Ajker Patrika

প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত যুবলীগ নেতার দাফন সম্পন্ন, আটক ৫

তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত যুবলীগ নেতার দাফন সম্পন্ন, আটক ৫

কুমিল্লার তিতাসের ভিটিকান্দি ইউপির বর্তমানের চেয়ারম্যানের সমর্থকদের হামলায় নিহত যুবলীগ নেতা জহিরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন।

জহির উপজেলায় ভিটিকান্দি ইউনিয়নে মানিককান্দি গ্রামের ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে। 

আজ বুধবার (৭ ডিসেম্বর) মাগরিবের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। জানাজায় অংশ নেন তিতাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক পারভেজ হোসেন সরকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ সহস্রাধিক মানুষ। 

জানাজার আগে সন্ধ্যা ৬টায় জহিরের লাশবাহী গাড়ি তার গ্রামের বাড়ি মানিককান্দিতে পৌঁছালে শত শত নারী-পরুষ এসে জড়ো হয়।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মনির হোসেন নামের একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আহত অবস্থায় বুধবার বিকেলে আটক করে প্রথমে তিতাস থানায় আনা হয়। পরে মনিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্য চারজনকে তিতাস থানা-পুলিশের হেফাজতে আছেন। 

নিহত যুবলীগ নেতা জহিরমানিককান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবু মুছা জুয়েল বলেন, ‘জমি দখল ও মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে প্রথমে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম গ্রুপের সঙ্গে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে ফাঁকাগুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে বর্তমান চেয়ারম্যান বাবুল আহম্মেদ ৫০ / ৬০ লোক নিয়ে আসলে পুলিশের উপস্থিতিতে জহির ভাইকে সাইফুল মেম্বারের বাড়ির ভেতরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল চেয়ারম্যান দায়ী।’ 

নিহত যুবলীগ নেতা জহিরের বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, ‘আমি সাত বছর আগে মানিককান্দি গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী হালিম মিয়ার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ৩০ শতক জমি কিনি। হালিম বাড়িতে এসে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। হালিম এক বছর হলো বাড়িতে এসেছে। কিন্তু আমাকে জমি রেজিস্ট্রি না দিয়ে সাইফুলের নিকট বিক্রি করে দেয়। রেজিস্ট্রার অফিসে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাই। থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি উভয় পক্ষকে থানায় ডাকলে সাইফুল ও হালিম উপস্থিত না হওয়ায় এক সপ্তাহের সময় দেয় এবং উভয়কে মাছ ধরতে নিষেধ করে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তারা (প্রতিপক্ষ) ওসির নিষেধ অমান্য করে মাছ ধরতে গেলে আমার ছেলে বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ এসে মীমাংসা করে দিবে বলে আমার ছেলেকে ডেকে নেয়। এরপর সাইফুলের ছেলেরাসহ তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে।’ এই কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি। 

এ বিষয়ে তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রথম অবস্থার দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকাগুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে বাবুল চেয়ারম্যান দলবল নিয়ে তাঁর সমর্থক সাইফুল মেম্বারের পক্ষের লোকজন নিয়ে আসলে ফের আবু মোল্লার ছেলে জহিরের ওপর হামলা করে। এ সময় এসআই মাহমুদুল গুরুতর আহত হয়েছে।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আমাদের পুলিশ মাঠে কাজ করছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতেই চারজনকে আটক করেছি। এ ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারকৃত মনির বর্তমানে কুমিল্লায় পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন আছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত