Ajker Patrika

দুই ভাইকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় কারাগারে গেলেন মা

মাদারীপুর প্রতিনিধি
দুই ভাইকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় কারাগারে গেলেন মা

মাদারীপুরে ঘরে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মা পূর্ণিমা বৈদ্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. সাজিদ উল হাসান চৌধুরী এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালত পূর্ণিমাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর শিশুদের মা পূর্ণিমা বৈদ্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ণিমাকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন তাঁর স্বামী মানিক বৈদ্য। এরপর একটি মামলায় স্বামী মানিক বৈদ্য জেলে যান। জেলে গিয়ে স্বামী মানিক বৈদ্য তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা বৈদ্যকে বলেন, জেল থেকে বের হয়ে আবার বিয়ে করবেন। এই হুমকিতে মা পূর্ণিমা বৈদ্য নাশকতার পরিকল্পনা করেন। গত সোমবার সকালে প্রথমে বড় ছেলে মানব বৈদ্যকে মোবাইল চার্জারের তার দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ছোট ছেলে রুদ্র বৈদ্যকে ঘরে রেখেই আগুন লাগিয়ে দেন। এরপর পূর্ণিমা বৈদ্য ও তাঁর মা রেবা রানী বৈদ্য বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে যান।’ 

ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের একটি টিনশেড ঘরে ভাড়া থাকতেন মানিক বৈদ্য ও তাঁর পরিবার। একটি মামলায় মানিক বৈদ্য জেলে আছেন। সোমবার সকালে তালাবদ্ধ ঘরে আগুনে পুড়ে মারা যায় দুই ভাই রুদ্র (১) ও মানব (৩)। আগুনের ঘটনার পর মা পূর্ণিমা বৈদ্য ও সঙ্গে থাকা নানি রেবা রানী বৈদ্য পলাতক ছিলেন। ঘটনার পরের দিন নিহত শিশুদের দাদা কালী বৈদ্য বাদী হয়ে পূর্ণিমা ও তাঁর মা রেবা রানী বৈদ্যকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে নামে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার পল্টন থানার কাকরাইল থেকে মাদারীপুর থানা-পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে পূর্ণিমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপর আসামি নানি রেবা রানী বৈদ্য এখনো পলাতক।’

প্রায় ছয় মাস আগে সদর উপজেলার শিরখাঁড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামের ভ্যানচালক মানিক বৈদ্য একই উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ঘর ভাড়া নেন। সেখানে শাশুড়ি রেবা রানী বৈদ্য, স্ত্রী পূর্ণিমা বৈদ্য ও দুই ছেলে রুদ্র ও মানবকে নিয়ে থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন মানিক বৈদ্য। মানিক একটি মামলায় দুই মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত