কামরুল হাসান

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মাওয়ার দিকে যেতে প্রথম যে টোল সড়ক, সেটাই ভাওয়ার ভিটা। এখন নাম আবদুল্লাহপুর। থানার হিসাবে পড়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। সেখানেই গাড়িটি ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। বাঙালির চেতনার মতো কেরানীগঞ্জ থানাও তখন অবিভক্ত। সেই থানা থেকে পুলিশ আসতে রাত গভীর হয়ে যায়। তল্লাশি শুরু হয় রাত দেড়টা নাগাদ। গাড়ির ট্রাংক স্পেস, চলতি ভাষায় যার নাম ব্যাকডালা, সেখানেই পাওয়া গেল হাত-পা বাঁধা এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। গাড়ির ভেতরে মদের বোতল আর কিছু কাগজপত্র ছড়ানো। চাবিও ঝুলছে লকের সঙ্গে।
মৃতদেহের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ, তাতে কিছু ভিজিটিং কার্ড। নাম লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টি। ভিজিটিং কার্ড পেয়ে গরম হয়ে ওঠে পুলিশের ওয়াকিটকি। খোঁজখবর শুরু হয়। রাত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ভূঁইয়া। ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গা থেকে জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এলাকায় যাঁর পরিচিতি কালা ফারুক হিসেবে। ঢাকার ওপর মহলে তিনি তখন প্লেবয়। রাতভর পার্টিতে মত্ত থাকেন, তাঁর মাতাল হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার খবর পুলিশের নখদর্পণে।
লাশ উদ্ধারের খবর ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়। সকাল হতে না হতেই ক্রাইম রিপোর্টাররা তৎপর হয়ে ওঠেন। সকালে অফিসের নিয়মিত মিটিং বাদ দিয়ে দৌড় দিই কেরানীগঞ্জে। বাইক চালিয়ে থানায় পৌঁছে শুনি, মৃতদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটা ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাইয়ের সকাল।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তখন মোহাম্মদ হানিফ, পরে তিনি অনেক দিন এসবিতে ছিলেন। তিনি আমার পরিচিত। ওসির সঙ্গে পরিচয় থাকলে ভালো কাজ দেয়। রাত থেকে তিনি যা যা জেনেছেন, সবই বললেন। ওসির কক্ষে তাঁর পাশে বসা এক যুবককে দেখিয়ে বললেন, ইনি ভিকটিমের ভাই। নাম জানতে চাইলে সেই যুবক বললেন, আবদুল কাদের মুরাদ। তিনি কালা ফারুকের ছোট ভাই। কথা বলে মনে হলো, ভাইয়ের ওপর মহাবিরক্ত। ভালো করে কোনো কিছুই বলতে চান না। বললেন, তাঁদের আদিবাস ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদি গ্রামে। পিতার নাম আবদুর রব ভূঁইয়া। তাঁর বাবা এলাকায় ‘এ আর ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। বাবা অগ্রণী ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে কালা ফারুক সবার বড়। মুরাদ তাঁর নিহত ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে কিছুই বলতে চান না। শুধু বললেন, কালা ফারুকের পরিবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় থাকেন।
দুপুরের আগেই খুঁজে পেলাম এলিফ্যান্ট রোডে কালা ফারুকের বাসা। বাসায় ঢুকে মনে হলো খুব নীরব। কিন্তু পরিবারে শোকের কোনো আবহ নেই। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মুখ ঢাকা এক নারী এগিয়ে এলেন। তাঁর নাম পপি, মনোয়ারা ভূঁইয়া পপি। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি কালা ফারুকের স্ত্রী। তবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। দেড় বছর ধরে কালা ফারুক আলাদা থাকেন। কোথায় থাকেন তা তিনি জানেন না। তিন ছেলে নিয়ে তিনি এই বাসায় থাকেন। কালা ফারুক বাসায় না এলেও সংসার চালানোর খরচ দেন। স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কারণ বললেন ফারুকের বেপরোয়া চলাফেরা। বললেন, অনেক মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের কথা তিনি জানেন। তাঁর ধারণা, এসব নিয়েই তিনি খুন হয়েছেন। অনেক অনুরোধের পরও তিনি কারও নাম বললেন না। তাঁর পাশে থাকা এক যুবক এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বললেন, মডেল ফ্লোরাকে ধরেন, তিনি সব জানেন।
খুনের সঙ্গে মডেলের নাম শুনেই গল্প জমে গেল। এলিফ্যান্ট রোড থেকে বাইক চালিয়ে এলাম ডিবির পিআর শাখায় (জনসংযোগ শাখা)। পিআর শাখা তখন ছিল ডিবি কার্যালয়ের ভেতরের পুকুরপাড়ে, টিনসেডে। পিআরের ফোন থেকে ফোন দিলাম কেরানীগঞ্জের ওসি মোহাম্মদ হানিফকে। ফ্লোরার কথা তাঁকে বলতেই বললেন, লাশ যে গাড়িতে ছিল, তার মালিকও ফ্লোরা, পুরো নাম নাসরিন আক্তার ফ্লোরা। পিতার নাম ফরহাদ হোসেন। ঢাকা জজকোর্টের কর্মচারী।
ফ্লোরার তখন খুব নামডাক, চিনতে দেরি হলো না। জাম্প কেডস আর সাইফেং ফ্যানের টিভি বিজ্ঞাপনের সুবাদে তিনি সবার পরিচিত। ঈদে একটি নাটকও করেছেন। শোনা যেত, ফ্লাইং ক্লাবেও তাঁর বেশ যাতায়াত। তবে এটা মনে আছে, এ ঘটনার কিছুদিন আগে আজিমপুরে একটি বাড়ির ছাদে মদ্যপ বন্ধুদের নিয়ে হইচই করার সময় প্রতিবেশীরা ফ্লোরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে কালা ফারুক তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। জনকণ্ঠে এ নিয়ে রিপোর্ট হয়েছিল।
ঢাকা জেলার তখন পুলিশ সুপার ছিলেন ফররুখ আহমেদ। পরে তিনি সিআইডির ডিআইজি হয়েছিলেন। খুনের ব্যাপারে তিনি আমাদের প্রতিদিন ব্রিফ করতেন। যা কিছু খুঁটিনাটি পাওয়া যেত, তাই নিয়ে রোজই ফলোআপ করতাম। তারপরও অফিস থেকে তাড়া থাকত ভালো কিছু করার।
কালা ফারুকের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর, ১২ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার এসপি বললেন, ফ্লোরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফ্লোরা স্বীকার করেছেন, কালা ফারুকের সঙ্গে তিনি দেড় বছর ধরে ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। কিন্তু খুনের কথা তিনি জানেন না। পুলিশকে বলেছেন, ফরিদপুরে যাওয়ার কথা বলে ফারুক তাঁর গাড়ি নিয়েছিল দুই দিন আগে। গাড়িটি কাঁটাবনের একটি গ্যারেজে ছিল। সেই গাড়িতে কী করে লাশ রাখা হলো, তা তিনি জানেন না। তবে ফ্লোরা পুলিশকে বলেছেন, ঊর্মি ও স্নিগ্ধা নামের আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কালা ফারুক। খুনের সঙ্গে এদের হাত থাকতে পারে।
ফ্লোরার এটুকু বক্তব্য পেয়েই খবরের কাগজ গরম হয়ে ওঠে। ঢাকায় তখন সিনে ম্যাগাজিন ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর রমরমা বাজার। তারাও মেতে উঠল ফ্লোরাকে নিয়ে। প্রায় সব সাপ্তাহিক পত্রিকার কাভার স্টোরি হলো ফ্লোরাকে নিয়ে। আমাদের ওপর চাপ বাড়ছেই। প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে হবে। অপরাধ রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে শিখেছিলাম, একটি ঘটনাকে কীভাবে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে হয়। তারপর অপরাধের মৌলিক উপাদানগুলো সেই ঘটনার ভেতর থেকে টেনে বের করে আনলেই একটি গল্প দাঁড়িয়ে যায়। সেই বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে বাঁচলাম।
দিন দশেক পরে পুলিশ মোস্তফা নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে এল খুনের রহস্য। ফ্লোরাকে মুখোমুখি করা হলো। পুলিশের কাছে তিনি সব কথা স্বীকার করলেন।
পুলিশ সুপার আমাদের জানালেন, কালা ফারুক খুন হয়েছেন ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে, থানা লাগোয়া বাড়িতে। ধানমন্ডি থানা তখন ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ছিল। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আজম ছিলেন কালা ফারুকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালা ফারুকের সঙ্গে ওঠাবসা করতে গিয়ে ফ্লোরার সঙ্গে তিনিও বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে যান। এ নিয়ে কালা ফারুকের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। অন্যদিকে আরও দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর ফ্লোরাও কালা ফারুকের হাত থেকে নিষ্কৃতি চান। দুজনের স্বার্থ মিলে যায়। ৬ জুলাই রাতে এ নিয়ে কথাকাটাকাটির পর দুই ফারুকের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ফ্লোরা ও ফারুক আজম মিলে মদের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দিয়ে কালা ফারুককে অজ্ঞান করে মেরে ফেলেন। এসপি বললেন, ফারুক আজমের পরামর্শেই ফ্লোরার গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হয়। ফ্লোরা প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু ফারুক আজম তাঁকে বোঝান, এতে পুলিশ একদম সন্দেহ করবে না। রাজি হয়ে যান ফ্লোরা। ফারুক আজম নিজে গাড়ি চালিয়ে কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে গিয়ে মৃতদেহসহ গাড়িটি রেখে আসেন।
গ্রেপ্তার করা ফ্লোরাকে আদালতে পাঠানো হয়। ফ্লোরার বাবা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ঢাকা জেলা জজকোর্টের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কান্নাকাটি করেন মেয়েকে রিমান্ডে না দেওয়ার। আদালত তাঁকে রিমান্ডে না দিয়ে কারাগারে পাঠান। এরপর পুলিশ কালা ফারুকের মামলা নিয়ে আরও কয়েকজন আসামি ধরে। অভিযোগপত্র দেয়। বিচারও চলতে থাকে। আমরা ভুলে যাই হত্যাকাণ্ডের কথা।
এবারের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কালা ফারুকের কথা মনে পড়ে গেল। ফোন নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলাম ভাঙ্গায় পরিচিতিজনদের কাছে। তাঁরা বললেন, এই হত্যাকাণ্ডের পর কালা ফারুকের স্ত্রী পপি তাঁর চাচাতো দেবরকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তিনি ভাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এখন তিন সন্তান নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
খোঁজ নিচ্ছিলাম, সেই খুনের মামলার কী হলো? আমার প্রশ্ন শুনে কালা ফারুকের ছোট ভাই টিপু ভূঁইয়া বললেন, সেই মামলায় কারও সাজা হয়েছে এমন খবর তিনি জানেন না। তিনি জানেন, মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আর বিচারের বাণী কাঁদতে কাঁদতে বোবা হয়ে গেছে।
টিপু ভূঁইয়ার ফোন রাখতে রাখতে মনে পড়ে গেল ২৪ বছর আগের কথা। কত প্রভাবই না ছিল এই লোকটার। এরশাদের পতনের পর রাজনীতি ছেড়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চরম বেপরোয়া। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। থানায় অভিযোগ আসত, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরত না। অনেকের চোখে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন কালা ফারুক। অথচ সেই ক্ষমতাধর লোকটি কাদার মধ্যে তলিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য কেউ সাহায্যের হাতটিও বাড়ালেন না। বিধির বিধান বোধ হয় এভাবেই লেখা হয়।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সারা দিন ধরে গাড়িটি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। পড়ে আছে মানে, এক পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পুরোনো টয়োটা সিডান। পথচারী যাঁরা দেখছেন, ভাবছেন, চালক হয়তো আশপাশে কোথাও আছেন। এভাবে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যায়, রাত আসে। দখিনা বাতাসে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। সন্দেহ হয়, গাড়িটিই গন্ধের উৎস। শোরগোল পড়ে, গাড়িতে কেউ খুন হয়ে
১২ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে