কামরুল হাসান

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য অপেক্ষা করো’।
এরপর কয়েক দিন ধরে একটি ফোনের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি নিশ্চিত, সেই ফোন আসবে গভীর রাতে। কিন্তু ফোন আর বাজে না। রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা নেড়েচেড়ে দেখি, সব ঠিকঠাক আছে কি না। অপেক্ষা আসলেই বড় কঠিন।
অবশেষে ফোন এল, তা-ও পাঁচ দিন পরে। ২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে ফোন করলেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ। তিনি তখন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক। ছোট করে বললেন, ‘জালে বিগ ফিশ আছে, ময়মনসিংহের দিকে আসেন।’ ময়মনসিংহ অনেক বড় জায়গা। কোথায় যেতে হবে, পরিষ্কার করে কিছুই বললেন না, তবু পথে নামলাম।
সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হেঁটে বেইলি রোডে এসে দেখি, সুইস বেকারির সামনে হলুদ রঙের একটি ট্যাক্সি ক্যাব দাঁড়িয়ে। ময়মনসিংহ যেতে হবে শুনে প্রথমে চালক রাজি হলেন না। ট্যাক্সি ক্যাব তখন শুধু রাজধানীতে চলত, ঢাকার বাইরে গেলেই পুলিশের ঝামেলা। পরে আমার প্রয়োজন আর পরিচয় শুনে বললেন, ‘ওডেন স্যার, যা করে আল্লায়।’
এত রাতে ঢাকার রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। ড্যাশবোর্ডে ‘রিজার্ভ’ লেখা বসিয়ে দিয়ে ঘন কুয়াশা মাড়িয়ে আমরা ছুটে চলছি ময়মনসিংহের দিকে। গাড়ি চলছে ঝড়ের গতিতে। গাজীপুর চৌরাস্তা পেরোতেই ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। বললেন, ‘নাক বরাবর আসতে থাকেন।’
ঘণ্টা দুয়েক পরে পৌঁছালাম ময়মনসিংহ শহরের কাছে। অন্ধকার আর ঘন কুয়াশা, কোন দিকে যাব বুঝতে পারছি না। সামনে একটি পেট্রলপাম্প। সেখানে গাড়ি থামিয়ে আবার ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। এবার বললেন, আকুয়া মোড়লপাড়ার দিকে আসেন। এই শহরে আমি আগেও এসেছি, কিন্তু রাতে কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আকুয়া কোন দিকে, তা-ও জানি না। পেট্রলপাম্পের এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলাম, আকুয়া যাব কীভাবে? আমার প্রশ্ন শুনে ঘুম মোছা চোখে বললেন, ওদিকে গোলাগুলি হচ্ছে। বললাম, তবু আমি সেখানেই যাব। কর্মচারী অবাক হয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন।
পাম্প থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে মোড় নিতেই র্যাবের কয়েকজন সদস্য গাড়ি থামালেন। পরিচয় পেয়ে গাড়ি ছেড়ে সাবধানে হেঁটে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তাঁদের কথা শুনে একটু এগোতেই দেখি, রাস্তার ওপর বোমার মতো কিছু পড়ে আছে। একটু পর আরেকটা। যত এগোচ্ছি, একটার পর একটা। মনে হচ্ছে, পরিত্যক্ত কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছি। আরেকটু সামনে এগোতেই পেয়ে গেলাম গুলজার উদ্দিন ও তাঁর দলবলকে। আমাকে দেখে তিনি হেসে বললেন, ‘ওস্তাদ, মিশন ফেল, বিগ সর্ট এসকেপ করেছে।’
একটি মোড়ে আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এর মধ্যে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের এক সদস্য দৌড়ে এসে বললেন, ‘স্যার, সর্বনাশ, সব তো লাইট সেনসিটিভ বোম্ব!’ এ কথা শুনে দলের সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। সূর্যের আলো পড়লেই নাকি বোমাগুলো বিস্ফোরিত হবে। সূর্য ওঠার আগেই সবগুলো সরাতে হবে। শুরু হলো পাতা কুড়ানোর মতো করে বোমা কুড়ানোর কাজ। সবাই আতঙ্কিত। অবশেষে বোমাগুলো সরানো শেষ হলো। ততক্ষণে দিনের আলো ফুটেছে। ময়মনসিংহ শহরের সব সাংবাদিক শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘটনাস্থলে হাজির। সেই দলে মাফলারে মুখ বেঁধে এসেছেন নিয়ামুল কবীর সজল। আমাকে দেখে অবাক হয়ে বললেন, ভাই, আপনি!
র্যাবের কাছে খবর ছিল, ময়মনসিংহের একটি বাড়িতে জেএমবির মজলিসে শুরার গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা লুকিয়ে আছেন। সেই তথ্য পেয়েই এই অভিযান। র্যাবের দলটি প্রথমে যায় আকুয়া উত্তরপাড়ার ফুলবাড়িয়া রোডে, নাসিরাবাদ স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক খোরশেদ উদ্দীন আকন্দের বাড়ি ‘নোঙর’-এ। সেই বাড়ির নিচতলায় পাওয়া যায় তৈরি বোমা ও বিস্ফোরকের বিশাল স্তূপ। দোতলার দুটি কক্ষের সবখানেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা শক্তিশালী বোমা।
বাড়িওয়ালা আমাদের বললেন, আসাদুজ্জামান নামের এক যুবক বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তার সঙ্গে শহীদ নামের এক ছেলে থাকত। সে আনন্দ মোহন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স পড়ত। আর ছিল শিশুকন্যাসহ তাদের এক বোন।
পরের অভিযান হলো আকুয়া মোড়লপাড়ার নূরুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি ‘নূরমহল’-এ। সেই বাড়ির নিচতলা ছিল জঙ্গি আস্তানা। র্যাব নূরমহলে ঢোকার চেষ্টা করতেই জঙ্গিরা টের পেয়ে যায়। প্রথমে তারা হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এরপর একে একে শক্তিশালী বোমা ছুড়ে দেয়। তারা চারদিকের বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে হাওয়া হয়ে যায়। র্যাব পলাতক জঙ্গিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল, জবাবে তারা বোমা ছোড়ে। ৩০ মিনিট ধরে বোমা ও গুলিবিনিময় হয়। র্যাবকে প্রতিহত করতে আধা কিলোমিটারজুড়ে বোমা ফেলে দেয় জঙ্গিরা। আস্তানা ছাড়ার আগে জঙ্গিরা তাদের কম্পিউটার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
এই অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়। দুই আস্তানা থেকে পাওয়া যায় বিপুলসংখ্যক বোমা, ব্যাপক বিস্ফোরক ও সরঞ্জাম।
অভিযান শেষ, আমরা সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। মিলল না কোনো রাঘববোয়াল। কিন্তু বেরিয়ে এল আরেক অজানা কাহিনি। হঠাৎ সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে সন্দেহ করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম। তাঁকে আটক করা হলো। নাম আসাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত বলে দাবি করলেন। বললেন, এই বোমাগুলো সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন নামের এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়েছেন। আরও জানালেন, তাঁর সঙ্গে যে নারী থাকতেন, তিনি জেএমবির এক নেতার স্ত্রী, তাঁর বোন নন। সংগঠনের নির্দেশে তাঁকে আশ্রয় দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসাদ স্বীকার করেন, অভিযানের আগে নূরমহলে লুকিয়ে ছিলেন জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান ও শায়খ আবদুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানির সেকেন্ড ইন কমান্ড সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। অভিযান টের পেয়ে পথে বোমা ফাটিয়ে নিরাপদে সরে পড়েন সালাউদ্দিন। আর যাওয়ার আগে বোমা মেরে নিজের কম্পিউটারটিও উড়িয়ে দেন। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সানিও নাকি এখানে এসেছিলেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে, চোরের সাত দিন আর গৃহস্থের এক দিন। সালাউদ্দিনকেও ধরা পড়তে হয়। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ধরা পড়েন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। এই সালাউদ্দিন ছিলেন জেএমবির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৪০ টির বেশি মামলা আছে। এর মধ্যে ১৩ মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে,৩ টিতে হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
আদালতে সালাউদ্দিন যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, ১৯৯৭ সালে বন্দর বিএম ইউনিয়ন স্কুল থেকে পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। সেখানে পরিচয় হয় আতাউর রহমান সানির সঙ্গে। এরপর জঙ্গিবাদে জড়ান। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ২০০২ সালে সিলেটের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। ওই সময় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার সানা কৈর গ্রামে হৃদয় রায় নামের এক তরুণকে হত্যা করেন সালেহীন ও তাঁর সহযোগীরা। বরিশালের ছেলে হৃদয় খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে একটি মিশনের হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিনয় করে যিশুর জীবনকাহিনি তুলে ধরতেন। হৃদয় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে হাইকোর্ট সালেহীনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। সে বছর গনি গোমেজ নামের আরেক ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টানকে হত্যার দায়ে হাইকোর্ট সালেহীনসহ দুই জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এসব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো দিন আপিল করেননি সালাউদ্দিন; বরং তিনি দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে হাফেজ মাহমুদ, বোমা মিজান আর সালাউদ্দিনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগী জঙ্গিরা। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পুলিশ তাঁকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। পুলিশ এখন বলছে, তিনি ভারতে আছেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ মিজান আর সালাউদ্দিনের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করে। পরে মিজান ধরা পড়ে। কিন্তু সালাউদ্দিনকে আর ধরতে পারেনি। হিন্দুস্তান টাইমসে দেখলাম, সালাউদ্দিন ও মিজানকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে। বলেছে, এরা ভারতের ভেতরে জামাআতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়া বা জেএমআই নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে।
২০ নভেম্বর ঢাকার আদালত থেকে যে কায়দায় দুই জঙ্গি ছিনতাই হলো, তাতে সালাউদ্দিনের মতো কারও হাত আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন:

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য অপেক্ষা করো’।
এরপর কয়েক দিন ধরে একটি ফোনের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি নিশ্চিত, সেই ফোন আসবে গভীর রাতে। কিন্তু ফোন আর বাজে না। রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা নেড়েচেড়ে দেখি, সব ঠিকঠাক আছে কি না। অপেক্ষা আসলেই বড় কঠিন।
অবশেষে ফোন এল, তা-ও পাঁচ দিন পরে। ২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে ফোন করলেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ। তিনি তখন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক। ছোট করে বললেন, ‘জালে বিগ ফিশ আছে, ময়মনসিংহের দিকে আসেন।’ ময়মনসিংহ অনেক বড় জায়গা। কোথায় যেতে হবে, পরিষ্কার করে কিছুই বললেন না, তবু পথে নামলাম।
সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হেঁটে বেইলি রোডে এসে দেখি, সুইস বেকারির সামনে হলুদ রঙের একটি ট্যাক্সি ক্যাব দাঁড়িয়ে। ময়মনসিংহ যেতে হবে শুনে প্রথমে চালক রাজি হলেন না। ট্যাক্সি ক্যাব তখন শুধু রাজধানীতে চলত, ঢাকার বাইরে গেলেই পুলিশের ঝামেলা। পরে আমার প্রয়োজন আর পরিচয় শুনে বললেন, ‘ওডেন স্যার, যা করে আল্লায়।’
এত রাতে ঢাকার রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। ড্যাশবোর্ডে ‘রিজার্ভ’ লেখা বসিয়ে দিয়ে ঘন কুয়াশা মাড়িয়ে আমরা ছুটে চলছি ময়মনসিংহের দিকে। গাড়ি চলছে ঝড়ের গতিতে। গাজীপুর চৌরাস্তা পেরোতেই ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। বললেন, ‘নাক বরাবর আসতে থাকেন।’
ঘণ্টা দুয়েক পরে পৌঁছালাম ময়মনসিংহ শহরের কাছে। অন্ধকার আর ঘন কুয়াশা, কোন দিকে যাব বুঝতে পারছি না। সামনে একটি পেট্রলপাম্প। সেখানে গাড়ি থামিয়ে আবার ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। এবার বললেন, আকুয়া মোড়লপাড়ার দিকে আসেন। এই শহরে আমি আগেও এসেছি, কিন্তু রাতে কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আকুয়া কোন দিকে, তা-ও জানি না। পেট্রলপাম্পের এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলাম, আকুয়া যাব কীভাবে? আমার প্রশ্ন শুনে ঘুম মোছা চোখে বললেন, ওদিকে গোলাগুলি হচ্ছে। বললাম, তবু আমি সেখানেই যাব। কর্মচারী অবাক হয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন।
পাম্প থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে মোড় নিতেই র্যাবের কয়েকজন সদস্য গাড়ি থামালেন। পরিচয় পেয়ে গাড়ি ছেড়ে সাবধানে হেঁটে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তাঁদের কথা শুনে একটু এগোতেই দেখি, রাস্তার ওপর বোমার মতো কিছু পড়ে আছে। একটু পর আরেকটা। যত এগোচ্ছি, একটার পর একটা। মনে হচ্ছে, পরিত্যক্ত কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছি। আরেকটু সামনে এগোতেই পেয়ে গেলাম গুলজার উদ্দিন ও তাঁর দলবলকে। আমাকে দেখে তিনি হেসে বললেন, ‘ওস্তাদ, মিশন ফেল, বিগ সর্ট এসকেপ করেছে।’
একটি মোড়ে আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এর মধ্যে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের এক সদস্য দৌড়ে এসে বললেন, ‘স্যার, সর্বনাশ, সব তো লাইট সেনসিটিভ বোম্ব!’ এ কথা শুনে দলের সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। সূর্যের আলো পড়লেই নাকি বোমাগুলো বিস্ফোরিত হবে। সূর্য ওঠার আগেই সবগুলো সরাতে হবে। শুরু হলো পাতা কুড়ানোর মতো করে বোমা কুড়ানোর কাজ। সবাই আতঙ্কিত। অবশেষে বোমাগুলো সরানো শেষ হলো। ততক্ষণে দিনের আলো ফুটেছে। ময়মনসিংহ শহরের সব সাংবাদিক শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘটনাস্থলে হাজির। সেই দলে মাফলারে মুখ বেঁধে এসেছেন নিয়ামুল কবীর সজল। আমাকে দেখে অবাক হয়ে বললেন, ভাই, আপনি!
র্যাবের কাছে খবর ছিল, ময়মনসিংহের একটি বাড়িতে জেএমবির মজলিসে শুরার গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা লুকিয়ে আছেন। সেই তথ্য পেয়েই এই অভিযান। র্যাবের দলটি প্রথমে যায় আকুয়া উত্তরপাড়ার ফুলবাড়িয়া রোডে, নাসিরাবাদ স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক খোরশেদ উদ্দীন আকন্দের বাড়ি ‘নোঙর’-এ। সেই বাড়ির নিচতলায় পাওয়া যায় তৈরি বোমা ও বিস্ফোরকের বিশাল স্তূপ। দোতলার দুটি কক্ষের সবখানেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা শক্তিশালী বোমা।
বাড়িওয়ালা আমাদের বললেন, আসাদুজ্জামান নামের এক যুবক বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তার সঙ্গে শহীদ নামের এক ছেলে থাকত। সে আনন্দ মোহন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স পড়ত। আর ছিল শিশুকন্যাসহ তাদের এক বোন।
পরের অভিযান হলো আকুয়া মোড়লপাড়ার নূরুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি ‘নূরমহল’-এ। সেই বাড়ির নিচতলা ছিল জঙ্গি আস্তানা। র্যাব নূরমহলে ঢোকার চেষ্টা করতেই জঙ্গিরা টের পেয়ে যায়। প্রথমে তারা হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এরপর একে একে শক্তিশালী বোমা ছুড়ে দেয়। তারা চারদিকের বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে হাওয়া হয়ে যায়। র্যাব পলাতক জঙ্গিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল, জবাবে তারা বোমা ছোড়ে। ৩০ মিনিট ধরে বোমা ও গুলিবিনিময় হয়। র্যাবকে প্রতিহত করতে আধা কিলোমিটারজুড়ে বোমা ফেলে দেয় জঙ্গিরা। আস্তানা ছাড়ার আগে জঙ্গিরা তাদের কম্পিউটার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
এই অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়। দুই আস্তানা থেকে পাওয়া যায় বিপুলসংখ্যক বোমা, ব্যাপক বিস্ফোরক ও সরঞ্জাম।
অভিযান শেষ, আমরা সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। মিলল না কোনো রাঘববোয়াল। কিন্তু বেরিয়ে এল আরেক অজানা কাহিনি। হঠাৎ সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে সন্দেহ করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম। তাঁকে আটক করা হলো। নাম আসাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত বলে দাবি করলেন। বললেন, এই বোমাগুলো সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন নামের এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়েছেন। আরও জানালেন, তাঁর সঙ্গে যে নারী থাকতেন, তিনি জেএমবির এক নেতার স্ত্রী, তাঁর বোন নন। সংগঠনের নির্দেশে তাঁকে আশ্রয় দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসাদ স্বীকার করেন, অভিযানের আগে নূরমহলে লুকিয়ে ছিলেন জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান ও শায়খ আবদুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানির সেকেন্ড ইন কমান্ড সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। অভিযান টের পেয়ে পথে বোমা ফাটিয়ে নিরাপদে সরে পড়েন সালাউদ্দিন। আর যাওয়ার আগে বোমা মেরে নিজের কম্পিউটারটিও উড়িয়ে দেন। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সানিও নাকি এখানে এসেছিলেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে, চোরের সাত দিন আর গৃহস্থের এক দিন। সালাউদ্দিনকেও ধরা পড়তে হয়। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ধরা পড়েন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। এই সালাউদ্দিন ছিলেন জেএমবির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৪০ টির বেশি মামলা আছে। এর মধ্যে ১৩ মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে,৩ টিতে হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
আদালতে সালাউদ্দিন যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, ১৯৯৭ সালে বন্দর বিএম ইউনিয়ন স্কুল থেকে পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। সেখানে পরিচয় হয় আতাউর রহমান সানির সঙ্গে। এরপর জঙ্গিবাদে জড়ান। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ২০০২ সালে সিলেটের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। ওই সময় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার সানা কৈর গ্রামে হৃদয় রায় নামের এক তরুণকে হত্যা করেন সালেহীন ও তাঁর সহযোগীরা। বরিশালের ছেলে হৃদয় খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে একটি মিশনের হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিনয় করে যিশুর জীবনকাহিনি তুলে ধরতেন। হৃদয় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে হাইকোর্ট সালেহীনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। সে বছর গনি গোমেজ নামের আরেক ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টানকে হত্যার দায়ে হাইকোর্ট সালেহীনসহ দুই জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এসব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো দিন আপিল করেননি সালাউদ্দিন; বরং তিনি দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে হাফেজ মাহমুদ, বোমা মিজান আর সালাউদ্দিনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগী জঙ্গিরা। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পুলিশ তাঁকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। পুলিশ এখন বলছে, তিনি ভারতে আছেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ মিজান আর সালাউদ্দিনের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করে। পরে মিজান ধরা পড়ে। কিন্তু সালাউদ্দিনকে আর ধরতে পারেনি। হিন্দুস্তান টাইমসে দেখলাম, সালাউদ্দিন ও মিজানকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে। বলেছে, এরা ভারতের ভেতরে জামাআতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়া বা জেএমআই নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে।
২০ নভেম্বর ঢাকার আদালত থেকে যে কায়দায় দুই জঙ্গি ছিনতাই হলো, তাতে সালাউদ্দিনের মতো কারও হাত আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য অপেক্ষা করো’।
এরপর কয়েক দিন ধরে একটি ফোনের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি নিশ্চিত, সেই ফোন আসবে গভীর রাতে। কিন্তু ফোন আর বাজে না। রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা নেড়েচেড়ে দেখি, সব ঠিকঠাক আছে কি না। অপেক্ষা আসলেই বড় কঠিন।
অবশেষে ফোন এল, তা-ও পাঁচ দিন পরে। ২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে ফোন করলেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ। তিনি তখন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক। ছোট করে বললেন, ‘জালে বিগ ফিশ আছে, ময়মনসিংহের দিকে আসেন।’ ময়মনসিংহ অনেক বড় জায়গা। কোথায় যেতে হবে, পরিষ্কার করে কিছুই বললেন না, তবু পথে নামলাম।
সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হেঁটে বেইলি রোডে এসে দেখি, সুইস বেকারির সামনে হলুদ রঙের একটি ট্যাক্সি ক্যাব দাঁড়িয়ে। ময়মনসিংহ যেতে হবে শুনে প্রথমে চালক রাজি হলেন না। ট্যাক্সি ক্যাব তখন শুধু রাজধানীতে চলত, ঢাকার বাইরে গেলেই পুলিশের ঝামেলা। পরে আমার প্রয়োজন আর পরিচয় শুনে বললেন, ‘ওডেন স্যার, যা করে আল্লায়।’
এত রাতে ঢাকার রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। ড্যাশবোর্ডে ‘রিজার্ভ’ লেখা বসিয়ে দিয়ে ঘন কুয়াশা মাড়িয়ে আমরা ছুটে চলছি ময়মনসিংহের দিকে। গাড়ি চলছে ঝড়ের গতিতে। গাজীপুর চৌরাস্তা পেরোতেই ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। বললেন, ‘নাক বরাবর আসতে থাকেন।’
ঘণ্টা দুয়েক পরে পৌঁছালাম ময়মনসিংহ শহরের কাছে। অন্ধকার আর ঘন কুয়াশা, কোন দিকে যাব বুঝতে পারছি না। সামনে একটি পেট্রলপাম্প। সেখানে গাড়ি থামিয়ে আবার ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। এবার বললেন, আকুয়া মোড়লপাড়ার দিকে আসেন। এই শহরে আমি আগেও এসেছি, কিন্তু রাতে কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আকুয়া কোন দিকে, তা-ও জানি না। পেট্রলপাম্পের এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলাম, আকুয়া যাব কীভাবে? আমার প্রশ্ন শুনে ঘুম মোছা চোখে বললেন, ওদিকে গোলাগুলি হচ্ছে। বললাম, তবু আমি সেখানেই যাব। কর্মচারী অবাক হয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন।
পাম্প থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে মোড় নিতেই র্যাবের কয়েকজন সদস্য গাড়ি থামালেন। পরিচয় পেয়ে গাড়ি ছেড়ে সাবধানে হেঁটে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তাঁদের কথা শুনে একটু এগোতেই দেখি, রাস্তার ওপর বোমার মতো কিছু পড়ে আছে। একটু পর আরেকটা। যত এগোচ্ছি, একটার পর একটা। মনে হচ্ছে, পরিত্যক্ত কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছি। আরেকটু সামনে এগোতেই পেয়ে গেলাম গুলজার উদ্দিন ও তাঁর দলবলকে। আমাকে দেখে তিনি হেসে বললেন, ‘ওস্তাদ, মিশন ফেল, বিগ সর্ট এসকেপ করেছে।’
একটি মোড়ে আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এর মধ্যে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের এক সদস্য দৌড়ে এসে বললেন, ‘স্যার, সর্বনাশ, সব তো লাইট সেনসিটিভ বোম্ব!’ এ কথা শুনে দলের সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। সূর্যের আলো পড়লেই নাকি বোমাগুলো বিস্ফোরিত হবে। সূর্য ওঠার আগেই সবগুলো সরাতে হবে। শুরু হলো পাতা কুড়ানোর মতো করে বোমা কুড়ানোর কাজ। সবাই আতঙ্কিত। অবশেষে বোমাগুলো সরানো শেষ হলো। ততক্ষণে দিনের আলো ফুটেছে। ময়মনসিংহ শহরের সব সাংবাদিক শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘটনাস্থলে হাজির। সেই দলে মাফলারে মুখ বেঁধে এসেছেন নিয়ামুল কবীর সজল। আমাকে দেখে অবাক হয়ে বললেন, ভাই, আপনি!
র্যাবের কাছে খবর ছিল, ময়মনসিংহের একটি বাড়িতে জেএমবির মজলিসে শুরার গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা লুকিয়ে আছেন। সেই তথ্য পেয়েই এই অভিযান। র্যাবের দলটি প্রথমে যায় আকুয়া উত্তরপাড়ার ফুলবাড়িয়া রোডে, নাসিরাবাদ স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক খোরশেদ উদ্দীন আকন্দের বাড়ি ‘নোঙর’-এ। সেই বাড়ির নিচতলায় পাওয়া যায় তৈরি বোমা ও বিস্ফোরকের বিশাল স্তূপ। দোতলার দুটি কক্ষের সবখানেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা শক্তিশালী বোমা।
বাড়িওয়ালা আমাদের বললেন, আসাদুজ্জামান নামের এক যুবক বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তার সঙ্গে শহীদ নামের এক ছেলে থাকত। সে আনন্দ মোহন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স পড়ত। আর ছিল শিশুকন্যাসহ তাদের এক বোন।
পরের অভিযান হলো আকুয়া মোড়লপাড়ার নূরুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি ‘নূরমহল’-এ। সেই বাড়ির নিচতলা ছিল জঙ্গি আস্তানা। র্যাব নূরমহলে ঢোকার চেষ্টা করতেই জঙ্গিরা টের পেয়ে যায়। প্রথমে তারা হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এরপর একে একে শক্তিশালী বোমা ছুড়ে দেয়। তারা চারদিকের বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে হাওয়া হয়ে যায়। র্যাব পলাতক জঙ্গিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল, জবাবে তারা বোমা ছোড়ে। ৩০ মিনিট ধরে বোমা ও গুলিবিনিময় হয়। র্যাবকে প্রতিহত করতে আধা কিলোমিটারজুড়ে বোমা ফেলে দেয় জঙ্গিরা। আস্তানা ছাড়ার আগে জঙ্গিরা তাদের কম্পিউটার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
এই অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়। দুই আস্তানা থেকে পাওয়া যায় বিপুলসংখ্যক বোমা, ব্যাপক বিস্ফোরক ও সরঞ্জাম।
অভিযান শেষ, আমরা সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। মিলল না কোনো রাঘববোয়াল। কিন্তু বেরিয়ে এল আরেক অজানা কাহিনি। হঠাৎ সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে সন্দেহ করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম। তাঁকে আটক করা হলো। নাম আসাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত বলে দাবি করলেন। বললেন, এই বোমাগুলো সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন নামের এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়েছেন। আরও জানালেন, তাঁর সঙ্গে যে নারী থাকতেন, তিনি জেএমবির এক নেতার স্ত্রী, তাঁর বোন নন। সংগঠনের নির্দেশে তাঁকে আশ্রয় দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসাদ স্বীকার করেন, অভিযানের আগে নূরমহলে লুকিয়ে ছিলেন জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান ও শায়খ আবদুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানির সেকেন্ড ইন কমান্ড সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। অভিযান টের পেয়ে পথে বোমা ফাটিয়ে নিরাপদে সরে পড়েন সালাউদ্দিন। আর যাওয়ার আগে বোমা মেরে নিজের কম্পিউটারটিও উড়িয়ে দেন। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সানিও নাকি এখানে এসেছিলেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে, চোরের সাত দিন আর গৃহস্থের এক দিন। সালাউদ্দিনকেও ধরা পড়তে হয়। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ধরা পড়েন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। এই সালাউদ্দিন ছিলেন জেএমবির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৪০ টির বেশি মামলা আছে। এর মধ্যে ১৩ মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে,৩ টিতে হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
আদালতে সালাউদ্দিন যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, ১৯৯৭ সালে বন্দর বিএম ইউনিয়ন স্কুল থেকে পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। সেখানে পরিচয় হয় আতাউর রহমান সানির সঙ্গে। এরপর জঙ্গিবাদে জড়ান। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ২০০২ সালে সিলেটের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। ওই সময় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার সানা কৈর গ্রামে হৃদয় রায় নামের এক তরুণকে হত্যা করেন সালেহীন ও তাঁর সহযোগীরা। বরিশালের ছেলে হৃদয় খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে একটি মিশনের হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিনয় করে যিশুর জীবনকাহিনি তুলে ধরতেন। হৃদয় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে হাইকোর্ট সালেহীনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। সে বছর গনি গোমেজ নামের আরেক ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টানকে হত্যার দায়ে হাইকোর্ট সালেহীনসহ দুই জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এসব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো দিন আপিল করেননি সালাউদ্দিন; বরং তিনি দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে হাফেজ মাহমুদ, বোমা মিজান আর সালাউদ্দিনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগী জঙ্গিরা। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পুলিশ তাঁকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। পুলিশ এখন বলছে, তিনি ভারতে আছেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ মিজান আর সালাউদ্দিনের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করে। পরে মিজান ধরা পড়ে। কিন্তু সালাউদ্দিনকে আর ধরতে পারেনি। হিন্দুস্তান টাইমসে দেখলাম, সালাউদ্দিন ও মিজানকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে। বলেছে, এরা ভারতের ভেতরে জামাআতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়া বা জেএমআই নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে।
২০ নভেম্বর ঢাকার আদালত থেকে যে কায়দায় দুই জঙ্গি ছিনতাই হলো, তাতে সালাউদ্দিনের মতো কারও হাত আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন:

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য অপেক্ষা করো’।
এরপর কয়েক দিন ধরে একটি ফোনের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি নিশ্চিত, সেই ফোন আসবে গভীর রাতে। কিন্তু ফোন আর বাজে না। রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা নেড়েচেড়ে দেখি, সব ঠিকঠাক আছে কি না। অপেক্ষা আসলেই বড় কঠিন।
অবশেষে ফোন এল, তা-ও পাঁচ দিন পরে। ২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে ফোন করলেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ। তিনি তখন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক। ছোট করে বললেন, ‘জালে বিগ ফিশ আছে, ময়মনসিংহের দিকে আসেন।’ ময়মনসিংহ অনেক বড় জায়গা। কোথায় যেতে হবে, পরিষ্কার করে কিছুই বললেন না, তবু পথে নামলাম।
সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে হেঁটে বেইলি রোডে এসে দেখি, সুইস বেকারির সামনে হলুদ রঙের একটি ট্যাক্সি ক্যাব দাঁড়িয়ে। ময়মনসিংহ যেতে হবে শুনে প্রথমে চালক রাজি হলেন না। ট্যাক্সি ক্যাব তখন শুধু রাজধানীতে চলত, ঢাকার বাইরে গেলেই পুলিশের ঝামেলা। পরে আমার প্রয়োজন আর পরিচয় শুনে বললেন, ‘ওডেন স্যার, যা করে আল্লায়।’
এত রাতে ঢাকার রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। ড্যাশবোর্ডে ‘রিজার্ভ’ লেখা বসিয়ে দিয়ে ঘন কুয়াশা মাড়িয়ে আমরা ছুটে চলছি ময়মনসিংহের দিকে। গাড়ি চলছে ঝড়ের গতিতে। গাজীপুর চৌরাস্তা পেরোতেই ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। বললেন, ‘নাক বরাবর আসতে থাকেন।’
ঘণ্টা দুয়েক পরে পৌঁছালাম ময়মনসিংহ শহরের কাছে। অন্ধকার আর ঘন কুয়াশা, কোন দিকে যাব বুঝতে পারছি না। সামনে একটি পেট্রলপাম্প। সেখানে গাড়ি থামিয়ে আবার ফোন দিলাম মাসুক হাসানকে। এবার বললেন, আকুয়া মোড়লপাড়ার দিকে আসেন। এই শহরে আমি আগেও এসেছি, কিন্তু রাতে কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আকুয়া কোন দিকে, তা-ও জানি না। পেট্রলপাম্পের এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলাম, আকুয়া যাব কীভাবে? আমার প্রশ্ন শুনে ঘুম মোছা চোখে বললেন, ওদিকে গোলাগুলি হচ্ছে। বললাম, তবু আমি সেখানেই যাব। কর্মচারী অবাক হয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন।
পাম্প থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে মোড় নিতেই র্যাবের কয়েকজন সদস্য গাড়ি থামালেন। পরিচয় পেয়ে গাড়ি ছেড়ে সাবধানে হেঁটে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তাঁদের কথা শুনে একটু এগোতেই দেখি, রাস্তার ওপর বোমার মতো কিছু পড়ে আছে। একটু পর আরেকটা। যত এগোচ্ছি, একটার পর একটা। মনে হচ্ছে, পরিত্যক্ত কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছি। আরেকটু সামনে এগোতেই পেয়ে গেলাম গুলজার উদ্দিন ও তাঁর দলবলকে। আমাকে দেখে তিনি হেসে বললেন, ‘ওস্তাদ, মিশন ফেল, বিগ সর্ট এসকেপ করেছে।’
একটি মোড়ে আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এর মধ্যে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের এক সদস্য দৌড়ে এসে বললেন, ‘স্যার, সর্বনাশ, সব তো লাইট সেনসিটিভ বোম্ব!’ এ কথা শুনে দলের সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। সূর্যের আলো পড়লেই নাকি বোমাগুলো বিস্ফোরিত হবে। সূর্য ওঠার আগেই সবগুলো সরাতে হবে। শুরু হলো পাতা কুড়ানোর মতো করে বোমা কুড়ানোর কাজ। সবাই আতঙ্কিত। অবশেষে বোমাগুলো সরানো শেষ হলো। ততক্ষণে দিনের আলো ফুটেছে। ময়মনসিংহ শহরের সব সাংবাদিক শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘটনাস্থলে হাজির। সেই দলে মাফলারে মুখ বেঁধে এসেছেন নিয়ামুল কবীর সজল। আমাকে দেখে অবাক হয়ে বললেন, ভাই, আপনি!
র্যাবের কাছে খবর ছিল, ময়মনসিংহের একটি বাড়িতে জেএমবির মজলিসে শুরার গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা লুকিয়ে আছেন। সেই তথ্য পেয়েই এই অভিযান। র্যাবের দলটি প্রথমে যায় আকুয়া উত্তরপাড়ার ফুলবাড়িয়া রোডে, নাসিরাবাদ স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক খোরশেদ উদ্দীন আকন্দের বাড়ি ‘নোঙর’-এ। সেই বাড়ির নিচতলায় পাওয়া যায় তৈরি বোমা ও বিস্ফোরকের বিশাল স্তূপ। দোতলার দুটি কক্ষের সবখানেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা শক্তিশালী বোমা।
বাড়িওয়ালা আমাদের বললেন, আসাদুজ্জামান নামের এক যুবক বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তার সঙ্গে শহীদ নামের এক ছেলে থাকত। সে আনন্দ মোহন কলেজে ইংরেজিতে অনার্স পড়ত। আর ছিল শিশুকন্যাসহ তাদের এক বোন।
পরের অভিযান হলো আকুয়া মোড়লপাড়ার নূরুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি ‘নূরমহল’-এ। সেই বাড়ির নিচতলা ছিল জঙ্গি আস্তানা। র্যাব নূরমহলে ঢোকার চেষ্টা করতেই জঙ্গিরা টের পেয়ে যায়। প্রথমে তারা হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এরপর একে একে শক্তিশালী বোমা ছুড়ে দেয়। তারা চারদিকের বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে হাওয়া হয়ে যায়। র্যাব পলাতক জঙ্গিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল, জবাবে তারা বোমা ছোড়ে। ৩০ মিনিট ধরে বোমা ও গুলিবিনিময় হয়। র্যাবকে প্রতিহত করতে আধা কিলোমিটারজুড়ে বোমা ফেলে দেয় জঙ্গিরা। আস্তানা ছাড়ার আগে জঙ্গিরা তাদের কম্পিউটার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
এই অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়। দুই আস্তানা থেকে পাওয়া যায় বিপুলসংখ্যক বোমা, ব্যাপক বিস্ফোরক ও সরঞ্জাম।
অভিযান শেষ, আমরা সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। মিলল না কোনো রাঘববোয়াল। কিন্তু বেরিয়ে এল আরেক অজানা কাহিনি। হঠাৎ সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে সন্দেহ করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম। তাঁকে আটক করা হলো। নাম আসাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত বলে দাবি করলেন। বললেন, এই বোমাগুলো সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন নামের এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়েছেন। আরও জানালেন, তাঁর সঙ্গে যে নারী থাকতেন, তিনি জেএমবির এক নেতার স্ত্রী, তাঁর বোন নন। সংগঠনের নির্দেশে তাঁকে আশ্রয় দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসাদ স্বীকার করেন, অভিযানের আগে নূরমহলে লুকিয়ে ছিলেন জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান ও শায়খ আবদুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানির সেকেন্ড ইন কমান্ড সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। অভিযান টের পেয়ে পথে বোমা ফাটিয়ে নিরাপদে সরে পড়েন সালাউদ্দিন। আর যাওয়ার আগে বোমা মেরে নিজের কম্পিউটারটিও উড়িয়ে দেন। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সানিও নাকি এখানে এসেছিলেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে, চোরের সাত দিন আর গৃহস্থের এক দিন। সালাউদ্দিনকেও ধরা পড়তে হয়। ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ধরা পড়েন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। এই সালাউদ্দিন ছিলেন জেএমবির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৪০ টির বেশি মামলা আছে। এর মধ্যে ১৩ মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে,৩ টিতে হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
আদালতে সালাউদ্দিন যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, ১৯৯৭ সালে বন্দর বিএম ইউনিয়ন স্কুল থেকে পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। সেখানে পরিচয় হয় আতাউর রহমান সানির সঙ্গে। এরপর জঙ্গিবাদে জড়ান। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ২০০২ সালে সিলেটের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। ওই সময় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার সানা কৈর গ্রামে হৃদয় রায় নামের এক তরুণকে হত্যা করেন সালেহীন ও তাঁর সহযোগীরা। বরিশালের ছেলে হৃদয় খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে একটি মিশনের হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিনয় করে যিশুর জীবনকাহিনি তুলে ধরতেন। হৃদয় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে হাইকোর্ট সালেহীনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। সে বছর গনি গোমেজ নামের আরেক ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টানকে হত্যার দায়ে হাইকোর্ট সালেহীনসহ দুই জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এসব রায়ের বিরুদ্ধে কোনো দিন আপিল করেননি সালাউদ্দিন; বরং তিনি দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে হাফেজ মাহমুদ, বোমা মিজান আর সালাউদ্দিনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগী জঙ্গিরা। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পুলিশ তাঁকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। পুলিশ এখন বলছে, তিনি ভারতে আছেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ মিজান আর সালাউদ্দিনের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করে। পরে মিজান ধরা পড়ে। কিন্তু সালাউদ্দিনকে আর ধরতে পারেনি। হিন্দুস্তান টাইমসে দেখলাম, সালাউদ্দিন ও মিজানকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে। বলেছে, এরা ভারতের ভেতরে জামাআতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়া বা জেএমআই নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে।
২০ নভেম্বর ঢাকার আদালত থেকে যে কায়দায় দুই জঙ্গি ছিনতাই হলো, তাতে সালাউদ্দিনের মতো কারও হাত আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য
২৬ নভেম্বর ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য
২৬ নভেম্বর ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য
২৬ নভেম্বর ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সেবার ডিসেম্বরে বড্ড শীত পড়েছিল। সেই শীতের এক সন্ধ্যায় সিএসডিতে কাবাব খেতে গিয়ে দেখা কর্নেল গুলজার উদ্দিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণ আড্ডা, তারপর এ-কথা, সে-কথা। এক ফাঁকে বললেন, ‘ওস্তাদ, জ্যাকেট রেডি রাইখেন।’ গুলজারের এই কথার মানে আমি জানি, ‘ভয়ংকর কিছুর জন্য
২৬ নভেম্বর ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে