Ajker Patrika

মাদকসেবীরা পকেটে পয়সা না থাকলেই ছিনতাই করেন: ডিসি মোর্শেদ

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ২৮
মাদকসেবীরা পকেটে পয়সা না থাকলেই ছিনতাই করেন: ডিসি মোর্শেদ

মাদকসেবীরা মাদক সেবনের পয়সা না থাকলেই ছিনতাই করেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। উত্তরা পশ্চিম থানায় আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

গত বুধবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের বিএনএস সেন্টারের সামনে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হন। তাঁর নাম মো. দেলোয়ার হোসেন (৩০)। এ সময় দেলোয়ারের ছোট ভাই মো. আনোয়ার হোসেন (২৬) ছুরিকাঘাতে আহত হন।

ওই দিনই অভিযান চালিয়ে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে ছিনতাইকারী রফিকুল ইসলামকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, রাতে মিরপুরের কচুক্ষেতের একটি বস্তি থেকে সহযোগী মো. নাসিরকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে আজ রোববার তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

ডিসি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘অধিকাংশ ছিনতাইকারী হচ্ছে মাদকসেবী। তাদের সাধারণ জ্ঞান থাকে না। যখন তাদের মাদকের প্রয়োজন হয়, তখন পকেটে পয়সা না থাকলে তারা ছিনতাই করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই দিন দেলোয়ার ও আনোয়ার তাঁদের মা, বাবা, ভাইসহ বাসার মালামাল নিয়ে ঢাকার ডেমরা থেকে একটি পিকআপে করে ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। ওই পিকআপের চালকের পাশে বাবা-মা এবং পিকআপের পেছনে দুই ভাই বসাছিলেন। রাত ৩টার পর উত্তরার বিএনএস সেন্টারের পাশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উড়ালসেতুর পাশে পৌঁছায়। সেখানে একটু জ্যামের মধ্যে হঠাৎ করে একজন ছিনতাইকারী দেলোয়ারের পকেটে থাকা মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন দেলোয়ার ও আনোয়ার দৌড়ে গিয়ে ছিনতাইকারীকে জাপটে ধরেন।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই সময় আরও দুজন ছিনতাইকারী চলে আসে। তখন দুই ভাইয়ের সঙ্গে ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা দেলোয়ারের বুকে এবং তাঁর ভাই আনোয়ারের পায়ে ছুরিকাঘাত করে। আহতদের উদ্ধার করে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘ছিনতাইয়ের ঘটনার পরপরই ওই সময়ের কিছু আলামত ছিল। সেই আলামতের ভিত্তিতেই আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূল ছিনতাইকারী ও হত্যাকারীকে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে গ্রেপ্তার করি। তার দেওয়া তথ্যমতে সহযোগীকে আমরা মিরপুরের পুরোনো কচুক্ষেতের সাগরিকা বস্তি থেকে রাতে গ্রেপ্তার করি।’

ডিসি মোর্শেদ বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া রকিফুল ইসলামই মূলত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান। এ সময় তাঁর সহযোগী হিসেবে ছিলেন মো. নাসির। তাঁরা দুজনই দীর্ঘদিনের বন্ধু। উভয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও ব্যবসা করেন। তাঁদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।’

হত্যাকাণ্ড সংগঠনের সময় ছিনতাইকারীদের অবস্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় তিনজন ছিনতাইকারী অংশগ্রহণ করেছিলেন। মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছিলেন রফিক। ভিকটিম রফিককে জড়িয়ে ধরলে তিনি ছুরিকাঘাত করেন। রফিকের সহযোগী হিসেবে আর দুজন ছিনতাইকারী ছিলেন। তিনজন মিলেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। একজন এখনো পলাতক।’

বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর মহাসড়কে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিসি মোর্শেদ বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর সড়কে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। রাস্তার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ চলছে। যেহেতু গাড়ির গতি এখানে অনেক কম থাকে, যার কারণে প্রতিনিয়তই অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে রমজান মাসে অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় আমাদের ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ টিম থাকে। এ ছাড়া প্রতি মাসে ১০০ থেকে ২০০ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠাই।’

উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়াজ মোহাম্মদ শরীফ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া রফিক ও নাসির জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে রাজধানীর উত্তরা, বিমানবন্দর, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় ছিনতাই করতেন। তাঁরা একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। রফিকের বিরুদ্ধে তিনটি ও নাসিরের বিরুদ্ধে পূর্বে একটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মির্জা সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা ও উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাসুদ আলমসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১০
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।

গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।

এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।

অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত