Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন ১

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন ১

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় দেন।

একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ১ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণার আগে একজন অভিযুক্ত মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাঁকে আগেই অব্যাহতি দেন আদালত। মামলায় আরেক আসামির বয়স কম হওয়ায় (১৫) তাঁর বিচার শিশু আদালতে করা হবে। এ ছাড়া রায় ঘোষণার সময় অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

নিহত রফিকুল ইসলাম ওরফে রতন ভূঁইয়া কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—কটিয়াদী উপজেলার মধ্য ভাট্টা এলাকার মৃত সিন্দু ভূঁইয়ার ছেলে মো. ফোরকান ভূঁইয়া (৪৮), জমশেদ ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহেদ ভূঁইয়া (৩৪), মৃত ধলু ভূঁইয়ার ছেলে মো. এ্যাংগু ভূঁইয়া (৫৮)। অন্যদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই এলাকার জমশেদ ভূঁইয়ার ছেলে মো. মোস্তফা ভূঁইয়া (৪৬)। রায় ঘোষণার আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম জমশেদ ভূঁইয়া।

মামলার বিবরণে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৩ সালে ২৯ আগস্টে রাত ৯টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার ভাট্টা নতুন বাজার হতে বাজার করে প্রতিবেশী লোকজনের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন রতন। আসামি ফোরকান ভূইয়ার বাড়ির উত্তর পার্শ্বে কাচা রাস্তায় পৌঁছালে ফোরকান, জমশেদ, শাহেদ ও এ্যাংগুসহ অজ্ঞাত নামা ৫ / ৭ জন লোক দা, লাঠি, চাপাতি, লোহার রড নিয়ে তাঁর পথরোধ করেন। এ সময় ফোরকান ভূইয়া বলেন—শালার পুতের জীবন শেষ করে দে।

এরপর অন্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রতনের ওপর হামলা করেন। আসামির রতনের মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। রতন মাটিতে পড়ে গেলেও তাঁরা হাতে থাকা লোহার রড দিয়া পেটাতে থাকেন। পরে রতনকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থা অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ৬ দিন পরে ৫ সেপ্টেম্বর রতন মারা যান।

এদিকে রতন হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় ৩০ আগস্ট তাঁর চাচাতো ভাই আনার ভূঁইয়া বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রতনের মৃত্যুর এ মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে কটিয়াদী মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক রাখাল দেবনাথ ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) জগেশ্বর রায় বলেন, ‘মামলার রায়ে আমরা আনন্দিত। এ রায়ের মাধ্যমে আবারও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ 

আসামি পক্ষের স্বজনেরা বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। আমাদের আত্মীয়রা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন।’

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) আইনজীবী জগেশ্বর রায় এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী আজিজুল হক মিন্টু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত