কামরুল হাসান

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে। অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই খবর এল, মোহাম্মদপুরে ওয়ার্ড কমিশনারসহ জোড়া খুন হয়েছে। এই খুনের দুই দিন আগে আরও একজন কমিশনার খুন হন। সেই জ্বালায় মরছিলাম, আবার নতুন খুন। একেকটা আলোচিত খুন মানেই সাত দিনের সুখ হারাম।
যা হোক, রাজ্যের বিরক্তি মাথায় নিয়ে গেলাম অকুস্থলে, মোহাম্মদপুর টাউন হলে। আসাদগেট থেকে যে সড়কটি টাউন হল হয়ে পশ্চিমে বছিলার দিকে চলে গেছে, তার নাম আসাদ অ্যাভিনিউ। মোহাম্মদপুরের ভেতর থেকে আসা রাজা-রানিদের নামে রাখা অলিগলিগুলো এই সড়কের সঙ্গে মিশে গেছে। তার একটি শেরশাহ সুরি রোড। এই দুই সড়ক যেখানে সংযুক্ত, তার কাছেই অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যালয় ছিল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার এ কে এম আহমেদ রাজু এবং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ।
আমি পৌঁছে শুনি, সানাউল্লাহ মারা গেছেন, কিন্তু রাজু তখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।মোহাম্মদপুর তখন উত্তপ্ত, রাজুর সমর্থকেরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়েছে।
রাজুর সঙ্গে আমার দুবার দেখা হয়েছিল। শেষবার সাক্ষাতের সময় বন্ধু সাংবাদিক লিটন হায়দারও সঙ্গে ছিলেন। রাজু যেখানেই যেতেন, সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্যও থাকতেন। প্রতি পালায় ৩ জন করে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্য দিনে-রাতে তাঁকে পাহারা দিয়ে রাখতেন। রাজুর এই পাহারা শুরু হয়েছিল মিরপুরের ওয়ার্ড কমিশনার নিউটন খুন হওয়ার পর। এ ঘটনার কয়েক মাস (২০০২ সালের ১০ মে) আগে বিএনপির এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ভগ্নিপতি নিউটন খুন হন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সব ওয়ার্ড কমিশনার তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাখতে পারবেন। শুরু হয় পুলিশি পাহারা নিয়ে সন্ত্রাসী ওয়ার্ড কমিশনারদের অবাধ চলাফেরা।
কমিশনারদের সন্ত্রাসী বলছি এ কারণে যে নিহত রাজুও ছিলেন ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ প্রবাদটির উল্টো দিকের মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা ছিল। ’৯৯ সালে তিনি অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়ে অনেক দিন জেলে ছিলেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকায় ১৮ জন প্রার্থীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, রাজু ছিলেন তাঁদের সামনের সারিতে।
আমরা দেখেছি, রাজু যখন কমিশনার অফিসে বসে থাকতেন, তখনো পুলিশ তাঁর পাশে থাকত। সেই রাজু কীভাবে খুন হলেন? উপস্থিত লোকেরা বললেন, অফিস থেকে তিনি যখন বের হচ্ছিলেন, তখনই এক যুবক খুব কাছে এসে পরপর চারটি গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দৌড়ে তিনি পাশে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেই সন্ত্রাসীর গুলি সানাউল্লাহর গায়েও লাগে। এ ঘটনার সময় রাজুর প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
মোহাম্মদপুরের অনেক বাসিন্দা আমাকে বলেছিলেন, রাজুর ওপর হামলার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক ছিল। তাঁর সঙ্গে অনেকের বিরোধ। সেই বিরোধ আরও বাড়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর। এলাকার আরেক ওয়ার্ড কমিশনার মতিন তাঁকে সামাল দিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। তবে কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীর ছেলের সঙ্গে জমি দখল নিয়ে রাজুর বিরোধ ছিল।
মনে আছে, সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, তাদের সন্দেহ, রাজুকে খুন করেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছাত্রদলের নেতা পিচ্চি হেলাল। এর কারণও ছিল, মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। কিন্তু ভোটে পাস করার পর রাজু সেই নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন। এতেই শেষ হয়নি। হেলালকে জেলে পাঠান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হেলাল তাঁর কিলার এনা ও তপুকে দিয়ে রাজুকে খুন করান। রাজু যখন খুন হন, হেলাল তখন হাসপাতালের কারাকক্ষে ছিলেন। আরেকটা কথা বলি, রাজুর লাশ দেখতে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
রাজু খুনের পর ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সব ওয়ার্ড কমিশনার পুলিশি পাহারায় চলাফেরা করতে শুরু করেন। এর আরেকটি কারণ ছিল, রাজু খুনের মাত্র ৪৪ ঘণ্টা আগে উত্তরা সড়কে খুন হয়েছিলেন পোস্তগোলার ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদত শিকদার। তাঁকে খুন করেছিলেন বলে সংবাদপত্র অফিসে ফোন করে দাবি করেছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
কমিশনারদের সেই আতঙ্ক কমাতে ৪ অক্টোবর নগর ভবনে বৈঠক ডাকেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। সেই বৈঠকে কমিশনাররা দাবি করেন, ঢাকা অচল করার কর্মসূচি দিতে হবে। তাঁরা সামরিক অভিযানও চান। সে সময় সাদেক হোসেন খোকা বলেন, পুলিশের যোগসাজশেই সন্ত্রাসীরা খুন করছে। আমিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। আমার মনে আছে, খোকা বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসীরা খুন করছে আর পুলিশ ঘুমাচ্ছে।’ সেই বৈঠকে ওয়ার্ড কমিশনাররা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সাদেক হোসেন খোকা অনেক অনুনয় করেও সবাইকে সামাল দিতে পারছিলেন না।
শুধু খোকা নন, বিএনপি সরকারও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিল না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট তখন ক্ষমতায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপের দিকে যাচ্ছে। মানুষের মনে আতঙ্ক, উদ্বেগ, ক্ষোভ আর হতাশা।
বিএনপির আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ তাঁর বই ‘বাংলাদেশ: আ স্টাডি অব দ্য ডেমোক্রেটিক রেজিমস’-এ লিখেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া পুলিশ বাহিনী পরিবর্তন করে বিএনপি তাদের অনুগতদের দিয়ে পূর্ণ করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।’ একই সঙ্গে বিএনপি সরকার মনে করেছিল, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা পুলিশকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে সারা দেশে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর আগে পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। সেনাসদস্যরা রাস্তায় নামার পরই পুলিশ জানতে পারে, এটাই ছিল ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু আছে চন্দ্রবিন্দুর গান, ‘…আর জানি না, জানি কী কেন কবে কোথায় কিসের প্রশ্নগুলো হাতে গোনা…।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে। অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই খবর এল, মোহাম্মদপুরে ওয়ার্ড কমিশনারসহ জোড়া খুন হয়েছে। এই খুনের দুই দিন আগে আরও একজন কমিশনার খুন হন। সেই জ্বালায় মরছিলাম, আবার নতুন খুন। একেকটা আলোচিত খুন মানেই সাত দিনের সুখ হারাম।
যা হোক, রাজ্যের বিরক্তি মাথায় নিয়ে গেলাম অকুস্থলে, মোহাম্মদপুর টাউন হলে। আসাদগেট থেকে যে সড়কটি টাউন হল হয়ে পশ্চিমে বছিলার দিকে চলে গেছে, তার নাম আসাদ অ্যাভিনিউ। মোহাম্মদপুরের ভেতর থেকে আসা রাজা-রানিদের নামে রাখা অলিগলিগুলো এই সড়কের সঙ্গে মিশে গেছে। তার একটি শেরশাহ সুরি রোড। এই দুই সড়ক যেখানে সংযুক্ত, তার কাছেই অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যালয় ছিল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার এ কে এম আহমেদ রাজু এবং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ।
আমি পৌঁছে শুনি, সানাউল্লাহ মারা গেছেন, কিন্তু রাজু তখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।মোহাম্মদপুর তখন উত্তপ্ত, রাজুর সমর্থকেরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়েছে।
রাজুর সঙ্গে আমার দুবার দেখা হয়েছিল। শেষবার সাক্ষাতের সময় বন্ধু সাংবাদিক লিটন হায়দারও সঙ্গে ছিলেন। রাজু যেখানেই যেতেন, সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্যও থাকতেন। প্রতি পালায় ৩ জন করে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্য দিনে-রাতে তাঁকে পাহারা দিয়ে রাখতেন। রাজুর এই পাহারা শুরু হয়েছিল মিরপুরের ওয়ার্ড কমিশনার নিউটন খুন হওয়ার পর। এ ঘটনার কয়েক মাস (২০০২ সালের ১০ মে) আগে বিএনপির এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ভগ্নিপতি নিউটন খুন হন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সব ওয়ার্ড কমিশনার তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাখতে পারবেন। শুরু হয় পুলিশি পাহারা নিয়ে সন্ত্রাসী ওয়ার্ড কমিশনারদের অবাধ চলাফেরা।
কমিশনারদের সন্ত্রাসী বলছি এ কারণে যে নিহত রাজুও ছিলেন ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ প্রবাদটির উল্টো দিকের মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা ছিল। ’৯৯ সালে তিনি অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়ে অনেক দিন জেলে ছিলেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকায় ১৮ জন প্রার্থীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, রাজু ছিলেন তাঁদের সামনের সারিতে।
আমরা দেখেছি, রাজু যখন কমিশনার অফিসে বসে থাকতেন, তখনো পুলিশ তাঁর পাশে থাকত। সেই রাজু কীভাবে খুন হলেন? উপস্থিত লোকেরা বললেন, অফিস থেকে তিনি যখন বের হচ্ছিলেন, তখনই এক যুবক খুব কাছে এসে পরপর চারটি গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দৌড়ে তিনি পাশে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেই সন্ত্রাসীর গুলি সানাউল্লাহর গায়েও লাগে। এ ঘটনার সময় রাজুর প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
মোহাম্মদপুরের অনেক বাসিন্দা আমাকে বলেছিলেন, রাজুর ওপর হামলার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক ছিল। তাঁর সঙ্গে অনেকের বিরোধ। সেই বিরোধ আরও বাড়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর। এলাকার আরেক ওয়ার্ড কমিশনার মতিন তাঁকে সামাল দিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। তবে কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীর ছেলের সঙ্গে জমি দখল নিয়ে রাজুর বিরোধ ছিল।
মনে আছে, সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, তাদের সন্দেহ, রাজুকে খুন করেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছাত্রদলের নেতা পিচ্চি হেলাল। এর কারণও ছিল, মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। কিন্তু ভোটে পাস করার পর রাজু সেই নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন। এতেই শেষ হয়নি। হেলালকে জেলে পাঠান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হেলাল তাঁর কিলার এনা ও তপুকে দিয়ে রাজুকে খুন করান। রাজু যখন খুন হন, হেলাল তখন হাসপাতালের কারাকক্ষে ছিলেন। আরেকটা কথা বলি, রাজুর লাশ দেখতে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
রাজু খুনের পর ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সব ওয়ার্ড কমিশনার পুলিশি পাহারায় চলাফেরা করতে শুরু করেন। এর আরেকটি কারণ ছিল, রাজু খুনের মাত্র ৪৪ ঘণ্টা আগে উত্তরা সড়কে খুন হয়েছিলেন পোস্তগোলার ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদত শিকদার। তাঁকে খুন করেছিলেন বলে সংবাদপত্র অফিসে ফোন করে দাবি করেছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
কমিশনারদের সেই আতঙ্ক কমাতে ৪ অক্টোবর নগর ভবনে বৈঠক ডাকেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। সেই বৈঠকে কমিশনাররা দাবি করেন, ঢাকা অচল করার কর্মসূচি দিতে হবে। তাঁরা সামরিক অভিযানও চান। সে সময় সাদেক হোসেন খোকা বলেন, পুলিশের যোগসাজশেই সন্ত্রাসীরা খুন করছে। আমিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। আমার মনে আছে, খোকা বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসীরা খুন করছে আর পুলিশ ঘুমাচ্ছে।’ সেই বৈঠকে ওয়ার্ড কমিশনাররা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সাদেক হোসেন খোকা অনেক অনুনয় করেও সবাইকে সামাল দিতে পারছিলেন না।
শুধু খোকা নন, বিএনপি সরকারও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিল না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট তখন ক্ষমতায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপের দিকে যাচ্ছে। মানুষের মনে আতঙ্ক, উদ্বেগ, ক্ষোভ আর হতাশা।
বিএনপির আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ তাঁর বই ‘বাংলাদেশ: আ স্টাডি অব দ্য ডেমোক্রেটিক রেজিমস’-এ লিখেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া পুলিশ বাহিনী পরিবর্তন করে বিএনপি তাদের অনুগতদের দিয়ে পূর্ণ করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।’ একই সঙ্গে বিএনপি সরকার মনে করেছিল, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা পুলিশকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে সারা দেশে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর আগে পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। সেনাসদস্যরা রাস্তায় নামার পরই পুলিশ জানতে পারে, এটাই ছিল ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু আছে চন্দ্রবিন্দুর গান, ‘…আর জানি না, জানি কী কেন কবে কোথায় কিসের প্রশ্নগুলো হাতে গোনা…।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে। অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই খবর এল, মোহাম্মদপুরে ওয়ার্ড কমিশনারসহ জোড়া খুন হয়েছে। এই খুনের দুই দিন আগে আরও একজন কমিশনার খুন হন। সেই জ্বালায় মরছিলাম, আবার নতুন খুন। একেকটা আলোচিত খুন মানেই সাত দিনের সুখ হারাম।
যা হোক, রাজ্যের বিরক্তি মাথায় নিয়ে গেলাম অকুস্থলে, মোহাম্মদপুর টাউন হলে। আসাদগেট থেকে যে সড়কটি টাউন হল হয়ে পশ্চিমে বছিলার দিকে চলে গেছে, তার নাম আসাদ অ্যাভিনিউ। মোহাম্মদপুরের ভেতর থেকে আসা রাজা-রানিদের নামে রাখা অলিগলিগুলো এই সড়কের সঙ্গে মিশে গেছে। তার একটি শেরশাহ সুরি রোড। এই দুই সড়ক যেখানে সংযুক্ত, তার কাছেই অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যালয় ছিল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার এ কে এম আহমেদ রাজু এবং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ।
আমি পৌঁছে শুনি, সানাউল্লাহ মারা গেছেন, কিন্তু রাজু তখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।মোহাম্মদপুর তখন উত্তপ্ত, রাজুর সমর্থকেরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়েছে।
রাজুর সঙ্গে আমার দুবার দেখা হয়েছিল। শেষবার সাক্ষাতের সময় বন্ধু সাংবাদিক লিটন হায়দারও সঙ্গে ছিলেন। রাজু যেখানেই যেতেন, সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্যও থাকতেন। প্রতি পালায় ৩ জন করে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্য দিনে-রাতে তাঁকে পাহারা দিয়ে রাখতেন। রাজুর এই পাহারা শুরু হয়েছিল মিরপুরের ওয়ার্ড কমিশনার নিউটন খুন হওয়ার পর। এ ঘটনার কয়েক মাস (২০০২ সালের ১০ মে) আগে বিএনপির এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ভগ্নিপতি নিউটন খুন হন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সব ওয়ার্ড কমিশনার তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাখতে পারবেন। শুরু হয় পুলিশি পাহারা নিয়ে সন্ত্রাসী ওয়ার্ড কমিশনারদের অবাধ চলাফেরা।
কমিশনারদের সন্ত্রাসী বলছি এ কারণে যে নিহত রাজুও ছিলেন ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ প্রবাদটির উল্টো দিকের মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা ছিল। ’৯৯ সালে তিনি অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়ে অনেক দিন জেলে ছিলেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকায় ১৮ জন প্রার্থীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, রাজু ছিলেন তাঁদের সামনের সারিতে।
আমরা দেখেছি, রাজু যখন কমিশনার অফিসে বসে থাকতেন, তখনো পুলিশ তাঁর পাশে থাকত। সেই রাজু কীভাবে খুন হলেন? উপস্থিত লোকেরা বললেন, অফিস থেকে তিনি যখন বের হচ্ছিলেন, তখনই এক যুবক খুব কাছে এসে পরপর চারটি গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দৌড়ে তিনি পাশে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেই সন্ত্রাসীর গুলি সানাউল্লাহর গায়েও লাগে। এ ঘটনার সময় রাজুর প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
মোহাম্মদপুরের অনেক বাসিন্দা আমাকে বলেছিলেন, রাজুর ওপর হামলার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক ছিল। তাঁর সঙ্গে অনেকের বিরোধ। সেই বিরোধ আরও বাড়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর। এলাকার আরেক ওয়ার্ড কমিশনার মতিন তাঁকে সামাল দিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। তবে কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীর ছেলের সঙ্গে জমি দখল নিয়ে রাজুর বিরোধ ছিল।
মনে আছে, সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, তাদের সন্দেহ, রাজুকে খুন করেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছাত্রদলের নেতা পিচ্চি হেলাল। এর কারণও ছিল, মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। কিন্তু ভোটে পাস করার পর রাজু সেই নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন। এতেই শেষ হয়নি। হেলালকে জেলে পাঠান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হেলাল তাঁর কিলার এনা ও তপুকে দিয়ে রাজুকে খুন করান। রাজু যখন খুন হন, হেলাল তখন হাসপাতালের কারাকক্ষে ছিলেন। আরেকটা কথা বলি, রাজুর লাশ দেখতে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
রাজু খুনের পর ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সব ওয়ার্ড কমিশনার পুলিশি পাহারায় চলাফেরা করতে শুরু করেন। এর আরেকটি কারণ ছিল, রাজু খুনের মাত্র ৪৪ ঘণ্টা আগে উত্তরা সড়কে খুন হয়েছিলেন পোস্তগোলার ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদত শিকদার। তাঁকে খুন করেছিলেন বলে সংবাদপত্র অফিসে ফোন করে দাবি করেছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
কমিশনারদের সেই আতঙ্ক কমাতে ৪ অক্টোবর নগর ভবনে বৈঠক ডাকেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। সেই বৈঠকে কমিশনাররা দাবি করেন, ঢাকা অচল করার কর্মসূচি দিতে হবে। তাঁরা সামরিক অভিযানও চান। সে সময় সাদেক হোসেন খোকা বলেন, পুলিশের যোগসাজশেই সন্ত্রাসীরা খুন করছে। আমিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। আমার মনে আছে, খোকা বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসীরা খুন করছে আর পুলিশ ঘুমাচ্ছে।’ সেই বৈঠকে ওয়ার্ড কমিশনাররা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সাদেক হোসেন খোকা অনেক অনুনয় করেও সবাইকে সামাল দিতে পারছিলেন না।
শুধু খোকা নন, বিএনপি সরকারও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিল না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট তখন ক্ষমতায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপের দিকে যাচ্ছে। মানুষের মনে আতঙ্ক, উদ্বেগ, ক্ষোভ আর হতাশা।
বিএনপির আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ তাঁর বই ‘বাংলাদেশ: আ স্টাডি অব দ্য ডেমোক্রেটিক রেজিমস’-এ লিখেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া পুলিশ বাহিনী পরিবর্তন করে বিএনপি তাদের অনুগতদের দিয়ে পূর্ণ করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।’ একই সঙ্গে বিএনপি সরকার মনে করেছিল, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা পুলিশকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে সারা দেশে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর আগে পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। সেনাসদস্যরা রাস্তায় নামার পরই পুলিশ জানতে পারে, এটাই ছিল ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু আছে চন্দ্রবিন্দুর গান, ‘…আর জানি না, জানি কী কেন কবে কোথায় কিসের প্রশ্নগুলো হাতে গোনা…।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে। অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই খবর এল, মোহাম্মদপুরে ওয়ার্ড কমিশনারসহ জোড়া খুন হয়েছে। এই খুনের দুই দিন আগে আরও একজন কমিশনার খুন হন। সেই জ্বালায় মরছিলাম, আবার নতুন খুন। একেকটা আলোচিত খুন মানেই সাত দিনের সুখ হারাম।
যা হোক, রাজ্যের বিরক্তি মাথায় নিয়ে গেলাম অকুস্থলে, মোহাম্মদপুর টাউন হলে। আসাদগেট থেকে যে সড়কটি টাউন হল হয়ে পশ্চিমে বছিলার দিকে চলে গেছে, তার নাম আসাদ অ্যাভিনিউ। মোহাম্মদপুরের ভেতর থেকে আসা রাজা-রানিদের নামে রাখা অলিগলিগুলো এই সড়কের সঙ্গে মিশে গেছে। তার একটি শেরশাহ সুরি রোড। এই দুই সড়ক যেখানে সংযুক্ত, তার কাছেই অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যালয় ছিল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার এ কে এম আহমেদ রাজু এবং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ।
আমি পৌঁছে শুনি, সানাউল্লাহ মারা গেছেন, কিন্তু রাজু তখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।মোহাম্মদপুর তখন উত্তপ্ত, রাজুর সমর্থকেরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়েছে।
রাজুর সঙ্গে আমার দুবার দেখা হয়েছিল। শেষবার সাক্ষাতের সময় বন্ধু সাংবাদিক লিটন হায়দারও সঙ্গে ছিলেন। রাজু যেখানেই যেতেন, সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্যও থাকতেন। প্রতি পালায় ৩ জন করে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্য দিনে-রাতে তাঁকে পাহারা দিয়ে রাখতেন। রাজুর এই পাহারা শুরু হয়েছিল মিরপুরের ওয়ার্ড কমিশনার নিউটন খুন হওয়ার পর। এ ঘটনার কয়েক মাস (২০০২ সালের ১০ মে) আগে বিএনপির এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ভগ্নিপতি নিউটন খুন হন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সব ওয়ার্ড কমিশনার তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাখতে পারবেন। শুরু হয় পুলিশি পাহারা নিয়ে সন্ত্রাসী ওয়ার্ড কমিশনারদের অবাধ চলাফেরা।
কমিশনারদের সন্ত্রাসী বলছি এ কারণে যে নিহত রাজুও ছিলেন ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ প্রবাদটির উল্টো দিকের মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা ছিল। ’৯৯ সালে তিনি অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়ে অনেক দিন জেলে ছিলেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকায় ১৮ জন প্রার্থীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, রাজু ছিলেন তাঁদের সামনের সারিতে।
আমরা দেখেছি, রাজু যখন কমিশনার অফিসে বসে থাকতেন, তখনো পুলিশ তাঁর পাশে থাকত। সেই রাজু কীভাবে খুন হলেন? উপস্থিত লোকেরা বললেন, অফিস থেকে তিনি যখন বের হচ্ছিলেন, তখনই এক যুবক খুব কাছে এসে পরপর চারটি গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দৌড়ে তিনি পাশে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেই সন্ত্রাসীর গুলি সানাউল্লাহর গায়েও লাগে। এ ঘটনার সময় রাজুর প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
মোহাম্মদপুরের অনেক বাসিন্দা আমাকে বলেছিলেন, রাজুর ওপর হামলার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক ছিল। তাঁর সঙ্গে অনেকের বিরোধ। সেই বিরোধ আরও বাড়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর। এলাকার আরেক ওয়ার্ড কমিশনার মতিন তাঁকে সামাল দিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। তবে কমিশনার সাঈদ ব্যাপারীর ছেলের সঙ্গে জমি দখল নিয়ে রাজুর বিরোধ ছিল।
মনে আছে, সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, তাদের সন্দেহ, রাজুকে খুন করেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছাত্রদলের নেতা পিচ্চি হেলাল। এর কারণও ছিল, মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। কিন্তু ভোটে পাস করার পর রাজু সেই নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন। এতেই শেষ হয়নি। হেলালকে জেলে পাঠান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হেলাল তাঁর কিলার এনা ও তপুকে দিয়ে রাজুকে খুন করান। রাজু যখন খুন হন, হেলাল তখন হাসপাতালের কারাকক্ষে ছিলেন। আরেকটা কথা বলি, রাজুর লাশ দেখতে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
রাজু খুনের পর ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সব ওয়ার্ড কমিশনার পুলিশি পাহারায় চলাফেরা করতে শুরু করেন। এর আরেকটি কারণ ছিল, রাজু খুনের মাত্র ৪৪ ঘণ্টা আগে উত্তরা সড়কে খুন হয়েছিলেন পোস্তগোলার ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদত শিকদার। তাঁকে খুন করেছিলেন বলে সংবাদপত্র অফিসে ফোন করে দাবি করেছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
কমিশনারদের সেই আতঙ্ক কমাতে ৪ অক্টোবর নগর ভবনে বৈঠক ডাকেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। সেই বৈঠকে কমিশনাররা দাবি করেন, ঢাকা অচল করার কর্মসূচি দিতে হবে। তাঁরা সামরিক অভিযানও চান। সে সময় সাদেক হোসেন খোকা বলেন, পুলিশের যোগসাজশেই সন্ত্রাসীরা খুন করছে। আমিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। আমার মনে আছে, খোকা বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসীরা খুন করছে আর পুলিশ ঘুমাচ্ছে।’ সেই বৈঠকে ওয়ার্ড কমিশনাররা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সাদেক হোসেন খোকা অনেক অনুনয় করেও সবাইকে সামাল দিতে পারছিলেন না।
শুধু খোকা নন, বিএনপি সরকারও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিল না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট তখন ক্ষমতায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপের দিকে যাচ্ছে। মানুষের মনে আতঙ্ক, উদ্বেগ, ক্ষোভ আর হতাশা।
বিএনপির আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ তাঁর বই ‘বাংলাদেশ: আ স্টাডি অব দ্য ডেমোক্রেটিক রেজিমস’-এ লিখেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া পুলিশ বাহিনী পরিবর্তন করে বিএনপি তাদের অনুগতদের দিয়ে পূর্ণ করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।’ একই সঙ্গে বিএনপি সরকার মনে করেছিল, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা পুলিশকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে সারা দেশে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর আগে পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। সেনাসদস্যরা রাস্তায় নামার পরই পুলিশ জানতে পারে, এটাই ছিল ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু আছে চন্দ্রবিন্দুর গান, ‘…আর জানি না, জানি কী কেন কবে কোথায় কিসের প্রশ্নগুলো হাতে গোনা…।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম, শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে।
১৩ মে ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম, শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে।
১৩ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম, শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে।
১৩ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দিনগুলো বড় অদ্ভুত। কোনো কোনো দিন আসে সকালের নরম রোদের মতো প্রশান্তি নিয়ে, আবার কোনো দিন আসে ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ে। ২০০২ সালের ১ অক্টোবরও ছিল সে রকম, শান্তি উবে যাওয়ার দিন। সেই অশান্তি শুরুও হলো বেলা বাড়ার আগে।
১৩ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে