Ajker Patrika

গোয়ালন্দে ফের একই কায়দায় ভবঘুরেকে হত্যার চেষ্টা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ২০: ১২
গোয়ালন্দে ফের একই কায়দায় ভবঘুরেকে হত্যার চেষ্টা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে তৈয়ব আলীকে (৭০) হত্যার এক মাস যেতে না যেতে একই কায়দায় হামলার শিকার হলেন ৬৫ বছর বয়সী এক ভবঘুরে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার গোয়ালন্দ রাবেয়া-ইদ্রিস মহিলা ডিগ্রি কলেজের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রীছাউনি থেকে ওই বৃদ্ধকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। 

এর আগে গত ৭ মে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের এফ কে টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের বারান্দা থেকে গুরুতর অবস্থায় পুলিশ ও স্থানীয় কিছু যুবক তৈয়ব আলী নামে ভবঘুরেকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তৈয়ব আলীর বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার নাচন মহল ইউনিয়নে। তাঁর ছেলে বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। 

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, এসব ভবঘুরের কাছে দানের নগদ টাকা থাকে। ওই টাকাগুলো নেওয়ার জন্য নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। 

গতকাল হামলার শিকার বৃদ্ধ সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন জানান, পাঁচ বছর ধরে গোয়ালন্দের বিভিন্ন এলাকায় তাঁকে থাকতে দেখা গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় দেখা যাচ্ছিল না। পাঁচ দিন আগে তিনি যাত্রীছাউনির নিচে থাকতে শুরু করেন। 

স্থানীয় বাজারে আখের রস বিক্রেতা রতন, অটোচালক সোহেল রানা, ইমরান ফকির জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দেখতে পান যাত্রীছাউনির মধ্যে ওই বৃদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। হাইওয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ বলে, গাড়ি আসছে। গাড়ি আসতে দেরি হওয়ায় তাঁরা অটোরিকশাতে করে তাঁকে হাসপাতালে নিতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা ওই বৃদ্ধ পড়ে থাকেন। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কয়েকজন ধরাধরি করে একটা ভ্যানে করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পুলিশও তাঁদের সঙ্গে যায়। 

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ মো. শরিফ জানান, আগের বৃদ্ধ ও গতকালকের বৃদ্ধকে একই কায়দায় প্রায় একই জায়গায় মাথায়, কপালে ও হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর এই আঘাতগুলো উদ্ধারের ৪-৬ ঘণ্টা আগে করা  হয়েছে। দুটি ঘটনাই রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঘটানো হয়েছে। 

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কিছুদিন আগের মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যার সঙ্গে আজকের এই ঘটনার অনেক মিল রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আহত বৃদ্ধের চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতকাল দুই পুলিশ সদস্য তাঁকে রক্ত দিয়েছেন। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত