Ajker Patrika

চান্দিনায় মেয়েকে হত্যার তিন দিন পর বাবাকে হত্যার চেষ্টা

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ০১
চান্দিনায় মেয়েকে হত্যার তিন দিন পর বাবাকে হত্যার চেষ্টা

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় মেয়েকে গলা কেটে হত্যার তিন দিন পর বাবা সোলেমান ব্যাপারীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আহত সোলেমান ব্যাপারী (৪৫) ওই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তাঁর মেয়ে সালমা আক্তার হত্যা মামলার বাদী। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনার বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান ব্যাপারী ও তাঁর ভাতিজাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জের ধরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর ভাতিজারা সোলেমান ব্যাপারীর স্ত্রীকে মারধর করায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১ অক্টোবর রাতে সোলেমানের মেয়ে সালমাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা সোলেমান বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। 

মামলার পর সোমবার সন্ধ্যা থেকে তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না তাঁর পরিবার। আজ ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে আহতাবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পরিবারকে খবর দেন। 

মামলার আসামিরা হলেন এই এলাকার মৃত আ. খালেকের ছেলে মো. শাহজালাল (২৬) ও মো. শাহ কামাল (২৩), মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে মো. ওজায়ের আহম্মেদ (৪৮), মৃত রুস্তম আলীর ছেলে সামছুল হক (৪০), শুক্কুর আলীর ছেলে আশ্রাফ মিয়া (৪৫) ও বিল্লাল হোসেন (৪২), আশ্রাফ মিয়ার ছেলে নাজমুল (২৩), মো. ওজায়ের আহম্মেদের স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৩০), মৃত আ. খালেকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০) এবং মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে ফজলুল হক (৬২)। আসামিরা উপজেলার বসন্তপুর (ভূঁইয়াপাড়া) গ্রামের। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা দু-তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সোলেমান ব্যাপারী। আসামিদের মধ্যে ১ নম্বর আসামি মো. শাহজালাল ও ২ নম্বর আসামি মো. শাহ কামাল (২৩) তাঁর আপন ভাতিজা। অন্য আসামিরা আত্মীয় ও প্রতিবেশী। 

সোলেমান ব্যাপারীর বড় মেয়ে এলমা আক্তার বলেন, ‘সোমবার রাত ৮টায় বাড়ির পাশের ইউনুছের দোকানে যাওয়ার পর থেকে আব্বাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। মোবাইলে কল দিয়েও বন্ধ পাই। পরবর্তীতে আমরা থানায় খবর দিই। পুলিশ এসেও বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে চলে যায়। মঙ্গলবার ভোরে গ্রামের এক লোক জমিতে কাজ করতে যাওয়ার পথে বাড়ির পাশের একটি বাগানে আব্বার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ও গলায় কাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেন।’ 

সালমা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুজন দত্ত বলেন, `সোমবার সন্ধ্যায় বাদী সোলেমানকে নিয়ে থানায় হাজির হতে ওয়ার্ড মেম্বার ইসমাইল হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর মেম্বার জানান, সোলেমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে সোলেমানের পরিবার থানাকে অবহিত করলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েও তাঁকে খুঁজে পাইনি।' 

গল্লাই ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁর ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, আহতকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এর আগে তাঁর মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা সবাই পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত