কামরুল হাসান

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দুই ভাই—সুমন ও সুজন। ২০০৩ সালের ১৪ মে ছিল সেই মামলার রায় ঘোষণার দিন। স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে আমরা আদালতপাড়ায়, বড় কাভারেজ হবে। সারা দিন দৌড়াদৌড়ির পর রাতে অফিস থেকে বেরোব, তখনই শুনি, মালিবাগে সানরাইজ হোটেলে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এবার সব মাটি।
মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরার দিকে যেতে ডান দিকে যেখানে এখন একটি ভবন উঠছে, সেখানে ছিল কাঁচাবাজার। বাজারের মুখে একটি চারতলা ভবনে সানরাইজ আবাসিক হোটেল। খুবই সাধারণ মানের সেই হোটেলে কোনো আবাসিক অতিথি থাকতেন বলে মনে হয়নি। তবে হোটেলটি আলোচনায় আসত পুলিশের অভিযানের কারণে। কিছুদিন পরপর পুলিশ সেই হোটেলে তল্লাশি চালাত আর খদ্দেরসহ একদল তরুণীকে ধরে নিয়ে যেত। সেই হোটেলে পুলিশ খুন হওয়ার কথা শুনে দৌড়ে গেলাম। দেখি, র্যাটের (পুলিশের তখনকার বিশেষ দল) ডিসি মাজহারুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোটেলটি ঘিরে। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ডিসি ছিলেন ফারুক আহমেদ। তিনিও ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ ও জিসান কিছুদিন ধরে এই হোটেলে অবস্থান করছিলেন বলে তাঁদের কাছে আগাম খবর ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে ডিবির ৩ নম্বর টিমের ১১ জন সদস্য হোটেলটিতে অভিযান চালান। হোটেলের দোতলায় ১৪ ও ২৬ নম্বর কক্ষ ছিল পাশাপাশি, দুই সন্ত্রাসী ওই দুটি কক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। ডিবির দলটি একসঙ্গে দুটি কক্ষের কড়া নাড়তেই দুই সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডিবির পরিদর্শক নুর আলম শিকদার ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশও অবশ্য গুলি ছুড়েছিল। সেই গুলিতে শাহাদত হোসেন উপল নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে সেই ঘটনার পর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের জিসান নামটি বেশ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় জিসানের নাম আসতেই থাকে।
র্যাব বাহিনী তখনো হয়নি। পুলিশের বিশেষ দল ছিল ‘র্যাট’ নামে। ডিএমপির ডিসি মাজহার ছিলেন এর নেতৃত্বে। সেই র্যাট জিসানকে ধরতে অভিযান শুরু করল, কিন্তু ধরতে পারল না। বন্ধু মোল্লা মাসুদের হাত ধরে জিসান চলে গেলেন কলকাতায়। পরে জিসানের এক আত্মীয়ের মুখে শুনতে পাই, কলকাতায় গিয়ে আলী আকবর চৌধুরী নাম নেন জিসান। সে নামেই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।
যত দূর শুনেছিলাম, কুমিল্লার ছেলে জিসানের জন্ম ১৯৭০ সালে, ঢাকার খিলগাঁওয়ে। এলাকায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে অস্ত্রবাজি ও খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় ঢাকায় কালা জাহাঙ্গীর গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ ছিল তীব্র। স্কুলশিক্ষিকা মায়ের সঙ্গে জিসান থাকতেন মগবাজারে। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তাঁর ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয়। তখন তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। ২০০৫ সালে দেশ ছাড়ার পর আর কোনো দিন দেশে আসেননি জিসান। তবে দেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঠিকই ছিল। ঢাকায় থাকার সময় ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। বিদেশে পালিয়ে থাকার সময় শামীম তাঁকে ব্যবহার করতে শুরু করেন। যেকোনো ঠিকাদারি কাজ বাগাতে জিসানকে কাজে লাগান শামীম। ২০১২ সালে টেন্ডারবাজি নিয়ে মগবাজারে তিনজনকে খুন করে জিসানের লোকেরা। ওই খুনের পর জি কে শামীমের বাসায় তল্লাশি করেছিল ডিবি।
খুনের ঘটনার পর শোনা গেল, রাজউক থেকে শুরু করে রেল ভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন অঞ্চলের দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে জিসানকে ব্যবহার করছিলেন শামীম। জিসানের হয়ে ফ্রিডম মানিক ও আইমান টিটু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে জি কে শামীমের। তখন খালেদের সঙ্গেও জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদের মাধ্যমে জি কে শামীম যুবলীগের একটি পদ পেয়ে জিসানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেন। নিজেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জিসানকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে জিসান ক্ষুব্ধ হন। এরপর জি কে শামীম ও খালেদকে হত্যার হুমকি দেন জিসান। সেই ভয়ে শামীম ও খালেদ দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। জিসানকে ধরিয়ে দিতে ঢাকায় পোস্টারও সাঁটান জি কে শামীম। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে একে-২২, গুলিসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিবি। সেই যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, জিসানের নির্দেশে খালেদ ও শামীমকে খুন করতে তিনি ঢাকায় আসেন।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জি কে শামীম ও খালেদ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন বলে র্যাবের এক কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, এত কিছুর পর সেই জিসানকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই কেন? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর আমিও জানি না।
একবার খবর পেলাম, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর দুবাই পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তায় জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর শুরু হলো তাঁকে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা। গ্রেপ্তার করার পর দেখা যায়, তাঁর হাতে ভারত ও ডমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এত দিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তারের ১০-১২ দিন পর জিসান জামিনে মুক্তি পান। এরপরই তাঁকে ফিরিয়ে আনার সব তৎপরতা ভেস্তে যায়। এখন শুনি, জিসান দুবাই বসে গাড়ি ও রেস্তোরাঁর ব্যবসা করছেন আর খাবার চিবোতে চিবোতে মরুভূমিতে বসে বেলে ড্যান্স দেখছেন।
আসলে ক্যাসিনো-কাণ্ডের পরই জিসানকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছিল। তখন অনেকেই বলছিলেন, সেই অভিযানের সঙ্গে দুবাইয়ে জিসানকে গ্রেপ্তারের নাকি যোগসূত্র ছিল। এবার তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জিসান এখনো বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব আলোচনা কেন হয়, আর কেনই-বা তা কার্যকর হয় না, তা বোধ হয় কারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে না। বলা যায়, সবই নিয়তির খেলা...।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দুই ভাই—সুমন ও সুজন। ২০০৩ সালের ১৪ মে ছিল সেই মামলার রায় ঘোষণার দিন। স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে আমরা আদালতপাড়ায়, বড় কাভারেজ হবে। সারা দিন দৌড়াদৌড়ির পর রাতে অফিস থেকে বেরোব, তখনই শুনি, মালিবাগে সানরাইজ হোটেলে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এবার সব মাটি।
মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরার দিকে যেতে ডান দিকে যেখানে এখন একটি ভবন উঠছে, সেখানে ছিল কাঁচাবাজার। বাজারের মুখে একটি চারতলা ভবনে সানরাইজ আবাসিক হোটেল। খুবই সাধারণ মানের সেই হোটেলে কোনো আবাসিক অতিথি থাকতেন বলে মনে হয়নি। তবে হোটেলটি আলোচনায় আসত পুলিশের অভিযানের কারণে। কিছুদিন পরপর পুলিশ সেই হোটেলে তল্লাশি চালাত আর খদ্দেরসহ একদল তরুণীকে ধরে নিয়ে যেত। সেই হোটেলে পুলিশ খুন হওয়ার কথা শুনে দৌড়ে গেলাম। দেখি, র্যাটের (পুলিশের তখনকার বিশেষ দল) ডিসি মাজহারুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোটেলটি ঘিরে। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ডিসি ছিলেন ফারুক আহমেদ। তিনিও ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ ও জিসান কিছুদিন ধরে এই হোটেলে অবস্থান করছিলেন বলে তাঁদের কাছে আগাম খবর ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে ডিবির ৩ নম্বর টিমের ১১ জন সদস্য হোটেলটিতে অভিযান চালান। হোটেলের দোতলায় ১৪ ও ২৬ নম্বর কক্ষ ছিল পাশাপাশি, দুই সন্ত্রাসী ওই দুটি কক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। ডিবির দলটি একসঙ্গে দুটি কক্ষের কড়া নাড়তেই দুই সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডিবির পরিদর্শক নুর আলম শিকদার ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশও অবশ্য গুলি ছুড়েছিল। সেই গুলিতে শাহাদত হোসেন উপল নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে সেই ঘটনার পর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের জিসান নামটি বেশ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় জিসানের নাম আসতেই থাকে।
র্যাব বাহিনী তখনো হয়নি। পুলিশের বিশেষ দল ছিল ‘র্যাট’ নামে। ডিএমপির ডিসি মাজহার ছিলেন এর নেতৃত্বে। সেই র্যাট জিসানকে ধরতে অভিযান শুরু করল, কিন্তু ধরতে পারল না। বন্ধু মোল্লা মাসুদের হাত ধরে জিসান চলে গেলেন কলকাতায়। পরে জিসানের এক আত্মীয়ের মুখে শুনতে পাই, কলকাতায় গিয়ে আলী আকবর চৌধুরী নাম নেন জিসান। সে নামেই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।
যত দূর শুনেছিলাম, কুমিল্লার ছেলে জিসানের জন্ম ১৯৭০ সালে, ঢাকার খিলগাঁওয়ে। এলাকায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে অস্ত্রবাজি ও খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় ঢাকায় কালা জাহাঙ্গীর গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ ছিল তীব্র। স্কুলশিক্ষিকা মায়ের সঙ্গে জিসান থাকতেন মগবাজারে। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তাঁর ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয়। তখন তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। ২০০৫ সালে দেশ ছাড়ার পর আর কোনো দিন দেশে আসেননি জিসান। তবে দেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঠিকই ছিল। ঢাকায় থাকার সময় ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। বিদেশে পালিয়ে থাকার সময় শামীম তাঁকে ব্যবহার করতে শুরু করেন। যেকোনো ঠিকাদারি কাজ বাগাতে জিসানকে কাজে লাগান শামীম। ২০১২ সালে টেন্ডারবাজি নিয়ে মগবাজারে তিনজনকে খুন করে জিসানের লোকেরা। ওই খুনের পর জি কে শামীমের বাসায় তল্লাশি করেছিল ডিবি।
খুনের ঘটনার পর শোনা গেল, রাজউক থেকে শুরু করে রেল ভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন অঞ্চলের দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে জিসানকে ব্যবহার করছিলেন শামীম। জিসানের হয়ে ফ্রিডম মানিক ও আইমান টিটু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে জি কে শামীমের। তখন খালেদের সঙ্গেও জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদের মাধ্যমে জি কে শামীম যুবলীগের একটি পদ পেয়ে জিসানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেন। নিজেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জিসানকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে জিসান ক্ষুব্ধ হন। এরপর জি কে শামীম ও খালেদকে হত্যার হুমকি দেন জিসান। সেই ভয়ে শামীম ও খালেদ দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। জিসানকে ধরিয়ে দিতে ঢাকায় পোস্টারও সাঁটান জি কে শামীম। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে একে-২২, গুলিসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিবি। সেই যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, জিসানের নির্দেশে খালেদ ও শামীমকে খুন করতে তিনি ঢাকায় আসেন।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জি কে শামীম ও খালেদ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন বলে র্যাবের এক কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, এত কিছুর পর সেই জিসানকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই কেন? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর আমিও জানি না।
একবার খবর পেলাম, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর দুবাই পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তায় জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর শুরু হলো তাঁকে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা। গ্রেপ্তার করার পর দেখা যায়, তাঁর হাতে ভারত ও ডমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এত দিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তারের ১০-১২ দিন পর জিসান জামিনে মুক্তি পান। এরপরই তাঁকে ফিরিয়ে আনার সব তৎপরতা ভেস্তে যায়। এখন শুনি, জিসান দুবাই বসে গাড়ি ও রেস্তোরাঁর ব্যবসা করছেন আর খাবার চিবোতে চিবোতে মরুভূমিতে বসে বেলে ড্যান্স দেখছেন।
আসলে ক্যাসিনো-কাণ্ডের পরই জিসানকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছিল। তখন অনেকেই বলছিলেন, সেই অভিযানের সঙ্গে দুবাইয়ে জিসানকে গ্রেপ্তারের নাকি যোগসূত্র ছিল। এবার তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জিসান এখনো বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব আলোচনা কেন হয়, আর কেনই-বা তা কার্যকর হয় না, তা বোধ হয় কারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে না। বলা যায়, সবই নিয়তির খেলা...।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দুই ভাই—সুমন ও সুজন। ২০০৩ সালের ১৪ মে ছিল সেই মামলার রায় ঘোষণার দিন। স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে আমরা আদালতপাড়ায়, বড় কাভারেজ হবে। সারা দিন দৌড়াদৌড়ির পর রাতে অফিস থেকে বেরোব, তখনই শুনি, মালিবাগে সানরাইজ হোটেলে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এবার সব মাটি।
মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরার দিকে যেতে ডান দিকে যেখানে এখন একটি ভবন উঠছে, সেখানে ছিল কাঁচাবাজার। বাজারের মুখে একটি চারতলা ভবনে সানরাইজ আবাসিক হোটেল। খুবই সাধারণ মানের সেই হোটেলে কোনো আবাসিক অতিথি থাকতেন বলে মনে হয়নি। তবে হোটেলটি আলোচনায় আসত পুলিশের অভিযানের কারণে। কিছুদিন পরপর পুলিশ সেই হোটেলে তল্লাশি চালাত আর খদ্দেরসহ একদল তরুণীকে ধরে নিয়ে যেত। সেই হোটেলে পুলিশ খুন হওয়ার কথা শুনে দৌড়ে গেলাম। দেখি, র্যাটের (পুলিশের তখনকার বিশেষ দল) ডিসি মাজহারুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোটেলটি ঘিরে। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ডিসি ছিলেন ফারুক আহমেদ। তিনিও ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ ও জিসান কিছুদিন ধরে এই হোটেলে অবস্থান করছিলেন বলে তাঁদের কাছে আগাম খবর ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে ডিবির ৩ নম্বর টিমের ১১ জন সদস্য হোটেলটিতে অভিযান চালান। হোটেলের দোতলায় ১৪ ও ২৬ নম্বর কক্ষ ছিল পাশাপাশি, দুই সন্ত্রাসী ওই দুটি কক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। ডিবির দলটি একসঙ্গে দুটি কক্ষের কড়া নাড়তেই দুই সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডিবির পরিদর্শক নুর আলম শিকদার ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশও অবশ্য গুলি ছুড়েছিল। সেই গুলিতে শাহাদত হোসেন উপল নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে সেই ঘটনার পর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের জিসান নামটি বেশ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় জিসানের নাম আসতেই থাকে।
র্যাব বাহিনী তখনো হয়নি। পুলিশের বিশেষ দল ছিল ‘র্যাট’ নামে। ডিএমপির ডিসি মাজহার ছিলেন এর নেতৃত্বে। সেই র্যাট জিসানকে ধরতে অভিযান শুরু করল, কিন্তু ধরতে পারল না। বন্ধু মোল্লা মাসুদের হাত ধরে জিসান চলে গেলেন কলকাতায়। পরে জিসানের এক আত্মীয়ের মুখে শুনতে পাই, কলকাতায় গিয়ে আলী আকবর চৌধুরী নাম নেন জিসান। সে নামেই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।
যত দূর শুনেছিলাম, কুমিল্লার ছেলে জিসানের জন্ম ১৯৭০ সালে, ঢাকার খিলগাঁওয়ে। এলাকায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে অস্ত্রবাজি ও খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় ঢাকায় কালা জাহাঙ্গীর গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ ছিল তীব্র। স্কুলশিক্ষিকা মায়ের সঙ্গে জিসান থাকতেন মগবাজারে। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তাঁর ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয়। তখন তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। ২০০৫ সালে দেশ ছাড়ার পর আর কোনো দিন দেশে আসেননি জিসান। তবে দেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঠিকই ছিল। ঢাকায় থাকার সময় ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। বিদেশে পালিয়ে থাকার সময় শামীম তাঁকে ব্যবহার করতে শুরু করেন। যেকোনো ঠিকাদারি কাজ বাগাতে জিসানকে কাজে লাগান শামীম। ২০১২ সালে টেন্ডারবাজি নিয়ে মগবাজারে তিনজনকে খুন করে জিসানের লোকেরা। ওই খুনের পর জি কে শামীমের বাসায় তল্লাশি করেছিল ডিবি।
খুনের ঘটনার পর শোনা গেল, রাজউক থেকে শুরু করে রেল ভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন অঞ্চলের দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে জিসানকে ব্যবহার করছিলেন শামীম। জিসানের হয়ে ফ্রিডম মানিক ও আইমান টিটু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে জি কে শামীমের। তখন খালেদের সঙ্গেও জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদের মাধ্যমে জি কে শামীম যুবলীগের একটি পদ পেয়ে জিসানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেন। নিজেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জিসানকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে জিসান ক্ষুব্ধ হন। এরপর জি কে শামীম ও খালেদকে হত্যার হুমকি দেন জিসান। সেই ভয়ে শামীম ও খালেদ দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। জিসানকে ধরিয়ে দিতে ঢাকায় পোস্টারও সাঁটান জি কে শামীম। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে একে-২২, গুলিসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিবি। সেই যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, জিসানের নির্দেশে খালেদ ও শামীমকে খুন করতে তিনি ঢাকায় আসেন।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জি কে শামীম ও খালেদ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন বলে র্যাবের এক কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, এত কিছুর পর সেই জিসানকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই কেন? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর আমিও জানি না।
একবার খবর পেলাম, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর দুবাই পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তায় জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর শুরু হলো তাঁকে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা। গ্রেপ্তার করার পর দেখা যায়, তাঁর হাতে ভারত ও ডমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এত দিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তারের ১০-১২ দিন পর জিসান জামিনে মুক্তি পান। এরপরই তাঁকে ফিরিয়ে আনার সব তৎপরতা ভেস্তে যায়। এখন শুনি, জিসান দুবাই বসে গাড়ি ও রেস্তোরাঁর ব্যবসা করছেন আর খাবার চিবোতে চিবোতে মরুভূমিতে বসে বেলে ড্যান্স দেখছেন।
আসলে ক্যাসিনো-কাণ্ডের পরই জিসানকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছিল। তখন অনেকেই বলছিলেন, সেই অভিযানের সঙ্গে দুবাইয়ে জিসানকে গ্রেপ্তারের নাকি যোগসূত্র ছিল। এবার তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জিসান এখনো বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব আলোচনা কেন হয়, আর কেনই-বা তা কার্যকর হয় না, তা বোধ হয় কারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে না। বলা যায়, সবই নিয়তির খেলা...।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দুই ভাই—সুমন ও সুজন। ২০০৩ সালের ১৪ মে ছিল সেই মামলার রায় ঘোষণার দিন। স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে আমরা আদালতপাড়ায়, বড় কাভারেজ হবে। সারা দিন দৌড়াদৌড়ির পর রাতে অফিস থেকে বেরোব, তখনই শুনি, মালিবাগে সানরাইজ হোটেলে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এবার সব মাটি।
মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরার দিকে যেতে ডান দিকে যেখানে এখন একটি ভবন উঠছে, সেখানে ছিল কাঁচাবাজার। বাজারের মুখে একটি চারতলা ভবনে সানরাইজ আবাসিক হোটেল। খুবই সাধারণ মানের সেই হোটেলে কোনো আবাসিক অতিথি থাকতেন বলে মনে হয়নি। তবে হোটেলটি আলোচনায় আসত পুলিশের অভিযানের কারণে। কিছুদিন পরপর পুলিশ সেই হোটেলে তল্লাশি চালাত আর খদ্দেরসহ একদল তরুণীকে ধরে নিয়ে যেত। সেই হোটেলে পুলিশ খুন হওয়ার কথা শুনে দৌড়ে গেলাম। দেখি, র্যাটের (পুলিশের তখনকার বিশেষ দল) ডিসি মাজহারুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোটেলটি ঘিরে। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ডিসি ছিলেন ফারুক আহমেদ। তিনিও ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ ও জিসান কিছুদিন ধরে এই হোটেলে অবস্থান করছিলেন বলে তাঁদের কাছে আগাম খবর ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে ডিবির ৩ নম্বর টিমের ১১ জন সদস্য হোটেলটিতে অভিযান চালান। হোটেলের দোতলায় ১৪ ও ২৬ নম্বর কক্ষ ছিল পাশাপাশি, দুই সন্ত্রাসী ওই দুটি কক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। ডিবির দলটি একসঙ্গে দুটি কক্ষের কড়া নাড়তেই দুই সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডিবির পরিদর্শক নুর আলম শিকদার ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশও অবশ্য গুলি ছুড়েছিল। সেই গুলিতে শাহাদত হোসেন উপল নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে সেই ঘটনার পর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের জিসান নামটি বেশ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় জিসানের নাম আসতেই থাকে।
র্যাব বাহিনী তখনো হয়নি। পুলিশের বিশেষ দল ছিল ‘র্যাট’ নামে। ডিএমপির ডিসি মাজহার ছিলেন এর নেতৃত্বে। সেই র্যাট জিসানকে ধরতে অভিযান শুরু করল, কিন্তু ধরতে পারল না। বন্ধু মোল্লা মাসুদের হাত ধরে জিসান চলে গেলেন কলকাতায়। পরে জিসানের এক আত্মীয়ের মুখে শুনতে পাই, কলকাতায় গিয়ে আলী আকবর চৌধুরী নাম নেন জিসান। সে নামেই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।
যত দূর শুনেছিলাম, কুমিল্লার ছেলে জিসানের জন্ম ১৯৭০ সালে, ঢাকার খিলগাঁওয়ে। এলাকায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে অস্ত্রবাজি ও খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় ঢাকায় কালা জাহাঙ্গীর গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ ছিল তীব্র। স্কুলশিক্ষিকা মায়ের সঙ্গে জিসান থাকতেন মগবাজারে। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তাঁর ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয়। তখন তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। ২০০৫ সালে দেশ ছাড়ার পর আর কোনো দিন দেশে আসেননি জিসান। তবে দেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঠিকই ছিল। ঢাকায় থাকার সময় ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। বিদেশে পালিয়ে থাকার সময় শামীম তাঁকে ব্যবহার করতে শুরু করেন। যেকোনো ঠিকাদারি কাজ বাগাতে জিসানকে কাজে লাগান শামীম। ২০১২ সালে টেন্ডারবাজি নিয়ে মগবাজারে তিনজনকে খুন করে জিসানের লোকেরা। ওই খুনের পর জি কে শামীমের বাসায় তল্লাশি করেছিল ডিবি।
খুনের ঘটনার পর শোনা গেল, রাজউক থেকে শুরু করে রেল ভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন অঞ্চলের দরপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে জিসানকে ব্যবহার করছিলেন শামীম। জিসানের হয়ে ফ্রিডম মানিক ও আইমান টিটু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে জি কে শামীমের। তখন খালেদের সঙ্গেও জিসানের ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদের মাধ্যমে জি কে শামীম যুবলীগের একটি পদ পেয়ে জিসানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেন। নিজেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জিসানকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে জিসান ক্ষুব্ধ হন। এরপর জি কে শামীম ও খালেদকে হত্যার হুমকি দেন জিসান। সেই ভয়ে শামীম ও খালেদ দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। জিসানকে ধরিয়ে দিতে ঢাকায় পোস্টারও সাঁটান জি কে শামীম। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে একে-২২, গুলিসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিবি। সেই যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, জিসানের নির্দেশে খালেদ ও শামীমকে খুন করতে তিনি ঢাকায় আসেন।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জি কে শামীম ও খালেদ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন বলে র্যাবের এক কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, এত কিছুর পর সেই জিসানকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই কেন? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর আমিও জানি না।
একবার খবর পেলাম, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর দুবাই পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তায় জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর শুরু হলো তাঁকে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা। গ্রেপ্তার করার পর দেখা যায়, তাঁর হাতে ভারত ও ডমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এত দিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তারের ১০-১২ দিন পর জিসান জামিনে মুক্তি পান। এরপরই তাঁকে ফিরিয়ে আনার সব তৎপরতা ভেস্তে যায়। এখন শুনি, জিসান দুবাই বসে গাড়ি ও রেস্তোরাঁর ব্যবসা করছেন আর খাবার চিবোতে চিবোতে মরুভূমিতে বসে বেলে ড্যান্স দেখছেন।
আসলে ক্যাসিনো-কাণ্ডের পরই জিসানকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছিল। তখন অনেকেই বলছিলেন, সেই অভিযানের সঙ্গে দুবাইয়ে জিসানকে গ্রেপ্তারের নাকি যোগসূত্র ছিল। এবার তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জিসান এখনো বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব আলোচনা কেন হয়, আর কেনই-বা তা কার্যকর হয় না, তা বোধ হয় কারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে না। বলা যায়, সবই নিয়তির খেলা...।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
২৪ জুন ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
২৪ জুন ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
২৪ জুন ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়ায় ২০০০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি জোড়া খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়েছিল। মহসিন ও সায়েম নামের দুই যুবককে অপহরণের পর পেশাদার কসাই দিয়ে তাঁদের লাশ ১২ টুকরা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
২৪ জুন ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে