Ajker Patrika

চট্টগ্রামে এক বিচারক ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ১০
Thumbnail image

গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সস্ত্রীক মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের এক বিচারক। বিচারককে কিল ঘুষি ও ইট দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা ও তাঁর স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় মামলার পর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড়ে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতেই পাঁচলাইশ থানায় মামলার পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মারধরের শিকার বিচারক হলেন, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আদালতের মহানগর হাকিম (সিএমএম) মো. অলি উল্লাহ। অন্যদিকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার জয় নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা রানা মর্তুজা (৪৫), তাঁর দুই বোন ঢাকার বসুন্ধরা সি-ব্লকের বাসিন্দা মাসুকা সুলতানা (৩৫) ও জিবান সুলতানা (২৮) এবং গাড়ির চালক আবদুর রহিম (৩৮)।

এ মামলায় শিশির মাহমুদ (৪০) ও আব্দুর রহিম নামে ঢাকা ভাটারা থানার দুই বাসিন্দাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ / ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। বিচারকের পক্ষে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় এই মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, ঘটনার দিন বিচারক অলি উল্লাহ স্ত্রীকে নিয়ে একটি কফি হাউস থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে জিইসি মোড় সংলগ্ন গোলপাহাড় মোড় যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে একটি গাড়ি বেপরোয়া হর্ন বাজিয়ে আসে। পরে অলি উল্লাহর পেছনে গিয়ে ধাক্কা মারলে তিনি ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে অভিযুক্ত আসামিরা স্ত্রীর সামনে বিচারককে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেন। বিচারক সঙ্গে থাকা নারী ওনার স্ত্রী ও নিজের পরিচয় অভিযুক্তদের জানান। তখন অভিযুক্তরা ‘কিসের ম্যাজিস্ট্রেট তুই, তুই ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট’-এসব বলে বিচারকের পাঞ্জাবির কলার ধরে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। এতে তাঁর মুখ ও দাঁত ভেঙে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে অলি উল্লাহ নিচে পড়ে গেলে তাঁকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন তাঁরা। আঘাত প্রতিহত করতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী হাতে ও বুকে আঘাত পান বলে এজাহারে জানানো হয়।

এ ছাড়া মারধরের পর অভিযুক্ত রানা মর্তুজা ফোনে করে আরও লোকজন ডেকে আনেন। এরপর ভুক্তভোগীদের অজ্ঞাত একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে আরও মারধর করেন। পরে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে চারজনকে গাড়িসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ বিচারক অলি উল্লাহকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাসুকা ও জিবান সুলতানার বিরুদ্ধে বিচারকের স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেসুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিচারককে মারধরের বিষয়টি পরিকল্পিত বা এর পেছনে পূর্বের অন্য কোনো কারণ ছিল না। এটা তখনই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটেছিল। এরপরও আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। এখনো পর্যন্ত এ মামলায় আমরা চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’

পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে কথা-কাটাকাটির জের ধরেই মারামারি ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত