Ajker Patrika

বিয়ের ১ বছর পর জানলেন বিয়েটাই ভুয়া

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ৫১
বিয়ের ১ বছর পর জানলেন বিয়েটাই ভুয়া

এগারো বছর আগে চল্লিশোর্ধ্ব শাহিদাকে (ছদ্ম নাম) তালাক দেন স্বামী। এরপর বাবার বাড়িতে থেকে একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কাজ নেন তিনি। সেখানে কাজের সুবাদে পরিচয় হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জ বাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো. নয়ন মিয়ার (৪৫) সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময়ই একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয় তাঁদের। পরে শাহিদা নয়নকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে নয়ন কখনো আল্লাহর কসম কেটে, আবার কখনো বিভিন্ন পিরের দরবার গিয়ে কসম খেয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। এভাবে সাত বছর তাঁদের সম্পর্ক চলে। অবশেষে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয় তাঁদের। 

কিন্তু সম্প্রতি জানতে পারেন আসলে বিয়ের নাটক সাজিয়েছিলেন নয়ন।

ভুক্তভোগী জানান, পলাশ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) মো. আবু তাহেরের বাড়িতে নয়ন ও শাহিদার বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে কাজি ছাড়াও ছিলেন উকিল বাবা, মাওলানা ও সাক্ষী। সাদা কাগজে নেওয়া হয় পাত্র-পাত্রীর স্বাক্ষর। বিয়ে পড়ানো শেষে করা হয় মিষ্টি বিতরণ। এরপর শাহিদাকে নিয়ে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মুনশুরপুর, দড়িসোম, বাঙ্গালহাওলা ও গাজীপুর মহানগরীর মিরের বাজার এলাকায় বিভিন্ন সময় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করেছেন দীর্ঘ আট বছর। বিভিন্ন সময় ব্যবসায় মন্দার অজুহাতে শাহিদার কাছ থেকে নয়ন হাতিয়ে নেন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। একপর্যায়ে টাকা দিতে না পারায় শাহিদার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি। 

এর মাঝে বহুবার কাবিননামা চেয়েছেন শাহিদা। সব সময়ই নানা অজুহাতে এড়িয়ে যান নয়ন। পরে শাহিদা বুঝতে পারেন বিয়ের নাটক সাজানো হয়েছে। তাঁদের সত্যিকার বিয়ে হয়নি। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয় যখন পুলিশের ভয় দেখালে নয়ন বলেন, ‘তোকে ফুঁ দিয়ে বিয়ে করেছি, ফুঁ দিয়েই আবার তালাক দিয়েছি। পারলে তুই আমার কিছু করিস। আর এ ব্যাপারে তুই যদি কারও কাছে যাস তাহলে তোকে গুম করে দিব।’

বিয়ে পড়ানো সেই কাজির কাছে গেলে তিনিও শাহিদাকে জানান, তাঁদের কোনো কাগজপত্র নেই। 

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো বিচার পাচ্ছেন না শাহিদা। অবশেষে নয়ন ও কাজিকে অভিযুক্ত করে কালীগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। 

এদিকে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথিচর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে নয়ন কালীগঞ্জ পৌরসভার মুনশুরপুর এলাকায় স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে কালীগঞ্জ বাজারে সবজি ও ফলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নয়ন মিয়া বলেন, তাঁর (শাহিদা) সঙ্গে আমার প্রেম বা বিয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে বিভিন্ন সময় তাঁর বাড়িতে বাজার-সদাই ও ওষুধসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসতাম। 

বিয়ে প্রসঙ্গে নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. আবু তাহের বলেন, ওই দিন আমার বাড়িতে তাঁরা এসেছিলেন। তবে বিয়ে পড়ানো হয়নি, কোনো কাগজপত্রও হয়নি। 

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসা পেতে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে

দক্ষিণপন্থীদের কবজায় বাংলাদেশের রাজনীতি: বদরুদ্দীন উমর

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত