কামরুল হাসান

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে