কামরুল হাসান

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌধুরী। এসবিতে ওসি ওয়াচ পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের হাতে তখন মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না, ব্যক্তিগত সুসম্পর্কই ছিল খবর জোগাড়ের প্রধান অবলম্বন।
রওনকুল হক চৌধুরী কথায় কথায় বললেন, বড় একটি তদন্তের কাজে গুলশানে এসেছেন। অতিরিক্ত আইজিপি তাড়া দিয়েছেন দুই দিনের মধ্যে সেটা শেষ করতে হবে। তাঁর হাতে একটি খাম, তাতে একটি পাসপোর্টের ফটোকপি।
রওনকুল হকের কাছে আবদার করলাম, আমাকেও সঙ্গে নিতে হবে। আজকের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা হলে হয়তো এ ধরনের প্রস্তাব শুনে অবাক হতেন; কিন্তু রওনকুল হক চৌধুরী কোনো কথা না বলে রাজি হয়ে গেলেন। বললেন, মোটরসাইকেল থানায় থাক, আমার গাড়িতে ওঠেন। গুলশানের ওসি ফারুক আহমেদ তাঁকে কিছু তথ্য দিলেন। সেই তথ্য যাচাই করতে আমরা প্রথমে গেলাম বনানীর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী মার্কেটে।
এই মার্কেট তখন বেশ জমজমাট। সেই মার্কেটে ঢোকার সময় বাম কোনায় একটি নতুন ফ্যাশন হাউস। নাম ‘বুটিক ইসাবেলা’। ঢাকায় তখন ফ্যাশন হাউস শব্দটি মানুষ অত ভালো করে রপ্ত করতে পারেনি। প্রথমে গেলাম বুটিক ইসাবেলার ভেতরে।
তার আগে একটি কথা বলে রাখি, তদন্ত নিয়ে আমি তখন পর্যন্ত রওনকুল হক চৌধুরীর কাছে কোনো কিছু জানতে চাইনি। শুধু তাঁকে অনুসরণ করছি। প্রশ্ন যা করার তিনিই করছেন। তাঁর প্রশ্নের জবাবে বুটিক ইসাবেলার এক কর্মচারী বললেন, এই দোকানের মালিক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি এক নারীকে দোকানটি দিয়েছেন। কীভাবে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। সেই নারী তাঁর মেয়ের নামে দোকানের নাম রেখেছেন ‘বুটিক ইসাবেলা’। কী নাম সেই মালিকের? দোকানি থতমত খেলেন। জানালেন, তাঁর নাম মিসেস উইসন।
উইসন শুনে রওনকুল হক চৌধুরী পাসপোর্টের ফটোকপিটি নিজে দেখলেন, আমাকে দেখালেন। দেখি, ঝাঁকড়া চুলের এক নারীর ছবি। নাম বিদিশা সিদ্দিক উইসন। স্বামীর নাম পিটার স্টুয়ার্ট উইসন। কর্মচারীর কাছে পুলিশ পরিচয় দেওয়ার পর বললেন, ম্যাডাম গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে থাকেন। বাড়ির নম্বরও দিলেন।
এবার আমাদের গন্তব্য সেই বাড়ি। তার আগে বিদিশা সিদ্দিকের পরিচয়টা একটু বলে রাখি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক, নামকরা কবি আবুবকর সিদ্দিকের বড় মেয়ে বিদিশা।
১৯৮০ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হয়ে আসেন পিটার। ১৯৮৫ সালে সেই শিক্ষকের সঙ্গে কিশোরী কন্যাকে বিয়ে দেন আবুবকর সিদ্দিক। পিটারের নাম হয় পারভেজ আহমেদ। বিয়ের পর পিটার তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা হন বিদিশা। ইতিমধ্যে ফ্যাশনে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ১৯৯৫ সালের দিকে ঢাকায় ফিরে এসে ফ্যাশন হাউসের ব্যবসা শুরু করেন। তখন তিনি গুলশানে বাসা ভাড়া নেন।
গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের সেই বাড়িতে আমরা গিয়ে দেখি দোতলা বাড়ি, নিচতলায় বায়িং হাউস, ওপরে এক নারী একা থাকেন। কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দিয়ে বললেন, আমার নাম বিদিশা। বলেন, কী জানতে চান? শুরু হলো রওনকুল হকের জেরা। দু-একটি প্রশ্ন শুনেই একটা স্কুপ নিউজের গন্ধ নাকে লাগে। কান খাড়া করে রাখি। কোনো কিছুই যেন মিস না হয়।
প্রথম প্রশ্ন, আপনি তো লন্ডনে যাচ্ছিলেন? বিমানবন্দরে ঢুকে বোর্ডিং করলেন, তারপর কী হলো যে ফিরে এলেন? কী এমন ঘটল যে, লন্ডনযাত্রা স্থগিত করতে হলো?
সামনে বসা নারীকে দেখে বেশ ঋজু মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আমাকে অবাক করল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে বললেন, এটা আমার ব্যক্তিগত অধিকার। আমি কোথায় যাব, যাব না, সেটা আমার ব্যাপার। কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। আপনি আমাকে এ প্রশ্ন করতে পারেন না।
রওনকুল হক চৌধুরীও ছাড়ার পাত্র নন। তিনি বললেন, ম্যাডাম, সবই ঠিক আছে। কিন্তু যে সন্দেহ করে এসবি আপনার পাসপোর্ট নিয়েছে, সেটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি পাসপোর্ট ফেরত পাবেন না। আর দেশের বাইরেও যেতে পারবেন না। এখন আপনার উচিত আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করা।
এবার সেই নারী কিছুটা নরম হলেন। কোনো রকম রাখঢাক না করে একে একে প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
রওনকুল হক চৌধুরী আবার জানতে চাইলেন:
–কাল আপনার লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। বোর্ডিং পাস নেওয়ার পরও আপনি যাননি কেন?
–পারসোনাল কারণ।
–ওই একই ফ্লাইটে এরশাদেরও যাওয়ার কথা ছিল।
–হতে পারে, সেটা তাঁর ব্যাপার। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।
–এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আপনার পরিচয় নেই?
–থাকবে না কেন! আছে। কিন্তু তাতে কী? পরিচয় থাকাটা কি অন্যায়?
–এরশাদ সাহেব তো আপনার এখানে প্রায়ই আসেন।
–হ্যাঁ, আসেন। উনি আমার বিজনেস পার্টনার।
–কীভাবে পরিচয়?
–ফ্রান্স দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয়। তারপর আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়। তিনি আমার বাসায় আসা-যাওয়া করেন।
তারপর তিনি যা বললেন, তার সার কথা হলো–এরশাদ এ ঘটনার কিছুদিন আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। ফ্রান্স দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিজেই তাঁকে এরশাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই পরিচয়ের সূত্রে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়।
রওনকুল হক চৌধুরীর সেই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিদিশা তাঁর বই ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’-এ বিস্তারিত লিখেছেন। সেখান থেকে একটু তুলে দিলাম।
‘আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছিলাম। তবে একসঙ্গে নয়, এয়ারপোর্টে ঢুকেছি আলাদা আলাদা। আমি বিদিশা উইসন হিসেবে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে। আর এরশাদ সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে। পরিকল্পনা ছিল একই ফ্লাইটে যাব, লন্ডনে নেমে একত্রিত হব।
আমার বোর্ডিং পাস হয়ে গেছে, লাগেজ দিয়ে দিয়েছি। বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশনের সামনে। তখনই মোবাইলে ফোন এল এরশাদের।
–আমার একটু অসুবিধা হয়েছে। সরকার আমাকে আটকে দিয়েছে। আমি যেতে পারছি না। তুমি চলে যাও।
–আমি একা গিয়ে কী করব?
–না, না, তুমি চলে যাও। এখন তুমি না গেলে এ নিয়ে একটা স্ক্যান্ডাল হতে পারে।
–আমি ওসবের তোয়াক্কা করি না। তোমার যাওয়া না হলে আমিও যাব না।
আমি ইমিগ্রেশন থেকে ফিরে এলাম ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাউন্টারে। বললাম, আমি এই ফ্লাইটে যাচ্ছি না। আমার লাগেজ অফলোড করো।
বিদিশা লিখেছেন: ‘এই ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক নিয়ে আর ফিসফিসানি নয়, চারদিকে সরব আলোচনা শুরু হয়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়–এরশাদ ও বিদিশা উইসন একসঙ্গে লন্ডনে যাচ্ছিলেন।
এয়ারপোর্টে এরশাদের যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলে বিদিশাও আর যাননি।
পরদিন আমার বাসায় হাজির গোয়েন্দা সংস্থার লোক। নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁরা আমার পাসপোর্টটি চাইল। এরশাদ যে আমার বাসায় নিয়মিত আসেন, এটা গোপন করার কোনো বিষয় নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তিনি যেখানেই যান, তাঁর পেছনে পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও যায়। খেয়াল করেছি, আমার বাসায় থাকাকালে বাসার সামনে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে অপেক্ষা করতে। তবে এ নিয়ে এরশাদের মধ্যে কোনো ধরনের লাজলজ্জা বা বিব্রতভাব দেখিনি। বরং তাঁর মতো একজন বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়েছে আমার মতো একজন যুবতী–এ বিষয়টা প্রকাশ করার মধ্যে তিনি একধরনের বাহাদুরি অনুভব করতেন। সেটা প্রকাশও করতেন নির্দ্বিধায়।’
বিদিশার বাড়ি থেকে বের হতে হতে বিকেল হয়ে যায়। পরদিন জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় দুই কলাম করে ছাপা হয় ‘নতুন বান্ধবী জোটালেন এরশাদ’। নতুন বান্ধবীর খবর ফাঁস হতেই চারদিকে হইচই পড়ে যায়। তুমুল আলোচনায় আসেন বিদিশা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে বিদিশাকে ফোন করে পুরোনো তথ্যগুলো ঝালাই করে নিতেই স্বভাবসুলভ হো হো করে হাসলেন, তারপর বললেন, এত দিন পর এসব লিখে কী হবে?
আরও পড়ুন:

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌধুরী। এসবিতে ওসি ওয়াচ পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের হাতে তখন মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না, ব্যক্তিগত সুসম্পর্কই ছিল খবর জোগাড়ের প্রধান অবলম্বন।
রওনকুল হক চৌধুরী কথায় কথায় বললেন, বড় একটি তদন্তের কাজে গুলশানে এসেছেন। অতিরিক্ত আইজিপি তাড়া দিয়েছেন দুই দিনের মধ্যে সেটা শেষ করতে হবে। তাঁর হাতে একটি খাম, তাতে একটি পাসপোর্টের ফটোকপি।
রওনকুল হকের কাছে আবদার করলাম, আমাকেও সঙ্গে নিতে হবে। আজকের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা হলে হয়তো এ ধরনের প্রস্তাব শুনে অবাক হতেন; কিন্তু রওনকুল হক চৌধুরী কোনো কথা না বলে রাজি হয়ে গেলেন। বললেন, মোটরসাইকেল থানায় থাক, আমার গাড়িতে ওঠেন। গুলশানের ওসি ফারুক আহমেদ তাঁকে কিছু তথ্য দিলেন। সেই তথ্য যাচাই করতে আমরা প্রথমে গেলাম বনানীর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী মার্কেটে।
এই মার্কেট তখন বেশ জমজমাট। সেই মার্কেটে ঢোকার সময় বাম কোনায় একটি নতুন ফ্যাশন হাউস। নাম ‘বুটিক ইসাবেলা’। ঢাকায় তখন ফ্যাশন হাউস শব্দটি মানুষ অত ভালো করে রপ্ত করতে পারেনি। প্রথমে গেলাম বুটিক ইসাবেলার ভেতরে।
তার আগে একটি কথা বলে রাখি, তদন্ত নিয়ে আমি তখন পর্যন্ত রওনকুল হক চৌধুরীর কাছে কোনো কিছু জানতে চাইনি। শুধু তাঁকে অনুসরণ করছি। প্রশ্ন যা করার তিনিই করছেন। তাঁর প্রশ্নের জবাবে বুটিক ইসাবেলার এক কর্মচারী বললেন, এই দোকানের মালিক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি এক নারীকে দোকানটি দিয়েছেন। কীভাবে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। সেই নারী তাঁর মেয়ের নামে দোকানের নাম রেখেছেন ‘বুটিক ইসাবেলা’। কী নাম সেই মালিকের? দোকানি থতমত খেলেন। জানালেন, তাঁর নাম মিসেস উইসন।
উইসন শুনে রওনকুল হক চৌধুরী পাসপোর্টের ফটোকপিটি নিজে দেখলেন, আমাকে দেখালেন। দেখি, ঝাঁকড়া চুলের এক নারীর ছবি। নাম বিদিশা সিদ্দিক উইসন। স্বামীর নাম পিটার স্টুয়ার্ট উইসন। কর্মচারীর কাছে পুলিশ পরিচয় দেওয়ার পর বললেন, ম্যাডাম গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে থাকেন। বাড়ির নম্বরও দিলেন।
এবার আমাদের গন্তব্য সেই বাড়ি। তার আগে বিদিশা সিদ্দিকের পরিচয়টা একটু বলে রাখি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক, নামকরা কবি আবুবকর সিদ্দিকের বড় মেয়ে বিদিশা।
১৯৮০ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হয়ে আসেন পিটার। ১৯৮৫ সালে সেই শিক্ষকের সঙ্গে কিশোরী কন্যাকে বিয়ে দেন আবুবকর সিদ্দিক। পিটারের নাম হয় পারভেজ আহমেদ। বিয়ের পর পিটার তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা হন বিদিশা। ইতিমধ্যে ফ্যাশনে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ১৯৯৫ সালের দিকে ঢাকায় ফিরে এসে ফ্যাশন হাউসের ব্যবসা শুরু করেন। তখন তিনি গুলশানে বাসা ভাড়া নেন।
গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের সেই বাড়িতে আমরা গিয়ে দেখি দোতলা বাড়ি, নিচতলায় বায়িং হাউস, ওপরে এক নারী একা থাকেন। কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দিয়ে বললেন, আমার নাম বিদিশা। বলেন, কী জানতে চান? শুরু হলো রওনকুল হকের জেরা। দু-একটি প্রশ্ন শুনেই একটা স্কুপ নিউজের গন্ধ নাকে লাগে। কান খাড়া করে রাখি। কোনো কিছুই যেন মিস না হয়।
প্রথম প্রশ্ন, আপনি তো লন্ডনে যাচ্ছিলেন? বিমানবন্দরে ঢুকে বোর্ডিং করলেন, তারপর কী হলো যে ফিরে এলেন? কী এমন ঘটল যে, লন্ডনযাত্রা স্থগিত করতে হলো?
সামনে বসা নারীকে দেখে বেশ ঋজু মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আমাকে অবাক করল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে বললেন, এটা আমার ব্যক্তিগত অধিকার। আমি কোথায় যাব, যাব না, সেটা আমার ব্যাপার। কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। আপনি আমাকে এ প্রশ্ন করতে পারেন না।
রওনকুল হক চৌধুরীও ছাড়ার পাত্র নন। তিনি বললেন, ম্যাডাম, সবই ঠিক আছে। কিন্তু যে সন্দেহ করে এসবি আপনার পাসপোর্ট নিয়েছে, সেটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি পাসপোর্ট ফেরত পাবেন না। আর দেশের বাইরেও যেতে পারবেন না। এখন আপনার উচিত আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করা।
এবার সেই নারী কিছুটা নরম হলেন। কোনো রকম রাখঢাক না করে একে একে প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
রওনকুল হক চৌধুরী আবার জানতে চাইলেন:
–কাল আপনার লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। বোর্ডিং পাস নেওয়ার পরও আপনি যাননি কেন?
–পারসোনাল কারণ।
–ওই একই ফ্লাইটে এরশাদেরও যাওয়ার কথা ছিল।
–হতে পারে, সেটা তাঁর ব্যাপার। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।
–এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আপনার পরিচয় নেই?
–থাকবে না কেন! আছে। কিন্তু তাতে কী? পরিচয় থাকাটা কি অন্যায়?
–এরশাদ সাহেব তো আপনার এখানে প্রায়ই আসেন।
–হ্যাঁ, আসেন। উনি আমার বিজনেস পার্টনার।
–কীভাবে পরিচয়?
–ফ্রান্স দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয়। তারপর আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়। তিনি আমার বাসায় আসা-যাওয়া করেন।
তারপর তিনি যা বললেন, তার সার কথা হলো–এরশাদ এ ঘটনার কিছুদিন আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। ফ্রান্স দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিজেই তাঁকে এরশাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই পরিচয়ের সূত্রে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়।
রওনকুল হক চৌধুরীর সেই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিদিশা তাঁর বই ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’-এ বিস্তারিত লিখেছেন। সেখান থেকে একটু তুলে দিলাম।
‘আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছিলাম। তবে একসঙ্গে নয়, এয়ারপোর্টে ঢুকেছি আলাদা আলাদা। আমি বিদিশা উইসন হিসেবে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে। আর এরশাদ সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে। পরিকল্পনা ছিল একই ফ্লাইটে যাব, লন্ডনে নেমে একত্রিত হব।
আমার বোর্ডিং পাস হয়ে গেছে, লাগেজ দিয়ে দিয়েছি। বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশনের সামনে। তখনই মোবাইলে ফোন এল এরশাদের।
–আমার একটু অসুবিধা হয়েছে। সরকার আমাকে আটকে দিয়েছে। আমি যেতে পারছি না। তুমি চলে যাও।
–আমি একা গিয়ে কী করব?
–না, না, তুমি চলে যাও। এখন তুমি না গেলে এ নিয়ে একটা স্ক্যান্ডাল হতে পারে।
–আমি ওসবের তোয়াক্কা করি না। তোমার যাওয়া না হলে আমিও যাব না।
আমি ইমিগ্রেশন থেকে ফিরে এলাম ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাউন্টারে। বললাম, আমি এই ফ্লাইটে যাচ্ছি না। আমার লাগেজ অফলোড করো।
বিদিশা লিখেছেন: ‘এই ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক নিয়ে আর ফিসফিসানি নয়, চারদিকে সরব আলোচনা শুরু হয়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়–এরশাদ ও বিদিশা উইসন একসঙ্গে লন্ডনে যাচ্ছিলেন।
এয়ারপোর্টে এরশাদের যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলে বিদিশাও আর যাননি।
পরদিন আমার বাসায় হাজির গোয়েন্দা সংস্থার লোক। নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁরা আমার পাসপোর্টটি চাইল। এরশাদ যে আমার বাসায় নিয়মিত আসেন, এটা গোপন করার কোনো বিষয় নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তিনি যেখানেই যান, তাঁর পেছনে পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও যায়। খেয়াল করেছি, আমার বাসায় থাকাকালে বাসার সামনে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে অপেক্ষা করতে। তবে এ নিয়ে এরশাদের মধ্যে কোনো ধরনের লাজলজ্জা বা বিব্রতভাব দেখিনি। বরং তাঁর মতো একজন বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়েছে আমার মতো একজন যুবতী–এ বিষয়টা প্রকাশ করার মধ্যে তিনি একধরনের বাহাদুরি অনুভব করতেন। সেটা প্রকাশও করতেন নির্দ্বিধায়।’
বিদিশার বাড়ি থেকে বের হতে হতে বিকেল হয়ে যায়। পরদিন জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় দুই কলাম করে ছাপা হয় ‘নতুন বান্ধবী জোটালেন এরশাদ’। নতুন বান্ধবীর খবর ফাঁস হতেই চারদিকে হইচই পড়ে যায়। তুমুল আলোচনায় আসেন বিদিশা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে বিদিশাকে ফোন করে পুরোনো তথ্যগুলো ঝালাই করে নিতেই স্বভাবসুলভ হো হো করে হাসলেন, তারপর বললেন, এত দিন পর এসব লিখে কী হবে?
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌধুরী। এসবিতে ওসি ওয়াচ পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের হাতে তখন মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না, ব্যক্তিগত সুসম্পর্কই ছিল খবর জোগাড়ের প্রধান অবলম্বন।
রওনকুল হক চৌধুরী কথায় কথায় বললেন, বড় একটি তদন্তের কাজে গুলশানে এসেছেন। অতিরিক্ত আইজিপি তাড়া দিয়েছেন দুই দিনের মধ্যে সেটা শেষ করতে হবে। তাঁর হাতে একটি খাম, তাতে একটি পাসপোর্টের ফটোকপি।
রওনকুল হকের কাছে আবদার করলাম, আমাকেও সঙ্গে নিতে হবে। আজকের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা হলে হয়তো এ ধরনের প্রস্তাব শুনে অবাক হতেন; কিন্তু রওনকুল হক চৌধুরী কোনো কথা না বলে রাজি হয়ে গেলেন। বললেন, মোটরসাইকেল থানায় থাক, আমার গাড়িতে ওঠেন। গুলশানের ওসি ফারুক আহমেদ তাঁকে কিছু তথ্য দিলেন। সেই তথ্য যাচাই করতে আমরা প্রথমে গেলাম বনানীর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী মার্কেটে।
এই মার্কেট তখন বেশ জমজমাট। সেই মার্কেটে ঢোকার সময় বাম কোনায় একটি নতুন ফ্যাশন হাউস। নাম ‘বুটিক ইসাবেলা’। ঢাকায় তখন ফ্যাশন হাউস শব্দটি মানুষ অত ভালো করে রপ্ত করতে পারেনি। প্রথমে গেলাম বুটিক ইসাবেলার ভেতরে।
তার আগে একটি কথা বলে রাখি, তদন্ত নিয়ে আমি তখন পর্যন্ত রওনকুল হক চৌধুরীর কাছে কোনো কিছু জানতে চাইনি। শুধু তাঁকে অনুসরণ করছি। প্রশ্ন যা করার তিনিই করছেন। তাঁর প্রশ্নের জবাবে বুটিক ইসাবেলার এক কর্মচারী বললেন, এই দোকানের মালিক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি এক নারীকে দোকানটি দিয়েছেন। কীভাবে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। সেই নারী তাঁর মেয়ের নামে দোকানের নাম রেখেছেন ‘বুটিক ইসাবেলা’। কী নাম সেই মালিকের? দোকানি থতমত খেলেন। জানালেন, তাঁর নাম মিসেস উইসন।
উইসন শুনে রওনকুল হক চৌধুরী পাসপোর্টের ফটোকপিটি নিজে দেখলেন, আমাকে দেখালেন। দেখি, ঝাঁকড়া চুলের এক নারীর ছবি। নাম বিদিশা সিদ্দিক উইসন। স্বামীর নাম পিটার স্টুয়ার্ট উইসন। কর্মচারীর কাছে পুলিশ পরিচয় দেওয়ার পর বললেন, ম্যাডাম গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে থাকেন। বাড়ির নম্বরও দিলেন।
এবার আমাদের গন্তব্য সেই বাড়ি। তার আগে বিদিশা সিদ্দিকের পরিচয়টা একটু বলে রাখি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক, নামকরা কবি আবুবকর সিদ্দিকের বড় মেয়ে বিদিশা।
১৯৮০ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হয়ে আসেন পিটার। ১৯৮৫ সালে সেই শিক্ষকের সঙ্গে কিশোরী কন্যাকে বিয়ে দেন আবুবকর সিদ্দিক। পিটারের নাম হয় পারভেজ আহমেদ। বিয়ের পর পিটার তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা হন বিদিশা। ইতিমধ্যে ফ্যাশনে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ১৯৯৫ সালের দিকে ঢাকায় ফিরে এসে ফ্যাশন হাউসের ব্যবসা শুরু করেন। তখন তিনি গুলশানে বাসা ভাড়া নেন।
গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের সেই বাড়িতে আমরা গিয়ে দেখি দোতলা বাড়ি, নিচতলায় বায়িং হাউস, ওপরে এক নারী একা থাকেন। কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দিয়ে বললেন, আমার নাম বিদিশা। বলেন, কী জানতে চান? শুরু হলো রওনকুল হকের জেরা। দু-একটি প্রশ্ন শুনেই একটা স্কুপ নিউজের গন্ধ নাকে লাগে। কান খাড়া করে রাখি। কোনো কিছুই যেন মিস না হয়।
প্রথম প্রশ্ন, আপনি তো লন্ডনে যাচ্ছিলেন? বিমানবন্দরে ঢুকে বোর্ডিং করলেন, তারপর কী হলো যে ফিরে এলেন? কী এমন ঘটল যে, লন্ডনযাত্রা স্থগিত করতে হলো?
সামনে বসা নারীকে দেখে বেশ ঋজু মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আমাকে অবাক করল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে বললেন, এটা আমার ব্যক্তিগত অধিকার। আমি কোথায় যাব, যাব না, সেটা আমার ব্যাপার। কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। আপনি আমাকে এ প্রশ্ন করতে পারেন না।
রওনকুল হক চৌধুরীও ছাড়ার পাত্র নন। তিনি বললেন, ম্যাডাম, সবই ঠিক আছে। কিন্তু যে সন্দেহ করে এসবি আপনার পাসপোর্ট নিয়েছে, সেটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি পাসপোর্ট ফেরত পাবেন না। আর দেশের বাইরেও যেতে পারবেন না। এখন আপনার উচিত আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করা।
এবার সেই নারী কিছুটা নরম হলেন। কোনো রকম রাখঢাক না করে একে একে প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
রওনকুল হক চৌধুরী আবার জানতে চাইলেন:
–কাল আপনার লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। বোর্ডিং পাস নেওয়ার পরও আপনি যাননি কেন?
–পারসোনাল কারণ।
–ওই একই ফ্লাইটে এরশাদেরও যাওয়ার কথা ছিল।
–হতে পারে, সেটা তাঁর ব্যাপার। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।
–এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আপনার পরিচয় নেই?
–থাকবে না কেন! আছে। কিন্তু তাতে কী? পরিচয় থাকাটা কি অন্যায়?
–এরশাদ সাহেব তো আপনার এখানে প্রায়ই আসেন।
–হ্যাঁ, আসেন। উনি আমার বিজনেস পার্টনার।
–কীভাবে পরিচয়?
–ফ্রান্স দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয়। তারপর আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়। তিনি আমার বাসায় আসা-যাওয়া করেন।
তারপর তিনি যা বললেন, তার সার কথা হলো–এরশাদ এ ঘটনার কিছুদিন আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। ফ্রান্স দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিজেই তাঁকে এরশাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই পরিচয়ের সূত্রে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়।
রওনকুল হক চৌধুরীর সেই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিদিশা তাঁর বই ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’-এ বিস্তারিত লিখেছেন। সেখান থেকে একটু তুলে দিলাম।
‘আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছিলাম। তবে একসঙ্গে নয়, এয়ারপোর্টে ঢুকেছি আলাদা আলাদা। আমি বিদিশা উইসন হিসেবে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে। আর এরশাদ সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে। পরিকল্পনা ছিল একই ফ্লাইটে যাব, লন্ডনে নেমে একত্রিত হব।
আমার বোর্ডিং পাস হয়ে গেছে, লাগেজ দিয়ে দিয়েছি। বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশনের সামনে। তখনই মোবাইলে ফোন এল এরশাদের।
–আমার একটু অসুবিধা হয়েছে। সরকার আমাকে আটকে দিয়েছে। আমি যেতে পারছি না। তুমি চলে যাও।
–আমি একা গিয়ে কী করব?
–না, না, তুমি চলে যাও। এখন তুমি না গেলে এ নিয়ে একটা স্ক্যান্ডাল হতে পারে।
–আমি ওসবের তোয়াক্কা করি না। তোমার যাওয়া না হলে আমিও যাব না।
আমি ইমিগ্রেশন থেকে ফিরে এলাম ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাউন্টারে। বললাম, আমি এই ফ্লাইটে যাচ্ছি না। আমার লাগেজ অফলোড করো।
বিদিশা লিখেছেন: ‘এই ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক নিয়ে আর ফিসফিসানি নয়, চারদিকে সরব আলোচনা শুরু হয়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়–এরশাদ ও বিদিশা উইসন একসঙ্গে লন্ডনে যাচ্ছিলেন।
এয়ারপোর্টে এরশাদের যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলে বিদিশাও আর যাননি।
পরদিন আমার বাসায় হাজির গোয়েন্দা সংস্থার লোক। নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁরা আমার পাসপোর্টটি চাইল। এরশাদ যে আমার বাসায় নিয়মিত আসেন, এটা গোপন করার কোনো বিষয় নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তিনি যেখানেই যান, তাঁর পেছনে পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও যায়। খেয়াল করেছি, আমার বাসায় থাকাকালে বাসার সামনে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে অপেক্ষা করতে। তবে এ নিয়ে এরশাদের মধ্যে কোনো ধরনের লাজলজ্জা বা বিব্রতভাব দেখিনি। বরং তাঁর মতো একজন বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়েছে আমার মতো একজন যুবতী–এ বিষয়টা প্রকাশ করার মধ্যে তিনি একধরনের বাহাদুরি অনুভব করতেন। সেটা প্রকাশও করতেন নির্দ্বিধায়।’
বিদিশার বাড়ি থেকে বের হতে হতে বিকেল হয়ে যায়। পরদিন জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় দুই কলাম করে ছাপা হয় ‘নতুন বান্ধবী জোটালেন এরশাদ’। নতুন বান্ধবীর খবর ফাঁস হতেই চারদিকে হইচই পড়ে যায়। তুমুল আলোচনায় আসেন বিদিশা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে বিদিশাকে ফোন করে পুরোনো তথ্যগুলো ঝালাই করে নিতেই স্বভাবসুলভ হো হো করে হাসলেন, তারপর বললেন, এত দিন পর এসব লিখে কী হবে?
আরও পড়ুন:

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌধুরী। এসবিতে ওসি ওয়াচ পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের হাতে তখন মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না, ব্যক্তিগত সুসম্পর্কই ছিল খবর জোগাড়ের প্রধান অবলম্বন।
রওনকুল হক চৌধুরী কথায় কথায় বললেন, বড় একটি তদন্তের কাজে গুলশানে এসেছেন। অতিরিক্ত আইজিপি তাড়া দিয়েছেন দুই দিনের মধ্যে সেটা শেষ করতে হবে। তাঁর হাতে একটি খাম, তাতে একটি পাসপোর্টের ফটোকপি।
রওনকুল হকের কাছে আবদার করলাম, আমাকেও সঙ্গে নিতে হবে। আজকের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা হলে হয়তো এ ধরনের প্রস্তাব শুনে অবাক হতেন; কিন্তু রওনকুল হক চৌধুরী কোনো কথা না বলে রাজি হয়ে গেলেন। বললেন, মোটরসাইকেল থানায় থাক, আমার গাড়িতে ওঠেন। গুলশানের ওসি ফারুক আহমেদ তাঁকে কিছু তথ্য দিলেন। সেই তথ্য যাচাই করতে আমরা প্রথমে গেলাম বনানীর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী মার্কেটে।
এই মার্কেট তখন বেশ জমজমাট। সেই মার্কেটে ঢোকার সময় বাম কোনায় একটি নতুন ফ্যাশন হাউস। নাম ‘বুটিক ইসাবেলা’। ঢাকায় তখন ফ্যাশন হাউস শব্দটি মানুষ অত ভালো করে রপ্ত করতে পারেনি। প্রথমে গেলাম বুটিক ইসাবেলার ভেতরে।
তার আগে একটি কথা বলে রাখি, তদন্ত নিয়ে আমি তখন পর্যন্ত রওনকুল হক চৌধুরীর কাছে কোনো কিছু জানতে চাইনি। শুধু তাঁকে অনুসরণ করছি। প্রশ্ন যা করার তিনিই করছেন। তাঁর প্রশ্নের জবাবে বুটিক ইসাবেলার এক কর্মচারী বললেন, এই দোকানের মালিক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি এক নারীকে দোকানটি দিয়েছেন। কীভাবে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। সেই নারী তাঁর মেয়ের নামে দোকানের নাম রেখেছেন ‘বুটিক ইসাবেলা’। কী নাম সেই মালিকের? দোকানি থতমত খেলেন। জানালেন, তাঁর নাম মিসেস উইসন।
উইসন শুনে রওনকুল হক চৌধুরী পাসপোর্টের ফটোকপিটি নিজে দেখলেন, আমাকে দেখালেন। দেখি, ঝাঁকড়া চুলের এক নারীর ছবি। নাম বিদিশা সিদ্দিক উইসন। স্বামীর নাম পিটার স্টুয়ার্ট উইসন। কর্মচারীর কাছে পুলিশ পরিচয় দেওয়ার পর বললেন, ম্যাডাম গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে থাকেন। বাড়ির নম্বরও দিলেন।
এবার আমাদের গন্তব্য সেই বাড়ি। তার আগে বিদিশা সিদ্দিকের পরিচয়টা একটু বলে রাখি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক, নামকরা কবি আবুবকর সিদ্দিকের বড় মেয়ে বিদিশা।
১৯৮০ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হয়ে আসেন পিটার। ১৯৮৫ সালে সেই শিক্ষকের সঙ্গে কিশোরী কন্যাকে বিয়ে দেন আবুবকর সিদ্দিক। পিটারের নাম হয় পারভেজ আহমেদ। বিয়ের পর পিটার তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা হন বিদিশা। ইতিমধ্যে ফ্যাশনে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ১৯৯৫ সালের দিকে ঢাকায় ফিরে এসে ফ্যাশন হাউসের ব্যবসা শুরু করেন। তখন তিনি গুলশানে বাসা ভাড়া নেন।
গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের সেই বাড়িতে আমরা গিয়ে দেখি দোতলা বাড়ি, নিচতলায় বায়িং হাউস, ওপরে এক নারী একা থাকেন। কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলেন। পরিচয় দিয়ে বললেন, আমার নাম বিদিশা। বলেন, কী জানতে চান? শুরু হলো রওনকুল হকের জেরা। দু-একটি প্রশ্ন শুনেই একটা স্কুপ নিউজের গন্ধ নাকে লাগে। কান খাড়া করে রাখি। কোনো কিছুই যেন মিস না হয়।
প্রথম প্রশ্ন, আপনি তো লন্ডনে যাচ্ছিলেন? বিমানবন্দরে ঢুকে বোর্ডিং করলেন, তারপর কী হলো যে ফিরে এলেন? কী এমন ঘটল যে, লন্ডনযাত্রা স্থগিত করতে হলো?
সামনে বসা নারীকে দেখে বেশ ঋজু মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আমাকে অবাক করল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে বললেন, এটা আমার ব্যক্তিগত অধিকার। আমি কোথায় যাব, যাব না, সেটা আমার ব্যাপার। কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। আপনি আমাকে এ প্রশ্ন করতে পারেন না।
রওনকুল হক চৌধুরীও ছাড়ার পাত্র নন। তিনি বললেন, ম্যাডাম, সবই ঠিক আছে। কিন্তু যে সন্দেহ করে এসবি আপনার পাসপোর্ট নিয়েছে, সেটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি পাসপোর্ট ফেরত পাবেন না। আর দেশের বাইরেও যেতে পারবেন না। এখন আপনার উচিত আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করা।
এবার সেই নারী কিছুটা নরম হলেন। কোনো রকম রাখঢাক না করে একে একে প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
রওনকুল হক চৌধুরী আবার জানতে চাইলেন:
–কাল আপনার লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। বোর্ডিং পাস নেওয়ার পরও আপনি যাননি কেন?
–পারসোনাল কারণ।
–ওই একই ফ্লাইটে এরশাদেরও যাওয়ার কথা ছিল।
–হতে পারে, সেটা তাঁর ব্যাপার। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।
–এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আপনার পরিচয় নেই?
–থাকবে না কেন! আছে। কিন্তু তাতে কী? পরিচয় থাকাটা কি অন্যায়?
–এরশাদ সাহেব তো আপনার এখানে প্রায়ই আসেন।
–হ্যাঁ, আসেন। উনি আমার বিজনেস পার্টনার।
–কীভাবে পরিচয়?
–ফ্রান্স দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয়। তারপর আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়। তিনি আমার বাসায় আসা-যাওয়া করেন।
তারপর তিনি যা বললেন, তার সার কথা হলো–এরশাদ এ ঘটনার কিছুদিন আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। ফ্রান্স দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিজেই তাঁকে এরশাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই পরিচয়ের সূত্রে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়।
রওনকুল হক চৌধুরীর সেই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিদিশা তাঁর বই ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’-এ বিস্তারিত লিখেছেন। সেখান থেকে একটু তুলে দিলাম।
‘আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছিলাম। তবে একসঙ্গে নয়, এয়ারপোর্টে ঢুকেছি আলাদা আলাদা। আমি বিদিশা উইসন হিসেবে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে। আর এরশাদ সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে। পরিকল্পনা ছিল একই ফ্লাইটে যাব, লন্ডনে নেমে একত্রিত হব।
আমার বোর্ডিং পাস হয়ে গেছে, লাগেজ দিয়ে দিয়েছি। বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশনের সামনে। তখনই মোবাইলে ফোন এল এরশাদের।
–আমার একটু অসুবিধা হয়েছে। সরকার আমাকে আটকে দিয়েছে। আমি যেতে পারছি না। তুমি চলে যাও।
–আমি একা গিয়ে কী করব?
–না, না, তুমি চলে যাও। এখন তুমি না গেলে এ নিয়ে একটা স্ক্যান্ডাল হতে পারে।
–আমি ওসবের তোয়াক্কা করি না। তোমার যাওয়া না হলে আমিও যাব না।
আমি ইমিগ্রেশন থেকে ফিরে এলাম ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাউন্টারে। বললাম, আমি এই ফ্লাইটে যাচ্ছি না। আমার লাগেজ অফলোড করো।
বিদিশা লিখেছেন: ‘এই ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক নিয়ে আর ফিসফিসানি নয়, চারদিকে সরব আলোচনা শুরু হয়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়–এরশাদ ও বিদিশা উইসন একসঙ্গে লন্ডনে যাচ্ছিলেন।
এয়ারপোর্টে এরশাদের যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলে বিদিশাও আর যাননি।
পরদিন আমার বাসায় হাজির গোয়েন্দা সংস্থার লোক। নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাঁরা আমার পাসপোর্টটি চাইল। এরশাদ যে আমার বাসায় নিয়মিত আসেন, এটা গোপন করার কোনো বিষয় নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তিনি যেখানেই যান, তাঁর পেছনে পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও যায়। খেয়াল করেছি, আমার বাসায় থাকাকালে বাসার সামনে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে অপেক্ষা করতে। তবে এ নিয়ে এরশাদের মধ্যে কোনো ধরনের লাজলজ্জা বা বিব্রতভাব দেখিনি। বরং তাঁর মতো একজন বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়েছে আমার মতো একজন যুবতী–এ বিষয়টা প্রকাশ করার মধ্যে তিনি একধরনের বাহাদুরি অনুভব করতেন। সেটা প্রকাশও করতেন নির্দ্বিধায়।’
বিদিশার বাড়ি থেকে বের হতে হতে বিকেল হয়ে যায়। পরদিন জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় দুই কলাম করে ছাপা হয় ‘নতুন বান্ধবী জোটালেন এরশাদ’। নতুন বান্ধবীর খবর ফাঁস হতেই চারদিকে হইচই পড়ে যায়। তুমুল আলোচনায় আসেন বিদিশা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে বিদিশাকে ফোন করে পুরোনো তথ্যগুলো ঝালাই করে নিতেই স্বভাবসুলভ হো হো করে হাসলেন, তারপর বললেন, এত দিন পর এসব লিখে কী হবে?
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২২ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২২ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথমদিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২২ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২২ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথমদিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২২ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথমদিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২২ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গুলশান-১ ও ২ গোলচত্বরের মাঝামাঝি একটি পুরোনো বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় থানা, ওপরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিবার নিয়ে থাকেন। তখনকার ওসি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমার চমৎকার সম্পর্ক। ১৯৯৯ সালের প্রথমদিকে এক দুপুরে তাঁর সামনে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এসবির ওসি ওয়াচ রওনকুল হক চৌ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২২ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২২ দিন আগে