Ajker Patrika

ভাইব্বা ল কিং: দিনে শ্রমিক-কর্মচারী, রাতে একাই একশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভাইব্বা ল কিং: দিনে শ্রমিক-কর্মচারী, রাতে একাই একশ

মোহাম্মপুরের পোলাপান, যা করি তা টোকেন ছাড়াই ওপেন, মোহাম্মদপুরের পোলা বাজান, আমি একাই একশ। গ্যাঞ্জাম করার আগে ভাইবা লইয়েন! 

এমন সব প্রচারণা দিয়ে অটোরিকশা চালক, দোকান কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক এবং অফিসের পিয়নদের নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাং। 

সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান ও বছিলায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র‍্যাব। পরে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা উদ্যানের সামনে এক দম্পতি কিশোর গ্যাং-এর ছিনতাইয়ের শিকার হন। পরে র‍্যাবের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে সহযোগিতা চান তাঁরা। ১০ মিনিটের মধ্যে ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্রুপের আরও পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ছিনতাই করা ভ্যানিটি ব্যাগ। 

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

তিনি বলেন, এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন। এ চক্রের সদস্যরা দিনে বিভিন্ন কাজ করে। পাশাপাশি টিকটক ভিডিও বানায়। ভিডিওতে সশস্ত্র চিত্র ধারণ করে তারা। রাতে তারা ছিনতাইয়ে নেমে পড়ে। এ ছাড়া চক্রটি দুই-তিন বছর ধরে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান, ঢাকা উদ্যান, বছিলা ও রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র মহড়াসহ ভাড়ায় শোডাউন করে আসছিল। 

গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন কিশোর। বাকিরা হলেন-গ্যাং লিডার শরীফ ওরফে মোহন (১৮), রুমান (১৮), উদয় (১৯), শাকিল (১৯), নয়ন (১৮) ও জাহিদ (১৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চারটি দেশীয় তৈরি ছুরি, একটি স্টিলের হাতলযুক্ত কুঠার, গাঁজা ৫০ পুরিয়া, একটি স্টিলের তৈরি হোল্ডিং চাকু, একটি প্লাস্টিকের পিস্তল সদৃশ, ৬৫ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জাম এবং তিনটি মোবাইল। 

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজধানী বেশ কিছু এলাকাকে ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কাজের জন্য হটস্পট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান ও বছিলা ও রায়েরবাজার এলাকা অন্যতম। এসব এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র‍্যাব। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভাইব্বা ল কিং’ নামক একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপের সদস্য। মোহনের নেতৃত্বে গ্যাংটি গড়ে উঠেছে। এরা এলাকায় মোহন সিন্ডিকেট নামেও পরিচিত। এ গ্রুপের সদস্যরা আগে লেবেল হাই গ্যাংয়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্তর্কোন্দলে পরে পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। গ্রুপটি ফেসবুক ও টিকটকে সক্রিয়। এ ছাড়া কিশোর গ্যাং চক্রটি ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত। 

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ভাইব্বা ল কিং চক্রটিকে আধিপত্য বিস্তারে পেছন থেকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকদের শনাক্ত করা হয়েছে। এই চক্রের পলাতকসহ পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। র‍্যাব প্রথম গ্যাং কালচারের নামে গড়ে ওঠা কিশোর গ্যাং বিরোধী অভিযান শুরু করে বলেও উল্লেখ করেন র‍্যাবের এ কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক কেরানির ২৪টি আলিশান বাড়ি ও ৩০ হাজার কোটির সম্পদ

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

আরও বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত