কামরুল হাসান

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন না, আত্মীয়স্বজনও তাঁর খোঁজ জানেন না। ব্যক্তিগত নম্বরটি অনেক দিন ধরে বন্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি নিষ্ক্রিয়। ‘উধাও’ শব্দটি হয়তো সে কারণেই বেশ জোরালো হয়েছে। সিনেপাড়ায় আরও গুঞ্জন আছে, তিনি বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন। সে কারণেই আড়ালে-আবডালে থাকছেন।
ফিল্মপাড়ায় একসময় চল ছিল নায়ক-নায়িকাদের বিয়ের খবর গোপন রাখা। নির্মাতারা আশঙ্কা করতেন, নায়িকা বিবাহিত হলে তাঁর ছবি আর চলবে না। কারণ, বাংলাদেশের দর্শক নাকি পছন্দ করেন অবিবাহিত নায়িকা। নায়িকা বিবাহিত হলেই তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নেন। সে কারণে কেউ বিয়ে করলেও তা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হতো না। আবার কোনোভাবে যদি প্রকাশিত হয়েই যায়, সেটাও ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা-তদবির চলত। সেই অবস্থা এখনো যে একেবারে নেই, সেটা বলা যাবে না। কারণ, শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিয়ের কথাও অনেক বছর মানুষের অজানা ছিল। সেই বিয়ের কথা জানাজানি হয় তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর। পপির ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি অন্য রকম। কেন অন্য রকম, সেটা এবার বলি।
আমার মনে হয়েছে, পপির মধ্যে একধরনের বিয়েভীতি আছে। কারণ, একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপির আজকের যে ‘খসে পড়া তারার’ অবস্থা, তার পেছনের কারণ সেই বিয়ে নিয়ে কলহ। সেটা অবশ্য ২২ বছর আগে, ২০০০ সালে। সেই ঘটনার পর পপির ক্যারিয়ারে ভাটা পড়তে শুরু করে। একের পর এক ছবি ছেড়ে দিতে হয়। ওই সময় তাঁর পেছনে প্রযোজকদের ৫০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি ছিল। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে প্রায় বেকার হয়ে যান একসময়ের হার্টথ্রব নায়িকা, যার রেশ এখনো রয়েই গেছে। এটা অনেকটা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ সিনেমার সেই সংলাপের মতো। একবার ঘূর্ণিপাকে পড়ে গেলে আর ওঠা যায় না।
সিনেমার নায়িকাদের সবারই একটি করে পোষা নাম থাকে। পপি হলো সেই পোষা নাম, প্রকৃত নাম সাদিকা পারভিন। ১৯৭৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর খুলনায় জন্ম। শৈশব কাটে খুলনায়, দাদাবাড়িতে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পপি বড়। খুলনার মন্নুজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৬ সালে ঢাকায় আসেন লাক্স-আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর সিনেমায় ডাক আসে। ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের কুলি সিনেমায় অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন ওমর সানী। ছবিটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে। এরপর তাঁকে কে আটকায়। একের পর ছবি আসতে থাকে পপির হাতে। খুব অল্প সময়ে তরুণদের কাছে পপি হয়ে ওঠেন, ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে’।
কিন্তু সেই যে ঘূর্ণিপাকের কথা বললাম, একসময় পপিও পড়ে গেলেন সেই ঘূর্ণিপাকে। ১৯৯৭ সালে ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ নামে একটি সিনেমা শুরু করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা সুদর্শন যুবক শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খানের সঙ্গে। সেই ছবি করতে গিয়েই তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। বছরতিনেক পর শাকিল দাবি করেন, তাঁদের বিয়ে হয়ে গেছে। সেই বিয়ের কথা রটে যায় সিনেমা প্রযোজকদের কানে। পপির হাতে তখন ৩০টি ছবি। প্রযোজকদের মাথায় বাজ। তাঁরা চান, বিয়ের খবর কেউ যেন না জানে। কিন্তু শাকিল নাছোড়, তিনি সব জায়গায় বিয়ের কথা বলে বেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে একাধিক জিডিও হয়।
২০০০ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে একদিন সাংবাদিক পারভেজ খান আমাকে নিয়ে যান মগবাজারে নায়ক শাকিল খানের বাসায়। সেই বাসায় শাকিল একাই থাকতেন। শাকিল আমাদের বলেন, ওই বছরের এপ্রিল মাসে তিনি আর পপি সিনেমা শুটিংয়ের জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রামের সেন্ট মার্টিন হোটেলে তাঁরা রাত কাটান। এরপর কুমিল্লায় এসে শাকিলের এক বন্ধুর বাসায় দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের দিন রাত দুটোয় ঢাকায় এসে গুলিস্তানের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলে বাসর করেন। তিনি আমাদের কাবিননামা ও হোটেলের বিলের কপিও দেখিয়েছিলেন। শাকিল আমাদের বারবার বলছিলেন, তিনি চান, পপি এ বাসায় এসে তাঁর সঙ্গে সংসার করুক। কিন্তু পপির মা সেটা চান না। সে কারণে পপি আসতে পারছেন না। তাঁর এসব কথা নিয়ে আমি যেন নিউজ করি, সে জন্য অনুরোধ করেন তিনি। আমি সব শুনে বললাম, আমি সিনেমাবিষয়ক রিপোর্টার নই, এটা আমার কাজ নয়। তবে আমি এটা অফিসে জানাতে পারি। শাকিল বললেন, তার দরকার নেই। পুলিশি ঝামেলা হোক, নাহয় তখনই লিখবেন।
শাকিলের কথাই সত্যি হলো। ২ আগস্ট শুটিং স্পট থেকে পপিকে গাড়িতে তুলে মগবাজারের বাসায় নিয়ে আসেন শাকিল। পপির মা মরিয়ম মেরি সে খবর জানতে পেরে পপির মামাতো ভাই আমানতকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাঁরা শাকিলকে মারধর করেন এবং পপিকে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে যান। শাকিল এ ঘটনায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করে পপির মা ও তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। রমনার তখনকার ওসি ছিলেন এ বি এম সুলতান। তিনি কাউকে গ্রেপ্তার না করে চুপচাপ মজা দেখতে থাকেন।
পপির এ ঘটনা প্রযোজকদের কানে যায়। তাঁরা পপিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। সে সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তাও পপির পক্ষে দাঁড়ান। এবার শাকিলের বিরুদ্ধে মেয়েকে মারধর, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পপির বাবা আমির আলী। সেই মামলায় ২০০০ সালের ৫ আগস্ট শাকিল খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হইচই পড়ে যায়। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
৭ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পপি। সেখানে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে পপি বলেছিলেন, শাকিল তাঁকে বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সাংবাদিকেরা জানতে চান, এতে কি আপনি আহত হয়েছিলেন? পপির জবাব ছিল, কিছু কিছু ক্ষত থাকে, যা প্রকাশ্যে দেখানো যায় না। তবে পপির সেই সংবাদ সম্মেলনের পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। পুলিশ এবার বাধ্য হয়ে পপির মা ও মামাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তবে পপিকে পুলিশ কখনো গ্রেপ্তার করেনি। একদিন জনকণ্ঠ ভবন থেকে শংকর কুমার দে আর আমি পপিদের ইস্কাটনের বাসায় গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এভাবে দুই সপ্তাহ চলে যায়, শাকিল জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতারা তাঁদের নিয়ে এফডিসিতে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুজনেই নিজের খরচে মামলা তুলে নেবেন। তাঁরা কখনো একসঙ্গে অভিনয় ও চলাফেরা করতে পারবেন না। তখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন মাহমুদ কলি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, এতে হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু মেয়েটির ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। সত্যিই এ ঘটনার পর পপির হাতের ছবির সংখ্যা একেবারে কমে আসে। শাকিলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে। তিনিও বেকার হয়ে পড়েন।
শেষ করার আগে আবারও সত্যজিৎ রায়ের সেই নায়ক সিনেমার নায়ক অরিন্দমের কথা বলি। তিনি স্বপ্নে দেখছেন, শুধু টাকার মাঝে হেঁটে চলেছেন প্রচণ্ড উৎফুল্ল হয়ে। এরপর হঠাৎ করেই টাকার চোরাবালিতে ডুবতে থাকেন। বাঁচতে একজনের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো সাহায্য করেন না। নায়ক ডুবে যান খ্যাতি আর অর্থের মোহের চোরাবালিতে। রুপালি পর্দার জগৎটাই মনে হয় সে রকম। একবার ডুবে গেলে ফেরার পথটাই যেন চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন না, আত্মীয়স্বজনও তাঁর খোঁজ জানেন না। ব্যক্তিগত নম্বরটি অনেক দিন ধরে বন্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি নিষ্ক্রিয়। ‘উধাও’ শব্দটি হয়তো সে কারণেই বেশ জোরালো হয়েছে। সিনেপাড়ায় আরও গুঞ্জন আছে, তিনি বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন। সে কারণেই আড়ালে-আবডালে থাকছেন।
ফিল্মপাড়ায় একসময় চল ছিল নায়ক-নায়িকাদের বিয়ের খবর গোপন রাখা। নির্মাতারা আশঙ্কা করতেন, নায়িকা বিবাহিত হলে তাঁর ছবি আর চলবে না। কারণ, বাংলাদেশের দর্শক নাকি পছন্দ করেন অবিবাহিত নায়িকা। নায়িকা বিবাহিত হলেই তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নেন। সে কারণে কেউ বিয়ে করলেও তা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হতো না। আবার কোনোভাবে যদি প্রকাশিত হয়েই যায়, সেটাও ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা-তদবির চলত। সেই অবস্থা এখনো যে একেবারে নেই, সেটা বলা যাবে না। কারণ, শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিয়ের কথাও অনেক বছর মানুষের অজানা ছিল। সেই বিয়ের কথা জানাজানি হয় তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর। পপির ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি অন্য রকম। কেন অন্য রকম, সেটা এবার বলি।
আমার মনে হয়েছে, পপির মধ্যে একধরনের বিয়েভীতি আছে। কারণ, একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপির আজকের যে ‘খসে পড়া তারার’ অবস্থা, তার পেছনের কারণ সেই বিয়ে নিয়ে কলহ। সেটা অবশ্য ২২ বছর আগে, ২০০০ সালে। সেই ঘটনার পর পপির ক্যারিয়ারে ভাটা পড়তে শুরু করে। একের পর এক ছবি ছেড়ে দিতে হয়। ওই সময় তাঁর পেছনে প্রযোজকদের ৫০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি ছিল। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে প্রায় বেকার হয়ে যান একসময়ের হার্টথ্রব নায়িকা, যার রেশ এখনো রয়েই গেছে। এটা অনেকটা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ সিনেমার সেই সংলাপের মতো। একবার ঘূর্ণিপাকে পড়ে গেলে আর ওঠা যায় না।
সিনেমার নায়িকাদের সবারই একটি করে পোষা নাম থাকে। পপি হলো সেই পোষা নাম, প্রকৃত নাম সাদিকা পারভিন। ১৯৭৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর খুলনায় জন্ম। শৈশব কাটে খুলনায়, দাদাবাড়িতে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পপি বড়। খুলনার মন্নুজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৬ সালে ঢাকায় আসেন লাক্স-আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর সিনেমায় ডাক আসে। ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের কুলি সিনেমায় অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন ওমর সানী। ছবিটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে। এরপর তাঁকে কে আটকায়। একের পর ছবি আসতে থাকে পপির হাতে। খুব অল্প সময়ে তরুণদের কাছে পপি হয়ে ওঠেন, ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে’।
কিন্তু সেই যে ঘূর্ণিপাকের কথা বললাম, একসময় পপিও পড়ে গেলেন সেই ঘূর্ণিপাকে। ১৯৯৭ সালে ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ নামে একটি সিনেমা শুরু করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা সুদর্শন যুবক শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খানের সঙ্গে। সেই ছবি করতে গিয়েই তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। বছরতিনেক পর শাকিল দাবি করেন, তাঁদের বিয়ে হয়ে গেছে। সেই বিয়ের কথা রটে যায় সিনেমা প্রযোজকদের কানে। পপির হাতে তখন ৩০টি ছবি। প্রযোজকদের মাথায় বাজ। তাঁরা চান, বিয়ের খবর কেউ যেন না জানে। কিন্তু শাকিল নাছোড়, তিনি সব জায়গায় বিয়ের কথা বলে বেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে একাধিক জিডিও হয়।
২০০০ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে একদিন সাংবাদিক পারভেজ খান আমাকে নিয়ে যান মগবাজারে নায়ক শাকিল খানের বাসায়। সেই বাসায় শাকিল একাই থাকতেন। শাকিল আমাদের বলেন, ওই বছরের এপ্রিল মাসে তিনি আর পপি সিনেমা শুটিংয়ের জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রামের সেন্ট মার্টিন হোটেলে তাঁরা রাত কাটান। এরপর কুমিল্লায় এসে শাকিলের এক বন্ধুর বাসায় দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের দিন রাত দুটোয় ঢাকায় এসে গুলিস্তানের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলে বাসর করেন। তিনি আমাদের কাবিননামা ও হোটেলের বিলের কপিও দেখিয়েছিলেন। শাকিল আমাদের বারবার বলছিলেন, তিনি চান, পপি এ বাসায় এসে তাঁর সঙ্গে সংসার করুক। কিন্তু পপির মা সেটা চান না। সে কারণে পপি আসতে পারছেন না। তাঁর এসব কথা নিয়ে আমি যেন নিউজ করি, সে জন্য অনুরোধ করেন তিনি। আমি সব শুনে বললাম, আমি সিনেমাবিষয়ক রিপোর্টার নই, এটা আমার কাজ নয়। তবে আমি এটা অফিসে জানাতে পারি। শাকিল বললেন, তার দরকার নেই। পুলিশি ঝামেলা হোক, নাহয় তখনই লিখবেন।
শাকিলের কথাই সত্যি হলো। ২ আগস্ট শুটিং স্পট থেকে পপিকে গাড়িতে তুলে মগবাজারের বাসায় নিয়ে আসেন শাকিল। পপির মা মরিয়ম মেরি সে খবর জানতে পেরে পপির মামাতো ভাই আমানতকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাঁরা শাকিলকে মারধর করেন এবং পপিকে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে যান। শাকিল এ ঘটনায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করে পপির মা ও তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। রমনার তখনকার ওসি ছিলেন এ বি এম সুলতান। তিনি কাউকে গ্রেপ্তার না করে চুপচাপ মজা দেখতে থাকেন।
পপির এ ঘটনা প্রযোজকদের কানে যায়। তাঁরা পপিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। সে সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তাও পপির পক্ষে দাঁড়ান। এবার শাকিলের বিরুদ্ধে মেয়েকে মারধর, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পপির বাবা আমির আলী। সেই মামলায় ২০০০ সালের ৫ আগস্ট শাকিল খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হইচই পড়ে যায়। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
৭ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পপি। সেখানে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে পপি বলেছিলেন, শাকিল তাঁকে বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সাংবাদিকেরা জানতে চান, এতে কি আপনি আহত হয়েছিলেন? পপির জবাব ছিল, কিছু কিছু ক্ষত থাকে, যা প্রকাশ্যে দেখানো যায় না। তবে পপির সেই সংবাদ সম্মেলনের পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। পুলিশ এবার বাধ্য হয়ে পপির মা ও মামাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তবে পপিকে পুলিশ কখনো গ্রেপ্তার করেনি। একদিন জনকণ্ঠ ভবন থেকে শংকর কুমার দে আর আমি পপিদের ইস্কাটনের বাসায় গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এভাবে দুই সপ্তাহ চলে যায়, শাকিল জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতারা তাঁদের নিয়ে এফডিসিতে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুজনেই নিজের খরচে মামলা তুলে নেবেন। তাঁরা কখনো একসঙ্গে অভিনয় ও চলাফেরা করতে পারবেন না। তখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন মাহমুদ কলি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, এতে হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু মেয়েটির ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। সত্যিই এ ঘটনার পর পপির হাতের ছবির সংখ্যা একেবারে কমে আসে। শাকিলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে। তিনিও বেকার হয়ে পড়েন।
শেষ করার আগে আবারও সত্যজিৎ রায়ের সেই নায়ক সিনেমার নায়ক অরিন্দমের কথা বলি। তিনি স্বপ্নে দেখছেন, শুধু টাকার মাঝে হেঁটে চলেছেন প্রচণ্ড উৎফুল্ল হয়ে। এরপর হঠাৎ করেই টাকার চোরাবালিতে ডুবতে থাকেন। বাঁচতে একজনের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো সাহায্য করেন না। নায়ক ডুবে যান খ্যাতি আর অর্থের মোহের চোরাবালিতে। রুপালি পর্দার জগৎটাই মনে হয় সে রকম। একবার ডুবে গেলে ফেরার পথটাই যেন চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন না, আত্মীয়স্বজনও তাঁর খোঁজ জানেন না। ব্যক্তিগত নম্বরটি অনেক দিন ধরে বন্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি নিষ্ক্রিয়। ‘উধাও’ শব্দটি হয়তো সে কারণেই বেশ জোরালো হয়েছে। সিনেপাড়ায় আরও গুঞ্জন আছে, তিনি বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন। সে কারণেই আড়ালে-আবডালে থাকছেন।
ফিল্মপাড়ায় একসময় চল ছিল নায়ক-নায়িকাদের বিয়ের খবর গোপন রাখা। নির্মাতারা আশঙ্কা করতেন, নায়িকা বিবাহিত হলে তাঁর ছবি আর চলবে না। কারণ, বাংলাদেশের দর্শক নাকি পছন্দ করেন অবিবাহিত নায়িকা। নায়িকা বিবাহিত হলেই তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নেন। সে কারণে কেউ বিয়ে করলেও তা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হতো না। আবার কোনোভাবে যদি প্রকাশিত হয়েই যায়, সেটাও ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা-তদবির চলত। সেই অবস্থা এখনো যে একেবারে নেই, সেটা বলা যাবে না। কারণ, শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিয়ের কথাও অনেক বছর মানুষের অজানা ছিল। সেই বিয়ের কথা জানাজানি হয় তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর। পপির ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি অন্য রকম। কেন অন্য রকম, সেটা এবার বলি।
আমার মনে হয়েছে, পপির মধ্যে একধরনের বিয়েভীতি আছে। কারণ, একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপির আজকের যে ‘খসে পড়া তারার’ অবস্থা, তার পেছনের কারণ সেই বিয়ে নিয়ে কলহ। সেটা অবশ্য ২২ বছর আগে, ২০০০ সালে। সেই ঘটনার পর পপির ক্যারিয়ারে ভাটা পড়তে শুরু করে। একের পর এক ছবি ছেড়ে দিতে হয়। ওই সময় তাঁর পেছনে প্রযোজকদের ৫০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি ছিল। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে প্রায় বেকার হয়ে যান একসময়ের হার্টথ্রব নায়িকা, যার রেশ এখনো রয়েই গেছে। এটা অনেকটা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ সিনেমার সেই সংলাপের মতো। একবার ঘূর্ণিপাকে পড়ে গেলে আর ওঠা যায় না।
সিনেমার নায়িকাদের সবারই একটি করে পোষা নাম থাকে। পপি হলো সেই পোষা নাম, প্রকৃত নাম সাদিকা পারভিন। ১৯৭৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর খুলনায় জন্ম। শৈশব কাটে খুলনায়, দাদাবাড়িতে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পপি বড়। খুলনার মন্নুজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৬ সালে ঢাকায় আসেন লাক্স-আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর সিনেমায় ডাক আসে। ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের কুলি সিনেমায় অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন ওমর সানী। ছবিটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে। এরপর তাঁকে কে আটকায়। একের পর ছবি আসতে থাকে পপির হাতে। খুব অল্প সময়ে তরুণদের কাছে পপি হয়ে ওঠেন, ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে’।
কিন্তু সেই যে ঘূর্ণিপাকের কথা বললাম, একসময় পপিও পড়ে গেলেন সেই ঘূর্ণিপাকে। ১৯৯৭ সালে ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ নামে একটি সিনেমা শুরু করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা সুদর্শন যুবক শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খানের সঙ্গে। সেই ছবি করতে গিয়েই তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। বছরতিনেক পর শাকিল দাবি করেন, তাঁদের বিয়ে হয়ে গেছে। সেই বিয়ের কথা রটে যায় সিনেমা প্রযোজকদের কানে। পপির হাতে তখন ৩০টি ছবি। প্রযোজকদের মাথায় বাজ। তাঁরা চান, বিয়ের খবর কেউ যেন না জানে। কিন্তু শাকিল নাছোড়, তিনি সব জায়গায় বিয়ের কথা বলে বেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে একাধিক জিডিও হয়।
২০০০ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে একদিন সাংবাদিক পারভেজ খান আমাকে নিয়ে যান মগবাজারে নায়ক শাকিল খানের বাসায়। সেই বাসায় শাকিল একাই থাকতেন। শাকিল আমাদের বলেন, ওই বছরের এপ্রিল মাসে তিনি আর পপি সিনেমা শুটিংয়ের জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রামের সেন্ট মার্টিন হোটেলে তাঁরা রাত কাটান। এরপর কুমিল্লায় এসে শাকিলের এক বন্ধুর বাসায় দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের দিন রাত দুটোয় ঢাকায় এসে গুলিস্তানের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলে বাসর করেন। তিনি আমাদের কাবিননামা ও হোটেলের বিলের কপিও দেখিয়েছিলেন। শাকিল আমাদের বারবার বলছিলেন, তিনি চান, পপি এ বাসায় এসে তাঁর সঙ্গে সংসার করুক। কিন্তু পপির মা সেটা চান না। সে কারণে পপি আসতে পারছেন না। তাঁর এসব কথা নিয়ে আমি যেন নিউজ করি, সে জন্য অনুরোধ করেন তিনি। আমি সব শুনে বললাম, আমি সিনেমাবিষয়ক রিপোর্টার নই, এটা আমার কাজ নয়। তবে আমি এটা অফিসে জানাতে পারি। শাকিল বললেন, তার দরকার নেই। পুলিশি ঝামেলা হোক, নাহয় তখনই লিখবেন।
শাকিলের কথাই সত্যি হলো। ২ আগস্ট শুটিং স্পট থেকে পপিকে গাড়িতে তুলে মগবাজারের বাসায় নিয়ে আসেন শাকিল। পপির মা মরিয়ম মেরি সে খবর জানতে পেরে পপির মামাতো ভাই আমানতকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাঁরা শাকিলকে মারধর করেন এবং পপিকে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে যান। শাকিল এ ঘটনায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করে পপির মা ও তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। রমনার তখনকার ওসি ছিলেন এ বি এম সুলতান। তিনি কাউকে গ্রেপ্তার না করে চুপচাপ মজা দেখতে থাকেন।
পপির এ ঘটনা প্রযোজকদের কানে যায়। তাঁরা পপিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। সে সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তাও পপির পক্ষে দাঁড়ান। এবার শাকিলের বিরুদ্ধে মেয়েকে মারধর, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পপির বাবা আমির আলী। সেই মামলায় ২০০০ সালের ৫ আগস্ট শাকিল খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হইচই পড়ে যায়। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
৭ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পপি। সেখানে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে পপি বলেছিলেন, শাকিল তাঁকে বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সাংবাদিকেরা জানতে চান, এতে কি আপনি আহত হয়েছিলেন? পপির জবাব ছিল, কিছু কিছু ক্ষত থাকে, যা প্রকাশ্যে দেখানো যায় না। তবে পপির সেই সংবাদ সম্মেলনের পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। পুলিশ এবার বাধ্য হয়ে পপির মা ও মামাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তবে পপিকে পুলিশ কখনো গ্রেপ্তার করেনি। একদিন জনকণ্ঠ ভবন থেকে শংকর কুমার দে আর আমি পপিদের ইস্কাটনের বাসায় গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এভাবে দুই সপ্তাহ চলে যায়, শাকিল জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতারা তাঁদের নিয়ে এফডিসিতে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুজনেই নিজের খরচে মামলা তুলে নেবেন। তাঁরা কখনো একসঙ্গে অভিনয় ও চলাফেরা করতে পারবেন না। তখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন মাহমুদ কলি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, এতে হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু মেয়েটির ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। সত্যিই এ ঘটনার পর পপির হাতের ছবির সংখ্যা একেবারে কমে আসে। শাকিলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে। তিনিও বেকার হয়ে পড়েন।
শেষ করার আগে আবারও সত্যজিৎ রায়ের সেই নায়ক সিনেমার নায়ক অরিন্দমের কথা বলি। তিনি স্বপ্নে দেখছেন, শুধু টাকার মাঝে হেঁটে চলেছেন প্রচণ্ড উৎফুল্ল হয়ে। এরপর হঠাৎ করেই টাকার চোরাবালিতে ডুবতে থাকেন। বাঁচতে একজনের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো সাহায্য করেন না। নায়ক ডুবে যান খ্যাতি আর অর্থের মোহের চোরাবালিতে। রুপালি পর্দার জগৎটাই মনে হয় সে রকম। একবার ডুবে গেলে ফেরার পথটাই যেন চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন না, আত্মীয়স্বজনও তাঁর খোঁজ জানেন না। ব্যক্তিগত নম্বরটি অনেক দিন ধরে বন্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি নিষ্ক্রিয়। ‘উধাও’ শব্দটি হয়তো সে কারণেই বেশ জোরালো হয়েছে। সিনেপাড়ায় আরও গুঞ্জন আছে, তিনি বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন। সে কারণেই আড়ালে-আবডালে থাকছেন।
ফিল্মপাড়ায় একসময় চল ছিল নায়ক-নায়িকাদের বিয়ের খবর গোপন রাখা। নির্মাতারা আশঙ্কা করতেন, নায়িকা বিবাহিত হলে তাঁর ছবি আর চলবে না। কারণ, বাংলাদেশের দর্শক নাকি পছন্দ করেন অবিবাহিত নায়িকা। নায়িকা বিবাহিত হলেই তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নেন। সে কারণে কেউ বিয়ে করলেও তা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হতো না। আবার কোনোভাবে যদি প্রকাশিত হয়েই যায়, সেটাও ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা-তদবির চলত। সেই অবস্থা এখনো যে একেবারে নেই, সেটা বলা যাবে না। কারণ, শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিয়ের কথাও অনেক বছর মানুষের অজানা ছিল। সেই বিয়ের কথা জানাজানি হয় তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর। পপির ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি অন্য রকম। কেন অন্য রকম, সেটা এবার বলি।
আমার মনে হয়েছে, পপির মধ্যে একধরনের বিয়েভীতি আছে। কারণ, একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপির আজকের যে ‘খসে পড়া তারার’ অবস্থা, তার পেছনের কারণ সেই বিয়ে নিয়ে কলহ। সেটা অবশ্য ২২ বছর আগে, ২০০০ সালে। সেই ঘটনার পর পপির ক্যারিয়ারে ভাটা পড়তে শুরু করে। একের পর এক ছবি ছেড়ে দিতে হয়। ওই সময় তাঁর পেছনে প্রযোজকদের ৫০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি ছিল। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে প্রায় বেকার হয়ে যান একসময়ের হার্টথ্রব নায়িকা, যার রেশ এখনো রয়েই গেছে। এটা অনেকটা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ সিনেমার সেই সংলাপের মতো। একবার ঘূর্ণিপাকে পড়ে গেলে আর ওঠা যায় না।
সিনেমার নায়িকাদের সবারই একটি করে পোষা নাম থাকে। পপি হলো সেই পোষা নাম, প্রকৃত নাম সাদিকা পারভিন। ১৯৭৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর খুলনায় জন্ম। শৈশব কাটে খুলনায়, দাদাবাড়িতে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পপি বড়। খুলনার মন্নুজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৬ সালে ঢাকায় আসেন লাক্স-আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর সিনেমায় ডাক আসে। ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের কুলি সিনেমায় অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন ওমর সানী। ছবিটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে। এরপর তাঁকে কে আটকায়। একের পর ছবি আসতে থাকে পপির হাতে। খুব অল্প সময়ে তরুণদের কাছে পপি হয়ে ওঠেন, ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে’।
কিন্তু সেই যে ঘূর্ণিপাকের কথা বললাম, একসময় পপিও পড়ে গেলেন সেই ঘূর্ণিপাকে। ১৯৯৭ সালে ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ নামে একটি সিনেমা শুরু করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা সুদর্শন যুবক শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খানের সঙ্গে। সেই ছবি করতে গিয়েই তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। বছরতিনেক পর শাকিল দাবি করেন, তাঁদের বিয়ে হয়ে গেছে। সেই বিয়ের কথা রটে যায় সিনেমা প্রযোজকদের কানে। পপির হাতে তখন ৩০টি ছবি। প্রযোজকদের মাথায় বাজ। তাঁরা চান, বিয়ের খবর কেউ যেন না জানে। কিন্তু শাকিল নাছোড়, তিনি সব জায়গায় বিয়ের কথা বলে বেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে একাধিক জিডিও হয়।
২০০০ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে একদিন সাংবাদিক পারভেজ খান আমাকে নিয়ে যান মগবাজারে নায়ক শাকিল খানের বাসায়। সেই বাসায় শাকিল একাই থাকতেন। শাকিল আমাদের বলেন, ওই বছরের এপ্রিল মাসে তিনি আর পপি সিনেমা শুটিংয়ের জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রামের সেন্ট মার্টিন হোটেলে তাঁরা রাত কাটান। এরপর কুমিল্লায় এসে শাকিলের এক বন্ধুর বাসায় দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের দিন রাত দুটোয় ঢাকায় এসে গুলিস্তানের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলে বাসর করেন। তিনি আমাদের কাবিননামা ও হোটেলের বিলের কপিও দেখিয়েছিলেন। শাকিল আমাদের বারবার বলছিলেন, তিনি চান, পপি এ বাসায় এসে তাঁর সঙ্গে সংসার করুক। কিন্তু পপির মা সেটা চান না। সে কারণে পপি আসতে পারছেন না। তাঁর এসব কথা নিয়ে আমি যেন নিউজ করি, সে জন্য অনুরোধ করেন তিনি। আমি সব শুনে বললাম, আমি সিনেমাবিষয়ক রিপোর্টার নই, এটা আমার কাজ নয়। তবে আমি এটা অফিসে জানাতে পারি। শাকিল বললেন, তার দরকার নেই। পুলিশি ঝামেলা হোক, নাহয় তখনই লিখবেন।
শাকিলের কথাই সত্যি হলো। ২ আগস্ট শুটিং স্পট থেকে পপিকে গাড়িতে তুলে মগবাজারের বাসায় নিয়ে আসেন শাকিল। পপির মা মরিয়ম মেরি সে খবর জানতে পেরে পপির মামাতো ভাই আমানতকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাঁরা শাকিলকে মারধর করেন এবং পপিকে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে যান। শাকিল এ ঘটনায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করে পপির মা ও তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। রমনার তখনকার ওসি ছিলেন এ বি এম সুলতান। তিনি কাউকে গ্রেপ্তার না করে চুপচাপ মজা দেখতে থাকেন।
পপির এ ঘটনা প্রযোজকদের কানে যায়। তাঁরা পপিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। সে সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তাও পপির পক্ষে দাঁড়ান। এবার শাকিলের বিরুদ্ধে মেয়েকে মারধর, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পপির বাবা আমির আলী। সেই মামলায় ২০০০ সালের ৫ আগস্ট শাকিল খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হইচই পড়ে যায়। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
৭ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পপি। সেখানে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে পপি বলেছিলেন, শাকিল তাঁকে বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সাংবাদিকেরা জানতে চান, এতে কি আপনি আহত হয়েছিলেন? পপির জবাব ছিল, কিছু কিছু ক্ষত থাকে, যা প্রকাশ্যে দেখানো যায় না। তবে পপির সেই সংবাদ সম্মেলনের পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। পুলিশ এবার বাধ্য হয়ে পপির মা ও মামাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তবে পপিকে পুলিশ কখনো গ্রেপ্তার করেনি। একদিন জনকণ্ঠ ভবন থেকে শংকর কুমার দে আর আমি পপিদের ইস্কাটনের বাসায় গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এভাবে দুই সপ্তাহ চলে যায়, শাকিল জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতারা তাঁদের নিয়ে এফডিসিতে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুজনেই নিজের খরচে মামলা তুলে নেবেন। তাঁরা কখনো একসঙ্গে অভিনয় ও চলাফেরা করতে পারবেন না। তখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন মাহমুদ কলি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, এতে হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু মেয়েটির ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। সত্যিই এ ঘটনার পর পপির হাতের ছবির সংখ্যা একেবারে কমে আসে। শাকিলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়েছে। তিনিও বেকার হয়ে পড়েন।
শেষ করার আগে আবারও সত্যজিৎ রায়ের সেই নায়ক সিনেমার নায়ক অরিন্দমের কথা বলি। তিনি স্বপ্নে দেখছেন, শুধু টাকার মাঝে হেঁটে চলেছেন প্রচণ্ড উৎফুল্ল হয়ে। এরপর হঠাৎ করেই টাকার চোরাবালিতে ডুবতে থাকেন। বাঁচতে একজনের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো সাহায্য করেন না। নায়ক ডুবে যান খ্যাতি আর অর্থের মোহের চোরাবালিতে। রুপালি পর্দার জগৎটাই মনে হয় সে রকম। একবার ডুবে গেলে ফেরার পথটাই যেন চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন
০৬ আগস্ট ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন
০৬ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন
০৬ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকাই ফিল্মের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা পপি নাকি অনেক দিন ধরেই উধাও। ‘নাকি’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ, আমি নিজে তাঁর কোনো খোঁজ করিনি। যত কথা সব সিনেসাংবাদিকদের কাছ থেকে শোনা। তাঁরা বলছেন, পপি এখন পরিবারের সঙ্গে থাকছেন
০৬ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে