কামরুল হাসান

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি, ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা করবেন কি না। আমিও নাছোড়, কথা আমাকে বলতেই হবে। চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন বলতেন, খবর জোগাড়ের সময় মান-অপমান কোনো ব্যাপার নয়। সঠিক খবর হাতে পাওয়াটাই আসল কাজ। সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছি, যা আছে কুলকপালে।
পাঁচ তারকা হোটেল লবির সুবিধা হলো, এসব জায়গায় যতক্ষণ খুশি বসে থাকতে কোনো বারণ নেই। আসনগুলোও বেশ আরামদায়ক। কিন্তু সমস্যা হলো, কিছুক্ষণ পরপর ওয়েটার এসে জানতে চান, কিছু লাগবে কি না। আমার কোনো ক্রেডিট কার্ড নেই, পকেটের অবস্থাও ভালো নয়। এক কাপ চায়ের দাম দেড় শ টাকা শুনে চায়ের তেষ্টা উবে গেল। বলছি ২০০২ সালের কথা। এটা ছিল সেই বছরের ২৬ আগস্টের সকাল।
যে লোকটার জন্য এত অপেক্ষা, তাঁর নাম-পরিচয় জানার আগে শানে-নজুলটা শুনুন। এর আগের দিন, অর্থাৎ ২৫ আগস্ট রোববার সকালে খবরের খোঁজে গিয়েছিলাম মালিবাগের এসবি অফিসে। তখন এসবির প্রধান ছিলেন আনোয়ারুল ইকবাল। পরে তিনি পুলিশের আইজি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। আনোয়ারুল ইকবাল একসময় সিআইডির ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। তো সেদিন তাঁর রুমে বসে আছি, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে দুজন কর্মকর্তা এলেন। আমার উপস্থিতি দেখে ইশারা-ইঙ্গিতে তাঁদের কথা সারলেন। সেই ইশারার মধ্যে বুঝতে পারলাম, কোনো একটি বিশেষ ঘটনার তদন্তে এফবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা আসছেন। তাঁর সঙ্গে এসবির প্রধানের বৈঠক হবে।
অতিরিক্ত আইজিপি আনোয়ারুল ইকবাল খুব শক্ত মানুষ। তাঁকে এ কথা জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না। আর আমি জানতে চাইলেও তিনি উত্তর দেবেন না। এসবিতে আমার অনেক পরিচিত কর্মকর্তা। তাঁদের কারও কাছ থেকে এটা জানা যাবে। রুম থেকে বেরিয়ে পরিচিত একজন কর্মকর্তার কাছে গেলাম। তাঁর কাছে বিষয়টি তুলতেই মনে হলো, তিনি ঘটনা জানেন। তবে পুরোটা আমাকে বললেন না। যেটুকু বললেন সেটা হলো, কোকা-কোলার কান্ট্রি ডিরেক্টর অজয় মিত্র গুলশান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের ওপরমহলে হইচই শুরু হয়েছে। এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ফোন করে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেছে। সেই চাঁদার পরিমাণ অবিশ্বাস্য। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রথম টেলিফোনকে অতটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, বিষয়টা তত বড় হয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সেই সন্ত্রাসী তাঁকে আলটিমেটাম দিয়ে বলেছে, এই মাসের মধ্যে বিষয়টির মীমাংসা না হলে বউ-বাচ্চার সামনে গুলি করে মেরে ফেলবে। এই হুমকিতে কান্ট্রি ডিরেক্টর খুবই ভয় পেয়েছেন। তিনি নিজের বারিধারার বাসা ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছেন। এখন সেখানেই আছেন। কোকা-কোলা যেহেতু আমেরিকান কোম্পানি, সে কারণে মার্কিন প্রশাসন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বললেন না। এমনকি কোন হোটেলে উঠেছেন, তা-ও বললেন না। ঢাকায় তখন দুটি পাঁচ তারকা হোটেল। একটি হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, অন্যটি স্টারউডের শেরাটন হোটেল।
আমার মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে, আরও বিস্তারিত তথ্য লাগবে। একটু খোঁজখবর করতে গিয়ে জানলাম, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পিটার্স এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছেন। মনে হলো, পুলিশ ছাড়াও সব গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর করছে; কিন্তু সন্ত্রাসীকে কেউ ধরতে পারছে না।
এসবি অফিস থেকে বেরিয়ে ইস্কাটনের দিকে যাব। মৌচাক মোড়ে এসে দেখি, ইউএনবির সাইফুল হুদা (আমেরিকাপ্রবাসী) দাঁড়িয়ে। তিনি তখন প্রধানমন্ত্রীর বিট করতেন। তাঁর কাছে কোকা-কোলার প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, তাঁর বাল্যবন্ধু খালিদ রাজা কোকা-কোলায় বড় পদে চাকরি করেন। সেখানে গেলে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাইফুল হুদাকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে ছুটলাম বিজয় সরণির দিকে, কোকা-কোলার ঢাকা অফিসে। সাইফুল হুদা কোকা-কোলায় এসে খালিদ রাজাকে বাইরে ডেকে এনে ফিসফাস করে সব বললেন। কিন্তু খালিদ রাজা এমন ভান করলেন, যেন কিছুই জানেন না। শুধু বললেন, কিছু জানার থাকলে তাঁকে লিখে দিতে হবে। আমরা তা-ই করলাম। সাদা কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে সেটা খালিদ রাজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমরা বেরিয়ে এলাম।
সেখান থেকে বেরিয়ে আমার মনে হচ্ছিল, ঢাকায় দুটি পাঁচ তারকা হোটেলের একটিতে অজয় মিত্র উঠেছেন। হোটেলের অভ্যর্থনায় গিয়ে খোঁজ করলেই কিছু না কিছু জানা যাবে। প্রথমে এলাম সোনারগাঁওয়ে। সেখানকার অভ্যর্থনা থেকে বলা হলো, এই নামে কেউ নেই। এবার গেলাম শেরাটনে। অজয় মিত্রের নাম বলতেই অভ্যর্থনায় থাকা এক নারী আমাকে ভালো করে দেখে নিয়ে বললেন, এই অতিথি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। অভ্যর্থনার কর্মীর কাছে জানতে চাইলাম, তাঁর রুম নম্বর কত, তিনি সেটাও বললেন না।
সব পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে একাধিক ইন্টারকম সংযোগ থাকে। সেখান থেকে অতিথিদের সঙ্গে কথাও বলা যায়। কিছুক্ষণ লবিতে বসে অপেক্ষা করলাম। এরপর একটি ইন্টারকমের কাছে গিয়ে তাতে শূন্য ডায়াল করতেই মনে হলো, ইনফরমেশনের কেউ ধরেছেন। তাঁর কাছে অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি সেই রুমের পিএবিএক্স নম্বর বললেন। মনে হলো জাদুর কাঠি পেয়ে গেলাম। কল দিলাম সেই নম্বরে। এক নারী ফোন ধরে জানতে চাইলেন, কাকে চাই। আমি অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি পরিচয় জানতে চাইলেন। এরপর সাংবাদিক শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন। আমাকে লাইনে রেখে নারী-পুরুষ হিন্দিতে কথা বললেন। এরপর আমার সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে ফোনটা রেখে দিলেন।
আমি হোটেল না ছেড়ে অভ্যর্থনায় বসেই থাকলাম। ঘণ্টাখানেক পর আবার ফোন দিলাম। এবার অজয় মিত্র নিজেই ফোন ধরলেন। খাঁটি বাংলায় বললেন, আমি কেন তাঁর জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। আপনার ওপর হুমকির বিষয়টি কাগজে এলে আপনি নিরাপদ হবেন। মনে হলো, এ কথায় কাজ হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, ভাবার জন্য একটু সময় দিন। আমি বললাম, অভ্যর্থনায় আছি।
আমার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। আড়াই ঘণ্টা পর অজয় মিত্র নিচে নামলেন, সঙ্গে তাঁর স্ত্রী। কথায় মনে হলো, তিনি খুবই ভয় পেয়েছেন। আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন আর চারদিকে তাকাচ্ছিলেন। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে সবই বললেন। শর্ত ছিল, তাঁর নাম প্রকাশ করা যাবে না। কোকা-কোলার নিয়ম অনুযায়ী কেউ গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে পারেন না।
অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে প্রথম ফোন করা হয় ১৪ আগস্ট (২০০২), এরপর ১৯ আগস্ট। ফোন করে বলা হয়, বাংলাদেশে কোকা-কোলা বিক্রির বিপরীতে প্রতি বোতলের জন্য তাকে ১০ পয়সা দিতে হবে। এই হিসাবে মাসে ৫০ লাখ টাকা তাকে দিতে হবে। সেটা না দিলে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে এবং কোকা-কোলার বিপণনব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমি জানতে চাইলাম, যিনি ফোন করেছিলেন, তাঁর কণ্ঠস্বর কেমন? তিনি বললেন, কম বয়স, কিন্তু গলাটা বেশ ভরাট। কী নাম বলেছেন? বললেন, জাহাঙ্গীর ফেরদৌস বা কালা জাহাঙ্গীর। অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে ফোন করার আগে লোকটি তাঁর গতিবিধির সব তথ্য অনেক দিন ধরে জোগাড় করেছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী-সন্তান কোন গাড়িতে চলেন, কখন বাসা থেকে বের হন—সব তিনি জানেন। অজয় মিত্র আমাকে বললেন, এ ঘটনা নিয়ে তিনি গুলশান থানায় ২০ আগস্ট জিডি করেছেন।
অজয় মিত্র আরও বললেন, জিডি করার পর পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী তাঁকে ফোন করেন। তাঁর বারিধারার বাসায় পাহারাও বসানো হয়। কিন্তু তার পরও কেউ তাঁকে ফলো করছিল। হোটেলে আসার পরও ফোন এসেছে। বলা হয়েছে, কত দিন হোটেলে থাকবি?
পরে জানতে পারি, চাঁদা দেওয়ার টোপ দিয়ে ফার্মগেট থেকে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছিল। এফবিআই কর্মকর্তা তাঁকে জেরাও করেছিলেন। এটা ছিল ডামি চাঁদাবাজ। কালা জাহাঙ্গীর এ ঘটনার পর খুবই ক্ষুব্ধ হন।
অজয় মিত্রকে নিয়ে আমার তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ আগস্ট ২০০২। সেখানে অজয় মিত্রের কোনো বক্তব্য ছাপা হয়নি। তবে কোকা-কোলার মূল প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা ফার ইস্টের একটি বক্তব্য ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, কোকা-কোলা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থাশীল।
সেই খবর প্রকাশের পর কালা জাহাঙ্গীর ফোন করে প্রতিবাদ জানান। অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদও পাঠান। কিন্তু তখনকার পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম আমাকে বলেছিলেন, এই হুমকিদাতা যে কালা জাহাঙ্গীর, সে ব্যাপারে তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত। কয়েক দিন পর শুনলাম, অজয় মিত্র বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কোকা-কোলার অফিস বিজয় সরণি থেকে গুলশানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
অজয় মিত্র চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সোনিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ডিবি অফিসে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সোনিয়া আমাকে বলেছিলেন, কালা জাহাঙ্গীরের মাসে খরচ ৭০ লাখ টাকার বেশি। সেই টাকার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। কোকা-কোলার কর্তাকেও সে ছেড়ে দিত না।
সেদিন সোনিয়ার এই কথা শুনে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেন অজয় মিত্র!
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি, ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা করবেন কি না। আমিও নাছোড়, কথা আমাকে বলতেই হবে। চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন বলতেন, খবর জোগাড়ের সময় মান-অপমান কোনো ব্যাপার নয়। সঠিক খবর হাতে পাওয়াটাই আসল কাজ। সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছি, যা আছে কুলকপালে।
পাঁচ তারকা হোটেল লবির সুবিধা হলো, এসব জায়গায় যতক্ষণ খুশি বসে থাকতে কোনো বারণ নেই। আসনগুলোও বেশ আরামদায়ক। কিন্তু সমস্যা হলো, কিছুক্ষণ পরপর ওয়েটার এসে জানতে চান, কিছু লাগবে কি না। আমার কোনো ক্রেডিট কার্ড নেই, পকেটের অবস্থাও ভালো নয়। এক কাপ চায়ের দাম দেড় শ টাকা শুনে চায়ের তেষ্টা উবে গেল। বলছি ২০০২ সালের কথা। এটা ছিল সেই বছরের ২৬ আগস্টের সকাল।
যে লোকটার জন্য এত অপেক্ষা, তাঁর নাম-পরিচয় জানার আগে শানে-নজুলটা শুনুন। এর আগের দিন, অর্থাৎ ২৫ আগস্ট রোববার সকালে খবরের খোঁজে গিয়েছিলাম মালিবাগের এসবি অফিসে। তখন এসবির প্রধান ছিলেন আনোয়ারুল ইকবাল। পরে তিনি পুলিশের আইজি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। আনোয়ারুল ইকবাল একসময় সিআইডির ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। তো সেদিন তাঁর রুমে বসে আছি, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে দুজন কর্মকর্তা এলেন। আমার উপস্থিতি দেখে ইশারা-ইঙ্গিতে তাঁদের কথা সারলেন। সেই ইশারার মধ্যে বুঝতে পারলাম, কোনো একটি বিশেষ ঘটনার তদন্তে এফবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা আসছেন। তাঁর সঙ্গে এসবির প্রধানের বৈঠক হবে।
অতিরিক্ত আইজিপি আনোয়ারুল ইকবাল খুব শক্ত মানুষ। তাঁকে এ কথা জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না। আর আমি জানতে চাইলেও তিনি উত্তর দেবেন না। এসবিতে আমার অনেক পরিচিত কর্মকর্তা। তাঁদের কারও কাছ থেকে এটা জানা যাবে। রুম থেকে বেরিয়ে পরিচিত একজন কর্মকর্তার কাছে গেলাম। তাঁর কাছে বিষয়টি তুলতেই মনে হলো, তিনি ঘটনা জানেন। তবে পুরোটা আমাকে বললেন না। যেটুকু বললেন সেটা হলো, কোকা-কোলার কান্ট্রি ডিরেক্টর অজয় মিত্র গুলশান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের ওপরমহলে হইচই শুরু হয়েছে। এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ফোন করে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেছে। সেই চাঁদার পরিমাণ অবিশ্বাস্য। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রথম টেলিফোনকে অতটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, বিষয়টা তত বড় হয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সেই সন্ত্রাসী তাঁকে আলটিমেটাম দিয়ে বলেছে, এই মাসের মধ্যে বিষয়টির মীমাংসা না হলে বউ-বাচ্চার সামনে গুলি করে মেরে ফেলবে। এই হুমকিতে কান্ট্রি ডিরেক্টর খুবই ভয় পেয়েছেন। তিনি নিজের বারিধারার বাসা ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছেন। এখন সেখানেই আছেন। কোকা-কোলা যেহেতু আমেরিকান কোম্পানি, সে কারণে মার্কিন প্রশাসন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বললেন না। এমনকি কোন হোটেলে উঠেছেন, তা-ও বললেন না। ঢাকায় তখন দুটি পাঁচ তারকা হোটেল। একটি হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, অন্যটি স্টারউডের শেরাটন হোটেল।
আমার মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে, আরও বিস্তারিত তথ্য লাগবে। একটু খোঁজখবর করতে গিয়ে জানলাম, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পিটার্স এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছেন। মনে হলো, পুলিশ ছাড়াও সব গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর করছে; কিন্তু সন্ত্রাসীকে কেউ ধরতে পারছে না।
এসবি অফিস থেকে বেরিয়ে ইস্কাটনের দিকে যাব। মৌচাক মোড়ে এসে দেখি, ইউএনবির সাইফুল হুদা (আমেরিকাপ্রবাসী) দাঁড়িয়ে। তিনি তখন প্রধানমন্ত্রীর বিট করতেন। তাঁর কাছে কোকা-কোলার প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, তাঁর বাল্যবন্ধু খালিদ রাজা কোকা-কোলায় বড় পদে চাকরি করেন। সেখানে গেলে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাইফুল হুদাকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে ছুটলাম বিজয় সরণির দিকে, কোকা-কোলার ঢাকা অফিসে। সাইফুল হুদা কোকা-কোলায় এসে খালিদ রাজাকে বাইরে ডেকে এনে ফিসফাস করে সব বললেন। কিন্তু খালিদ রাজা এমন ভান করলেন, যেন কিছুই জানেন না। শুধু বললেন, কিছু জানার থাকলে তাঁকে লিখে দিতে হবে। আমরা তা-ই করলাম। সাদা কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে সেটা খালিদ রাজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমরা বেরিয়ে এলাম।
সেখান থেকে বেরিয়ে আমার মনে হচ্ছিল, ঢাকায় দুটি পাঁচ তারকা হোটেলের একটিতে অজয় মিত্র উঠেছেন। হোটেলের অভ্যর্থনায় গিয়ে খোঁজ করলেই কিছু না কিছু জানা যাবে। প্রথমে এলাম সোনারগাঁওয়ে। সেখানকার অভ্যর্থনা থেকে বলা হলো, এই নামে কেউ নেই। এবার গেলাম শেরাটনে। অজয় মিত্রের নাম বলতেই অভ্যর্থনায় থাকা এক নারী আমাকে ভালো করে দেখে নিয়ে বললেন, এই অতিথি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। অভ্যর্থনার কর্মীর কাছে জানতে চাইলাম, তাঁর রুম নম্বর কত, তিনি সেটাও বললেন না।
সব পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে একাধিক ইন্টারকম সংযোগ থাকে। সেখান থেকে অতিথিদের সঙ্গে কথাও বলা যায়। কিছুক্ষণ লবিতে বসে অপেক্ষা করলাম। এরপর একটি ইন্টারকমের কাছে গিয়ে তাতে শূন্য ডায়াল করতেই মনে হলো, ইনফরমেশনের কেউ ধরেছেন। তাঁর কাছে অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি সেই রুমের পিএবিএক্স নম্বর বললেন। মনে হলো জাদুর কাঠি পেয়ে গেলাম। কল দিলাম সেই নম্বরে। এক নারী ফোন ধরে জানতে চাইলেন, কাকে চাই। আমি অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি পরিচয় জানতে চাইলেন। এরপর সাংবাদিক শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন। আমাকে লাইনে রেখে নারী-পুরুষ হিন্দিতে কথা বললেন। এরপর আমার সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে ফোনটা রেখে দিলেন।
আমি হোটেল না ছেড়ে অভ্যর্থনায় বসেই থাকলাম। ঘণ্টাখানেক পর আবার ফোন দিলাম। এবার অজয় মিত্র নিজেই ফোন ধরলেন। খাঁটি বাংলায় বললেন, আমি কেন তাঁর জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। আপনার ওপর হুমকির বিষয়টি কাগজে এলে আপনি নিরাপদ হবেন। মনে হলো, এ কথায় কাজ হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, ভাবার জন্য একটু সময় দিন। আমি বললাম, অভ্যর্থনায় আছি।
আমার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। আড়াই ঘণ্টা পর অজয় মিত্র নিচে নামলেন, সঙ্গে তাঁর স্ত্রী। কথায় মনে হলো, তিনি খুবই ভয় পেয়েছেন। আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন আর চারদিকে তাকাচ্ছিলেন। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে সবই বললেন। শর্ত ছিল, তাঁর নাম প্রকাশ করা যাবে না। কোকা-কোলার নিয়ম অনুযায়ী কেউ গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে পারেন না।
অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে প্রথম ফোন করা হয় ১৪ আগস্ট (২০০২), এরপর ১৯ আগস্ট। ফোন করে বলা হয়, বাংলাদেশে কোকা-কোলা বিক্রির বিপরীতে প্রতি বোতলের জন্য তাকে ১০ পয়সা দিতে হবে। এই হিসাবে মাসে ৫০ লাখ টাকা তাকে দিতে হবে। সেটা না দিলে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে এবং কোকা-কোলার বিপণনব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমি জানতে চাইলাম, যিনি ফোন করেছিলেন, তাঁর কণ্ঠস্বর কেমন? তিনি বললেন, কম বয়স, কিন্তু গলাটা বেশ ভরাট। কী নাম বলেছেন? বললেন, জাহাঙ্গীর ফেরদৌস বা কালা জাহাঙ্গীর। অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে ফোন করার আগে লোকটি তাঁর গতিবিধির সব তথ্য অনেক দিন ধরে জোগাড় করেছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী-সন্তান কোন গাড়িতে চলেন, কখন বাসা থেকে বের হন—সব তিনি জানেন। অজয় মিত্র আমাকে বললেন, এ ঘটনা নিয়ে তিনি গুলশান থানায় ২০ আগস্ট জিডি করেছেন।
অজয় মিত্র আরও বললেন, জিডি করার পর পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী তাঁকে ফোন করেন। তাঁর বারিধারার বাসায় পাহারাও বসানো হয়। কিন্তু তার পরও কেউ তাঁকে ফলো করছিল। হোটেলে আসার পরও ফোন এসেছে। বলা হয়েছে, কত দিন হোটেলে থাকবি?
পরে জানতে পারি, চাঁদা দেওয়ার টোপ দিয়ে ফার্মগেট থেকে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছিল। এফবিআই কর্মকর্তা তাঁকে জেরাও করেছিলেন। এটা ছিল ডামি চাঁদাবাজ। কালা জাহাঙ্গীর এ ঘটনার পর খুবই ক্ষুব্ধ হন।
অজয় মিত্রকে নিয়ে আমার তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ আগস্ট ২০০২। সেখানে অজয় মিত্রের কোনো বক্তব্য ছাপা হয়নি। তবে কোকা-কোলার মূল প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা ফার ইস্টের একটি বক্তব্য ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, কোকা-কোলা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থাশীল।
সেই খবর প্রকাশের পর কালা জাহাঙ্গীর ফোন করে প্রতিবাদ জানান। অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদও পাঠান। কিন্তু তখনকার পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম আমাকে বলেছিলেন, এই হুমকিদাতা যে কালা জাহাঙ্গীর, সে ব্যাপারে তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত। কয়েক দিন পর শুনলাম, অজয় মিত্র বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কোকা-কোলার অফিস বিজয় সরণি থেকে গুলশানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
অজয় মিত্র চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সোনিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ডিবি অফিসে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সোনিয়া আমাকে বলেছিলেন, কালা জাহাঙ্গীরের মাসে খরচ ৭০ লাখ টাকার বেশি। সেই টাকার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। কোকা-কোলার কর্তাকেও সে ছেড়ে দিত না।
সেদিন সোনিয়ার এই কথা শুনে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেন অজয় মিত্র!
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি, ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা করবেন কি না। আমিও নাছোড়, কথা আমাকে বলতেই হবে। চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন বলতেন, খবর জোগাড়ের সময় মান-অপমান কোনো ব্যাপার নয়। সঠিক খবর হাতে পাওয়াটাই আসল কাজ। সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছি, যা আছে কুলকপালে।
পাঁচ তারকা হোটেল লবির সুবিধা হলো, এসব জায়গায় যতক্ষণ খুশি বসে থাকতে কোনো বারণ নেই। আসনগুলোও বেশ আরামদায়ক। কিন্তু সমস্যা হলো, কিছুক্ষণ পরপর ওয়েটার এসে জানতে চান, কিছু লাগবে কি না। আমার কোনো ক্রেডিট কার্ড নেই, পকেটের অবস্থাও ভালো নয়। এক কাপ চায়ের দাম দেড় শ টাকা শুনে চায়ের তেষ্টা উবে গেল। বলছি ২০০২ সালের কথা। এটা ছিল সেই বছরের ২৬ আগস্টের সকাল।
যে লোকটার জন্য এত অপেক্ষা, তাঁর নাম-পরিচয় জানার আগে শানে-নজুলটা শুনুন। এর আগের দিন, অর্থাৎ ২৫ আগস্ট রোববার সকালে খবরের খোঁজে গিয়েছিলাম মালিবাগের এসবি অফিসে। তখন এসবির প্রধান ছিলেন আনোয়ারুল ইকবাল। পরে তিনি পুলিশের আইজি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। আনোয়ারুল ইকবাল একসময় সিআইডির ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। তো সেদিন তাঁর রুমে বসে আছি, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে দুজন কর্মকর্তা এলেন। আমার উপস্থিতি দেখে ইশারা-ইঙ্গিতে তাঁদের কথা সারলেন। সেই ইশারার মধ্যে বুঝতে পারলাম, কোনো একটি বিশেষ ঘটনার তদন্তে এফবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা আসছেন। তাঁর সঙ্গে এসবির প্রধানের বৈঠক হবে।
অতিরিক্ত আইজিপি আনোয়ারুল ইকবাল খুব শক্ত মানুষ। তাঁকে এ কথা জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না। আর আমি জানতে চাইলেও তিনি উত্তর দেবেন না। এসবিতে আমার অনেক পরিচিত কর্মকর্তা। তাঁদের কারও কাছ থেকে এটা জানা যাবে। রুম থেকে বেরিয়ে পরিচিত একজন কর্মকর্তার কাছে গেলাম। তাঁর কাছে বিষয়টি তুলতেই মনে হলো, তিনি ঘটনা জানেন। তবে পুরোটা আমাকে বললেন না। যেটুকু বললেন সেটা হলো, কোকা-কোলার কান্ট্রি ডিরেক্টর অজয় মিত্র গুলশান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের ওপরমহলে হইচই শুরু হয়েছে। এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ফোন করে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেছে। সেই চাঁদার পরিমাণ অবিশ্বাস্য। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রথম টেলিফোনকে অতটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, বিষয়টা তত বড় হয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সেই সন্ত্রাসী তাঁকে আলটিমেটাম দিয়ে বলেছে, এই মাসের মধ্যে বিষয়টির মীমাংসা না হলে বউ-বাচ্চার সামনে গুলি করে মেরে ফেলবে। এই হুমকিতে কান্ট্রি ডিরেক্টর খুবই ভয় পেয়েছেন। তিনি নিজের বারিধারার বাসা ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছেন। এখন সেখানেই আছেন। কোকা-কোলা যেহেতু আমেরিকান কোম্পানি, সে কারণে মার্কিন প্রশাসন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বললেন না। এমনকি কোন হোটেলে উঠেছেন, তা-ও বললেন না। ঢাকায় তখন দুটি পাঁচ তারকা হোটেল। একটি হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, অন্যটি স্টারউডের শেরাটন হোটেল।
আমার মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে, আরও বিস্তারিত তথ্য লাগবে। একটু খোঁজখবর করতে গিয়ে জানলাম, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পিটার্স এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছেন। মনে হলো, পুলিশ ছাড়াও সব গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর করছে; কিন্তু সন্ত্রাসীকে কেউ ধরতে পারছে না।
এসবি অফিস থেকে বেরিয়ে ইস্কাটনের দিকে যাব। মৌচাক মোড়ে এসে দেখি, ইউএনবির সাইফুল হুদা (আমেরিকাপ্রবাসী) দাঁড়িয়ে। তিনি তখন প্রধানমন্ত্রীর বিট করতেন। তাঁর কাছে কোকা-কোলার প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, তাঁর বাল্যবন্ধু খালিদ রাজা কোকা-কোলায় বড় পদে চাকরি করেন। সেখানে গেলে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাইফুল হুদাকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে ছুটলাম বিজয় সরণির দিকে, কোকা-কোলার ঢাকা অফিসে। সাইফুল হুদা কোকা-কোলায় এসে খালিদ রাজাকে বাইরে ডেকে এনে ফিসফাস করে সব বললেন। কিন্তু খালিদ রাজা এমন ভান করলেন, যেন কিছুই জানেন না। শুধু বললেন, কিছু জানার থাকলে তাঁকে লিখে দিতে হবে। আমরা তা-ই করলাম। সাদা কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে সেটা খালিদ রাজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমরা বেরিয়ে এলাম।
সেখান থেকে বেরিয়ে আমার মনে হচ্ছিল, ঢাকায় দুটি পাঁচ তারকা হোটেলের একটিতে অজয় মিত্র উঠেছেন। হোটেলের অভ্যর্থনায় গিয়ে খোঁজ করলেই কিছু না কিছু জানা যাবে। প্রথমে এলাম সোনারগাঁওয়ে। সেখানকার অভ্যর্থনা থেকে বলা হলো, এই নামে কেউ নেই। এবার গেলাম শেরাটনে। অজয় মিত্রের নাম বলতেই অভ্যর্থনায় থাকা এক নারী আমাকে ভালো করে দেখে নিয়ে বললেন, এই অতিথি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। অভ্যর্থনার কর্মীর কাছে জানতে চাইলাম, তাঁর রুম নম্বর কত, তিনি সেটাও বললেন না।
সব পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে একাধিক ইন্টারকম সংযোগ থাকে। সেখান থেকে অতিথিদের সঙ্গে কথাও বলা যায়। কিছুক্ষণ লবিতে বসে অপেক্ষা করলাম। এরপর একটি ইন্টারকমের কাছে গিয়ে তাতে শূন্য ডায়াল করতেই মনে হলো, ইনফরমেশনের কেউ ধরেছেন। তাঁর কাছে অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি সেই রুমের পিএবিএক্স নম্বর বললেন। মনে হলো জাদুর কাঠি পেয়ে গেলাম। কল দিলাম সেই নম্বরে। এক নারী ফোন ধরে জানতে চাইলেন, কাকে চাই। আমি অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি পরিচয় জানতে চাইলেন। এরপর সাংবাদিক শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন। আমাকে লাইনে রেখে নারী-পুরুষ হিন্দিতে কথা বললেন। এরপর আমার সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে ফোনটা রেখে দিলেন।
আমি হোটেল না ছেড়ে অভ্যর্থনায় বসেই থাকলাম। ঘণ্টাখানেক পর আবার ফোন দিলাম। এবার অজয় মিত্র নিজেই ফোন ধরলেন। খাঁটি বাংলায় বললেন, আমি কেন তাঁর জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। আপনার ওপর হুমকির বিষয়টি কাগজে এলে আপনি নিরাপদ হবেন। মনে হলো, এ কথায় কাজ হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, ভাবার জন্য একটু সময় দিন। আমি বললাম, অভ্যর্থনায় আছি।
আমার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। আড়াই ঘণ্টা পর অজয় মিত্র নিচে নামলেন, সঙ্গে তাঁর স্ত্রী। কথায় মনে হলো, তিনি খুবই ভয় পেয়েছেন। আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন আর চারদিকে তাকাচ্ছিলেন। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে সবই বললেন। শর্ত ছিল, তাঁর নাম প্রকাশ করা যাবে না। কোকা-কোলার নিয়ম অনুযায়ী কেউ গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে পারেন না।
অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে প্রথম ফোন করা হয় ১৪ আগস্ট (২০০২), এরপর ১৯ আগস্ট। ফোন করে বলা হয়, বাংলাদেশে কোকা-কোলা বিক্রির বিপরীতে প্রতি বোতলের জন্য তাকে ১০ পয়সা দিতে হবে। এই হিসাবে মাসে ৫০ লাখ টাকা তাকে দিতে হবে। সেটা না দিলে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে এবং কোকা-কোলার বিপণনব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমি জানতে চাইলাম, যিনি ফোন করেছিলেন, তাঁর কণ্ঠস্বর কেমন? তিনি বললেন, কম বয়স, কিন্তু গলাটা বেশ ভরাট। কী নাম বলেছেন? বললেন, জাহাঙ্গীর ফেরদৌস বা কালা জাহাঙ্গীর। অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে ফোন করার আগে লোকটি তাঁর গতিবিধির সব তথ্য অনেক দিন ধরে জোগাড় করেছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী-সন্তান কোন গাড়িতে চলেন, কখন বাসা থেকে বের হন—সব তিনি জানেন। অজয় মিত্র আমাকে বললেন, এ ঘটনা নিয়ে তিনি গুলশান থানায় ২০ আগস্ট জিডি করেছেন।
অজয় মিত্র আরও বললেন, জিডি করার পর পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী তাঁকে ফোন করেন। তাঁর বারিধারার বাসায় পাহারাও বসানো হয়। কিন্তু তার পরও কেউ তাঁকে ফলো করছিল। হোটেলে আসার পরও ফোন এসেছে। বলা হয়েছে, কত দিন হোটেলে থাকবি?
পরে জানতে পারি, চাঁদা দেওয়ার টোপ দিয়ে ফার্মগেট থেকে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছিল। এফবিআই কর্মকর্তা তাঁকে জেরাও করেছিলেন। এটা ছিল ডামি চাঁদাবাজ। কালা জাহাঙ্গীর এ ঘটনার পর খুবই ক্ষুব্ধ হন।
অজয় মিত্রকে নিয়ে আমার তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ আগস্ট ২০০২। সেখানে অজয় মিত্রের কোনো বক্তব্য ছাপা হয়নি। তবে কোকা-কোলার মূল প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা ফার ইস্টের একটি বক্তব্য ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, কোকা-কোলা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থাশীল।
সেই খবর প্রকাশের পর কালা জাহাঙ্গীর ফোন করে প্রতিবাদ জানান। অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদও পাঠান। কিন্তু তখনকার পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম আমাকে বলেছিলেন, এই হুমকিদাতা যে কালা জাহাঙ্গীর, সে ব্যাপারে তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত। কয়েক দিন পর শুনলাম, অজয় মিত্র বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কোকা-কোলার অফিস বিজয় সরণি থেকে গুলশানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
অজয় মিত্র চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সোনিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ডিবি অফিসে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সোনিয়া আমাকে বলেছিলেন, কালা জাহাঙ্গীরের মাসে খরচ ৭০ লাখ টাকার বেশি। সেই টাকার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। কোকা-কোলার কর্তাকেও সে ছেড়ে দিত না।
সেদিন সোনিয়ার এই কথা শুনে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেন অজয় মিত্র!
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি, ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা করবেন কি না। আমিও নাছোড়, কথা আমাকে বলতেই হবে। চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন বলতেন, খবর জোগাড়ের সময় মান-অপমান কোনো ব্যাপার নয়। সঠিক খবর হাতে পাওয়াটাই আসল কাজ। সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছি, যা আছে কুলকপালে।
পাঁচ তারকা হোটেল লবির সুবিধা হলো, এসব জায়গায় যতক্ষণ খুশি বসে থাকতে কোনো বারণ নেই। আসনগুলোও বেশ আরামদায়ক। কিন্তু সমস্যা হলো, কিছুক্ষণ পরপর ওয়েটার এসে জানতে চান, কিছু লাগবে কি না। আমার কোনো ক্রেডিট কার্ড নেই, পকেটের অবস্থাও ভালো নয়। এক কাপ চায়ের দাম দেড় শ টাকা শুনে চায়ের তেষ্টা উবে গেল। বলছি ২০০২ সালের কথা। এটা ছিল সেই বছরের ২৬ আগস্টের সকাল।
যে লোকটার জন্য এত অপেক্ষা, তাঁর নাম-পরিচয় জানার আগে শানে-নজুলটা শুনুন। এর আগের দিন, অর্থাৎ ২৫ আগস্ট রোববার সকালে খবরের খোঁজে গিয়েছিলাম মালিবাগের এসবি অফিসে। তখন এসবির প্রধান ছিলেন আনোয়ারুল ইকবাল। পরে তিনি পুলিশের আইজি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। আনোয়ারুল ইকবাল একসময় সিআইডির ডিটেকটিভ ট্রেনিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। তো সেদিন তাঁর রুমে বসে আছি, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে দুজন কর্মকর্তা এলেন। আমার উপস্থিতি দেখে ইশারা-ইঙ্গিতে তাঁদের কথা সারলেন। সেই ইশারার মধ্যে বুঝতে পারলাম, কোনো একটি বিশেষ ঘটনার তদন্তে এফবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা আসছেন। তাঁর সঙ্গে এসবির প্রধানের বৈঠক হবে।
অতিরিক্ত আইজিপি আনোয়ারুল ইকবাল খুব শক্ত মানুষ। তাঁকে এ কথা জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না। আর আমি জানতে চাইলেও তিনি উত্তর দেবেন না। এসবিতে আমার অনেক পরিচিত কর্মকর্তা। তাঁদের কারও কাছ থেকে এটা জানা যাবে। রুম থেকে বেরিয়ে পরিচিত একজন কর্মকর্তার কাছে গেলাম। তাঁর কাছে বিষয়টি তুলতেই মনে হলো, তিনি ঘটনা জানেন। তবে পুরোটা আমাকে বললেন না। যেটুকু বললেন সেটা হলো, কোকা-কোলার কান্ট্রি ডিরেক্টর অজয় মিত্র গুলশান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের ওপরমহলে হইচই শুরু হয়েছে। এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ফোন করে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেছে। সেই চাঁদার পরিমাণ অবিশ্বাস্য। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রথম টেলিফোনকে অতটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, বিষয়টা তত বড় হয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সেই সন্ত্রাসী তাঁকে আলটিমেটাম দিয়ে বলেছে, এই মাসের মধ্যে বিষয়টির মীমাংসা না হলে বউ-বাচ্চার সামনে গুলি করে মেরে ফেলবে। এই হুমকিতে কান্ট্রি ডিরেক্টর খুবই ভয় পেয়েছেন। তিনি নিজের বারিধারার বাসা ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছেন। এখন সেখানেই আছেন। কোকা-কোলা যেহেতু আমেরিকান কোম্পানি, সে কারণে মার্কিন প্রশাসন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বললেন না। এমনকি কোন হোটেলে উঠেছেন, তা-ও বললেন না। ঢাকায় তখন দুটি পাঁচ তারকা হোটেল। একটি হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, অন্যটি স্টারউডের শেরাটন হোটেল।
আমার মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে, আরও বিস্তারিত তথ্য লাগবে। একটু খোঁজখবর করতে গিয়ে জানলাম, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পিটার্স এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছেন। মনে হলো, পুলিশ ছাড়াও সব গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর করছে; কিন্তু সন্ত্রাসীকে কেউ ধরতে পারছে না।
এসবি অফিস থেকে বেরিয়ে ইস্কাটনের দিকে যাব। মৌচাক মোড়ে এসে দেখি, ইউএনবির সাইফুল হুদা (আমেরিকাপ্রবাসী) দাঁড়িয়ে। তিনি তখন প্রধানমন্ত্রীর বিট করতেন। তাঁর কাছে কোকা-কোলার প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, তাঁর বাল্যবন্ধু খালিদ রাজা কোকা-কোলায় বড় পদে চাকরি করেন। সেখানে গেলে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাইফুল হুদাকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে ছুটলাম বিজয় সরণির দিকে, কোকা-কোলার ঢাকা অফিসে। সাইফুল হুদা কোকা-কোলায় এসে খালিদ রাজাকে বাইরে ডেকে এনে ফিসফাস করে সব বললেন। কিন্তু খালিদ রাজা এমন ভান করলেন, যেন কিছুই জানেন না। শুধু বললেন, কিছু জানার থাকলে তাঁকে লিখে দিতে হবে। আমরা তা-ই করলাম। সাদা কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে সেটা খালিদ রাজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমরা বেরিয়ে এলাম।
সেখান থেকে বেরিয়ে আমার মনে হচ্ছিল, ঢাকায় দুটি পাঁচ তারকা হোটেলের একটিতে অজয় মিত্র উঠেছেন। হোটেলের অভ্যর্থনায় গিয়ে খোঁজ করলেই কিছু না কিছু জানা যাবে। প্রথমে এলাম সোনারগাঁওয়ে। সেখানকার অভ্যর্থনা থেকে বলা হলো, এই নামে কেউ নেই। এবার গেলাম শেরাটনে। অজয় মিত্রের নাম বলতেই অভ্যর্থনায় থাকা এক নারী আমাকে ভালো করে দেখে নিয়ে বললেন, এই অতিথি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। অভ্যর্থনার কর্মীর কাছে জানতে চাইলাম, তাঁর রুম নম্বর কত, তিনি সেটাও বললেন না।
সব পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে একাধিক ইন্টারকম সংযোগ থাকে। সেখান থেকে অতিথিদের সঙ্গে কথাও বলা যায়। কিছুক্ষণ লবিতে বসে অপেক্ষা করলাম। এরপর একটি ইন্টারকমের কাছে গিয়ে তাতে শূন্য ডায়াল করতেই মনে হলো, ইনফরমেশনের কেউ ধরেছেন। তাঁর কাছে অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি সেই রুমের পিএবিএক্স নম্বর বললেন। মনে হলো জাদুর কাঠি পেয়ে গেলাম। কল দিলাম সেই নম্বরে। এক নারী ফোন ধরে জানতে চাইলেন, কাকে চাই। আমি অজয় মিত্রের নাম বলতেই তিনি পরিচয় জানতে চাইলেন। এরপর সাংবাদিক শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন। আমাকে লাইনে রেখে নারী-পুরুষ হিন্দিতে কথা বললেন। এরপর আমার সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে ফোনটা রেখে দিলেন।
আমি হোটেল না ছেড়ে অভ্যর্থনায় বসেই থাকলাম। ঘণ্টাখানেক পর আবার ফোন দিলাম। এবার অজয় মিত্র নিজেই ফোন ধরলেন। খাঁটি বাংলায় বললেন, আমি কেন তাঁর জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। আপনার ওপর হুমকির বিষয়টি কাগজে এলে আপনি নিরাপদ হবেন। মনে হলো, এ কথায় কাজ হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, ভাবার জন্য একটু সময় দিন। আমি বললাম, অভ্যর্থনায় আছি।
আমার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। আড়াই ঘণ্টা পর অজয় মিত্র নিচে নামলেন, সঙ্গে তাঁর স্ত্রী। কথায় মনে হলো, তিনি খুবই ভয় পেয়েছেন। আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন আর চারদিকে তাকাচ্ছিলেন। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে সবই বললেন। শর্ত ছিল, তাঁর নাম প্রকাশ করা যাবে না। কোকা-কোলার নিয়ম অনুযায়ী কেউ গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে পারেন না।
অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে প্রথম ফোন করা হয় ১৪ আগস্ট (২০০২), এরপর ১৯ আগস্ট। ফোন করে বলা হয়, বাংলাদেশে কোকা-কোলা বিক্রির বিপরীতে প্রতি বোতলের জন্য তাকে ১০ পয়সা দিতে হবে। এই হিসাবে মাসে ৫০ লাখ টাকা তাকে দিতে হবে। সেটা না দিলে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে এবং কোকা-কোলার বিপণনব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমি জানতে চাইলাম, যিনি ফোন করেছিলেন, তাঁর কণ্ঠস্বর কেমন? তিনি বললেন, কম বয়স, কিন্তু গলাটা বেশ ভরাট। কী নাম বলেছেন? বললেন, জাহাঙ্গীর ফেরদৌস বা কালা জাহাঙ্গীর। অজয় মিত্র বললেন, তাঁকে ফোন করার আগে লোকটি তাঁর গতিবিধির সব তথ্য অনেক দিন ধরে জোগাড় করেছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী-সন্তান কোন গাড়িতে চলেন, কখন বাসা থেকে বের হন—সব তিনি জানেন। অজয় মিত্র আমাকে বললেন, এ ঘটনা নিয়ে তিনি গুলশান থানায় ২০ আগস্ট জিডি করেছেন।
অজয় মিত্র আরও বললেন, জিডি করার পর পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ও আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী তাঁকে ফোন করেন। তাঁর বারিধারার বাসায় পাহারাও বসানো হয়। কিন্তু তার পরও কেউ তাঁকে ফলো করছিল। হোটেলে আসার পরও ফোন এসেছে। বলা হয়েছে, কত দিন হোটেলে থাকবি?
পরে জানতে পারি, চাঁদা দেওয়ার টোপ দিয়ে ফার্মগেট থেকে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছিল। এফবিআই কর্মকর্তা তাঁকে জেরাও করেছিলেন। এটা ছিল ডামি চাঁদাবাজ। কালা জাহাঙ্গীর এ ঘটনার পর খুবই ক্ষুব্ধ হন।
অজয় মিত্রকে নিয়ে আমার তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ আগস্ট ২০০২। সেখানে অজয় মিত্রের কোনো বক্তব্য ছাপা হয়নি। তবে কোকা-কোলার মূল প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা ফার ইস্টের একটি বক্তব্য ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, কোকা-কোলা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থাশীল।
সেই খবর প্রকাশের পর কালা জাহাঙ্গীর ফোন করে প্রতিবাদ জানান। অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদও পাঠান। কিন্তু তখনকার পুলিশ কমিশনার আবদুল কাইয়ুম আমাকে বলেছিলেন, এই হুমকিদাতা যে কালা জাহাঙ্গীর, সে ব্যাপারে তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত। কয়েক দিন পর শুনলাম, অজয় মিত্র বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কোকা-কোলার অফিস বিজয় সরণি থেকে গুলশানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
অজয় মিত্র চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সোনিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ডিবি অফিসে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সোনিয়া আমাকে বলেছিলেন, কালা জাহাঙ্গীরের মাসে খরচ ৭০ লাখ টাকার বেশি। সেই টাকার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। কোকা-কোলার কর্তাকেও সে ছেড়ে দিত না।
সেদিন সোনিয়ার এই কথা শুনে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেন অজয় মিত্র!
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি। ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা
১১ মার্চ ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি। ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা
১১ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি। ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা
১১ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

অপেক্ষা নাকি মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। কোন মনীষী কথাটা বলেছিলেন, সেটা আর মনে নেই। কিন্তু কথা যে সত্যি, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আড়াই ঘণ্টা ধরে পাঁচ তারকা হোটেলের লবিতে বসে আছি। ভদ্রলোকের দেখা নেই। অবশ্য এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে ইন্টারকমে। তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আমার সঙ্গে দেখা
১১ মার্চ ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে