Ajker Patrika

নদ থেকে খাল কপোতাক্ষ খনন কেবল মাঝখানে

নদ থেকে খাল কপোতাক্ষ খনন কেবল মাঝখানে

কপোতাক্ষ নদ খনন করে ‘খাল বানানো’ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নদের দুই পাশের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ না করে মাঝখান থেকে কিছু মাটি-বালু তুলে পাড়ে ফেলে খনন করা হচ্ছে। এমন খননে কোনো লাভ হবে না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও ‘কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলন’ কমিটির নেতারা।

খনন প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।গত শুক্রবার সরেজমিন উপজেলার মাগুরা ফুলতলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাগুরা সেতু থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে এক কিলোমিটার নদ খনন করা হয়েছে। শুধু মাঝখান খনন করায় নদ সরু হয়ে গেছে। স্থানীয়দের দাবি, নদের মাঝখান থেকে কিছু মাটি-বালু তোলা হয়েছে। সে মাটি পাড়েই ফেলা হয়েছে। এখানে কথা হয় ফুলতলা মাগুরা গ্রামের নূরুল হকের (৬০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে যে রকম দেখেছি, মনে করেছিলাম খননের পর নদ আবার তেমন হয়ে যাবে। কিন্তু মাঝখান থেকে মাটি-বালু তোলায় নদ আরও ছোট হয়ে গেছে। হয়তো এতে বর্ষাকালে পানি যাবে—তা ছাড়া নদ এখন খালের মতো ছোট হয়ে গেছে।’

নদের যেসব স্থানে খননকাজ চলছে, সেসব জায়গায় শ্যালো মেশিন দিয়ে ড্রেজারের সাহায্যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উপজেলার মাগুরা ফুলতলা গ্রামে নদে খনন এলাকায় প্রকল্পের একটি সাইনবোর্ড দেখা গেছে। যা অর্ধেক মাটির নিচে। তাতে উল্লেখ আছে খননের গড় প্রস্থ প্রায় ৪৫ দশমিক ৫৫ মিটার এবং গড় গভীরতা ১ দশমিক ৪০ মিটার। তলা খনন করা হচ্ছে ৩৫ মিটার।

বেজিয়াতলা গ্রামের আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় খনন করা হচ্ছে। তবে এখানে কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। তাই খননের বিষয়ে কিছুই জানতে পারছি না। কাজের শিডিউল দেখতে চাইলেও তাঁরা কোনো ভ্রুক্ষেপ করেননি। ইচ্ছামতো নদের মাঝখান থেকে কিছু মাটি কেটে পাড়ে ফেলছে। এতে নদ আরও ছোট হচ্ছে।’ 

কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির ঝিকরগাছা উপজেলা আহ্বায়ক আব্দুর রহিম বলেন, নদের খননকাজের কোথাও সাইনবোর্ড টাঙানো হচ্ছে না। খননের মাটি নদের গর্ভেই ফেলা হচ্ছে। এতে খনন করার পর নদ পুনরায় ভরাট হয়ে যাবে। তাই নদ খননে কোনো লাভ হবে না।’

কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাস বলেন, ‘নদ খালের মতো করে শুধু খনন করলে হবে না—এর সঙ্গে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, নদের জায়গা নদে ফিরিয়ে দেওয়া ও মাথাভাঙ্গায় উজানের সঙ্গে নদ সংযোগ করে দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, নদের জায়গা সম্পূর্ণভাবে পুনঃখনন করতে হবে। নদ থেকে তোলা খননের মাটি নদের পাড়ে ফেলা যাবে না। খননের মাটি, যা পলি মিশ্রিত মাটি। এটা পাড়ে রাখলে তা আবার নদে পড়ে ভরাট হয়ে যা তা হয়ে যাবে। এ জন্য খননের মাটি দূরে ফেলতে হবে। আমাদের দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদ পুনঃখনন করা হচ্ছে। খনন শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের পরে ঠিকাদার বিল পাবেন। খননে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত