Ajker Patrika

কমলাপুরে রেলের বগিতে ধর্ষণ: আসামিদের দাবি টাকার বিনিময়ে ‘অনৈতিক কাজ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২২, ১৯: ৪৯
কমলাপুরে রেলের বগিতে ধর্ষণ: আসামিদের দাবি টাকার বিনিময়ে ‘অনৈতিক কাজ’

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের একটি বগিতে কিশোরীকে (১৭) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি। তবে তাঁরা শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও এটিকে ধর্ষণ বলতে নারাজ। তাঁদের দাবি, ওই কিশোরীর সম্মতিতে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক কাজ করেন তাঁরা।

গতকাল শনিবার ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার সুমন (২১) ও নাঈম (২৫) আদালতে এ জবানবন্দি দেন। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফ তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুজনই টাকার বিনিময়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন বলে জবানবন্দিতে বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, জোরপূর্বক কোনো শারীরিক সম্পর্ক বা নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জবানবন্দিতে দুজনই বলেছেন, তাঁরা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। গত শুক্রবার রাতে কাজ শেষে ফেরার পথে রেলের একটি বগিতে কয়েকজন ছেলেকে দেখতে পান। তাঁরাও এগিয়ে যান। গিয়ে দেখেন একজনের সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত রয়েছে ওই কিশোরী। তখন একজনকে জিজ্ঞেস করেন, এখানে কী হচ্ছে? উত্তরে বলেন, ‘তোরাও এ কাজ করতে পারবি’।

জবানবন্দিতে দুই যুবক আরও বলেন, তারা মেয়েটির সঙ্গে কথা বললে সে টাকা দাবি করে। আসামি সুমন ২০০ টাকা দেন। অন্য আসামি নাঈম দেন ১০০ টাকা। দুজনে পালাক্রমে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাঁরা দাবি করেন, পরে মেয়েটি পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ধর্ষণের মামলা করে।

গতকাল শনিবার রেলওয়ে থানা-পুলিশ পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে। দুজন জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁদের ও বাকি তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। অপর তিন আসামি হলেন—নাজমুল (২৫), আনোয়ার (২০) ও রোমান ওরফে কালু (২২)।

শুক্রবার রাতেই ওই কিশোরী কমলাপুর রেলওয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে শুক্রবার রাতে নেত্রকোনা থেকে হাওর এক্সপ্রেসে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসে ওই কিশোরী। সেখানে কয়েকজন তরুণ-যুবক কৌশলে তাকে স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা তুরাগ কমিউনিটি ট্রেনের একটি বগিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায় তারা। কর্তব্যরত পুলিশ তাকে ট্রেনের বগিতে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে রেলওয়ে পুলিশ। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন একজন পলাতক রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। 

গতকাল ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ মাহমুদ ঘটনার বর্ণনায় বলেন, ওই কিশোরী শুক্রবার কমলাপুর স্টেশনে আসে। সেখানে ৪-৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বসে থাকা অবস্থায় পানি বিক্রেতা ইমরানের সঙ্গে তার কথা হয়। তিনি তাকে প্ল্যাটফর্মের একটি বেঞ্চে শুয়ে থাকতে বলেন। রাত গভীর হলে কিশোরীকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা তুরাগ কমিউনিটি লোকাল ট্রেনের বগিতে নিয়ে পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে। রাত ১টার দিকে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যকে সেখান দিয়ে যেতে দেখে তারা পালিয়ে যায়। তখন নিরাপত্তাকর্মীর সন্দেহ হলে তিনি উঁকি দিয়ে দেখেন, বগিতে ওই কিশোরী পড়ে আছে। পরে থানায় খবর দিলে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত