কামরুল হাসান

হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই। 
পাশে ছিলেন অপরাধ বিভাগের প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম, তিনি ফোনটা ধরিয়ে দিলেন। পারভেজ খেতে খেতে বললেন, “ঢাকায় অপরাধ জগতের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন আর লিয়াকত আলাদা আলাদা জোট করেছে। লিয়াকতের সঙ্গে পাঁচজন আর সুব্রত বাইনের দলে আছে সাতজন। সুব্রতরা নিজেদের ‘সেভেন স্টার’ আর লিয়াকতেরা ‘ফাইভ স্টার’ বলছে। একটু খোঁজ করে দেখ, কিছু করা যায় কি না।”
ফোন দিলাম ঢাকার অপরাধজগৎ সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। কেউ কিছু বলতে পারলেন না। শুধু ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু বললেন, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জয়, টিক্কা, চঞ্চলসহ ছয়-সাতজন মিলে ইদানীং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। সড়ক ও জনপথের আড়াই শ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগিতে তাদের সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। জোট করার খবর সত্যি হলেও হতে পারে।
সামনে বসা চিফ রিপোর্টার চশমার নিচ দিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকাচ্ছেন। অগত্যা হালকা চালে একটি নিউজ করে দিলাম—ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন জোট ‘সেভেন স্টার’। সাংবাদিকতায় যাকে বলে ‘টেবিল মেড’ স্টোরি। ছাপা হলো। পরদিন পুলিশ দুই ছিঁচকে ধরে প্রেসরিলিজ দিয়ে বলল, সেভেন স্টার বাহিনীর দুই সন্ত্রাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার। পুলিশের কাণ্ড দেখে ক্রাইম রিপোর্টাররা হেসে কুটিকুটি।
এই যে কথিত সেভেন স্টার বাহিনী, তারই প্রধান ছিলেন সুব্রত বাইন। পুলিশের খাতায় পুরো নাম ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। বহুদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপিয়ে এখন ভারতের কারাগারে বন্দী। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’, এটা সেই ভয়ংকর সন্ত্রাসীর গল্প।
সুব্রত বাইনকে জীবনে একবারই দেখেছি, তাও আলো-আঁধারিতে। আমাদের যৌবনে চাইনিজ খাওয়া ছিল খুব বড় একটা ব্যাপার। তো একবার এক বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাতে গেলাম মগবাজারের চাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। তৃতীয় তলায় উঠে দেখি সব ফাঁকা, শুধু পাঁচ-ছয়জন একটা টেবিলে বসে কথা বলছেন। আমরাও বসলাম একটা টেবিলে। কিন্তু ওয়েটার আমাদের সেখানে বসতে দেবে না। কারণ কী? জানতে চাইলে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, সুব্রত বাইন দলবল নিয়ে মিটিং করছে। এরপর সুব্রত বাইন বলে যাকে সে চিনিয়ে দিল, সেই পাতলা লম্বা লোকটা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কাকে যেন গালিগালাজ করছে। দোতলায় এসে খেলাম বটে, পরদিন ঠিকই জনকণ্ঠে ছাপা হলো, ‘চাইনিজ রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীর গোপন বৈঠক’। ব্যস, ডিবি হানা দিল।
সেই খবরের তথ্য জোগাড় করতে গিয়ে জানলাম, সুব্রত বাইনের আদিবাস বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার জোবারপাড় গ্রামে। তার বাবা বিপুল বাইন ছিলেন একটি এনজিওর গাড়িচালক। মা কুমুলিনি আর তিন বোন মেরি, চেরি ও পরীকে নিয়ে ঢাকার মগবাজারের ভাড়া বাসায় থাকতেন। সুব্রত বাইন বড় সন্তান। ১৯৬৭ সালে জন্ম, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে।
বরিশালে অক্সফোর্ড মিশন স্কুল নামে খ্রিষ্টান মিশনারি স্কুল আছে। সুব্রত বাইনকে ছোটবেলায় সেই স্কুলে ভর্তি করা হয়। সেখানে হোস্টেলে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। সেখানে ভালো না করায় তাঁকে ঢাকায় শেরেবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এসএসসি। এরপর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে সেখানকার এক নেতার সঙ্গে পরিচয়। কলেজে ভর্তি হওয়া আর হয়নি তাঁর। তখন থেকে বইয়ের বদলে হাতে ওঠে অস্ত্র।
খুব অল্প দিনেই মগবাজারে একটি সন্ত্রাসী চক্র গড়ে ওঠে সুব্রতর নেতৃত্বে। ’৯৩ সালের দিকে মধুবাজার বাজারে সবজিবিক্রেতা খুন হলে পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এর কিছুদিন পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজি নিয়ে গোলাগুলি হয়। এর পরই সুব্রত বাইনের নাম গণমাধ্যমে চলে আসে। সুব্রত বাইন পরে বিশাল সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির নেতাও হন। সেই পরিচয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
’৯১-এর নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে মগবাজার এলাকায় কাজ করেন। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হয়ে যান। মগবাজারের মধুবাগ মাঠে একবার তাঁর জন্মদিনের উৎসবও হয়। ওই উৎসবে বিএনপির অনেক নেতা হাজির হওয়ার পর সুব্রত বাইন রাতারাতি তারকা সন্ত্রাসী বনে যান।
সে সময় যুবলীগের লিয়াকত মগবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। লিয়াকতের কবল থেকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপিপন্থীরা সুব্রতকে সমর্থন দেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারে নেতৃত্ব দেন সুব্রত। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তাঁর হাতে খুন হন। ওই সময় রমনা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার ও মধুবাগ এলাকায় গোলাগুলি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। অবস্থা এমন হয়েছিল যে হতাহতের খবর না পেলে পুলিশও ঘটনাস্থলে যেত না। এভাবে খুব অল্প সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাংশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সুব্রত বাইনের হাতে। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় কমপক্ষে ৩০টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে আগারগাঁওয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মুরাদ খুনের ঘটনায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়।
১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেন সুব্রত বাইনকে। বছর দেড়েক জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে যান। সুব্রত জেলে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী লুসি গ্রুপের এক যুবকের প্রেমে পড়েন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটনা জানার পর সুব্রত নিজেই লুসিকে সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। লুসির দুই সন্তান ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে কুমিল্লায় বিউটি নামের এক নারীকে বিয়ে করেন সুব্রত। তবে বিয়ের কয়েক বছর পর বিউটিকে ডিভোর্স দেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এ তালিকায় প্রথম নামই ছিল সুব্রত বাইনের। তাঁর নামে ইন্টারপোলেও নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর সুব্রত ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় ঘাঁটি গাড়েন। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার জামেলা নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে আছে।
ভারতে গিয়ে সেখানে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেন সুব্রত। সুব্রতর ছোট বোন চেরির স্বামী অতুল জানিয়েছেন, ‘সুব্রতর ভারতীয় নাগরিকত্বের সব কাগজপত্র আছে। তার পরও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১১ অক্টোবর কলকাতা পুলিশ তাঁকে আটক করে। তবে বেশি দিন জেলে থাকতে হয়নি। জামিন পেয়ে দুবাই চলে যান। সেখান থেকে ফিরে কলকাতার এক চিত্রনায়িকার কাছে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই ফোনের সূত্র ধরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স তাঁকে ধাওয়া করে।
টাস্কফোর্সের তাড়া খেয়ে সুব্রত নেপালের সীমান্ত শহর কাঁকরভিটায় ঢুকে পড়েন এবং নেপালি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। প্রথমে তাঁকে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর এবং পরে ঝুমকা কারাগারে নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সেই কারাগারে ৭৭ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ কেটে পালিয়ে যান। আবার কলকাতায় আসার কয়েক দিন পর ২৭ নভেম্বর বউবাজার এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কলকাতার জেলেই আছেন।
কলকাতায় থাকার সময় সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন সুব্রত বাইন। সড়ক ও জনপথের বড় বড় ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করতেন। সেই চাঁদার টাকায় নদীয়ায় ৫০ বিঘা জমিসহ এক বাগানবাড়ি কেনেন। এ ছাড়া ঢাকা ও কলকাতার ব্যবসায়ীদের টাকা আদায়ের কাজটি তিনি করতেন। কলকাতার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা ঢাকার কোনো ব্যবসায়ীর কাছে আটকে গেলে সুব্রতর লোকজন আদায় করে দিত।
চাঁদার টাকা গাজীপুরে বসবাস করা মা-বাবার কাছেও পাঠাতেন সুব্রত। পুবাইলের হারবাইদ নয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ কাঠা জায়গা কিনে একতলা বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতে এখন তাঁর মা-বাবা থাকেন। সুব্রত বাইন ছাড়াও বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট করেছিলাম ২০০৬ সালের ১৪ মে। ‘দেশের টাকায় বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিলাসী জীবন’ শিরোনামের সেই রিপোর্টে আমার সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের তখনকার প্রধান শওকত হোসেন মাসুম। ছাপা হওয়ার দিন প্রথম ফোন করেন শাহাদত পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। তিনি ফোন করে বকাঝকা করেন। বিকেলের দিকে ফোন করা ব্যক্তি নিজেকে সুব্রত বাইন পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের হাতে কলম আছে বলেই যা খুশি তাই লিখে যাচ্ছেন। সত্য–মিথ্যা মিলিয়ে আমাকে নিয়ে যা লিখেছেন, সেটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেয়ে কোনো অংশেই কম না। নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করেন, বুঝতে পারবেন সাংবাদিকতার নামে কী করছেন।’
লোকটি ফোন রেখে দেন। কিন্তু তাঁর কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। আমার মনেও কিছুটা খটকা। বারবার মনে হচ্ছিল, ক্ষয়িষ্ণু সমাজের সংবাদকর্মী আমি, সাংবাদিকতার নামে, নিজের জীবিকার নামে মানুষের দুঃখ-দৈন্যকে পণ্য করছি না তো?
আরও পড়ুন

হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই। 
পাশে ছিলেন অপরাধ বিভাগের প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম, তিনি ফোনটা ধরিয়ে দিলেন। পারভেজ খেতে খেতে বললেন, “ঢাকায় অপরাধ জগতের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন আর লিয়াকত আলাদা আলাদা জোট করেছে। লিয়াকতের সঙ্গে পাঁচজন আর সুব্রত বাইনের দলে আছে সাতজন। সুব্রতরা নিজেদের ‘সেভেন স্টার’ আর লিয়াকতেরা ‘ফাইভ স্টার’ বলছে। একটু খোঁজ করে দেখ, কিছু করা যায় কি না।”
ফোন দিলাম ঢাকার অপরাধজগৎ সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। কেউ কিছু বলতে পারলেন না। শুধু ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু বললেন, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জয়, টিক্কা, চঞ্চলসহ ছয়-সাতজন মিলে ইদানীং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। সড়ক ও জনপথের আড়াই শ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগিতে তাদের সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। জোট করার খবর সত্যি হলেও হতে পারে।
সামনে বসা চিফ রিপোর্টার চশমার নিচ দিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকাচ্ছেন। অগত্যা হালকা চালে একটি নিউজ করে দিলাম—ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন জোট ‘সেভেন স্টার’। সাংবাদিকতায় যাকে বলে ‘টেবিল মেড’ স্টোরি। ছাপা হলো। পরদিন পুলিশ দুই ছিঁচকে ধরে প্রেসরিলিজ দিয়ে বলল, সেভেন স্টার বাহিনীর দুই সন্ত্রাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার। পুলিশের কাণ্ড দেখে ক্রাইম রিপোর্টাররা হেসে কুটিকুটি।
এই যে কথিত সেভেন স্টার বাহিনী, তারই প্রধান ছিলেন সুব্রত বাইন। পুলিশের খাতায় পুরো নাম ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। বহুদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপিয়ে এখন ভারতের কারাগারে বন্দী। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’, এটা সেই ভয়ংকর সন্ত্রাসীর গল্প।
সুব্রত বাইনকে জীবনে একবারই দেখেছি, তাও আলো-আঁধারিতে। আমাদের যৌবনে চাইনিজ খাওয়া ছিল খুব বড় একটা ব্যাপার। তো একবার এক বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাতে গেলাম মগবাজারের চাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। তৃতীয় তলায় উঠে দেখি সব ফাঁকা, শুধু পাঁচ-ছয়জন একটা টেবিলে বসে কথা বলছেন। আমরাও বসলাম একটা টেবিলে। কিন্তু ওয়েটার আমাদের সেখানে বসতে দেবে না। কারণ কী? জানতে চাইলে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, সুব্রত বাইন দলবল নিয়ে মিটিং করছে। এরপর সুব্রত বাইন বলে যাকে সে চিনিয়ে দিল, সেই পাতলা লম্বা লোকটা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কাকে যেন গালিগালাজ করছে। দোতলায় এসে খেলাম বটে, পরদিন ঠিকই জনকণ্ঠে ছাপা হলো, ‘চাইনিজ রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীর গোপন বৈঠক’। ব্যস, ডিবি হানা দিল।
সেই খবরের তথ্য জোগাড় করতে গিয়ে জানলাম, সুব্রত বাইনের আদিবাস বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার জোবারপাড় গ্রামে। তার বাবা বিপুল বাইন ছিলেন একটি এনজিওর গাড়িচালক। মা কুমুলিনি আর তিন বোন মেরি, চেরি ও পরীকে নিয়ে ঢাকার মগবাজারের ভাড়া বাসায় থাকতেন। সুব্রত বাইন বড় সন্তান। ১৯৬৭ সালে জন্ম, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে।
বরিশালে অক্সফোর্ড মিশন স্কুল নামে খ্রিষ্টান মিশনারি স্কুল আছে। সুব্রত বাইনকে ছোটবেলায় সেই স্কুলে ভর্তি করা হয়। সেখানে হোস্টেলে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। সেখানে ভালো না করায় তাঁকে ঢাকায় শেরেবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এসএসসি। এরপর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে সেখানকার এক নেতার সঙ্গে পরিচয়। কলেজে ভর্তি হওয়া আর হয়নি তাঁর। তখন থেকে বইয়ের বদলে হাতে ওঠে অস্ত্র।
খুব অল্প দিনেই মগবাজারে একটি সন্ত্রাসী চক্র গড়ে ওঠে সুব্রতর নেতৃত্বে। ’৯৩ সালের দিকে মধুবাজার বাজারে সবজিবিক্রেতা খুন হলে পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এর কিছুদিন পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজি নিয়ে গোলাগুলি হয়। এর পরই সুব্রত বাইনের নাম গণমাধ্যমে চলে আসে। সুব্রত বাইন পরে বিশাল সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির নেতাও হন। সেই পরিচয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
’৯১-এর নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে মগবাজার এলাকায় কাজ করেন। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হয়ে যান। মগবাজারের মধুবাগ মাঠে একবার তাঁর জন্মদিনের উৎসবও হয়। ওই উৎসবে বিএনপির অনেক নেতা হাজির হওয়ার পর সুব্রত বাইন রাতারাতি তারকা সন্ত্রাসী বনে যান।
সে সময় যুবলীগের লিয়াকত মগবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। লিয়াকতের কবল থেকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপিপন্থীরা সুব্রতকে সমর্থন দেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারে নেতৃত্ব দেন সুব্রত। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তাঁর হাতে খুন হন। ওই সময় রমনা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার ও মধুবাগ এলাকায় গোলাগুলি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। অবস্থা এমন হয়েছিল যে হতাহতের খবর না পেলে পুলিশও ঘটনাস্থলে যেত না। এভাবে খুব অল্প সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাংশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সুব্রত বাইনের হাতে। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় কমপক্ষে ৩০টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে আগারগাঁওয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মুরাদ খুনের ঘটনায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়।
১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেন সুব্রত বাইনকে। বছর দেড়েক জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে যান। সুব্রত জেলে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী লুসি গ্রুপের এক যুবকের প্রেমে পড়েন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটনা জানার পর সুব্রত নিজেই লুসিকে সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। লুসির দুই সন্তান ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে কুমিল্লায় বিউটি নামের এক নারীকে বিয়ে করেন সুব্রত। তবে বিয়ের কয়েক বছর পর বিউটিকে ডিভোর্স দেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এ তালিকায় প্রথম নামই ছিল সুব্রত বাইনের। তাঁর নামে ইন্টারপোলেও নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর সুব্রত ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় ঘাঁটি গাড়েন। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার জামেলা নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে আছে।
ভারতে গিয়ে সেখানে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেন সুব্রত। সুব্রতর ছোট বোন চেরির স্বামী অতুল জানিয়েছেন, ‘সুব্রতর ভারতীয় নাগরিকত্বের সব কাগজপত্র আছে। তার পরও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১১ অক্টোবর কলকাতা পুলিশ তাঁকে আটক করে। তবে বেশি দিন জেলে থাকতে হয়নি। জামিন পেয়ে দুবাই চলে যান। সেখান থেকে ফিরে কলকাতার এক চিত্রনায়িকার কাছে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই ফোনের সূত্র ধরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স তাঁকে ধাওয়া করে।
টাস্কফোর্সের তাড়া খেয়ে সুব্রত নেপালের সীমান্ত শহর কাঁকরভিটায় ঢুকে পড়েন এবং নেপালি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। প্রথমে তাঁকে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর এবং পরে ঝুমকা কারাগারে নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সেই কারাগারে ৭৭ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ কেটে পালিয়ে যান। আবার কলকাতায় আসার কয়েক দিন পর ২৭ নভেম্বর বউবাজার এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কলকাতার জেলেই আছেন।
কলকাতায় থাকার সময় সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন সুব্রত বাইন। সড়ক ও জনপথের বড় বড় ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করতেন। সেই চাঁদার টাকায় নদীয়ায় ৫০ বিঘা জমিসহ এক বাগানবাড়ি কেনেন। এ ছাড়া ঢাকা ও কলকাতার ব্যবসায়ীদের টাকা আদায়ের কাজটি তিনি করতেন। কলকাতার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা ঢাকার কোনো ব্যবসায়ীর কাছে আটকে গেলে সুব্রতর লোকজন আদায় করে দিত।
চাঁদার টাকা গাজীপুরে বসবাস করা মা-বাবার কাছেও পাঠাতেন সুব্রত। পুবাইলের হারবাইদ নয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ কাঠা জায়গা কিনে একতলা বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতে এখন তাঁর মা-বাবা থাকেন। সুব্রত বাইন ছাড়াও বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট করেছিলাম ২০০৬ সালের ১৪ মে। ‘দেশের টাকায় বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিলাসী জীবন’ শিরোনামের সেই রিপোর্টে আমার সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের তখনকার প্রধান শওকত হোসেন মাসুম। ছাপা হওয়ার দিন প্রথম ফোন করেন শাহাদত পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। তিনি ফোন করে বকাঝকা করেন। বিকেলের দিকে ফোন করা ব্যক্তি নিজেকে সুব্রত বাইন পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের হাতে কলম আছে বলেই যা খুশি তাই লিখে যাচ্ছেন। সত্য–মিথ্যা মিলিয়ে আমাকে নিয়ে যা লিখেছেন, সেটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেয়ে কোনো অংশেই কম না। নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করেন, বুঝতে পারবেন সাংবাদিকতার নামে কী করছেন।’
লোকটি ফোন রেখে দেন। কিন্তু তাঁর কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। আমার মনেও কিছুটা খটকা। বারবার মনে হচ্ছিল, ক্ষয়িষ্ণু সমাজের সংবাদকর্মী আমি, সাংবাদিকতার নামে, নিজের জীবিকার নামে মানুষের দুঃখ-দৈন্যকে পণ্য করছি না তো?
আরও পড়ুন

কামরুল হাসান

হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই। 
পাশে ছিলেন অপরাধ বিভাগের প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম, তিনি ফোনটা ধরিয়ে দিলেন। পারভেজ খেতে খেতে বললেন, “ঢাকায় অপরাধ জগতের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন আর লিয়াকত আলাদা আলাদা জোট করেছে। লিয়াকতের সঙ্গে পাঁচজন আর সুব্রত বাইনের দলে আছে সাতজন। সুব্রতরা নিজেদের ‘সেভেন স্টার’ আর লিয়াকতেরা ‘ফাইভ স্টার’ বলছে। একটু খোঁজ করে দেখ, কিছু করা যায় কি না।”
ফোন দিলাম ঢাকার অপরাধজগৎ সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। কেউ কিছু বলতে পারলেন না। শুধু ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু বললেন, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জয়, টিক্কা, চঞ্চলসহ ছয়-সাতজন মিলে ইদানীং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। সড়ক ও জনপথের আড়াই শ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগিতে তাদের সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। জোট করার খবর সত্যি হলেও হতে পারে।
সামনে বসা চিফ রিপোর্টার চশমার নিচ দিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকাচ্ছেন। অগত্যা হালকা চালে একটি নিউজ করে দিলাম—ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন জোট ‘সেভেন স্টার’। সাংবাদিকতায় যাকে বলে ‘টেবিল মেড’ স্টোরি। ছাপা হলো। পরদিন পুলিশ দুই ছিঁচকে ধরে প্রেসরিলিজ দিয়ে বলল, সেভেন স্টার বাহিনীর দুই সন্ত্রাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার। পুলিশের কাণ্ড দেখে ক্রাইম রিপোর্টাররা হেসে কুটিকুটি।
এই যে কথিত সেভেন স্টার বাহিনী, তারই প্রধান ছিলেন সুব্রত বাইন। পুলিশের খাতায় পুরো নাম ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। বহুদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপিয়ে এখন ভারতের কারাগারে বন্দী। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’, এটা সেই ভয়ংকর সন্ত্রাসীর গল্প।
সুব্রত বাইনকে জীবনে একবারই দেখেছি, তাও আলো-আঁধারিতে। আমাদের যৌবনে চাইনিজ খাওয়া ছিল খুব বড় একটা ব্যাপার। তো একবার এক বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাতে গেলাম মগবাজারের চাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। তৃতীয় তলায় উঠে দেখি সব ফাঁকা, শুধু পাঁচ-ছয়জন একটা টেবিলে বসে কথা বলছেন। আমরাও বসলাম একটা টেবিলে। কিন্তু ওয়েটার আমাদের সেখানে বসতে দেবে না। কারণ কী? জানতে চাইলে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, সুব্রত বাইন দলবল নিয়ে মিটিং করছে। এরপর সুব্রত বাইন বলে যাকে সে চিনিয়ে দিল, সেই পাতলা লম্বা লোকটা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কাকে যেন গালিগালাজ করছে। দোতলায় এসে খেলাম বটে, পরদিন ঠিকই জনকণ্ঠে ছাপা হলো, ‘চাইনিজ রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীর গোপন বৈঠক’। ব্যস, ডিবি হানা দিল।
সেই খবরের তথ্য জোগাড় করতে গিয়ে জানলাম, সুব্রত বাইনের আদিবাস বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার জোবারপাড় গ্রামে। তার বাবা বিপুল বাইন ছিলেন একটি এনজিওর গাড়িচালক। মা কুমুলিনি আর তিন বোন মেরি, চেরি ও পরীকে নিয়ে ঢাকার মগবাজারের ভাড়া বাসায় থাকতেন। সুব্রত বাইন বড় সন্তান। ১৯৬৭ সালে জন্ম, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে।
বরিশালে অক্সফোর্ড মিশন স্কুল নামে খ্রিষ্টান মিশনারি স্কুল আছে। সুব্রত বাইনকে ছোটবেলায় সেই স্কুলে ভর্তি করা হয়। সেখানে হোস্টেলে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। সেখানে ভালো না করায় তাঁকে ঢাকায় শেরেবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এসএসসি। এরপর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে সেখানকার এক নেতার সঙ্গে পরিচয়। কলেজে ভর্তি হওয়া আর হয়নি তাঁর। তখন থেকে বইয়ের বদলে হাতে ওঠে অস্ত্র।
খুব অল্প দিনেই মগবাজারে একটি সন্ত্রাসী চক্র গড়ে ওঠে সুব্রতর নেতৃত্বে। ’৯৩ সালের দিকে মধুবাজার বাজারে সবজিবিক্রেতা খুন হলে পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এর কিছুদিন পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজি নিয়ে গোলাগুলি হয়। এর পরই সুব্রত বাইনের নাম গণমাধ্যমে চলে আসে। সুব্রত বাইন পরে বিশাল সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির নেতাও হন। সেই পরিচয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
’৯১-এর নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে মগবাজার এলাকায় কাজ করেন। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হয়ে যান। মগবাজারের মধুবাগ মাঠে একবার তাঁর জন্মদিনের উৎসবও হয়। ওই উৎসবে বিএনপির অনেক নেতা হাজির হওয়ার পর সুব্রত বাইন রাতারাতি তারকা সন্ত্রাসী বনে যান।
সে সময় যুবলীগের লিয়াকত মগবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। লিয়াকতের কবল থেকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপিপন্থীরা সুব্রতকে সমর্থন দেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারে নেতৃত্ব দেন সুব্রত। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তাঁর হাতে খুন হন। ওই সময় রমনা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার ও মধুবাগ এলাকায় গোলাগুলি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। অবস্থা এমন হয়েছিল যে হতাহতের খবর না পেলে পুলিশও ঘটনাস্থলে যেত না। এভাবে খুব অল্প সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাংশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সুব্রত বাইনের হাতে। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় কমপক্ষে ৩০টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে আগারগাঁওয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মুরাদ খুনের ঘটনায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়।
১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেন সুব্রত বাইনকে। বছর দেড়েক জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে যান। সুব্রত জেলে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী লুসি গ্রুপের এক যুবকের প্রেমে পড়েন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটনা জানার পর সুব্রত নিজেই লুসিকে সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। লুসির দুই সন্তান ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে কুমিল্লায় বিউটি নামের এক নারীকে বিয়ে করেন সুব্রত। তবে বিয়ের কয়েক বছর পর বিউটিকে ডিভোর্স দেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এ তালিকায় প্রথম নামই ছিল সুব্রত বাইনের। তাঁর নামে ইন্টারপোলেও নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর সুব্রত ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় ঘাঁটি গাড়েন। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার জামেলা নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে আছে।
ভারতে গিয়ে সেখানে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেন সুব্রত। সুব্রতর ছোট বোন চেরির স্বামী অতুল জানিয়েছেন, ‘সুব্রতর ভারতীয় নাগরিকত্বের সব কাগজপত্র আছে। তার পরও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১১ অক্টোবর কলকাতা পুলিশ তাঁকে আটক করে। তবে বেশি দিন জেলে থাকতে হয়নি। জামিন পেয়ে দুবাই চলে যান। সেখান থেকে ফিরে কলকাতার এক চিত্রনায়িকার কাছে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই ফোনের সূত্র ধরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স তাঁকে ধাওয়া করে।
টাস্কফোর্সের তাড়া খেয়ে সুব্রত নেপালের সীমান্ত শহর কাঁকরভিটায় ঢুকে পড়েন এবং নেপালি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। প্রথমে তাঁকে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর এবং পরে ঝুমকা কারাগারে নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সেই কারাগারে ৭৭ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ কেটে পালিয়ে যান। আবার কলকাতায় আসার কয়েক দিন পর ২৭ নভেম্বর বউবাজার এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কলকাতার জেলেই আছেন।
কলকাতায় থাকার সময় সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন সুব্রত বাইন। সড়ক ও জনপথের বড় বড় ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করতেন। সেই চাঁদার টাকায় নদীয়ায় ৫০ বিঘা জমিসহ এক বাগানবাড়ি কেনেন। এ ছাড়া ঢাকা ও কলকাতার ব্যবসায়ীদের টাকা আদায়ের কাজটি তিনি করতেন। কলকাতার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা ঢাকার কোনো ব্যবসায়ীর কাছে আটকে গেলে সুব্রতর লোকজন আদায় করে দিত।
চাঁদার টাকা গাজীপুরে বসবাস করা মা-বাবার কাছেও পাঠাতেন সুব্রত। পুবাইলের হারবাইদ নয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ কাঠা জায়গা কিনে একতলা বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতে এখন তাঁর মা-বাবা থাকেন। সুব্রত বাইন ছাড়াও বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট করেছিলাম ২০০৬ সালের ১৪ মে। ‘দেশের টাকায় বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিলাসী জীবন’ শিরোনামের সেই রিপোর্টে আমার সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের তখনকার প্রধান শওকত হোসেন মাসুম। ছাপা হওয়ার দিন প্রথম ফোন করেন শাহাদত পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। তিনি ফোন করে বকাঝকা করেন। বিকেলের দিকে ফোন করা ব্যক্তি নিজেকে সুব্রত বাইন পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের হাতে কলম আছে বলেই যা খুশি তাই লিখে যাচ্ছেন। সত্য–মিথ্যা মিলিয়ে আমাকে নিয়ে যা লিখেছেন, সেটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেয়ে কোনো অংশেই কম না। নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করেন, বুঝতে পারবেন সাংবাদিকতার নামে কী করছেন।’
লোকটি ফোন রেখে দেন। কিন্তু তাঁর কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। আমার মনেও কিছুটা খটকা। বারবার মনে হচ্ছিল, ক্ষয়িষ্ণু সমাজের সংবাদকর্মী আমি, সাংবাদিকতার নামে, নিজের জীবিকার নামে মানুষের দুঃখ-দৈন্যকে পণ্য করছি না তো?
আরও পড়ুন

হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই। 
পাশে ছিলেন অপরাধ বিভাগের প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম, তিনি ফোনটা ধরিয়ে দিলেন। পারভেজ খেতে খেতে বললেন, “ঢাকায় অপরাধ জগতের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন আর লিয়াকত আলাদা আলাদা জোট করেছে। লিয়াকতের সঙ্গে পাঁচজন আর সুব্রত বাইনের দলে আছে সাতজন। সুব্রতরা নিজেদের ‘সেভেন স্টার’ আর লিয়াকতেরা ‘ফাইভ স্টার’ বলছে। একটু খোঁজ করে দেখ, কিছু করা যায় কি না।”
ফোন দিলাম ঢাকার অপরাধজগৎ সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। কেউ কিছু বলতে পারলেন না। শুধু ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু বললেন, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জয়, টিক্কা, চঞ্চলসহ ছয়-সাতজন মিলে ইদানীং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। সড়ক ও জনপথের আড়াই শ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগিতে তাদের সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। জোট করার খবর সত্যি হলেও হতে পারে।
সামনে বসা চিফ রিপোর্টার চশমার নিচ দিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকাচ্ছেন। অগত্যা হালকা চালে একটি নিউজ করে দিলাম—ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন জোট ‘সেভেন স্টার’। সাংবাদিকতায় যাকে বলে ‘টেবিল মেড’ স্টোরি। ছাপা হলো। পরদিন পুলিশ দুই ছিঁচকে ধরে প্রেসরিলিজ দিয়ে বলল, সেভেন স্টার বাহিনীর দুই সন্ত্রাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার। পুলিশের কাণ্ড দেখে ক্রাইম রিপোর্টাররা হেসে কুটিকুটি।
এই যে কথিত সেভেন স্টার বাহিনী, তারই প্রধান ছিলেন সুব্রত বাইন। পুলিশের খাতায় পুরো নাম ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। বহুদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপিয়ে এখন ভারতের কারাগারে বন্দী। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’, এটা সেই ভয়ংকর সন্ত্রাসীর গল্প।
সুব্রত বাইনকে জীবনে একবারই দেখেছি, তাও আলো-আঁধারিতে। আমাদের যৌবনে চাইনিজ খাওয়া ছিল খুব বড় একটা ব্যাপার। তো একবার এক বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাতে গেলাম মগবাজারের চাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। তৃতীয় তলায় উঠে দেখি সব ফাঁকা, শুধু পাঁচ-ছয়জন একটা টেবিলে বসে কথা বলছেন। আমরাও বসলাম একটা টেবিলে। কিন্তু ওয়েটার আমাদের সেখানে বসতে দেবে না। কারণ কী? জানতে চাইলে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, সুব্রত বাইন দলবল নিয়ে মিটিং করছে। এরপর সুব্রত বাইন বলে যাকে সে চিনিয়ে দিল, সেই পাতলা লম্বা লোকটা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কাকে যেন গালিগালাজ করছে। দোতলায় এসে খেলাম বটে, পরদিন ঠিকই জনকণ্ঠে ছাপা হলো, ‘চাইনিজ রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীর গোপন বৈঠক’। ব্যস, ডিবি হানা দিল।
সেই খবরের তথ্য জোগাড় করতে গিয়ে জানলাম, সুব্রত বাইনের আদিবাস বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার জোবারপাড় গ্রামে। তার বাবা বিপুল বাইন ছিলেন একটি এনজিওর গাড়িচালক। মা কুমুলিনি আর তিন বোন মেরি, চেরি ও পরীকে নিয়ে ঢাকার মগবাজারের ভাড়া বাসায় থাকতেন। সুব্রত বাইন বড় সন্তান। ১৯৬৭ সালে জন্ম, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে।
বরিশালে অক্সফোর্ড মিশন স্কুল নামে খ্রিষ্টান মিশনারি স্কুল আছে। সুব্রত বাইনকে ছোটবেলায় সেই স্কুলে ভর্তি করা হয়। সেখানে হোস্টেলে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। সেখানে ভালো না করায় তাঁকে ঢাকায় শেরেবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এসএসসি। এরপর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে সেখানকার এক নেতার সঙ্গে পরিচয়। কলেজে ভর্তি হওয়া আর হয়নি তাঁর। তখন থেকে বইয়ের বদলে হাতে ওঠে অস্ত্র।
খুব অল্প দিনেই মগবাজারে একটি সন্ত্রাসী চক্র গড়ে ওঠে সুব্রতর নেতৃত্বে। ’৯৩ সালের দিকে মধুবাজার বাজারে সবজিবিক্রেতা খুন হলে পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এর কিছুদিন পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজি নিয়ে গোলাগুলি হয়। এর পরই সুব্রত বাইনের নাম গণমাধ্যমে চলে আসে। সুব্রত বাইন পরে বিশাল সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির নেতাও হন। সেই পরিচয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।
’৯১-এর নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে মগবাজার এলাকায় কাজ করেন। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হয়ে যান। মগবাজারের মধুবাগ মাঠে একবার তাঁর জন্মদিনের উৎসবও হয়। ওই উৎসবে বিএনপির অনেক নেতা হাজির হওয়ার পর সুব্রত বাইন রাতারাতি তারকা সন্ত্রাসী বনে যান।
সে সময় যুবলীগের লিয়াকত মগবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। লিয়াকতের কবল থেকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপিপন্থীরা সুব্রতকে সমর্থন দেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারে নেতৃত্ব দেন সুব্রত। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তাঁর হাতে খুন হন। ওই সময় রমনা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার ও মধুবাগ এলাকায় গোলাগুলি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। অবস্থা এমন হয়েছিল যে হতাহতের খবর না পেলে পুলিশও ঘটনাস্থলে যেত না। এভাবে খুব অল্প সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাংশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সুব্রত বাইনের হাতে। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় কমপক্ষে ৩০টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে আগারগাঁওয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মুরাদ খুনের ঘটনায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়।
১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেন সুব্রত বাইনকে। বছর দেড়েক জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে যান। সুব্রত জেলে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী লুসি গ্রুপের এক যুবকের প্রেমে পড়েন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটনা জানার পর সুব্রত নিজেই লুসিকে সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। লুসির দুই সন্তান ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে কুমিল্লায় বিউটি নামের এক নারীকে বিয়ে করেন সুব্রত। তবে বিয়ের কয়েক বছর পর বিউটিকে ডিভোর্স দেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এ তালিকায় প্রথম নামই ছিল সুব্রত বাইনের। তাঁর নামে ইন্টারপোলেও নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর সুব্রত ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় ঘাঁটি গাড়েন। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার জামেলা নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে আছে।
ভারতে গিয়ে সেখানে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেন সুব্রত। সুব্রতর ছোট বোন চেরির স্বামী অতুল জানিয়েছেন, ‘সুব্রতর ভারতীয় নাগরিকত্বের সব কাগজপত্র আছে। তার পরও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১১ অক্টোবর কলকাতা পুলিশ তাঁকে আটক করে। তবে বেশি দিন জেলে থাকতে হয়নি। জামিন পেয়ে দুবাই চলে যান। সেখান থেকে ফিরে কলকাতার এক চিত্রনায়িকার কাছে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই ফোনের সূত্র ধরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স তাঁকে ধাওয়া করে।
টাস্কফোর্সের তাড়া খেয়ে সুব্রত নেপালের সীমান্ত শহর কাঁকরভিটায় ঢুকে পড়েন এবং নেপালি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। প্রথমে তাঁকে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর এবং পরে ঝুমকা কারাগারে নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সেই কারাগারে ৭৭ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ কেটে পালিয়ে যান। আবার কলকাতায় আসার কয়েক দিন পর ২৭ নভেম্বর বউবাজার এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কলকাতার জেলেই আছেন।
কলকাতায় থাকার সময় সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন সুব্রত বাইন। সড়ক ও জনপথের বড় বড় ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করতেন। সেই চাঁদার টাকায় নদীয়ায় ৫০ বিঘা জমিসহ এক বাগানবাড়ি কেনেন। এ ছাড়া ঢাকা ও কলকাতার ব্যবসায়ীদের টাকা আদায়ের কাজটি তিনি করতেন। কলকাতার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা ঢাকার কোনো ব্যবসায়ীর কাছে আটকে গেলে সুব্রতর লোকজন আদায় করে দিত।
চাঁদার টাকা গাজীপুরে বসবাস করা মা-বাবার কাছেও পাঠাতেন সুব্রত। পুবাইলের হারবাইদ নয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ কাঠা জায়গা কিনে একতলা বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতে এখন তাঁর মা-বাবা থাকেন। সুব্রত বাইন ছাড়াও বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথম আলোয় একটি রিপোর্ট করেছিলাম ২০০৬ সালের ১৪ মে। ‘দেশের টাকায় বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিলাসী জীবন’ শিরোনামের সেই রিপোর্টে আমার সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের তখনকার প্রধান শওকত হোসেন মাসুম। ছাপা হওয়ার দিন প্রথম ফোন করেন শাহাদত পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। তিনি ফোন করে বকাঝকা করেন। বিকেলের দিকে ফোন করা ব্যক্তি নিজেকে সুব্রত বাইন পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের হাতে কলম আছে বলেই যা খুশি তাই লিখে যাচ্ছেন। সত্য–মিথ্যা মিলিয়ে আমাকে নিয়ে যা লিখেছেন, সেটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেয়ে কোনো অংশেই কম না। নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করেন, বুঝতে পারবেন সাংবাদিকতার নামে কী করছেন।’
লোকটি ফোন রেখে দেন। কিন্তু তাঁর কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। আমার মনেও কিছুটা খটকা। বারবার মনে হচ্ছিল, ক্ষয়িষ্ণু সমাজের সংবাদকর্মী আমি, সাংবাদিকতার নামে, নিজের জীবিকার নামে মানুষের দুঃখ-দৈন্যকে পণ্য করছি না তো?
আরও পড়ুন


রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।


হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই
৩১ জুলাই ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই
৩১ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।


হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই
৩১ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


হাতে কোনো কাজ নেই। চিফ রিপোর্টার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কিছু একটা করে দেওয়ার জন্য। কী করব ভাবছি আর বন্ধু-সহকর্মীদের ফোন করছি। ফোন দিলাম প্রথম আলোর অপরাধ বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান বন্ধু পারভেজ খানকে। পারভেজ তখন খাবার নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই
৩১ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে