবারকে ফাঁসাতে একটি গুমের মামলা করেন পারুলের বাবা। মামলার তদন্তে কালিহাতী থানা-পুলিশ প্রেমের বিয়ের সংশ্লিষ্টতা পায়। কিন্তু ভুক্তভোগী পারুলকে না পাওয়ায় এবং ঘটনাস্থল কালিহাতী থানার আওতাধীন না হওয়ায় এই মামলা তাদের এখতিয়ারের বাইরে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে পারুলের বাবা কুদ্দুসের বারবার নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি সদস্যরা তদন্তে নামেন। তারাও কোনো কূলকিনারা করতে না পেরে একই প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। এরপরও কোনো এক অজানা কারণে পারুলের বাবা ক্ষান্ত হচ্ছিলেন না। সবশেষে আদালত জুডিশিয়াল তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়, বাদী ঢাকার আদালতে মামলা করলে প্রতিকার পেতে পারেন। 

এবার কুদ্দুস খাঁ আগের তদন্তের রেফারেন্সসহ মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে। অভিযোগ করা হয়, নাছির উদ্দীন যৌতুকের জন্য তাঁর মেয়ে পারুলকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। গত ডিসেম্বরে করা এই মামলার তদন্তের ভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

তদন্তে নেমে একটি মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে এগোতে থাকে সংস্থাটি। প্রথমে গফরগাঁও বর্তমান কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পারুলের স্বামী নাছিরকে। তারপর ডাকা হয় পারুলের পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে। নাছিরসহ পারুলের পরিবারের সবাই অসংলগ্ন তথ্য দিতে থাকেন। দুই পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে পারুলের বাবা তাঁর বন্ধু মোকা মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে পারুলকে নিজ হাতে হত্যার কথা স্বীকার করেন পিবিআইয়ের কাছে। এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দেন।

এই হত্যা রহস্য উন্মোচনের পর আজ রোববার সকালে ধানমন্ডির পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার আদালতে কুদ্দুসের দেওয়া জবানবন্দি তুলে ধরে বলেন, ‘তারা ৩ জন (পারুল, মোকা ও কুদ্দুস) রাতের অন্ধকারে নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে থাকে। মেয়ের ইতিপূর্বের কার্যকলাপের অপমান বোধ থেকে রাগে বাবা মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তারপর মেয়ের ওড়না দুই টুকরা করে কুদ্দুস পারুলের হাত এবং মোকাদ্দেছ ওরফে মোকা মণ্ডল পা বাঁধে। এরপর কুদ্দুস নিজের গামছা দিয়ে পারুলের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ও গলাটিপে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে পারুলের মরদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে টাঙ্গাইলে চলে আসেন তাঁরা দুজন।’

নিজ হাতে মেয়েকে খুন করার পরেও নানা পর্যায়ে আইনি লড়াই কেন করলেন পারুলের বাবা—এমন প্রশ্নের জবাবে পিবিআই প্রধান কুদ্দুসকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘এটি একটি অনার কিলিংয়ের ঘটনা। মেয়ে পালিয়ে বিয়ে করায় বাবা কুদ্দুস ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয় ও সম্মানহানির শিকার হয়েছেন। তাই শাস্তি হিসেবে মেয়েকে খুন করেছেন। কিন্তু এই সম্মানহানির পেছনে তাঁর মেয়ের সঙ্গে জামাতা নাছিরেরও সমান হাত আছে। তাই মেয়ের মতো জামাতা নাছিরকেও শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন কুদ্দুস। তিনি (কুদ্দুস) চেয়েছেন এই খুনের মামলায় নাছিরের যেন ফাঁসি হয়। তাহলেই তাঁর সম্মানহানির প্রতিশোধ সম্পূর্ণ হবে। এই জন্যই নিজে মেয়েকে খুন করেও বিভিন্ন পর্যায়ে আইনি লড়াই করেছেন তিনি।’

এখন তাহলে পারুলের স্বামী নাছিরের কী হবে, তা জানতে চাইলে বনজ কুমার বলেন, ‘তাঁকে আমরা গফরগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। আশা করি আইনি জটিলতা কাটিয়ে নাছির দ্রুতই মুক্তি পাবেন।’

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করায় কুদ্দুস ও তাঁর বন্ধু মোকাদ্দেস ওরফে মোকা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের আদালতে উপস্থাপন করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১০
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।

গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।

এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।

অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর হত্যা মামলা করার নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৫৮
চিত্রনায়ক সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত
চিত্রনায়ক সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।

সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।

রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।

ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।

কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।

২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।

রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

ভক্তদের মানববন্ধন

এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত