নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
দোতলায় উঠে টোকা দিতে দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো
১১ জানুয়ারি ২০২৩নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।
জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।
দোতলায় উঠে টোকা দিতে দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো
১১ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দোতলায় উঠে টোকা দিতে দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো
১১ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২ দিন আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
দোতলায় উঠে টোকা দিতে দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো
১১ জানুয়ারি ২০২৩এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২ দিন আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২ দিন আগেদেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ দিন আগে