রাশেদ নিজাম ও মাইনউদ্দিন শাহেদ কক্সবাজার থেকে
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূল রক্ষায় প্রহরী হিসেবে ভূমিকা রাখা সব গাছ কেটে স্থাপনা গড়ে রুদ্ধ করা হয়েছে নদীর প্রবাহ। নদীতীরের জমি দখলে নেওয়ার এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরের কস্তুরাঘাট এলাকা ঘুরে। ভরদুপুরেও চলছিল বালু তোলা এবং ভবন নির্মাণের কাজ।
এক পাশে নদীর জায়গা ভরাট করে স্থাপনা বানানোর তৎপরতার মধ্যেই আরেক পাশে দেখা যায় ‘এই জমির মালিক কক্সবাজার পৌরসভা’ লেখা সাইনবোর্ড। শহরের অংশে বাঁকখালী সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০০ একর প্যারাবান দখলের সব আয়োজন পাকা।
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাঁকখালীর পাড়ে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে ভাগাড়টিই দখলের চাবিকাঠি হয়ে ওঠে। দখলদারেরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে সবারই অভিযোগ, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার মাধ্যমেই শুরু দখল প্রক্রিয়ার। ২০১৮ সালে মুজিবুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বেগবান হয় বন উজাড় করে নদীতীরের জায়গা দখল করার কার্যক্রম। প্রতিদিন শহরের প্রায় ১৫০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে কস্তুরাঘাটে নদীর জায়গায় ফেলা হয়। এতে সেখানে বর্জ্যের পাহাড় জমেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১৪ সালে তৈরি নদী দখলদারের তালিকায় মুজিবুর রহমানের নাম প্রথম উঠে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, নতুন বাহারছড়া এলাকায় বাঁকখালীর পাড় দখল করে বেশ কিছু ছোট ঘর ও একটি ওয়্যারহাউস বানিয়ে ভাড়া দিয়েছেন মুজিবুর।
নদীর তীরবর্তী জমিতে ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া এবং পৌরসভার সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার ফোন করে পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মুজিবুর রহমান সংযোগ কেটে দেন। পরে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ফোন করার সময় মেয়র বিমানবন্দের ছিলেন। বিদেশে চলে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম তারিকুল আলম বলেন, তাঁরা নদী বা নদীর জায়গায় বর্জ্য ফেলেন না। পৌরসভার নিজস্ব এবং খাস জায়গায় বর্জ্য ফেলা হয়। তবে সাইনবোর্ড লাগানো জায়গাটি পৌরসভার কীভাবে হলো, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
সাইনবোর্ড লাগানো জমি পৌরসভার নয়
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় যে জায়গায় কক্সবাজার পৌরসভা সাইনবোর্ড লাগিয়েছে, সে জায়গাটা জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। তাই এটা কোনোভাবেই পৌরসভার জমি নয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার বাঁকখালী পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একই জমি জেলা প্রশাসন বলছে তাদের, আবার পৌরসভা তাদের বলে নোটিশ টাঙায়। কী হাস্যকর বিষয়টা! কৌশলে পৌরসভা এই নদীর জায়গাই বেছে নিয়েছে ময়লা ফেলার জন্য। নদী দখল করার দুরভিসন্ধি থেকেই তারা এখানে আগে থেকে কাজ শুরু করেছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেছে।’
দখলে মেয়র, নেতা, আইনজীবী, ব্যবসায়ীদের নাম
জানা যায়, দখলকাজে জড়িত জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, স্থানীয় কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধি। ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটিএ ১৩০ জন দখলদারের নতুন যে তালিকা করে, তাতেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদের নাম আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি কস্তুরাঘাটে বাঁকখালীর তীর দখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের নামে কোনো সাইনবোর্ড লাগাননি কিংবা অন্য কোনোভাবে নাম ব্যবহার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোনো মন্তব্যও করেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরও তাঁদের নামে অভিযোগ করে না।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতা কতটুকু, সেটাও দেখতে হবে। অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। নিজেদের বিচারিক ক্ষমতা নেই, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে হয়।’
শত দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১
সরকারি নথি ও স্থানীয় সূত্রমতে, প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর একসময় প্রশস্ততা ছিল ১২০ মিটার। কিন্তু দখলের কারণে প্রশস্ততা কমে কক্সবাজার শহরের কোথাও ৫০ মিটার, কোথাও ৬০-৭০ মিটার হয়ে গেছে।
এই কাজে জড়িত প্রায় ১০০ দখলদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তিনটি মামলাও করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আসামিদের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছরের ১৫ জুন তিন দফায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও প্রায় অর্ধশত বেনামি আসামির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। বাঁকখালীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা শেষ মামলায় আসামি হিসেবে নাম আছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান ও সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের। মামলায় বলা হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র পাঁচ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনজন অফিসার নিয়ে জেলা চলে। তবু আমরা এখন পর্যন্ত ২৮১টি মামলা করেছি। কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছি।’
উপকূল রক্ষার প্রহরী উজাড়
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় থেকে সৃষ্ট বাঁকখালী নদী রামুর ওপর দিয়ে কক্সবাজার শহরের উত্তর পাশ হয়ে আঁকাবাঁকা পথে মিশেছে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে। সেই নদীর তীরে এক দশক আগে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবন। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে বাঁচাতে এ বনাঞ্চল প্রহরীর ভূমিকায় ছিল। প্যারাবন উজাড় করার পর খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে মাটি তুলে রাতারাতি জলাশয় ভরাট করে বানানো হয়েছে ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভরাট করা জমিতে টিনের ঘের দিয়ে প্লট আলাদা করা। তীরের জমি দখল করে স্থাপনা গড়ায় নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী জানান, প্যারাবনের অন্তত ৪০ হাজার বাইন ও কেওড়াগাছ উজাড় হওয়ায় ২০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থলসহ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত আড়াই শ একর প্যারাবন উজাড় করা হয়েছে। অথচ কক্সবাজার মডেল থানা থেকে কস্তুরাঘাটের দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ।
পরিবেশবিষয়ক সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাটে নদীর ওপর বানানো হচ্ছে বাঁকখালী সেতু। খুরুশকুল ও বৃহত্তর ঈদগাহ অঞ্চলের সঙ্গে শহরের বিকল্প সড়ক যোগাযোগ তৈরির সেতুটিই যেন বাঁকখালী নদীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব অবৈধ দখল যেকোনোভাবে উচ্ছেদ করা হবে। তবে উচ্ছেদ নিয়ে কিছু আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নানা কারণে কিছু জমি খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আইনি জটিলতা বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রকাশ্যে নদী হত্যায় কী বিচার
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দখলের দৃশ্যটি অত্যন্ত বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। বিশাল প্যারাবন নিধন করে ফেলা হয়েছে। এখানে যে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেখানে জোয়ারের পানি দেখা যাচ্ছে, নিধন করা প্যারাবনের গাছও দেখা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে এ নদী হত্যায় আদালতের যে রায় আছে, তার আলোকে কী বিচার হচ্ছে, এটা দেখতে হবে। সরকার কেন মনে করছে এ রায় মানতে হবে না?’
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূল রক্ষায় প্রহরী হিসেবে ভূমিকা রাখা সব গাছ কেটে স্থাপনা গড়ে রুদ্ধ করা হয়েছে নদীর প্রবাহ। নদীতীরের জমি দখলে নেওয়ার এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরের কস্তুরাঘাট এলাকা ঘুরে। ভরদুপুরেও চলছিল বালু তোলা এবং ভবন নির্মাণের কাজ।
এক পাশে নদীর জায়গা ভরাট করে স্থাপনা বানানোর তৎপরতার মধ্যেই আরেক পাশে দেখা যায় ‘এই জমির মালিক কক্সবাজার পৌরসভা’ লেখা সাইনবোর্ড। শহরের অংশে বাঁকখালী সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০০ একর প্যারাবান দখলের সব আয়োজন পাকা।
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাঁকখালীর পাড়ে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে ভাগাড়টিই দখলের চাবিকাঠি হয়ে ওঠে। দখলদারেরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে সবারই অভিযোগ, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার মাধ্যমেই শুরু দখল প্রক্রিয়ার। ২০১৮ সালে মুজিবুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বেগবান হয় বন উজাড় করে নদীতীরের জায়গা দখল করার কার্যক্রম। প্রতিদিন শহরের প্রায় ১৫০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে কস্তুরাঘাটে নদীর জায়গায় ফেলা হয়। এতে সেখানে বর্জ্যের পাহাড় জমেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১৪ সালে তৈরি নদী দখলদারের তালিকায় মুজিবুর রহমানের নাম প্রথম উঠে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, নতুন বাহারছড়া এলাকায় বাঁকখালীর পাড় দখল করে বেশ কিছু ছোট ঘর ও একটি ওয়্যারহাউস বানিয়ে ভাড়া দিয়েছেন মুজিবুর।
নদীর তীরবর্তী জমিতে ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া এবং পৌরসভার সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার ফোন করে পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মুজিবুর রহমান সংযোগ কেটে দেন। পরে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ফোন করার সময় মেয়র বিমানবন্দের ছিলেন। বিদেশে চলে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম তারিকুল আলম বলেন, তাঁরা নদী বা নদীর জায়গায় বর্জ্য ফেলেন না। পৌরসভার নিজস্ব এবং খাস জায়গায় বর্জ্য ফেলা হয়। তবে সাইনবোর্ড লাগানো জায়গাটি পৌরসভার কীভাবে হলো, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
সাইনবোর্ড লাগানো জমি পৌরসভার নয়
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় যে জায়গায় কক্সবাজার পৌরসভা সাইনবোর্ড লাগিয়েছে, সে জায়গাটা জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। তাই এটা কোনোভাবেই পৌরসভার জমি নয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার বাঁকখালী পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একই জমি জেলা প্রশাসন বলছে তাদের, আবার পৌরসভা তাদের বলে নোটিশ টাঙায়। কী হাস্যকর বিষয়টা! কৌশলে পৌরসভা এই নদীর জায়গাই বেছে নিয়েছে ময়লা ফেলার জন্য। নদী দখল করার দুরভিসন্ধি থেকেই তারা এখানে আগে থেকে কাজ শুরু করেছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেছে।’
দখলে মেয়র, নেতা, আইনজীবী, ব্যবসায়ীদের নাম
জানা যায়, দখলকাজে জড়িত জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, স্থানীয় কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধি। ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটিএ ১৩০ জন দখলদারের নতুন যে তালিকা করে, তাতেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদের নাম আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি কস্তুরাঘাটে বাঁকখালীর তীর দখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের নামে কোনো সাইনবোর্ড লাগাননি কিংবা অন্য কোনোভাবে নাম ব্যবহার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোনো মন্তব্যও করেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরও তাঁদের নামে অভিযোগ করে না।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতা কতটুকু, সেটাও দেখতে হবে। অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। নিজেদের বিচারিক ক্ষমতা নেই, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে হয়।’
শত দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১
সরকারি নথি ও স্থানীয় সূত্রমতে, প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর একসময় প্রশস্ততা ছিল ১২০ মিটার। কিন্তু দখলের কারণে প্রশস্ততা কমে কক্সবাজার শহরের কোথাও ৫০ মিটার, কোথাও ৬০-৭০ মিটার হয়ে গেছে।
এই কাজে জড়িত প্রায় ১০০ দখলদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তিনটি মামলাও করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আসামিদের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছরের ১৫ জুন তিন দফায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও প্রায় অর্ধশত বেনামি আসামির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। বাঁকখালীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা শেষ মামলায় আসামি হিসেবে নাম আছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান ও সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের। মামলায় বলা হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র পাঁচ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনজন অফিসার নিয়ে জেলা চলে। তবু আমরা এখন পর্যন্ত ২৮১টি মামলা করেছি। কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছি।’
উপকূল রক্ষার প্রহরী উজাড়
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় থেকে সৃষ্ট বাঁকখালী নদী রামুর ওপর দিয়ে কক্সবাজার শহরের উত্তর পাশ হয়ে আঁকাবাঁকা পথে মিশেছে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে। সেই নদীর তীরে এক দশক আগে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবন। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে বাঁচাতে এ বনাঞ্চল প্রহরীর ভূমিকায় ছিল। প্যারাবন উজাড় করার পর খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে মাটি তুলে রাতারাতি জলাশয় ভরাট করে বানানো হয়েছে ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভরাট করা জমিতে টিনের ঘের দিয়ে প্লট আলাদা করা। তীরের জমি দখল করে স্থাপনা গড়ায় নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী জানান, প্যারাবনের অন্তত ৪০ হাজার বাইন ও কেওড়াগাছ উজাড় হওয়ায় ২০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থলসহ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত আড়াই শ একর প্যারাবন উজাড় করা হয়েছে। অথচ কক্সবাজার মডেল থানা থেকে কস্তুরাঘাটের দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ।
পরিবেশবিষয়ক সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাটে নদীর ওপর বানানো হচ্ছে বাঁকখালী সেতু। খুরুশকুল ও বৃহত্তর ঈদগাহ অঞ্চলের সঙ্গে শহরের বিকল্প সড়ক যোগাযোগ তৈরির সেতুটিই যেন বাঁকখালী নদীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব অবৈধ দখল যেকোনোভাবে উচ্ছেদ করা হবে। তবে উচ্ছেদ নিয়ে কিছু আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নানা কারণে কিছু জমি খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আইনি জটিলতা বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রকাশ্যে নদী হত্যায় কী বিচার
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দখলের দৃশ্যটি অত্যন্ত বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। বিশাল প্যারাবন নিধন করে ফেলা হয়েছে। এখানে যে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেখানে জোয়ারের পানি দেখা যাচ্ছে, নিধন করা প্যারাবনের গাছও দেখা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে এ নদী হত্যায় আদালতের যে রায় আছে, তার আলোকে কী বিচার হচ্ছে, এটা দেখতে হবে। সরকার কেন মনে করছে এ রায় মানতে হবে না?’
রাশেদ নিজাম ও মাইনউদ্দিন শাহেদ কক্সবাজার থেকে
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূল রক্ষায় প্রহরী হিসেবে ভূমিকা রাখা সব গাছ কেটে স্থাপনা গড়ে রুদ্ধ করা হয়েছে নদীর প্রবাহ। নদীতীরের জমি দখলে নেওয়ার এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরের কস্তুরাঘাট এলাকা ঘুরে। ভরদুপুরেও চলছিল বালু তোলা এবং ভবন নির্মাণের কাজ।
এক পাশে নদীর জায়গা ভরাট করে স্থাপনা বানানোর তৎপরতার মধ্যেই আরেক পাশে দেখা যায় ‘এই জমির মালিক কক্সবাজার পৌরসভা’ লেখা সাইনবোর্ড। শহরের অংশে বাঁকখালী সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০০ একর প্যারাবান দখলের সব আয়োজন পাকা।
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাঁকখালীর পাড়ে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে ভাগাড়টিই দখলের চাবিকাঠি হয়ে ওঠে। দখলদারেরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে সবারই অভিযোগ, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার মাধ্যমেই শুরু দখল প্রক্রিয়ার। ২০১৮ সালে মুজিবুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বেগবান হয় বন উজাড় করে নদীতীরের জায়গা দখল করার কার্যক্রম। প্রতিদিন শহরের প্রায় ১৫০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে কস্তুরাঘাটে নদীর জায়গায় ফেলা হয়। এতে সেখানে বর্জ্যের পাহাড় জমেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১৪ সালে তৈরি নদী দখলদারের তালিকায় মুজিবুর রহমানের নাম প্রথম উঠে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, নতুন বাহারছড়া এলাকায় বাঁকখালীর পাড় দখল করে বেশ কিছু ছোট ঘর ও একটি ওয়্যারহাউস বানিয়ে ভাড়া দিয়েছেন মুজিবুর।
নদীর তীরবর্তী জমিতে ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া এবং পৌরসভার সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার ফোন করে পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মুজিবুর রহমান সংযোগ কেটে দেন। পরে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ফোন করার সময় মেয়র বিমানবন্দের ছিলেন। বিদেশে চলে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম তারিকুল আলম বলেন, তাঁরা নদী বা নদীর জায়গায় বর্জ্য ফেলেন না। পৌরসভার নিজস্ব এবং খাস জায়গায় বর্জ্য ফেলা হয়। তবে সাইনবোর্ড লাগানো জায়গাটি পৌরসভার কীভাবে হলো, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
সাইনবোর্ড লাগানো জমি পৌরসভার নয়
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় যে জায়গায় কক্সবাজার পৌরসভা সাইনবোর্ড লাগিয়েছে, সে জায়গাটা জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। তাই এটা কোনোভাবেই পৌরসভার জমি নয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার বাঁকখালী পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একই জমি জেলা প্রশাসন বলছে তাদের, আবার পৌরসভা তাদের বলে নোটিশ টাঙায়। কী হাস্যকর বিষয়টা! কৌশলে পৌরসভা এই নদীর জায়গাই বেছে নিয়েছে ময়লা ফেলার জন্য। নদী দখল করার দুরভিসন্ধি থেকেই তারা এখানে আগে থেকে কাজ শুরু করেছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেছে।’
দখলে মেয়র, নেতা, আইনজীবী, ব্যবসায়ীদের নাম
জানা যায়, দখলকাজে জড়িত জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, স্থানীয় কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধি। ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটিএ ১৩০ জন দখলদারের নতুন যে তালিকা করে, তাতেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদের নাম আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি কস্তুরাঘাটে বাঁকখালীর তীর দখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের নামে কোনো সাইনবোর্ড লাগাননি কিংবা অন্য কোনোভাবে নাম ব্যবহার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোনো মন্তব্যও করেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরও তাঁদের নামে অভিযোগ করে না।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতা কতটুকু, সেটাও দেখতে হবে। অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। নিজেদের বিচারিক ক্ষমতা নেই, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে হয়।’
শত দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১
সরকারি নথি ও স্থানীয় সূত্রমতে, প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর একসময় প্রশস্ততা ছিল ১২০ মিটার। কিন্তু দখলের কারণে প্রশস্ততা কমে কক্সবাজার শহরের কোথাও ৫০ মিটার, কোথাও ৬০-৭০ মিটার হয়ে গেছে।
এই কাজে জড়িত প্রায় ১০০ দখলদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তিনটি মামলাও করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আসামিদের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছরের ১৫ জুন তিন দফায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও প্রায় অর্ধশত বেনামি আসামির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। বাঁকখালীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা শেষ মামলায় আসামি হিসেবে নাম আছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান ও সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের। মামলায় বলা হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র পাঁচ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনজন অফিসার নিয়ে জেলা চলে। তবু আমরা এখন পর্যন্ত ২৮১টি মামলা করেছি। কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছি।’
উপকূল রক্ষার প্রহরী উজাড়
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় থেকে সৃষ্ট বাঁকখালী নদী রামুর ওপর দিয়ে কক্সবাজার শহরের উত্তর পাশ হয়ে আঁকাবাঁকা পথে মিশেছে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে। সেই নদীর তীরে এক দশক আগে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবন। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে বাঁচাতে এ বনাঞ্চল প্রহরীর ভূমিকায় ছিল। প্যারাবন উজাড় করার পর খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে মাটি তুলে রাতারাতি জলাশয় ভরাট করে বানানো হয়েছে ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভরাট করা জমিতে টিনের ঘের দিয়ে প্লট আলাদা করা। তীরের জমি দখল করে স্থাপনা গড়ায় নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী জানান, প্যারাবনের অন্তত ৪০ হাজার বাইন ও কেওড়াগাছ উজাড় হওয়ায় ২০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থলসহ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত আড়াই শ একর প্যারাবন উজাড় করা হয়েছে। অথচ কক্সবাজার মডেল থানা থেকে কস্তুরাঘাটের দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ।
পরিবেশবিষয়ক সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাটে নদীর ওপর বানানো হচ্ছে বাঁকখালী সেতু। খুরুশকুল ও বৃহত্তর ঈদগাহ অঞ্চলের সঙ্গে শহরের বিকল্প সড়ক যোগাযোগ তৈরির সেতুটিই যেন বাঁকখালী নদীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব অবৈধ দখল যেকোনোভাবে উচ্ছেদ করা হবে। তবে উচ্ছেদ নিয়ে কিছু আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নানা কারণে কিছু জমি খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আইনি জটিলতা বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রকাশ্যে নদী হত্যায় কী বিচার
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দখলের দৃশ্যটি অত্যন্ত বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। বিশাল প্যারাবন নিধন করে ফেলা হয়েছে। এখানে যে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেখানে জোয়ারের পানি দেখা যাচ্ছে, নিধন করা প্যারাবনের গাছও দেখা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে এ নদী হত্যায় আদালতের যে রায় আছে, তার আলোকে কী বিচার হচ্ছে, এটা দেখতে হবে। সরকার কেন মনে করছে এ রায় মানতে হবে না?’
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূল রক্ষায় প্রহরী হিসেবে ভূমিকা রাখা সব গাছ কেটে স্থাপনা গড়ে রুদ্ধ করা হয়েছে নদীর প্রবাহ। নদীতীরের জমি দখলে নেওয়ার এমন দৃশ্য দেখা গেছে শহরের কস্তুরাঘাট এলাকা ঘুরে। ভরদুপুরেও চলছিল বালু তোলা এবং ভবন নির্মাণের কাজ।
এক পাশে নদীর জায়গা ভরাট করে স্থাপনা বানানোর তৎপরতার মধ্যেই আরেক পাশে দেখা যায় ‘এই জমির মালিক কক্সবাজার পৌরসভা’ লেখা সাইনবোর্ড। শহরের অংশে বাঁকখালী সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩০০ একর প্যারাবান দখলের সব আয়োজন পাকা।
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাঁকখালীর পাড়ে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে ভাগাড়টিই দখলের চাবিকাঠি হয়ে ওঠে। দখলদারেরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে সবারই অভিযোগ, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার মাধ্যমেই শুরু দখল প্রক্রিয়ার। ২০১৮ সালে মুজিবুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বেগবান হয় বন উজাড় করে নদীতীরের জায়গা দখল করার কার্যক্রম। প্রতিদিন শহরের প্রায় ১৫০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে কস্তুরাঘাটে নদীর জায়গায় ফেলা হয়। এতে সেখানে বর্জ্যের পাহাড় জমেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১৪ সালে তৈরি নদী দখলদারের তালিকায় মুজিবুর রহমানের নাম প্রথম উঠে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, নতুন বাহারছড়া এলাকায় বাঁকখালীর পাড় দখল করে বেশ কিছু ছোট ঘর ও একটি ওয়্যারহাউস বানিয়ে ভাড়া দিয়েছেন মুজিবুর।
নদীর তীরবর্তী জমিতে ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া এবং পৌরসভার সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার ফোন করে পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মুজিবুর রহমান সংযোগ কেটে দেন। পরে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ফোন করার সময় মেয়র বিমানবন্দের ছিলেন। বিদেশে চলে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম তারিকুল আলম বলেন, তাঁরা নদী বা নদীর জায়গায় বর্জ্য ফেলেন না। পৌরসভার নিজস্ব এবং খাস জায়গায় বর্জ্য ফেলা হয়। তবে সাইনবোর্ড লাগানো জায়গাটি পৌরসভার কীভাবে হলো, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
সাইনবোর্ড লাগানো জমি পৌরসভার নয়
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় যে জায়গায় কক্সবাজার পৌরসভা সাইনবোর্ড লাগিয়েছে, সে জায়গাটা জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। তাই এটা কোনোভাবেই পৌরসভার জমি নয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার বাঁকখালী পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একই জমি জেলা প্রশাসন বলছে তাদের, আবার পৌরসভা তাদের বলে নোটিশ টাঙায়। কী হাস্যকর বিষয়টা! কৌশলে পৌরসভা এই নদীর জায়গাই বেছে নিয়েছে ময়লা ফেলার জন্য। নদী দখল করার দুরভিসন্ধি থেকেই তারা এখানে আগে থেকে কাজ শুরু করেছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেছে।’
দখলে মেয়র, নেতা, আইনজীবী, ব্যবসায়ীদের নাম
জানা যায়, দখলকাজে জড়িত জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, স্থানীয় কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধি। ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটিএ ১৩০ জন দখলদারের নতুন যে তালিকা করে, তাতেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদের নাম আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি কস্তুরাঘাটে বাঁকখালীর তীর দখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের নামে কোনো সাইনবোর্ড লাগাননি কিংবা অন্য কোনোভাবে নাম ব্যবহার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোনো মন্তব্যও করেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরও তাঁদের নামে অভিযোগ করে না।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতা কতটুকু, সেটাও দেখতে হবে। অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। নিজেদের বিচারিক ক্ষমতা নেই, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে হয়।’
শত দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১
সরকারি নথি ও স্থানীয় সূত্রমতে, প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর একসময় প্রশস্ততা ছিল ১২০ মিটার। কিন্তু দখলের কারণে প্রশস্ততা কমে কক্সবাজার শহরের কোথাও ৫০ মিটার, কোথাও ৬০-৭০ মিটার হয়ে গেছে।
এই কাজে জড়িত প্রায় ১০০ দখলদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তিনটি মামলাও করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আসামিদের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছরের ১৫ জুন তিন দফায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও প্রায় অর্ধশত বেনামি আসামির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। বাঁকখালীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা শেষ মামলায় আসামি হিসেবে নাম আছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান ও সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের। মামলায় বলা হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র পাঁচ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনজন অফিসার নিয়ে জেলা চলে। তবু আমরা এখন পর্যন্ত ২৮১টি মামলা করেছি। কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছি।’
উপকূল রক্ষার প্রহরী উজাড়
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় থেকে সৃষ্ট বাঁকখালী নদী রামুর ওপর দিয়ে কক্সবাজার শহরের উত্তর পাশ হয়ে আঁকাবাঁকা পথে মিশেছে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে। সেই নদীর তীরে এক দশক আগে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবন। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে বাঁচাতে এ বনাঞ্চল প্রহরীর ভূমিকায় ছিল। প্যারাবন উজাড় করার পর খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে মাটি তুলে রাতারাতি জলাশয় ভরাট করে বানানো হয়েছে ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভরাট করা জমিতে টিনের ঘের দিয়ে প্লট আলাদা করা। তীরের জমি দখল করে স্থাপনা গড়ায় নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী জানান, প্যারাবনের অন্তত ৪০ হাজার বাইন ও কেওড়াগাছ উজাড় হওয়ায় ২০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থলসহ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। গত দুই-তিন মাসেই অন্তত আড়াই শ একর প্যারাবন উজাড় করা হয়েছে। অথচ কক্সবাজার মডেল থানা থেকে কস্তুরাঘাটের দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ।
পরিবেশবিষয়ক সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘খুরুশকুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কস্তুরাঘাটে নদীর ওপর বানানো হচ্ছে বাঁকখালী সেতু। খুরুশকুল ও বৃহত্তর ঈদগাহ অঞ্চলের সঙ্গে শহরের বিকল্প সড়ক যোগাযোগ তৈরির সেতুটিই যেন বাঁকখালী নদীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব অবৈধ দখল যেকোনোভাবে উচ্ছেদ করা হবে। তবে উচ্ছেদ নিয়ে কিছু আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নানা কারণে কিছু জমি খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আইনি জটিলতা বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রকাশ্যে নদী হত্যায় কী বিচার
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দখলের দৃশ্যটি অত্যন্ত বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। বিশাল প্যারাবন নিধন করে ফেলা হয়েছে। এখানে যে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেখানে জোয়ারের পানি দেখা যাচ্ছে, নিধন করা প্যারাবনের গাছও দেখা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে এ নদী হত্যায় আদালতের যে রায় আছে, তার আলোকে কী বিচার হচ্ছে, এটা দেখতে হবে। সরকার কেন মনে করছে এ রায় মানতে হবে না?’
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।
জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী থেকে শুরু করে খোদ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিচ্ছে নদীতীরের জমি। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন, পাখপাখালির কিচিরমিচির; সেখানে এখন স্থাপনার পর স্থাপনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২ দিন আগে