Ajker Patrika

গবেষণা চুরি, পাবিপ্রবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

প্রতিনিধি
গবেষণা চুরি, পাবিপ্রবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

পাবিপ্রবি (পাবনা): গবেষণা চুরির অভিযোগ উঠেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁরা হলেন, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আওয়াল কবির জয় এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইয়াহিয়া বেপারি।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফারুক হোসেন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাময়িকীতে প্রকাশিত এই দুই শিক্ষকের গবেষণা প্রবন্ধে মেধা চুরির অভিযোগ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব এডুকেশনের অধ্যাপক ড. রকিব চৌধুরী এবং অধ্যাপক ড. মাহবুব সরকার। যে বই থেকে গবেষণার লেখা চুরি করার অভিযোগ উঠেছে, সেটির সম্পাদকদের মধ্যে এই দুজন সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। এরপর রোববার (৩০ মে) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও পরিবেশ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়সার।

‘এঙ্গেজিং ইন এডুকেশনাল রিসার্চ: রিভিজিটিং পলিসি অ্যান্ড প্র্যাকটিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই বইটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। আন্তর্জাতিক জার্নাল প্রকাশক স্প্রিংগার–এ বইটির সম্পাদক চার বাংলাদেশি শিক্ষক। তাদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা বইটির একটি অধ্যায়ের প্রায় পুরোটাই চুরি করেছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষকদের গবেষণা প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘ইভলভিং রিয়েলিটিস অ্যান্ড চেঞ্জিং পার্সপেক্টিভস: অ্যা স্টাডি অব এডুকেশন সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’। গত ২৮ মার্চ এটি সায়েন্স পাবলিশিং গ্রুপের কাছে জমা দেওয়া হয়। ১২ এপ্রিল প্রবন্ধটি গৃহীত হওয়ার পর ২৩ এপ্রিল সেটি প্রকাশিত হয়। তবে, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ওঠায় প্রকাশনা সংস্থা গবেষণাটি তাদের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছে।

গত ১০ মে মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রকিব চৌধুরী পাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর কাছে এ বিষয়ে ই–মেইল করেন। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দুই শিক্ষকের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

ই–মেইলে বলা হয়, সম্প্রতি একটি এডুকেশনাল জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে আমরা গুরুতর ধরনের চৌর্যবৃত্তি দেখতে পেয়েছি। এই প্রকাশনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি আমরা। কারণ, আমাদের বিশ্বাস, এটি খুবই স্থূলভাবে আমাদের মেধাস্বত্ব অধিকার লঙ্ঘন করেছে। ওই প্রবন্ধে আমাদের প্রকাশিত লেখা ‘এডুকেশন ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জিং কনটেক্সটস অ্যান্ড ইমার্জিং রিয়েলিটিস’ থেকে প্রায় সবকিছুই নকল করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষক ইয়াহিয়া বেপারী বলেন, প্রবন্ধে তাঁর নাম থাকার বিষয়টি তিনি জানতেন না। তিনি বলেন, আমার সম্মতি ছাড়াই এটি আপলোড করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর আমি প্রকাশককে সাইট থেকে লেখাটি সরিয়ে নিতে বলি।

অপর শিক্ষক আওয়াল কবির জয় বলেন, আমরা প্রবন্ধটি নিয়ে কাজ করছিলাম। এটি প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল না। প্রবন্ধটি মুছে দেওয়া হয়েছে এবং আমরা আর এর ক্রেডিট দাবি করছি না। এটি নিয়ে আরও কাজ করে তারপর প্রকাশ করবো।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রোস্তম আলী বলেন, একজনের গবেষণামূলক লেখা কপি করে আরেকজনের গবেষক হওয়ার স্বপ্ন দেখা বা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া চরম অন্যায়। মেধাস্বত্ব চুরির অপরাধে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে দোষী সাব্যস্ত হলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...