Ajker Patrika

রোগীর স্বজনদের বেল্ট খুলে পেটালেন হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১১: ০৫
রোগীর স্বজনদের বেল্ট খুলে পেটালেন হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী

গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর স্বজনদের প্যান্টের বেল্ট খুলে বেধড়ক পিটিয়েছেন হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য। হাসপাতালটির অষ্টম তলায় সার্জারি বিভাগের ৮১০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

এই মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা হাসপাতালের বেডে উঠে নিজের কোমরের বেল্ট খুলে এলোপাতাড়ি মারছেন। রোগীর স্বজনদের কান্নাকাটি করতে দেখা যাচ্ছে। বাঁশের লাঠি হাতে কয়েকজনকে ঘোরাঘুরি করতেও দেখা গেছে। এ সময় হাসপাতালের অন্য রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, আনসার সদস্যরা রোগীর স্বজনদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে ভেতরে। ঈদের রাতে জেলার মারতা ব্রিজের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় রবিউল ইসলাম নামে ওই যুবক আহত হন। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে তাঁর। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আহত রবিউলের জন্য তাঁর ভাই হাফেজ এমদাদুল হক ফার্মেসি থেকে একটি মলম নিয়ে ওই কক্ষের সামনে যান। এ সময় ভেতরে চিকিৎসক রাউন্ড দিচ্ছেন বলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য শাহ জামাল তাঁকে বাধা দেন। একপর্যায়ে রোগীর স্বজন ও আনসার সদস্য বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তা মারামারিতে গড়ায়।

প্রত্যক্ষদর্শী রেজাউল ইসলাম জানান, জোর করে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে আনসার সদস্য হাফেজ এমদাদকে ধাক্কা দেন। এমদাদ আনসার সদস্য শাহ জামালকেও ধাক্কা দেন। এরপর আনসার সদস্যও থেমে থাকেননি। পেটাতে থাকেন এমদাদকে। বেশ সময় নিয়ে চলতে থাকে তুমুল মারামারি। 

ভুক্তভোগী এমদাদুল হক বলেন, ‘আমি আনসার সদস্যকে মারধর করিনি। তারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে মিথ্যাচার করছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মনজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাফেজ এমদাদ একপর্যায়ে নিজেকে রক্ষার জন্য হাসপাতালের ওয়াশ রুমে গিয়ে আশ্রয় নেন। আনসার সদস্যকে বেদম পেটানো হয়েছে। এ সময় অষ্টম তলাজুড়ে জড়ো হয় নিরাপত্তা কর্মী, বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন, নার্স আর সাধারণ মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য রোগী ও রোগীর স্বজনেরা।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার পর রাতেই স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।’

আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মনজুর রহমান বলেন, ‘গাজীপুরের সামন্তপুর এলাকার মুহাম্মদ আলীর ছেলে হাফেজ এমদাদ আওয়ামী লীগের নেতাদের সামনে লিখিতভাবে তাঁর দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এ কারণে আর বিষয়টি অন্যদিকে গড়ায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত