কামরুল হাসান
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১২ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
১৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৬ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
১৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৬ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১২ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৬ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের স্ত্রী তাসলিমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক কলহ চলছিল। নজরুলের ধারণা ছিল, তাঁর স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। পাশাপাশি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও করতেন তিনি। এসব সন্দেহ থেকেই তাসলিমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন নজরুল।
গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে লাশ বেঁধে বিছানার চাদর ও ওড়না মুড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। আলামত গোপনের জন্য রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে ধুয়ে ফেলেন এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন।
পরদিন সকালে সন্তানদের জানান, তাদের মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। বড় সন্তান দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। এরপর নজরুল দুই সন্তানকে নানার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে রাজধানীর আদাবরে ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান।
তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন জানান, বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি সন্তানদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজ খুললে মাছ-মাংসের নিচে কাপড়ে মোড়ানো তাসলিমার লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে।
বৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের স্ত্রী তাসলিমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক কলহ চলছিল। নজরুলের ধারণা ছিল, তাঁর স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। পাশাপাশি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও করতেন তিনি। এসব সন্দেহ থেকেই তাসলিমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন নজরুল।
গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে লাশ বেঁধে বিছানার চাদর ও ওড়না মুড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। আলামত গোপনের জন্য রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে ধুয়ে ফেলেন এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন।
পরদিন সকালে সন্তানদের জানান, তাদের মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। বড় সন্তান দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। এরপর নজরুল দুই সন্তানকে নানার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে রাজধানীর আদাবরে ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান।
তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন জানান, বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি সন্তানদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজ খুললে মাছ-মাংসের নিচে কাপড়ে মোড়ানো তাসলিমার লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে।
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১২ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
১৬ ঘণ্টা আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে আবার মামলা করেন তিনি। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অপমৃত্যু ও হত্যার মামলার একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বারবার তদন্তে তাঁর মৃত্যুকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে আবার মামলা করেন তিনি। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অপমৃত্যু ও হত্যার মামলার একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বারবার তদন্তে তাঁর মৃত্যুকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১২ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
১৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৬ দিন আগে