Ajker Patrika

বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরির নামে মানব পাচার, মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৬: ৩৭
বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরির নামে মানব পাচার, মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ২

ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে মানব পাচার করত একটি চক্র। এই চক্রের মূল হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মাহাবুব আল হাসান (৫০) ও মাহমুদ করিম (৩৬)। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, ভুয়া কোর্সের সনদ, ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন এ সব তথ্য জানান।

আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, এই চক্র দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্রদের বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রটি দালালের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যেতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তিদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করত। গত দুই বছরে ৫২১টি পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে যাঁরা মধ্যেপ্রাচ্যে যেতে আগ্রহী তাঁদের কাছ থেকে ২-৩ লাখ টাকা করে আদায় করা হতো। যারা ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক, তাদের কাছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা নেওয়া হতো। বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র, ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেটসহ নিজস্ব কম্পিউটারে তৈরিকৃত বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে তাদের বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করত এই চক্র।

এই চক্র বিভিন্ন প্রলোভন দেখালেও বিদেশে পাঠাতে পারত না জানিয়ে লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগীদের আশ্বাস দিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হতো। যখন ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরতের জন্য তাগাদা দিতেন, তখন আর টাকা ফেরত দিতেন না। এ ছাড়া গত দুই বছরে পাসপোর্ট এবং অর্থ জমাদানকারী কোনো ভিকটিমকে তাঁরা বিদেশে পাঠাতে পারেননি।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আসামি মাহবুব গত ২০০০ সাল থেকে সংঘবদ্ধ মানব পাচার ও প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি প্রথমে বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রতারণার মাধ্যমে কিছু লোক পাঠান। সেই সুবাদে অন্যদের ও তাঁদের অভিভাবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করিয়ে পাসপোর্ট এবং প্রাথমিক খরচ বাবদ ১ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে ফোন দিয়ে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন যে, তাঁদের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে তাঁরা খুব ভালো আছেন এবং অনেক অর্থ উপার্জন করে নিজেদের ভাগ্য বদল করতে সক্ষম হয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃতরা।

আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, পরবর্তীতে দেখা যায়, এই চক্রের মাধ্যমে বিদেশে পৌঁছানোর পর বিদেশে অবস্থানরত এজেন্ট দ্বারা তাঁদের পুনরায় প্রতারিত করা হয়। তাঁদের কাজের নামে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। বন্দী করে রেখে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। এ সময়ে মাহবুব এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ভিকটিমদের অপেক্ষা করতে বলেন।তিনি জানা, কিছুদিন পরে কোম্পানি চালু হবে। তখন তাঁরা বেতন ও কাজের সুযোগ পাবেন।

এই চক্রের ট্রাভেল এজেন্সি বা রিক্রুটিং এজেন্সি পরিচালনার কোনো লাইসেন্স নাই বলে জানিয়েছেন র‍্যাবর এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, স্বল্প সময়ে, বিনাশ্রমে অধিক লাভ বা অর্থ উপার্জনই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। ভিকটিমরা বিদেশে গিয়ে কোনো কাজ না পেয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার এবং আর্থিকভাবে সর্বশ্বান্ত হলেও তাদের কোনো অনুশোচনা থাকে না। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত