কামরুল হাসান

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
জনকণ্ঠে রিপোর্টিং বিভাগে কাজ করার সময় আমাদের দলে সে রকম একজন মুনশি ছিলেন–আহমেদ নূরে আলম। তাঁর পুরো নাম কখনো মুখে আসত না। আমরা ঈষৎ সংক্ষিপ্ত আর সম্পাদনা করে ডাকতাম নূরে আলম ভাই। বিজ্ঞান-অবিজ্ঞানের যেকোনো জটিল বিষয়কে সরল করে লেখায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আমার মতো গড়পড়তা মানুষের কাছে নূরে আলম ভাই ছিলেন ‘অনেক জানাশোনা মানুষ’।
তো সেই নূরে আলম ভাইয়ের একদিন ভীষণ মন খারাপ। কী একটা কাজে আমি জনকণ্ঠ ভবনের অন্য তলায়, রিপোর্টিং থেকে অগ্রজ ফজলুল বারী ডেকে পাঠালেন। নিউজরুমে এসে দেখি, তিনজন সহকর্মী নূরে আলম ভাইয়ের তিন দিক ঘিরে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তিনি খুবই উদ্বিগ্ন, তাঁর দুই চোখ টলটল।
এ রকম একজন মানুষকে এই অবস্থায় দেখে কিছুটা হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কী নূরে আলম ভাই? তিনি বললেন, ‘অপি খুব বিপদে পড়েছে।’ আমি বললাম, ‘কোন অপি?’ তিনি বললেন, ‘অপি করিম’। অভিনয় জগতে অপি করিমের তখন বেশ নামডাক। কিন্তু তাঁর কারণে নূরে আলম ভাই কেন উদ্বিগ্ন, বুঝতে না পেরে আবার জানতে চাইলাম, ‘অপি করিমের কী হয়েছে, তাতে আপনার কী?’ তিনি বললেন, ‘সে তো আমার বোন বাবলির মেয়ে।’
শুনে একটু অবাকই হলাম। এত দিন পাশে বসে কাজ করছি, অথচ তিনি কখনো এসবের কিছুই বলেননি। তিনি বরাবরই নিজের সম্পর্কে ঢাকঢোল পেটানোর উল্টো পথে চলা মানুষ। নূরে আলম ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, চিন্তার কিছু নেই, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সে সময় ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন আবদুল কাইয়ুম। ক্রাইম রিপোর্টারদের সঙ্গে তাঁর ‘ভাই-ব্রাদার’ সম্পর্ক। প্রথমে তাঁকে ফোন দিলাম। বললেন, এখনই ডিসিকে বলে দিচ্ছেন। একটু পরে ডিবির ইন্সপেক্টর রেজাউল করিমের ফোন। বললেন, তাঁদের একটি দল এখনই বের হবে, চাইলে আমি সঙ্গে যেতে পারি। ডিবির মাইক্রোবাসের পিছে পিছে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলাম বুয়েটে। কিন্তু সেখানে সবকিছু স্বাভাবিকই মনে হলো। অপি আশ্রয় নিয়েছিলেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায়। সেখানে তাঁর মা সঙ্গে ছিলেন। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে মা-মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা যেন গভীর জলে ডুবতে ডুবতে কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন। এরপর পুলিশি পাহারায় সেদিন তাঁরা বাসায় চলে যান।
এ রকম পরিস্থিতির শিকার কারও কাছে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাওয়া খুবই অমানবিক। কিন্তু সংবাদকর্মীকে সেই কঠিন কাজটাই হেসে হেসে করতে হয়। অপির মা-বাবা সেদিন যা বললেন, তা শুনে চুপ হয়ে গেলাম। এটা ছিল ২০০২ সালের ১৮ আগস্ট রোববার।
এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে (২০০২ সালের ৮ জুন) দরপত্র নিয়ে বিরোধে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা যান কেমিকৌশলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি। সে সময় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে বুয়েট অনেক দিন বন্ধ ছিল। খোলার পরে শুরু হয় বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তখনো ক্যাম্পাসে পুলিশ ছিল।
সেদিন ১৮ আগস্ট (২০০২) সকালে অপি আসেন পরীক্ষা দিতে। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন তখনকার বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা গোলাম মোর্শেদ লায়ন। সেদিন পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শহীদ মিনারের কাছে এলে লায়ন তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অপির পথরোধ করে দাঁড়ান। যেন ক্ষুধার্ত বাঘ, শিকারের অপেক্ষায় আছেন! তিনি অপিকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চান। অপির সঙ্গে তাঁর মা ছিলেন। এ ঘটনায় মা-মেয়ে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বুয়েটের গেটের সামনে তখন পুলিশের একটি দল ছিল। অপি তাদের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশের একজন সদস্য বলেন, এটা ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা, তাঁদের কিছুই করার নেই। এ রকম পরিস্থিতিতে মা-মেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে অপি এক বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। লায়ন তখন দলবল নিয়ে বের হওয়ার পথে পাহারা বসান। অবশ্য ডিবির গাড়ি আসার পর তাঁরা কেটে পড়েন।
এ ঘটনার কয়েক মাস আগে অপি একদিন বুয়েট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটি মোহাম্মদপুরে আসার পর তিনি দেখেন, সেই বাসের পেছনের দিকে বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি বসে। তিনি খুবই আপত্তিকরভাবে তাকাচ্ছেন। এই অবস্থায় অপি বাস থেকে দ্রুত নেমে বাড়ির দিকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর বাসার দরজায় কড়া নাড়েন ভিপি লায়ন। তিনি খুবই অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। সেদিন অনেক কষ্টে তাঁকে বিদায় করা হয়। এরপরই বিভিন্ন সময় তিনি অপিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্লাসে, ক্যানটিনে, পথে, যেখানে-সেখানে আজেবাজে মন্তব্য করতে থাকেন আর তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। একদিকে স্থাপত্যবিদ্যার মতো জটিল বিষয়, অন্যদিকে মানসিক যন্ত্রণা—দুয়ে মিলে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলেন না অপি। পরিস্থিতি একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অপি বুয়েট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেন। এই অবস্থায় মেয়ের বিপদে ঢাল হয়ে দাঁড়ান মা শাহানারা করিম বাবলি। সংসারের কাজ ফেলে তিনি মেয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে থাকেন।
এভাবে দুই বছর শেষ হয়। পঞ্চম বর্ষে এসে আবার সেই একই যন্ত্রণা। এবার ভিপি লায়ন আরও বেপরোয়া। অপি তখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এতটা শঙ্কিত হন যে নিজের বাসাতেও একটানা থাকতেন না। পালা করে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে রাত কাটানো শুরু করেন।
অপহরণের চেষ্টা নিয়ে অপির বাবা সৈয়দ আবদুল করিম লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। সে সময় মামুনুর রশীদসহ অনেক নাট্যজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করে বিবৃতি দেন। তারপরও দেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েট তাদের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য কিছুই করেনি। উল্টো বুয়েটসহ সবাই ভিপি লায়নের পক্ষ নেয়। একপর্যায়ে লায়নকে বাঁচাতে তাঁকে মানসিক রোগীর সনদ দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বুয়েটের তখন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ছিলেন অধ্যাপক জয়নুল আবেদিন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে বুয়েটের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাজাহান আলী মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দিয়েছেন। লায়ন একজন প্রকৃত মানসিক রোগী। তিনি বলেন, এর আগেও জামানস ও মনন নামের দুটি ক্লিনিকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন লায়ন।
যত দূর মনে পড়ে, প্রথম ঘটনার পর লায়নের বাবা দিনাজপুরের পার্বতীপুরের একটি কলেজের শিক্ষক মকবুল হোসেন বুয়েটে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে বলেছিলেন, তাঁর ছেলে আর কাউকে উত্ত্যক্ত করবেন না। মকবুল হোসেন একবার বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বুয়েটের গাড়িতে চড়ে অপিদের মোহাম্মদপুরের বাসাতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সে কথা আর রক্ষা হয়নি।
ওই সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে নিয়ে তাঁদের পক্ষে আসলে কিছুই করা সম্ভব নয়। কারণ, লায়নের জন্মদিনের কেক কেটেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
লায়নের খোঁজ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকার দিনাজপুর প্রতিনিধি আনিসুল হক জুয়েল আর নীলফামারী প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বললেন, লায়নের বাবা জাতীয় পার্টির বড় নেতা ছিলেন। লায়ন এখনো পার্বতীপুরে একা থাকেন। তিনি কিছুই করেন না, শুধু এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
আমাদের সেই নূরে আলম ভাই এখন অবসর যাপনে আমেরিকায় থাকেন। কদিন আগে তাঁকে ফোন করেছিলাম। শুধু বললেন, কী বাজে সময়ই-না গেছে।
অপির সঙ্গে কথাও হলো বুধবার। পুরোনো কথা তুলতেই মনে হলো, তাঁর মনের গভীরে ক্ষত এখনো দগদগে। সেই ঘটনা, পরিস্থিতি—সবই তাঁর মনে আছে, ভোলেননি কিছুই। শুধু বললেন, জীবনের সেই ঝড়টা এভাবে পাড়ি দিতে না হলে (পরীক্ষায়) আরও ভালো ফল করা যেত।
অপির ফোন রাখতে রাখতে মনে হচ্ছিল, অপি যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঝড়ের পরে’ গল্পের সেই কিশোর ছেলেটি। ঝড় যাঁকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে, কী করে বাঁচতে হয়, কী করে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়।
হয়তো সেই শিক্ষাই জীবনে কাজে লাগিয়েছেন অপি। এখন তাঁর গণ্ডি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে গেছে। হালে ঢাকা-কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিটি তো তারই বার্তা দিয়ে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
জনকণ্ঠে রিপোর্টিং বিভাগে কাজ করার সময় আমাদের দলে সে রকম একজন মুনশি ছিলেন–আহমেদ নূরে আলম। তাঁর পুরো নাম কখনো মুখে আসত না। আমরা ঈষৎ সংক্ষিপ্ত আর সম্পাদনা করে ডাকতাম নূরে আলম ভাই। বিজ্ঞান-অবিজ্ঞানের যেকোনো জটিল বিষয়কে সরল করে লেখায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আমার মতো গড়পড়তা মানুষের কাছে নূরে আলম ভাই ছিলেন ‘অনেক জানাশোনা মানুষ’।
তো সেই নূরে আলম ভাইয়ের একদিন ভীষণ মন খারাপ। কী একটা কাজে আমি জনকণ্ঠ ভবনের অন্য তলায়, রিপোর্টিং থেকে অগ্রজ ফজলুল বারী ডেকে পাঠালেন। নিউজরুমে এসে দেখি, তিনজন সহকর্মী নূরে আলম ভাইয়ের তিন দিক ঘিরে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তিনি খুবই উদ্বিগ্ন, তাঁর দুই চোখ টলটল।
এ রকম একজন মানুষকে এই অবস্থায় দেখে কিছুটা হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কী নূরে আলম ভাই? তিনি বললেন, ‘অপি খুব বিপদে পড়েছে।’ আমি বললাম, ‘কোন অপি?’ তিনি বললেন, ‘অপি করিম’। অভিনয় জগতে অপি করিমের তখন বেশ নামডাক। কিন্তু তাঁর কারণে নূরে আলম ভাই কেন উদ্বিগ্ন, বুঝতে না পেরে আবার জানতে চাইলাম, ‘অপি করিমের কী হয়েছে, তাতে আপনার কী?’ তিনি বললেন, ‘সে তো আমার বোন বাবলির মেয়ে।’
শুনে একটু অবাকই হলাম। এত দিন পাশে বসে কাজ করছি, অথচ তিনি কখনো এসবের কিছুই বলেননি। তিনি বরাবরই নিজের সম্পর্কে ঢাকঢোল পেটানোর উল্টো পথে চলা মানুষ। নূরে আলম ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, চিন্তার কিছু নেই, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সে সময় ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন আবদুল কাইয়ুম। ক্রাইম রিপোর্টারদের সঙ্গে তাঁর ‘ভাই-ব্রাদার’ সম্পর্ক। প্রথমে তাঁকে ফোন দিলাম। বললেন, এখনই ডিসিকে বলে দিচ্ছেন। একটু পরে ডিবির ইন্সপেক্টর রেজাউল করিমের ফোন। বললেন, তাঁদের একটি দল এখনই বের হবে, চাইলে আমি সঙ্গে যেতে পারি। ডিবির মাইক্রোবাসের পিছে পিছে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলাম বুয়েটে। কিন্তু সেখানে সবকিছু স্বাভাবিকই মনে হলো। অপি আশ্রয় নিয়েছিলেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায়। সেখানে তাঁর মা সঙ্গে ছিলেন। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে মা-মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা যেন গভীর জলে ডুবতে ডুবতে কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন। এরপর পুলিশি পাহারায় সেদিন তাঁরা বাসায় চলে যান।
এ রকম পরিস্থিতির শিকার কারও কাছে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাওয়া খুবই অমানবিক। কিন্তু সংবাদকর্মীকে সেই কঠিন কাজটাই হেসে হেসে করতে হয়। অপির মা-বাবা সেদিন যা বললেন, তা শুনে চুপ হয়ে গেলাম। এটা ছিল ২০০২ সালের ১৮ আগস্ট রোববার।
এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে (২০০২ সালের ৮ জুন) দরপত্র নিয়ে বিরোধে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা যান কেমিকৌশলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি। সে সময় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে বুয়েট অনেক দিন বন্ধ ছিল। খোলার পরে শুরু হয় বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তখনো ক্যাম্পাসে পুলিশ ছিল।
সেদিন ১৮ আগস্ট (২০০২) সকালে অপি আসেন পরীক্ষা দিতে। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন তখনকার বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা গোলাম মোর্শেদ লায়ন। সেদিন পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শহীদ মিনারের কাছে এলে লায়ন তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অপির পথরোধ করে দাঁড়ান। যেন ক্ষুধার্ত বাঘ, শিকারের অপেক্ষায় আছেন! তিনি অপিকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চান। অপির সঙ্গে তাঁর মা ছিলেন। এ ঘটনায় মা-মেয়ে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বুয়েটের গেটের সামনে তখন পুলিশের একটি দল ছিল। অপি তাদের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশের একজন সদস্য বলেন, এটা ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা, তাঁদের কিছুই করার নেই। এ রকম পরিস্থিতিতে মা-মেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে অপি এক বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। লায়ন তখন দলবল নিয়ে বের হওয়ার পথে পাহারা বসান। অবশ্য ডিবির গাড়ি আসার পর তাঁরা কেটে পড়েন।
এ ঘটনার কয়েক মাস আগে অপি একদিন বুয়েট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটি মোহাম্মদপুরে আসার পর তিনি দেখেন, সেই বাসের পেছনের দিকে বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি বসে। তিনি খুবই আপত্তিকরভাবে তাকাচ্ছেন। এই অবস্থায় অপি বাস থেকে দ্রুত নেমে বাড়ির দিকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর বাসার দরজায় কড়া নাড়েন ভিপি লায়ন। তিনি খুবই অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। সেদিন অনেক কষ্টে তাঁকে বিদায় করা হয়। এরপরই বিভিন্ন সময় তিনি অপিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্লাসে, ক্যানটিনে, পথে, যেখানে-সেখানে আজেবাজে মন্তব্য করতে থাকেন আর তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। একদিকে স্থাপত্যবিদ্যার মতো জটিল বিষয়, অন্যদিকে মানসিক যন্ত্রণা—দুয়ে মিলে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলেন না অপি। পরিস্থিতি একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অপি বুয়েট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেন। এই অবস্থায় মেয়ের বিপদে ঢাল হয়ে দাঁড়ান মা শাহানারা করিম বাবলি। সংসারের কাজ ফেলে তিনি মেয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে থাকেন।
এভাবে দুই বছর শেষ হয়। পঞ্চম বর্ষে এসে আবার সেই একই যন্ত্রণা। এবার ভিপি লায়ন আরও বেপরোয়া। অপি তখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এতটা শঙ্কিত হন যে নিজের বাসাতেও একটানা থাকতেন না। পালা করে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে রাত কাটানো শুরু করেন।
অপহরণের চেষ্টা নিয়ে অপির বাবা সৈয়দ আবদুল করিম লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। সে সময় মামুনুর রশীদসহ অনেক নাট্যজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করে বিবৃতি দেন। তারপরও দেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েট তাদের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য কিছুই করেনি। উল্টো বুয়েটসহ সবাই ভিপি লায়নের পক্ষ নেয়। একপর্যায়ে লায়নকে বাঁচাতে তাঁকে মানসিক রোগীর সনদ দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বুয়েটের তখন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ছিলেন অধ্যাপক জয়নুল আবেদিন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে বুয়েটের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাজাহান আলী মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দিয়েছেন। লায়ন একজন প্রকৃত মানসিক রোগী। তিনি বলেন, এর আগেও জামানস ও মনন নামের দুটি ক্লিনিকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন লায়ন।
যত দূর মনে পড়ে, প্রথম ঘটনার পর লায়নের বাবা দিনাজপুরের পার্বতীপুরের একটি কলেজের শিক্ষক মকবুল হোসেন বুয়েটে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে বলেছিলেন, তাঁর ছেলে আর কাউকে উত্ত্যক্ত করবেন না। মকবুল হোসেন একবার বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বুয়েটের গাড়িতে চড়ে অপিদের মোহাম্মদপুরের বাসাতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সে কথা আর রক্ষা হয়নি।
ওই সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে নিয়ে তাঁদের পক্ষে আসলে কিছুই করা সম্ভব নয়। কারণ, লায়নের জন্মদিনের কেক কেটেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
লায়নের খোঁজ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকার দিনাজপুর প্রতিনিধি আনিসুল হক জুয়েল আর নীলফামারী প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বললেন, লায়নের বাবা জাতীয় পার্টির বড় নেতা ছিলেন। লায়ন এখনো পার্বতীপুরে একা থাকেন। তিনি কিছুই করেন না, শুধু এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
আমাদের সেই নূরে আলম ভাই এখন অবসর যাপনে আমেরিকায় থাকেন। কদিন আগে তাঁকে ফোন করেছিলাম। শুধু বললেন, কী বাজে সময়ই-না গেছে।
অপির সঙ্গে কথাও হলো বুধবার। পুরোনো কথা তুলতেই মনে হলো, তাঁর মনের গভীরে ক্ষত এখনো দগদগে। সেই ঘটনা, পরিস্থিতি—সবই তাঁর মনে আছে, ভোলেননি কিছুই। শুধু বললেন, জীবনের সেই ঝড়টা এভাবে পাড়ি দিতে না হলে (পরীক্ষায়) আরও ভালো ফল করা যেত।
অপির ফোন রাখতে রাখতে মনে হচ্ছিল, অপি যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঝড়ের পরে’ গল্পের সেই কিশোর ছেলেটি। ঝড় যাঁকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে, কী করে বাঁচতে হয়, কী করে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়।
হয়তো সেই শিক্ষাই জীবনে কাজে লাগিয়েছেন অপি। এখন তাঁর গণ্ডি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে গেছে। হালে ঢাকা-কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিটি তো তারই বার্তা দিয়ে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
জনকণ্ঠে রিপোর্টিং বিভাগে কাজ করার সময় আমাদের দলে সে রকম একজন মুনশি ছিলেন–আহমেদ নূরে আলম। তাঁর পুরো নাম কখনো মুখে আসত না। আমরা ঈষৎ সংক্ষিপ্ত আর সম্পাদনা করে ডাকতাম নূরে আলম ভাই। বিজ্ঞান-অবিজ্ঞানের যেকোনো জটিল বিষয়কে সরল করে লেখায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আমার মতো গড়পড়তা মানুষের কাছে নূরে আলম ভাই ছিলেন ‘অনেক জানাশোনা মানুষ’।
তো সেই নূরে আলম ভাইয়ের একদিন ভীষণ মন খারাপ। কী একটা কাজে আমি জনকণ্ঠ ভবনের অন্য তলায়, রিপোর্টিং থেকে অগ্রজ ফজলুল বারী ডেকে পাঠালেন। নিউজরুমে এসে দেখি, তিনজন সহকর্মী নূরে আলম ভাইয়ের তিন দিক ঘিরে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তিনি খুবই উদ্বিগ্ন, তাঁর দুই চোখ টলটল।
এ রকম একজন মানুষকে এই অবস্থায় দেখে কিছুটা হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কী নূরে আলম ভাই? তিনি বললেন, ‘অপি খুব বিপদে পড়েছে।’ আমি বললাম, ‘কোন অপি?’ তিনি বললেন, ‘অপি করিম’। অভিনয় জগতে অপি করিমের তখন বেশ নামডাক। কিন্তু তাঁর কারণে নূরে আলম ভাই কেন উদ্বিগ্ন, বুঝতে না পেরে আবার জানতে চাইলাম, ‘অপি করিমের কী হয়েছে, তাতে আপনার কী?’ তিনি বললেন, ‘সে তো আমার বোন বাবলির মেয়ে।’
শুনে একটু অবাকই হলাম। এত দিন পাশে বসে কাজ করছি, অথচ তিনি কখনো এসবের কিছুই বলেননি। তিনি বরাবরই নিজের সম্পর্কে ঢাকঢোল পেটানোর উল্টো পথে চলা মানুষ। নূরে আলম ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, চিন্তার কিছু নেই, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সে সময় ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন আবদুল কাইয়ুম। ক্রাইম রিপোর্টারদের সঙ্গে তাঁর ‘ভাই-ব্রাদার’ সম্পর্ক। প্রথমে তাঁকে ফোন দিলাম। বললেন, এখনই ডিসিকে বলে দিচ্ছেন। একটু পরে ডিবির ইন্সপেক্টর রেজাউল করিমের ফোন। বললেন, তাঁদের একটি দল এখনই বের হবে, চাইলে আমি সঙ্গে যেতে পারি। ডিবির মাইক্রোবাসের পিছে পিছে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলাম বুয়েটে। কিন্তু সেখানে সবকিছু স্বাভাবিকই মনে হলো। অপি আশ্রয় নিয়েছিলেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায়। সেখানে তাঁর মা সঙ্গে ছিলেন। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে মা-মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা যেন গভীর জলে ডুবতে ডুবতে কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন। এরপর পুলিশি পাহারায় সেদিন তাঁরা বাসায় চলে যান।
এ রকম পরিস্থিতির শিকার কারও কাছে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাওয়া খুবই অমানবিক। কিন্তু সংবাদকর্মীকে সেই কঠিন কাজটাই হেসে হেসে করতে হয়। অপির মা-বাবা সেদিন যা বললেন, তা শুনে চুপ হয়ে গেলাম। এটা ছিল ২০০২ সালের ১৮ আগস্ট রোববার।
এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে (২০০২ সালের ৮ জুন) দরপত্র নিয়ে বিরোধে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা যান কেমিকৌশলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি। সে সময় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে বুয়েট অনেক দিন বন্ধ ছিল। খোলার পরে শুরু হয় বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তখনো ক্যাম্পাসে পুলিশ ছিল।
সেদিন ১৮ আগস্ট (২০০২) সকালে অপি আসেন পরীক্ষা দিতে। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন তখনকার বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা গোলাম মোর্শেদ লায়ন। সেদিন পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শহীদ মিনারের কাছে এলে লায়ন তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অপির পথরোধ করে দাঁড়ান। যেন ক্ষুধার্ত বাঘ, শিকারের অপেক্ষায় আছেন! তিনি অপিকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চান। অপির সঙ্গে তাঁর মা ছিলেন। এ ঘটনায় মা-মেয়ে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বুয়েটের গেটের সামনে তখন পুলিশের একটি দল ছিল। অপি তাদের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশের একজন সদস্য বলেন, এটা ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা, তাঁদের কিছুই করার নেই। এ রকম পরিস্থিতিতে মা-মেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে অপি এক বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। লায়ন তখন দলবল নিয়ে বের হওয়ার পথে পাহারা বসান। অবশ্য ডিবির গাড়ি আসার পর তাঁরা কেটে পড়েন।
এ ঘটনার কয়েক মাস আগে অপি একদিন বুয়েট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটি মোহাম্মদপুরে আসার পর তিনি দেখেন, সেই বাসের পেছনের দিকে বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি বসে। তিনি খুবই আপত্তিকরভাবে তাকাচ্ছেন। এই অবস্থায় অপি বাস থেকে দ্রুত নেমে বাড়ির দিকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর বাসার দরজায় কড়া নাড়েন ভিপি লায়ন। তিনি খুবই অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। সেদিন অনেক কষ্টে তাঁকে বিদায় করা হয়। এরপরই বিভিন্ন সময় তিনি অপিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্লাসে, ক্যানটিনে, পথে, যেখানে-সেখানে আজেবাজে মন্তব্য করতে থাকেন আর তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। একদিকে স্থাপত্যবিদ্যার মতো জটিল বিষয়, অন্যদিকে মানসিক যন্ত্রণা—দুয়ে মিলে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলেন না অপি। পরিস্থিতি একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অপি বুয়েট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেন। এই অবস্থায় মেয়ের বিপদে ঢাল হয়ে দাঁড়ান মা শাহানারা করিম বাবলি। সংসারের কাজ ফেলে তিনি মেয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে থাকেন।
এভাবে দুই বছর শেষ হয়। পঞ্চম বর্ষে এসে আবার সেই একই যন্ত্রণা। এবার ভিপি লায়ন আরও বেপরোয়া। অপি তখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এতটা শঙ্কিত হন যে নিজের বাসাতেও একটানা থাকতেন না। পালা করে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে রাত কাটানো শুরু করেন।
অপহরণের চেষ্টা নিয়ে অপির বাবা সৈয়দ আবদুল করিম লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। সে সময় মামুনুর রশীদসহ অনেক নাট্যজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করে বিবৃতি দেন। তারপরও দেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েট তাদের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য কিছুই করেনি। উল্টো বুয়েটসহ সবাই ভিপি লায়নের পক্ষ নেয়। একপর্যায়ে লায়নকে বাঁচাতে তাঁকে মানসিক রোগীর সনদ দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বুয়েটের তখন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ছিলেন অধ্যাপক জয়নুল আবেদিন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে বুয়েটের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাজাহান আলী মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দিয়েছেন। লায়ন একজন প্রকৃত মানসিক রোগী। তিনি বলেন, এর আগেও জামানস ও মনন নামের দুটি ক্লিনিকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন লায়ন।
যত দূর মনে পড়ে, প্রথম ঘটনার পর লায়নের বাবা দিনাজপুরের পার্বতীপুরের একটি কলেজের শিক্ষক মকবুল হোসেন বুয়েটে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে বলেছিলেন, তাঁর ছেলে আর কাউকে উত্ত্যক্ত করবেন না। মকবুল হোসেন একবার বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বুয়েটের গাড়িতে চড়ে অপিদের মোহাম্মদপুরের বাসাতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সে কথা আর রক্ষা হয়নি।
ওই সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে নিয়ে তাঁদের পক্ষে আসলে কিছুই করা সম্ভব নয়। কারণ, লায়নের জন্মদিনের কেক কেটেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
লায়নের খোঁজ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকার দিনাজপুর প্রতিনিধি আনিসুল হক জুয়েল আর নীলফামারী প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বললেন, লায়নের বাবা জাতীয় পার্টির বড় নেতা ছিলেন। লায়ন এখনো পার্বতীপুরে একা থাকেন। তিনি কিছুই করেন না, শুধু এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
আমাদের সেই নূরে আলম ভাই এখন অবসর যাপনে আমেরিকায় থাকেন। কদিন আগে তাঁকে ফোন করেছিলাম। শুধু বললেন, কী বাজে সময়ই-না গেছে।
অপির সঙ্গে কথাও হলো বুধবার। পুরোনো কথা তুলতেই মনে হলো, তাঁর মনের গভীরে ক্ষত এখনো দগদগে। সেই ঘটনা, পরিস্থিতি—সবই তাঁর মনে আছে, ভোলেননি কিছুই। শুধু বললেন, জীবনের সেই ঝড়টা এভাবে পাড়ি দিতে না হলে (পরীক্ষায়) আরও ভালো ফল করা যেত।
অপির ফোন রাখতে রাখতে মনে হচ্ছিল, অপি যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঝড়ের পরে’ গল্পের সেই কিশোর ছেলেটি। ঝড় যাঁকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে, কী করে বাঁচতে হয়, কী করে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়।
হয়তো সেই শিক্ষাই জীবনে কাজে লাগিয়েছেন অপি। এখন তাঁর গণ্ডি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে গেছে। হালে ঢাকা-কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিটি তো তারই বার্তা দিয়ে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
জনকণ্ঠে রিপোর্টিং বিভাগে কাজ করার সময় আমাদের দলে সে রকম একজন মুনশি ছিলেন–আহমেদ নূরে আলম। তাঁর পুরো নাম কখনো মুখে আসত না। আমরা ঈষৎ সংক্ষিপ্ত আর সম্পাদনা করে ডাকতাম নূরে আলম ভাই। বিজ্ঞান-অবিজ্ঞানের যেকোনো জটিল বিষয়কে সরল করে লেখায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আমার মতো গড়পড়তা মানুষের কাছে নূরে আলম ভাই ছিলেন ‘অনেক জানাশোনা মানুষ’।
তো সেই নূরে আলম ভাইয়ের একদিন ভীষণ মন খারাপ। কী একটা কাজে আমি জনকণ্ঠ ভবনের অন্য তলায়, রিপোর্টিং থেকে অগ্রজ ফজলুল বারী ডেকে পাঠালেন। নিউজরুমে এসে দেখি, তিনজন সহকর্মী নূরে আলম ভাইয়ের তিন দিক ঘিরে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তিনি খুবই উদ্বিগ্ন, তাঁর দুই চোখ টলটল।
এ রকম একজন মানুষকে এই অবস্থায় দেখে কিছুটা হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কী নূরে আলম ভাই? তিনি বললেন, ‘অপি খুব বিপদে পড়েছে।’ আমি বললাম, ‘কোন অপি?’ তিনি বললেন, ‘অপি করিম’। অভিনয় জগতে অপি করিমের তখন বেশ নামডাক। কিন্তু তাঁর কারণে নূরে আলম ভাই কেন উদ্বিগ্ন, বুঝতে না পেরে আবার জানতে চাইলাম, ‘অপি করিমের কী হয়েছে, তাতে আপনার কী?’ তিনি বললেন, ‘সে তো আমার বোন বাবলির মেয়ে।’
শুনে একটু অবাকই হলাম। এত দিন পাশে বসে কাজ করছি, অথচ তিনি কখনো এসবের কিছুই বলেননি। তিনি বরাবরই নিজের সম্পর্কে ঢাকঢোল পেটানোর উল্টো পথে চলা মানুষ। নূরে আলম ভাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, চিন্তার কিছু নেই, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সে সময় ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন আবদুল কাইয়ুম। ক্রাইম রিপোর্টারদের সঙ্গে তাঁর ‘ভাই-ব্রাদার’ সম্পর্ক। প্রথমে তাঁকে ফোন দিলাম। বললেন, এখনই ডিসিকে বলে দিচ্ছেন। একটু পরে ডিবির ইন্সপেক্টর রেজাউল করিমের ফোন। বললেন, তাঁদের একটি দল এখনই বের হবে, চাইলে আমি সঙ্গে যেতে পারি। ডিবির মাইক্রোবাসের পিছে পিছে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলাম বুয়েটে। কিন্তু সেখানে সবকিছু স্বাভাবিকই মনে হলো। অপি আশ্রয় নিয়েছিলেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায়। সেখানে তাঁর মা সঙ্গে ছিলেন। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে মা-মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা যেন গভীর জলে ডুবতে ডুবতে কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন। এরপর পুলিশি পাহারায় সেদিন তাঁরা বাসায় চলে যান।
এ রকম পরিস্থিতির শিকার কারও কাছে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাওয়া খুবই অমানবিক। কিন্তু সংবাদকর্মীকে সেই কঠিন কাজটাই হেসে হেসে করতে হয়। অপির মা-বাবা সেদিন যা বললেন, তা শুনে চুপ হয়ে গেলাম। এটা ছিল ২০০২ সালের ১৮ আগস্ট রোববার।
এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে (২০০২ সালের ৮ জুন) দরপত্র নিয়ে বিরোধে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা যান কেমিকৌশলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি। সে সময় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে বুয়েট অনেক দিন বন্ধ ছিল। খোলার পরে শুরু হয় বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তখনো ক্যাম্পাসে পুলিশ ছিল।
সেদিন ১৮ আগস্ট (২০০২) সকালে অপি আসেন পরীক্ষা দিতে। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন তখনকার বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা গোলাম মোর্শেদ লায়ন। সেদিন পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শহীদ মিনারের কাছে এলে লায়ন তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অপির পথরোধ করে দাঁড়ান। যেন ক্ষুধার্ত বাঘ, শিকারের অপেক্ষায় আছেন! তিনি অপিকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চান। অপির সঙ্গে তাঁর মা ছিলেন। এ ঘটনায় মা-মেয়ে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বুয়েটের গেটের সামনে তখন পুলিশের একটি দল ছিল। অপি তাদের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশের একজন সদস্য বলেন, এটা ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা, তাঁদের কিছুই করার নেই। এ রকম পরিস্থিতিতে মা-মেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে অপি এক বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। লায়ন তখন দলবল নিয়ে বের হওয়ার পথে পাহারা বসান। অবশ্য ডিবির গাড়ি আসার পর তাঁরা কেটে পড়েন।
এ ঘটনার কয়েক মাস আগে অপি একদিন বুয়েট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটি মোহাম্মদপুরে আসার পর তিনি দেখেন, সেই বাসের পেছনের দিকে বুয়েট ছাত্র সংসদের ভিপি বসে। তিনি খুবই আপত্তিকরভাবে তাকাচ্ছেন। এই অবস্থায় অপি বাস থেকে দ্রুত নেমে বাড়ির দিকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর বাসার দরজায় কড়া নাড়েন ভিপি লায়ন। তিনি খুবই অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। সেদিন অনেক কষ্টে তাঁকে বিদায় করা হয়। এরপরই বিভিন্ন সময় তিনি অপিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্লাসে, ক্যানটিনে, পথে, যেখানে-সেখানে আজেবাজে মন্তব্য করতে থাকেন আর তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। একদিকে স্থাপত্যবিদ্যার মতো জটিল বিষয়, অন্যদিকে মানসিক যন্ত্রণা—দুয়ে মিলে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলেন না অপি। পরিস্থিতি একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অপি বুয়েট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেন। এই অবস্থায় মেয়ের বিপদে ঢাল হয়ে দাঁড়ান মা শাহানারা করিম বাবলি। সংসারের কাজ ফেলে তিনি মেয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে থাকেন।
এভাবে দুই বছর শেষ হয়। পঞ্চম বর্ষে এসে আবার সেই একই যন্ত্রণা। এবার ভিপি লায়ন আরও বেপরোয়া। অপি তখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এতটা শঙ্কিত হন যে নিজের বাসাতেও একটানা থাকতেন না। পালা করে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে রাত কাটানো শুরু করেন।
অপহরণের চেষ্টা নিয়ে অপির বাবা সৈয়দ আবদুল করিম লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। সে সময় মামুনুর রশীদসহ অনেক নাট্যজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করে বিবৃতি দেন। তারপরও দেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েট তাদের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য কিছুই করেনি। উল্টো বুয়েটসহ সবাই ভিপি লায়নের পক্ষ নেয়। একপর্যায়ে লায়নকে বাঁচাতে তাঁকে মানসিক রোগীর সনদ দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বুয়েটের তখন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ছিলেন অধ্যাপক জয়নুল আবেদিন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে বুয়েটের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাজাহান আলী মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দিয়েছেন। লায়ন একজন প্রকৃত মানসিক রোগী। তিনি বলেন, এর আগেও জামানস ও মনন নামের দুটি ক্লিনিকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন লায়ন।
যত দূর মনে পড়ে, প্রথম ঘটনার পর লায়নের বাবা দিনাজপুরের পার্বতীপুরের একটি কলেজের শিক্ষক মকবুল হোসেন বুয়েটে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে বলেছিলেন, তাঁর ছেলে আর কাউকে উত্ত্যক্ত করবেন না। মকবুল হোসেন একবার বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বুয়েটের গাড়িতে চড়ে অপিদের মোহাম্মদপুরের বাসাতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সে কথা আর রক্ষা হয়নি।
ওই সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, লায়নকে নিয়ে তাঁদের পক্ষে আসলে কিছুই করা সম্ভব নয়। কারণ, লায়নের জন্মদিনের কেক কেটেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
লায়নের খোঁজ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকার দিনাজপুর প্রতিনিধি আনিসুল হক জুয়েল আর নীলফামারী প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বললেন, লায়নের বাবা জাতীয় পার্টির বড় নেতা ছিলেন। লায়ন এখনো পার্বতীপুরে একা থাকেন। তিনি কিছুই করেন না, শুধু এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
আমাদের সেই নূরে আলম ভাই এখন অবসর যাপনে আমেরিকায় থাকেন। কদিন আগে তাঁকে ফোন করেছিলাম। শুধু বললেন, কী বাজে সময়ই-না গেছে।
অপির সঙ্গে কথাও হলো বুধবার। পুরোনো কথা তুলতেই মনে হলো, তাঁর মনের গভীরে ক্ষত এখনো দগদগে। সেই ঘটনা, পরিস্থিতি—সবই তাঁর মনে আছে, ভোলেননি কিছুই। শুধু বললেন, জীবনের সেই ঝড়টা এভাবে পাড়ি দিতে না হলে (পরীক্ষায়) আরও ভালো ফল করা যেত।
অপির ফোন রাখতে রাখতে মনে হচ্ছিল, অপি যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঝড়ের পরে’ গল্পের সেই কিশোর ছেলেটি। ঝড় যাঁকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে, কী করে বাঁচতে হয়, কী করে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়।
হয়তো সেই শিক্ষাই জীবনে কাজে লাগিয়েছেন অপি। এখন তাঁর গণ্ডি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে গেছে। হালে ঢাকা-কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিটি তো তারই বার্তা দিয়ে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
১৮ মার্চ ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
১৮ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
১৮ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

মোগল দরবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম ছিল মুনশি। ধর্মীয় জ্ঞান, ভাষা, বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে এই ফারসি শব্দে অভিহিত করা হতো। তবে মুনশি শব্দ নিয়ে এত মুনশিয়ানা দেখানোর বিস্তর জ্ঞান আমার কস্মিনকালেও ছিল না। এটা জেনেছি সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র পড়ার সুবাদে।
১৮ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে