আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
এমনকি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে দেওয়া সরকারি জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করে পকেটে পুরেছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। তিনি মজিবুর রহমান হাওলাদার।
মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিদেশে পলাতক। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও বিদেশে।
মজিবুর রহমান হাওলাদার ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন দপ্তর সম্পাদকও ছিলেন। এই সংগঠনের করা মামলার তদন্তেই তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে গত ১৮ জুন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তে মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জাল, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পিবিআই, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে নিজেকে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এই পরিচয়েই তিনি প্রভাব খাটাতেন। তিনি কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। তিনি ভুয়া সংগঠনের জেলা, উপজেলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি-বাণিজ্য করেছেন।
শিশুদের পুরস্কার পাইয়ে দিতে তাঁর কাকরাইলের অফিসে রসিদ দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর অফিস এখন নেই।
জানা যায়, মজিবুর রহমান হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে। বরিশালের পাতারহাট এমসি ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকায় আসেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক। লায়ন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নামের আগে যুক্ত করেন লায়ন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে মজিবুর রহমান প্রতারণা শুরু করেন। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত রকিবুর রহমান, মহাসচিব ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে এম শহীদুল্লা। ২০২১ সালে মাহমুদ উস সামাদ করোনায় মারা গেলে ওই বছরের ৮ মে শহীদুল্লাকে মহাসচিব করা হয়। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুদানে চলে।
জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে সংগঠন সূত্র জানায়, সংগঠনকে ব্যবহার করে মজিবুরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তৎকালীন চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান ও মহাসচিব মাহমুদ উস সামাদ তাঁকে কয়েকবার সতর্ক করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যকরী কমিটির সভাও ডাকেন। তাঁকে সরানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি গোপনে সংগঠনের কাগজপত্র হাতান। কমিটির কয়েকজন নেতার সই জাল করে একটি ভুয়া মিটিং রেজল্যুশন ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করেন। নকল কাগজপত্রে মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার নামের একজনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ‘শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ’ নামের সংগঠনের নিবন্ধন নেন। অফিসের ঠিকানা কাকরাইলের পাইওনিয়ার সড়কের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টার।
জালিয়াতি করে মজিবুরের একই নামে সংগঠনের নিবন্ধন নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ১৫ মার্চ তাঁকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তর মজিবুরের সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল করে। তবে তিনি গত বছর শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন উপলক্ষে করা লিফলেটও নকল করে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক প্রচার করেন।
যেভাবে ধরা পড়ল জালিয়াতি
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লা ২০২১ সালের ১০ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের কাছে মজিবুর রহমানের অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএমপি কমিশনার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন মতিঝিল বিভাগকে। পুলিশ তদন্ত করে মজিবুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, জাল-জালিয়াতি করে জমি বিক্রির প্রমাণ পায়।এরপর গত বছরের ২৭ অক্টোবর রমনা থানায় মজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক সজল মাহমুদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমি নিজের বলে বিক্রির জন্য বায়না দলিল করেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। সূত্র বলেছে, তিনি একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মামলার বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর হাওলাদার ভুয়া সংগঠন করে কয়েক কোটি টাকা বাগিয়েছেন। চাকরি, পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির কথা বলেও লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। ১৮ জুন মজিবুরকে একমাত্র আসামি করে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত জমির দলিল, সংগঠনের অন্যান্য কাগজপত্র চুরি ও জালিয়াতি করেন মজিবুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর রহমান ভুয়া সংগঠন করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য করতেন। অনেকের কাছ থেকে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও তিনি ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তবে তাঁরা সাক্ষী হতে চান না।
জানা যায়, এই মামলা হওয়ার পরের মাসে গত বছরের নভেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে প্রথমে ছয় সপ্তাহের ও পরে আরও দুই সপ্তাহের আগাম জামিন নেন মজিবুর। পরে গত বছরই তিনি কানাডায় অধ্যয়নরত বড় ছেলের কাছে যান। সেখান থেকে দুবাই গেছেন। বর্তমানে দুবাইয়ে ব্যবসা করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা। তাঁর একমাত্র মেয়ে মাস তিনেক আগে পড়ালেখা শেষে যুক্তরাজ্যে গেছেন। গত ২০ জুন মজিবুরের স্ত্রী শামীমা রহমান শাম্মী ছোট ছেলেকে নিয়ে দুবাই চলে গেছেন। ছোট ছেলে মতিঝিল আইডিয়ালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
প্রতারণার আরও অভিযোগ
কাকরাইলের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টারের সপ্তম তলায় ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিস ছিল মজিবুরের। সেই অফিসে পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রসিদের মাধ্যমে শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হতো। এঁদের একজন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা ৩ লাখ টাকা দেন মজিবুরকে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ এই ডোনেশন নেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি জেনেছেন, ওই পুরস্কার নিতে টাকা লাগে না। মজিবুরের সংগঠনটি ভুয়া।
রসিদ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে এসেছে। পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই অফিস থেকে চাঁদাবাজি, চাকরির তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ অসৎ কার্যক্রম চালাতেন মজিবুর। তাঁর নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অনেক ভুক্তভোগী।
এ ছাড়া মজিবুরের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে বাড়ি দখল, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা ও চেকের মাধ্যমে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েক দিন আগে কাকরাইলের ওই ভবনে খোঁজ নিতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মজিবুর রহমানের অফিসে অনেক মানুষ আসত। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে আসত। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি অফিস ছেড়ে দেন। এর আগে পুলিশ আসছিল। টাকা পাবে বলে অনেকে খুঁজে গেছে। তবে তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না।’
জানা যায়, শান্তিনগরের সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার সড়কের ৬৯-৭১ বাড়ির নিচতলায় ১১৭৫ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে মজিবুর রহমানের। ২০০১ সালের দিকে ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। বর্তমানে এর দাম প্রায় কোটি টাকা। গত শুক্রবার সেখানে গিয়ে মজিবুরের ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাড়ির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর রহমানের এক ভাতিজা মাঝেমাঝে এসে দেখে যান। মজিবুরের পরিবার বিদেশে চলে গেছে।
সংসদ নির্বাচনের জন্য গণসংযোগ
মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও কাজিরহাট থানা নিয়ে বরিশাল-৪ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় গত তিনটি সংসদ নির্বাচনের আগে মজিবুর গণসংযোগ করেন। কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের আগপর্যন্ত মজিবুর প্রতিবছর শীত ও ঈদের সময় এলাকায় এসে মানুষকে পোশাক দিতেন, পোস্টার দিতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিমপুর গ্রামে মজিবুরের ৪০ শতাংশের মতো জমি আছে। কোনো ঘর নেই। তাঁর বাবার নাম আফসার উদ্দিন হাওলাদার। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মজিবুর চতুর্থ। চার ভাই মারা গেছেন। বাড়িতে ভাইয়ের ছেলেরা থাকেন।
আন্দারমান ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াসিম শিকদার জানান, ‘শুনেছি মজিবুর দুবাই আছেন।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার এইচ সাগর বলেন, মজিবুর একজন প্রতারক। তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য বলতে কিছু নেই। মানুষ ঠকিয়েছে। এখন পালিয়েছে।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
এমনকি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে দেওয়া সরকারি জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করে পকেটে পুরেছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। তিনি মজিবুর রহমান হাওলাদার।
মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিদেশে পলাতক। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও বিদেশে।
মজিবুর রহমান হাওলাদার ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন দপ্তর সম্পাদকও ছিলেন। এই সংগঠনের করা মামলার তদন্তেই তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে গত ১৮ জুন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তে মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জাল, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পিবিআই, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে নিজেকে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এই পরিচয়েই তিনি প্রভাব খাটাতেন। তিনি কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। তিনি ভুয়া সংগঠনের জেলা, উপজেলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি-বাণিজ্য করেছেন।
শিশুদের পুরস্কার পাইয়ে দিতে তাঁর কাকরাইলের অফিসে রসিদ দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর অফিস এখন নেই।
জানা যায়, মজিবুর রহমান হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে। বরিশালের পাতারহাট এমসি ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকায় আসেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক। লায়ন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নামের আগে যুক্ত করেন লায়ন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে মজিবুর রহমান প্রতারণা শুরু করেন। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত রকিবুর রহমান, মহাসচিব ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে এম শহীদুল্লা। ২০২১ সালে মাহমুদ উস সামাদ করোনায় মারা গেলে ওই বছরের ৮ মে শহীদুল্লাকে মহাসচিব করা হয়। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুদানে চলে।
জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে সংগঠন সূত্র জানায়, সংগঠনকে ব্যবহার করে মজিবুরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তৎকালীন চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান ও মহাসচিব মাহমুদ উস সামাদ তাঁকে কয়েকবার সতর্ক করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যকরী কমিটির সভাও ডাকেন। তাঁকে সরানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি গোপনে সংগঠনের কাগজপত্র হাতান। কমিটির কয়েকজন নেতার সই জাল করে একটি ভুয়া মিটিং রেজল্যুশন ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করেন। নকল কাগজপত্রে মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার নামের একজনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ‘শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ’ নামের সংগঠনের নিবন্ধন নেন। অফিসের ঠিকানা কাকরাইলের পাইওনিয়ার সড়কের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টার।
জালিয়াতি করে মজিবুরের একই নামে সংগঠনের নিবন্ধন নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ১৫ মার্চ তাঁকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তর মজিবুরের সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল করে। তবে তিনি গত বছর শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন উপলক্ষে করা লিফলেটও নকল করে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক প্রচার করেন।
যেভাবে ধরা পড়ল জালিয়াতি
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লা ২০২১ সালের ১০ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের কাছে মজিবুর রহমানের অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএমপি কমিশনার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন মতিঝিল বিভাগকে। পুলিশ তদন্ত করে মজিবুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, জাল-জালিয়াতি করে জমি বিক্রির প্রমাণ পায়।এরপর গত বছরের ২৭ অক্টোবর রমনা থানায় মজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক সজল মাহমুদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমি নিজের বলে বিক্রির জন্য বায়না দলিল করেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। সূত্র বলেছে, তিনি একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মামলার বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর হাওলাদার ভুয়া সংগঠন করে কয়েক কোটি টাকা বাগিয়েছেন। চাকরি, পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির কথা বলেও লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। ১৮ জুন মজিবুরকে একমাত্র আসামি করে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত জমির দলিল, সংগঠনের অন্যান্য কাগজপত্র চুরি ও জালিয়াতি করেন মজিবুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর রহমান ভুয়া সংগঠন করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য করতেন। অনেকের কাছ থেকে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও তিনি ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তবে তাঁরা সাক্ষী হতে চান না।
জানা যায়, এই মামলা হওয়ার পরের মাসে গত বছরের নভেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে প্রথমে ছয় সপ্তাহের ও পরে আরও দুই সপ্তাহের আগাম জামিন নেন মজিবুর। পরে গত বছরই তিনি কানাডায় অধ্যয়নরত বড় ছেলের কাছে যান। সেখান থেকে দুবাই গেছেন। বর্তমানে দুবাইয়ে ব্যবসা করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা। তাঁর একমাত্র মেয়ে মাস তিনেক আগে পড়ালেখা শেষে যুক্তরাজ্যে গেছেন। গত ২০ জুন মজিবুরের স্ত্রী শামীমা রহমান শাম্মী ছোট ছেলেকে নিয়ে দুবাই চলে গেছেন। ছোট ছেলে মতিঝিল আইডিয়ালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
প্রতারণার আরও অভিযোগ
কাকরাইলের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টারের সপ্তম তলায় ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিস ছিল মজিবুরের। সেই অফিসে পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রসিদের মাধ্যমে শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হতো। এঁদের একজন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা ৩ লাখ টাকা দেন মজিবুরকে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ এই ডোনেশন নেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি জেনেছেন, ওই পুরস্কার নিতে টাকা লাগে না। মজিবুরের সংগঠনটি ভুয়া।
রসিদ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে এসেছে। পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই অফিস থেকে চাঁদাবাজি, চাকরির তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ অসৎ কার্যক্রম চালাতেন মজিবুর। তাঁর নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অনেক ভুক্তভোগী।
এ ছাড়া মজিবুরের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে বাড়ি দখল, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা ও চেকের মাধ্যমে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েক দিন আগে কাকরাইলের ওই ভবনে খোঁজ নিতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মজিবুর রহমানের অফিসে অনেক মানুষ আসত। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে আসত। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি অফিস ছেড়ে দেন। এর আগে পুলিশ আসছিল। টাকা পাবে বলে অনেকে খুঁজে গেছে। তবে তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না।’
জানা যায়, শান্তিনগরের সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার সড়কের ৬৯-৭১ বাড়ির নিচতলায় ১১৭৫ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে মজিবুর রহমানের। ২০০১ সালের দিকে ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। বর্তমানে এর দাম প্রায় কোটি টাকা। গত শুক্রবার সেখানে গিয়ে মজিবুরের ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাড়ির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর রহমানের এক ভাতিজা মাঝেমাঝে এসে দেখে যান। মজিবুরের পরিবার বিদেশে চলে গেছে।
সংসদ নির্বাচনের জন্য গণসংযোগ
মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও কাজিরহাট থানা নিয়ে বরিশাল-৪ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় গত তিনটি সংসদ নির্বাচনের আগে মজিবুর গণসংযোগ করেন। কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের আগপর্যন্ত মজিবুর প্রতিবছর শীত ও ঈদের সময় এলাকায় এসে মানুষকে পোশাক দিতেন, পোস্টার দিতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিমপুর গ্রামে মজিবুরের ৪০ শতাংশের মতো জমি আছে। কোনো ঘর নেই। তাঁর বাবার নাম আফসার উদ্দিন হাওলাদার। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মজিবুর চতুর্থ। চার ভাই মারা গেছেন। বাড়িতে ভাইয়ের ছেলেরা থাকেন।
আন্দারমান ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াসিম শিকদার জানান, ‘শুনেছি মজিবুর দুবাই আছেন।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার এইচ সাগর বলেন, মজিবুর একজন প্রতারক। তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য বলতে কিছু নেই। মানুষ ঠকিয়েছে। এখন পালিয়েছে।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
এমনকি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে দেওয়া সরকারি জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করে পকেটে পুরেছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। তিনি মজিবুর রহমান হাওলাদার।
মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিদেশে পলাতক। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও বিদেশে।
মজিবুর রহমান হাওলাদার ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন দপ্তর সম্পাদকও ছিলেন। এই সংগঠনের করা মামলার তদন্তেই তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে গত ১৮ জুন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তে মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জাল, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পিবিআই, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে নিজেকে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এই পরিচয়েই তিনি প্রভাব খাটাতেন। তিনি কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। তিনি ভুয়া সংগঠনের জেলা, উপজেলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি-বাণিজ্য করেছেন।
শিশুদের পুরস্কার পাইয়ে দিতে তাঁর কাকরাইলের অফিসে রসিদ দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর অফিস এখন নেই।
জানা যায়, মজিবুর রহমান হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে। বরিশালের পাতারহাট এমসি ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকায় আসেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক। লায়ন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নামের আগে যুক্ত করেন লায়ন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে মজিবুর রহমান প্রতারণা শুরু করেন। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত রকিবুর রহমান, মহাসচিব ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে এম শহীদুল্লা। ২০২১ সালে মাহমুদ উস সামাদ করোনায় মারা গেলে ওই বছরের ৮ মে শহীদুল্লাকে মহাসচিব করা হয়। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুদানে চলে।
জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে সংগঠন সূত্র জানায়, সংগঠনকে ব্যবহার করে মজিবুরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তৎকালীন চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান ও মহাসচিব মাহমুদ উস সামাদ তাঁকে কয়েকবার সতর্ক করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যকরী কমিটির সভাও ডাকেন। তাঁকে সরানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি গোপনে সংগঠনের কাগজপত্র হাতান। কমিটির কয়েকজন নেতার সই জাল করে একটি ভুয়া মিটিং রেজল্যুশন ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করেন। নকল কাগজপত্রে মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার নামের একজনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ‘শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ’ নামের সংগঠনের নিবন্ধন নেন। অফিসের ঠিকানা কাকরাইলের পাইওনিয়ার সড়কের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টার।
জালিয়াতি করে মজিবুরের একই নামে সংগঠনের নিবন্ধন নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ১৫ মার্চ তাঁকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তর মজিবুরের সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল করে। তবে তিনি গত বছর শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন উপলক্ষে করা লিফলেটও নকল করে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক প্রচার করেন।
যেভাবে ধরা পড়ল জালিয়াতি
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লা ২০২১ সালের ১০ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের কাছে মজিবুর রহমানের অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএমপি কমিশনার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন মতিঝিল বিভাগকে। পুলিশ তদন্ত করে মজিবুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, জাল-জালিয়াতি করে জমি বিক্রির প্রমাণ পায়।এরপর গত বছরের ২৭ অক্টোবর রমনা থানায় মজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক সজল মাহমুদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমি নিজের বলে বিক্রির জন্য বায়না দলিল করেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। সূত্র বলেছে, তিনি একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মামলার বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর হাওলাদার ভুয়া সংগঠন করে কয়েক কোটি টাকা বাগিয়েছেন। চাকরি, পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির কথা বলেও লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। ১৮ জুন মজিবুরকে একমাত্র আসামি করে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত জমির দলিল, সংগঠনের অন্যান্য কাগজপত্র চুরি ও জালিয়াতি করেন মজিবুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর রহমান ভুয়া সংগঠন করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য করতেন। অনেকের কাছ থেকে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও তিনি ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তবে তাঁরা সাক্ষী হতে চান না।
জানা যায়, এই মামলা হওয়ার পরের মাসে গত বছরের নভেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে প্রথমে ছয় সপ্তাহের ও পরে আরও দুই সপ্তাহের আগাম জামিন নেন মজিবুর। পরে গত বছরই তিনি কানাডায় অধ্যয়নরত বড় ছেলের কাছে যান। সেখান থেকে দুবাই গেছেন। বর্তমানে দুবাইয়ে ব্যবসা করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা। তাঁর একমাত্র মেয়ে মাস তিনেক আগে পড়ালেখা শেষে যুক্তরাজ্যে গেছেন। গত ২০ জুন মজিবুরের স্ত্রী শামীমা রহমান শাম্মী ছোট ছেলেকে নিয়ে দুবাই চলে গেছেন। ছোট ছেলে মতিঝিল আইডিয়ালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
প্রতারণার আরও অভিযোগ
কাকরাইলের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টারের সপ্তম তলায় ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিস ছিল মজিবুরের। সেই অফিসে পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রসিদের মাধ্যমে শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হতো। এঁদের একজন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা ৩ লাখ টাকা দেন মজিবুরকে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ এই ডোনেশন নেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি জেনেছেন, ওই পুরস্কার নিতে টাকা লাগে না। মজিবুরের সংগঠনটি ভুয়া।
রসিদ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে এসেছে। পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই অফিস থেকে চাঁদাবাজি, চাকরির তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ অসৎ কার্যক্রম চালাতেন মজিবুর। তাঁর নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অনেক ভুক্তভোগী।
এ ছাড়া মজিবুরের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে বাড়ি দখল, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা ও চেকের মাধ্যমে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েক দিন আগে কাকরাইলের ওই ভবনে খোঁজ নিতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মজিবুর রহমানের অফিসে অনেক মানুষ আসত। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে আসত। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি অফিস ছেড়ে দেন। এর আগে পুলিশ আসছিল। টাকা পাবে বলে অনেকে খুঁজে গেছে। তবে তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না।’
জানা যায়, শান্তিনগরের সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার সড়কের ৬৯-৭১ বাড়ির নিচতলায় ১১৭৫ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে মজিবুর রহমানের। ২০০১ সালের দিকে ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। বর্তমানে এর দাম প্রায় কোটি টাকা। গত শুক্রবার সেখানে গিয়ে মজিবুরের ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাড়ির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর রহমানের এক ভাতিজা মাঝেমাঝে এসে দেখে যান। মজিবুরের পরিবার বিদেশে চলে গেছে।
সংসদ নির্বাচনের জন্য গণসংযোগ
মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও কাজিরহাট থানা নিয়ে বরিশাল-৪ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় গত তিনটি সংসদ নির্বাচনের আগে মজিবুর গণসংযোগ করেন। কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের আগপর্যন্ত মজিবুর প্রতিবছর শীত ও ঈদের সময় এলাকায় এসে মানুষকে পোশাক দিতেন, পোস্টার দিতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিমপুর গ্রামে মজিবুরের ৪০ শতাংশের মতো জমি আছে। কোনো ঘর নেই। তাঁর বাবার নাম আফসার উদ্দিন হাওলাদার। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মজিবুর চতুর্থ। চার ভাই মারা গেছেন। বাড়িতে ভাইয়ের ছেলেরা থাকেন।
আন্দারমান ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াসিম শিকদার জানান, ‘শুনেছি মজিবুর দুবাই আছেন।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার এইচ সাগর বলেন, মজিবুর একজন প্রতারক। তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য বলতে কিছু নেই। মানুষ ঠকিয়েছে। এখন পালিয়েছে।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
এমনকি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে দেওয়া সরকারি জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করে পকেটে পুরেছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। তিনি মজিবুর রহমান হাওলাদার।
মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিদেশে পলাতক। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও বিদেশে।
মজিবুর রহমান হাওলাদার ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন দপ্তর সম্পাদকও ছিলেন। এই সংগঠনের করা মামলার তদন্তেই তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে গত ১৮ জুন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তে মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জাল, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পিবিআই, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে নিজেকে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এই পরিচয়েই তিনি প্রভাব খাটাতেন। তিনি কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। তিনি ভুয়া সংগঠনের জেলা, উপজেলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি-বাণিজ্য করেছেন।
শিশুদের পুরস্কার পাইয়ে দিতে তাঁর কাকরাইলের অফিসে রসিদ দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর অফিস এখন নেই।
জানা যায়, মজিবুর রহমান হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে। বরিশালের পাতারহাট এমসি ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকায় আসেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক। লায়ন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নামের আগে যুক্ত করেন লায়ন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে মজিবুর রহমান প্রতারণা শুরু করেন। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত রকিবুর রহমান, মহাসচিব ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে এম শহীদুল্লা। ২০২১ সালে মাহমুদ উস সামাদ করোনায় মারা গেলে ওই বছরের ৮ মে শহীদুল্লাকে মহাসচিব করা হয়। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুদানে চলে।
জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে সংগঠন সূত্র জানায়, সংগঠনকে ব্যবহার করে মজিবুরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তৎকালীন চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান ও মহাসচিব মাহমুদ উস সামাদ তাঁকে কয়েকবার সতর্ক করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যকরী কমিটির সভাও ডাকেন। তাঁকে সরানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি গোপনে সংগঠনের কাগজপত্র হাতান। কমিটির কয়েকজন নেতার সই জাল করে একটি ভুয়া মিটিং রেজল্যুশন ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করেন। নকল কাগজপত্রে মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার নামের একজনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ‘শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ’ নামের সংগঠনের নিবন্ধন নেন। অফিসের ঠিকানা কাকরাইলের পাইওনিয়ার সড়কের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টার।
জালিয়াতি করে মজিবুরের একই নামে সংগঠনের নিবন্ধন নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ১৫ মার্চ তাঁকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তর মজিবুরের সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল করে। তবে তিনি গত বছর শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন উপলক্ষে করা লিফলেটও নকল করে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক প্রচার করেন।
যেভাবে ধরা পড়ল জালিয়াতি
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লা ২০২১ সালের ১০ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের কাছে মজিবুর রহমানের অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএমপি কমিশনার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন মতিঝিল বিভাগকে। পুলিশ তদন্ত করে মজিবুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, জাল-জালিয়াতি করে জমি বিক্রির প্রমাণ পায়।এরপর গত বছরের ২৭ অক্টোবর রমনা থানায় মজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক সজল মাহমুদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমি নিজের বলে বিক্রির জন্য বায়না দলিল করেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। সূত্র বলেছে, তিনি একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মামলার বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর হাওলাদার ভুয়া সংগঠন করে কয়েক কোটি টাকা বাগিয়েছেন। চাকরি, পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির কথা বলেও লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। ১৮ জুন মজিবুরকে একমাত্র আসামি করে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত জমির দলিল, সংগঠনের অন্যান্য কাগজপত্র চুরি ও জালিয়াতি করেন মজিবুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মজিবুর রহমান ভুয়া সংগঠন করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য করতেন। অনেকের কাছ থেকে তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কয়েকজন আমলার কাছ থেকেও তিনি ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তবে তাঁরা সাক্ষী হতে চান না।
জানা যায়, এই মামলা হওয়ার পরের মাসে গত বছরের নভেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে প্রথমে ছয় সপ্তাহের ও পরে আরও দুই সপ্তাহের আগাম জামিন নেন মজিবুর। পরে গত বছরই তিনি কানাডায় অধ্যয়নরত বড় ছেলের কাছে যান। সেখান থেকে দুবাই গেছেন। বর্তমানে দুবাইয়ে ব্যবসা করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনেরা। তাঁর একমাত্র মেয়ে মাস তিনেক আগে পড়ালেখা শেষে যুক্তরাজ্যে গেছেন। গত ২০ জুন মজিবুরের স্ত্রী শামীমা রহমান শাম্মী ছোট ছেলেকে নিয়ে দুবাই চলে গেছেন। ছোট ছেলে মতিঝিল আইডিয়ালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
প্রতারণার আরও অভিযোগ
কাকরাইলের নির্মাণ সামাদ ট্রেড সেন্টারের সপ্তম তলায় ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিস ছিল মজিবুরের। সেই অফিসে পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রসিদের মাধ্যমে শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হতো। এঁদের একজন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা ৩ লাখ টাকা দেন মজিবুরকে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ এই ডোনেশন নেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি জেনেছেন, ওই পুরস্কার নিতে টাকা লাগে না। মজিবুরের সংগঠনটি ভুয়া।
রসিদ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে এসেছে। পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই অফিস থেকে চাঁদাবাজি, চাকরির তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ অসৎ কার্যক্রম চালাতেন মজিবুর। তাঁর নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অনেক ভুক্তভোগী।
এ ছাড়া মজিবুরের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে বাড়ি দখল, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা ও চেকের মাধ্যমে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েক দিন আগে কাকরাইলের ওই ভবনে খোঁজ নিতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মজিবুর রহমানের অফিসে অনেক মানুষ আসত। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে আসত। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি অফিস ছেড়ে দেন। এর আগে পুলিশ আসছিল। টাকা পাবে বলে অনেকে খুঁজে গেছে। তবে তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না।’
জানা যায়, শান্তিনগরের সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার সড়কের ৬৯-৭১ বাড়ির নিচতলায় ১১৭৫ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে মজিবুর রহমানের। ২০০১ সালের দিকে ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। বর্তমানে এর দাম প্রায় কোটি টাকা। গত শুক্রবার সেখানে গিয়ে মজিবুরের ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাড়ির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর রহমানের এক ভাতিজা মাঝেমাঝে এসে দেখে যান। মজিবুরের পরিবার বিদেশে চলে গেছে।
সংসদ নির্বাচনের জন্য গণসংযোগ
মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও কাজিরহাট থানা নিয়ে বরিশাল-৪ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় গত তিনটি সংসদ নির্বাচনের আগে মজিবুর গণসংযোগ করেন। কাজিরহাটের আন্দারমান ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের আগপর্যন্ত মজিবুর প্রতিবছর শীত ও ঈদের সময় এলাকায় এসে মানুষকে পোশাক দিতেন, পোস্টার দিতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিমপুর গ্রামে মজিবুরের ৪০ শতাংশের মতো জমি আছে। কোনো ঘর নেই। তাঁর বাবার নাম আফসার উদ্দিন হাওলাদার। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মজিবুর চতুর্থ। চার ভাই মারা গেছেন। বাড়িতে ভাইয়ের ছেলেরা থাকেন।
আন্দারমান ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াসিম শিকদার জানান, ‘শুনেছি মজিবুর দুবাই আছেন।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার এইচ সাগর বলেন, মজিবুর একজন প্রতারক। তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য বলতে কিছু নেই। মানুষ ঠকিয়েছে। এখন পালিয়েছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১০ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি
১১ জুলাই ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১০ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি
১১ জুলাই ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১০ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি
১১ জুলাই ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১০ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

জালিয়াতি করে শেখ রাসেলের নামে ভুয়া শিশু সংগঠনের নিবন্ধন নিয়ে নিজেকে সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে পাতেন প্রতারণার জাল। চাকরি, বদলি, পদোন্নতি, তদবির, সংগঠনের কমিটি-বাণিজ্য এবং শিশুদের পুরস্কার দেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন কোটি
১১ জুলাই ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১০ দিন আগে