Ajker Patrika

চুরি দেখে ফেলার শঙ্কা থেকে তিনজনকে হত্যা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
চুরি দেখে ফেলার শঙ্কা থেকে তিনজনকে হত্যা

চুরি করা দেখে ফেলেছে—এমন আশঙ্কায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এক গৃহবধূ ও তাঁর দুই সন্তানকে হত্যা করেন আইয়ুব আলী ওরফে সাগর (২৮)। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি একাই জড়িত বলে পুলিশের কাছে  স্বীকার করেছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। গত রোববার রাতে জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আইয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, নিহত রওশনারা অভিযুক্ত আসামি আইয়ুব আলীর সৎখালা। রওশনারার স্বামী সুলতান আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন।

পুলিশ সুপার বলেন, আইয়ুব আলী পেশায় তাঁতশ্রমিক। তাঁর আয় দিয়ে সংসার না চলায় চারটি এনজিও থেকে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। সংসারের খরচ মেটানো এবং এনজিওর ঋণের কিস্তি একসঙ্গে চালানো কঠিন হয়ে পড়ে তাঁর জন্য। এ জন্য তিনি পালিয়ে বেড়াতেন। ঋণ পরিশোধ করতে টাকা ধারের জন্য গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি রওশনারার বাড়িতে যান। এ সময় ঘরের মধ্যে চারটি স্টিলের ট্র্যাংক দেখতে পান আইয়ুব আলী। তাঁর ধারণা ছিল ট্র্যাংকগুলোর মধ্যে টাকা ও স্বর্ণ রয়েছে।

ওই দিন বাড়িতে ফিরে রওশনারার বাড়িতে চুরি করার সিদ্ধান্ত নেন আইয়ুব। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৮ সেপ্টেম্বর রওশনারার বাড়ি যান। রাতের খাবার খেয়ে সবাই একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রওশনারার ওড়নার আঁচল থেকে চাবি নিয়ে ঘরে থাকা ট্র্যাংকগুলোর মধ্যে টাকা ও গয়না খোঁজাখুঁজি শুরু করেন আইয়ুব। একপর্যায়ে রওশনারাকে ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করতে দেখে আইয়ুব মনে করেন তাঁকে চুরি করা অবস্থায় দেখে ফেলেছেন। এরপর ঘরের ভেতরে থাকা শিলপাথর দিয়ে রওশনারার বুকে আঘাত করেন। পরে তাঁর গলা টিপে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। একপর্যায়ে রওশনারার ছোট ছেলে মাহিন (৩) কান্নাকাটি শুরু করলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এর কিছুক্ষণ পর আইয়ুব আলী টাকা ও গয়না খুঁজতে থাকলে আরেক ছেলে জিহাদ (১০) ঘুম থেকে উঠে পড়লে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি। পরে ভোরের দিকে আইয়ুব আলী ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে থেকে শিকল দিয়ে চলে যান। গত শনিবার দুপুরে ঘর থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় রওশনারার ভাই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর জড়িতদের ধরতে পুলিশ উচ্চমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আইয়ুব মনে করেছিলেন হত্যা করতে তাঁকে কেউ দেখেননি। এ কারণে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। আইয়ুব আলীকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিলপাথর ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গত শনিবার দুপুরে বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের মবুপুর নতুনপাড়ায় বোন রওশনারার বাড়িতে আসেন লিলি খাতুন। তালাবদ্ধ ঘরের মেঝেতে রওশনারা ও তাঁর দুই সন্তানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত